কৃষিমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার নবম বার্ষিকী

Posted On: 17 FEB 2025 6:55PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৭  ফেব্রুয়ারি, ২০২৫


ভারতে কৃষকদের ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী ফসলবীমা যোজনা ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, নবম বার্ষিকী পূর্ণ করছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৬ সালে এই প্রকল্পের সূচনা করেন। অপ্রত্যাশিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষয়ক্ষতিতে এই প্রকল্প এক সর্বাত্মক রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। এই রক্ষাকবচ কেবলমাত্র চাষীদের আয়ের স্থিতাবস্থা বজায় রাখে তাই নয়, তাদের উদ্ভাবনী পদ্ধতি গ্রহণেও উৎসাহ দেয়। 

প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় ফসলবীমা কৃষকদের কাছে ঝুঁকি নিরসনের এক অন্যতম হাতিয়ার। শিলাবৃষ্টি, খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভারী ও অসময়োচিত বৃষ্টি, রোগজনিত বা পোকামাকড়ের আক্রমণে ফসলের ক্ষয়ক্ষতিতে কৃষকদের আর্থিক সাহায্য জোগানোই এর লক্ষ্য। 

এই প্রকল্পের সামর্থ্য ও সফলতার দিক প্রত্যক্ষ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২০২৫-এর জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী ফসলবীমা যোজনা চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়। সেইসঙ্গে জলবায়ু ভিত্তিক ফসলবীমা যোজনা পুনর্গঠিত করে তা ২০২৫ - ২৬ পর্যন্ত চালু রাখতে ৬৯,৫১৫.৭১ কোটি টাকার মোট বাজেট বরাদ্দও করা হয়। 


পুনর্গঠিত জলবায়ু ভিত্তিক ফসলবীমা যোজনা (আরডব্লুবিসিআইএস) একটি জলবায়ু সূচক ভিত্তিক প্রকল্প যা প্রধানমন্ত্রী ফসলবীমা যোজনার (পিএমএফবিওয়াই)সঙ্গেই চালু করা হয়েছিল। পিএমএফবিওয়াই এবং আরডব্লুবিসিআইএস- এর মধ্যে মূলগত পার্থক্য হল এটা কৃষকদের নিজেদের দেওয়া  ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপনের একটি পদ্ধতিগত দিক। 

প্রধানমন্ত্রী ফসলবীমা যোজনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক দিক, যেমন উপগ্রহ চিত্র, ড্রোন, মানববিহীন আকাশযান এবং রিমোট সেন্সিং। এই সমস্ত যান্ত্রিক ব্যবহার এলাকা ধরে ফসলের উৎপাদনভিত্তিক কোনও বিতর্ক নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কার্যকরী ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। সেইসঙ্গে উৎপাদিত ফসলের নিরূপন, ক্ষয়ক্ষতির হিসেব, ফসল কাটার পরিকল্পনা, ক্লাস্টার গড়ে তোলা প্রভৃতি ক্ষেত্রেও নির্ণায়ক ভূমিকা নেয়। এর ফলে হিসেবের স্বচ্ছতা বিধান সম্ভব হয়। সেইসঙ্গে যথাযথ ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের ভিত্তিতে সময় বেঁধে দাবিদাওয়া মেটানো যায়।


জাতীয় ফসলবীমা পোর্টাল (এনসিআইপি)- এ CCE-Agri App –এর মাধ্যমে উৎপাদিত ফসলের পরিসংখ্যান এবং ফসল কাটার অভিজ্ঞতা সরাসরি আপলোড করা যায়। বীমা কোম্পানিগুলিও যাতে সিসিই পরিচালনা ব্যবস্থা সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে পারে এবং এনসিআইপি-র সঙ্গে রাজ্যের ভূমি ভিত্তিক রেকর্ডকে যুক্ত করতে পারে তার সংস্থান থাকে। 

  


সময় ধরে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দাবিদাওয়ার যথাযথ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে YES-TECH (Yield Estimation System Based on Technology) এর ব্যবহার শুরু হয়েছে অংশীদার এবং কারিগরি পরামর্শ দাতাদের সঙ্গে আলোচনা ক্রমে ২০২৩-এর খরিফ মরশুম থেকে। ইয়েস – টেক প্রযুক্তি ভিত্তিক ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনে সহায়ক এবং পিএমএফবিআই-এর অধীন বীমার দাবি মেটাতে তা সাহায্য করে। ম্যানুয়াল পদ্ধতির ব্যবহার ক্রমাগত কমিয়ে এনে যন্ত্র নির্ভর আধুনিক কারিগরি পদ্ধতি গ্রহণ করাই এর উদ্দেশ্য। 

এই প্রকল্পের সুবিধাগত দিকগুলির অন্যতম হল সাশ্রয়ী প্রিমিয়াম। কৃষকদেরকে খরিফ ফসল এবং তৈলবীজে ২ শতাংশ অর্থ প্রিমিয়াম হিসেবে দিতে হয়। রবি ফসল এবং তৈল বীজের ক্ষেত্রে ১.৫ শতাংশ। এছাড়া বার্ষিক বাণিজ্যিক বনজ শস্যের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ। অবশিষ্ট প্রিমিয়াম সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেয়। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ খরা বা বন্যা, পোকামাকড়ের আক্রমণ বা ফসলের রোগজনিত কারণ, উৎপাদিত ফসলের ক্ষেত্রে শিলাবৃ্ষ্টি বা ভূমি ধসজনিত ক্ষয়ক্ষতির কারণসমূহ। এর উল্লেখযোগ্য দিক হল পিএমএফবিওয়াই, উৎপাদিত মরশুমি ফসলের ক্ষেত্রে দাবিদাওয়া নিষ্পত্তির ২ মাসের মধ্যে করে থাকে, যাতে করে কৃষকরা ক্ষয়ক্ষতির টাকা দ্রুত পেতে পারেন এবং তারা যাতে ঋণের জালে আটকে না পড়েন সেই দিকটাও দেখা। যথাযথ দাবিদাওয়া নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত ব্যবহার সহায়ক হয়েছে। উপগ্রহ চিত্র, ড্রোন, মোবাইল অ্যাপ প্রভৃতির মাধ্যমে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির যথাযথ মূল্যায়ন এবং দাবিদাওয়া মেটানো সুনিশ্চিত করা গেছে।   

কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফসল বোনায় বিধিনিষেধ রয়েছে, যেমন নোটিফায়েড এলাকায় বীমার অধীন কৃষকরা ফসল বোনার ক্ষেত্রে যদি কোনও দাবিদাওয়ার প্রশ্ন ওঠে, সেক্ষেত্রে প্রতিকূল আবহাওয়া পরিস্থিতিতে বীমাকৃত ফসল বোনার ক্ষেত্রে যে বিধিনিষেধ রয়েছে তা উপেক্ষা করলে ব্যয়ভার কৃষকদের বহন করতে হয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ বীমাকৃত অর্থই তারা দাবি করতে পারবেন। ফসল তোলার পরবর্তী কালে কোনও ক্ষয়ক্ষতির ক্ষেত্রে সরকার ব্যয়ভার বহন করে, সেক্ষেত্রে ফসল কাটা এবং তা গুদামজাত করাতে সর্বোচ্চ ১৪ দিনের সময়সীমাকে যুক্ত করা হয়। 

স্থানীয়ভাবে কোনওরকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে ব্যক্তিগত ফার্মভিত্তিক ক্ষয়ক্ষতির ব্যয়ভার বহন করা হয়। সেক্ষেত্রে স্থানীয় কারণকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে শিলাবৃষ্টি, ভূমি ধস বা কোনও স্থান জলমগ্ন হলে নোটিফায়েড এলাকা থেকে কৃষিজমিকে যদি আলাদা করে চিহ্নিত করা না যায় তাহলে তা বীমার আওতায় আসে। 

২০২৩-২৪ –এ যে বিপুল পরিমাণ এলাকা ও কৃষক এই প্রকল্পের আওতায় এসেছেন, যা এক সর্বকালীন রেকর্ড। কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির আবেদনের নিরিখেও এই প্রকল্প বিশ্বজুড়ে বৃহত্তম। কিছু কিছু রাজ্য সরকার অবশ্য কৃষকদের বীমার প্রিমিয়ামের টাকা নিজেরাই দিয়ে থাকে। 


নিজের ইচ্ছাতে কৃষকরা এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। তা সত্ত্বেও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ঋণ গ্রহণ না করা কৃষকের সংখ্যাও ২০২৩-২৪ –এর হিসেবে প্রায় ৫৫ শতাংশ। যার থেকে বোঝা যায় এই প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা কতখানি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 

পিএমএফবিওয়াই এখন পরবর্তী পর্বের দিকে পা বাড়াচ্ছে। ভারতের কৃষি ব্যবস্থার স্থিতিশীলতাকে শক্তিশালী করতে এবং কৃষকদের ক্ষমতায়নে তা এক নির্ণায়ক হয়ে উঠেছে।   

 


SC/AB /SG/


(Release ID: 2104380) Visitor Counter : 25