উপ-রাষ্ট্রপতিরসচিবালয়
উপরাষ্ট্রপতি – কৃষকদের সমস্যার দ্রুত সমাধান জরুরি, কৃষকদের উদ্বেগ নিয়ে নিরুদ্বেগ থাকা যায় না
Posted On:
16 JAN 2025 1:54PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫
উপরাষ্ট্রপতি শ্রী জগদীপ ধনখড় বলেছেন, কৃষকদের বিষয়গুলির সময়মতো সমাধান হওয়া প্রয়োজন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, দেশ কৃষকদের উদ্বেগ নিয়ে চুপচাপ বসে থাকতে পারে না।
আজ ধারওয়াড়ে কৃষি বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি কলেজে প্রাক্তনী পুনর্মিলন অনুষ্ঠান এবং অমৃত মহোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণে শ্রী ধনখড় বলেন, “কৃষকদের দুর্দশা দেশের দ্রুত নজর দাবি করে, কৃষকদের আর্থিক নিরাপত্তা প্রয়োজন। এই দেশে, যে দেশের উত্থান হচ্ছে এবং যে উত্থান অদম্য, যে উত্থান আগে কখনও হয়নি, সেখানে আমরা কৃষকদের উদ্বেগ নিয়ে নিরদ্বেগ থাকতে পারি না। সব বিষয়ের সমাধানে সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমি বলব, কৃষকদের সমস্যার সমাধান খুঁজতে সময় আরও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সরকার কাজ করছে। আমরা চাই সকলে একযোগে সমন্বয় রেখে ইতিবাচক মন নিয়ে সমাধান খুঁজুক।”
দেশের অর্থনীতিতে কৃষিক্ষেত্রের অনেক বড় গুরুত্বের কথা তুলে ধরে শ্রী ধনখড় বলেন, “কৃষিভিত্তিক শিল্প, কৃষিপণ্যভিত্তিক শিল্প, বস্ত্র, খাদ্য, ভোজ্য তেল এবং আরও অনেক কিছু। এগুলি সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং লাভজনক হয়ে উঠছে। সেই লাভের সমান ভাগ পাওয়া উচিত আমাদের কৃষকদের। এইসব সংস্থাগুলির উচিত তাদের সিএসআর তহবিলগুলিকে কৃষকদের কল্যাণে, কৃষি ক্ষেত্রের গবেষণায় ব্যবহার করা। এই বিষয়ে তাদের খোলা মনে ভাবা উচিত। কারণ কৃষিপণ্য তাদের জীবনরেখা এবং সেই হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে কৃষকরা। আমাদের ৩টি জিনিস করতে হবে : এক, আমাদের কৃষকদের খুশি রাখতে হবে। দুই, আমাদের কৃষকদের খুশি রাখতেই হবে। এবং তিন, যেকোনও মূল্যে আমাদের কৃষকদের খুশি রাখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের মনে রাখা উচিত যখন কৃষকরা আর্থিকভাবে ভালো থাকেন, অর্থনীতি প্রাণবন্ত থাকে কারণ কৃষকদের ব্যয় ক্ষমতা বাড়ে। যখন কৃষক ব্যয় করেন, তখন অর্থনীতি নিজে নিজেই চালিত হয়। এবং সেই জন্য আমাদের আরও একটি ইতিবাচক প্রভাব ঘটে। যদি কৃষিক্ষেত্র প্রাণবন্ত হয়, সুষ্ঠুভাবে চলে, তার যত্ন নেওয়া হয়, নজর দেওয়া হয়, তবে কৃষি ক্ষেত্রে অনুৎপাদক সম্পদ বলে কিছু থাকতে পারে না। আইসিইউ –তে থাকা রোগীর দিকে আমরা যেভাবে নজর দিই, কৃষকদের প্রতিও আমাদের সেভাবে নজর দিতে হবে।”
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং বাজারের অনিশ্চয়তার মতো মৌলিক চাপ থেকে কৃষকদের রেহাই দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে শ্রী ধনখড় বলেন, “সময় এসে গেছে বিশ্লেষণ করার এবং কৃষিক্ষেত্রকে মৌলিক চাপ থেকে মুক্তি দেওয়ার। সরকার অনেক কিছু করছে কিন্তু কৃষক এখনও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, বাজারের অনিশ্চয়তার ওপর নির্ভরশীল। ঘাটতি থাকলেও তাকে ভুগতে হয়, প্রাচুর্য থাকলেও তাকে ভুগতে হয় এবং সেইজন্য আমাদের এমন পদ্ধতি বের করতে হবে, যাতে আমাদের কৃষকদের অর্থনৈতিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।”
কৃষি ক্ষেত্রের সকল রকম ভর্তুকির সরাসরি হস্তান্তরের পক্ষে সওয়াল করে শ্রী ধনখড় বলেন, “আমি চাই এবং আমি জোর দিয়ে সুপারিশ করছি, কৃষিক্ষেত্রে সার অথবা অন্য কিছু বাবদ দেওয়া যেকোনও ভর্তুকি যেন সরাসরি পৌঁছয় কৃষকের কাছে। কৃষকদের সিদ্ধান্ত নিতে দিন, এমন কী সার যাতে ভর্তুকির পরিমাণ বিপুল..... কৃষিক্ষেত্রের অর্থনীতিবিদদের ভাবতে হবে যদি এই সহায়তা সরাসরি কৃষকের কাছে পৌঁছয় তাহলে সে রাসায়নিক সারের বিকল্প খুঁজতে পারে। কৃষকরা এই টাকা ব্যবহার করতে পারে জৈব এবং প্রাকৃতিক চাষের জন্য।”
টারমেরিক বোর্ড গঠনের জন্য সরকারের প্রশংসা করে উপরাষ্ট্রপতি বলেন, “আমি এত খুশি হয়েছিলাম, যখন বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের ঘোষণাটি কানে আসে। টারমেরিক বোর্ড, ন্যাশনাল টারমেরিক বোর্ড, হলুদের জন্য একটা বড় পদক্ষেপ। ৫ বছরে উৎপাদন দ্বিগুণ হবে। রপ্তানির জন্য বাজার তৈরি করতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কৃষকরা উপকৃত হবেন। তাতেও মূল্য যুক্ত করতে পারবেন কৃষকরা...... ভারত সরকার টারমেরিক বোর্ড গঠনের মাধ্যমে হলুদে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছেন। কি দারুণ সাফল্য। আমি জোরালো ভাবে প্রত্যেকটি কৃষি পণ্যের জন্য এমন ধরনের বোর্ড গঠনের আর্জি জানাচ্ছি সরকারের কাছে, যাতে সেগুলিতে মূল্য যুক্ত হয় এবং বিশেষ নজর পায়।”
কৃষকদের প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে শ্রী ধনখড় বলেন যে, “কৃষিক্ষেত্রে রূপান্তর হওয়া প্রয়োজন। নিরন্তর রূপান্তর হোক। যুক্ত হোক প্রযুক্তি। প্রযুক্তির দ্রুত বদল ঘটছে। কিন্তু কৃষকরা এখনও পুরনো ট্রাক্টরকে আঁকড়ে ধরে আছে। ট্রাক্টর এমন একটি বিষয় যাতে সরকারি ভর্তুকির পরিমাণ সর্বোচ্চ। কৃষকদের প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতেই হবে। তাদের প্রযুক্তি গ্রহণ করার জন্য নিরন্তর বোঝাতে হবে। এবং সেই জন্য কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলির বড় ভূমিকা আছে। সাধারণত, ৫০ হাজার কৃষক প্রতি একটি করে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র আছে। একবার ভেবে দেখুন যদি প্রকৃতপক্ষেই সেই ৫০ হাজার কৃষক কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে যুক্ত হয়, তাহলে কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কার অবশ্যম্ভাবী কারণ আমরা প্রতিদিন পরিবর্তিত হচ্ছি। ভাবনা চিন্তায় আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে। অনেক কিছু করা হচ্ছে, কিন্তু আপনাদের মতো সংস্থাগুলি এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চকে কৃষককেন্দ্রিক হতে হবে। প্রত্যেকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা বাস্তবের ভিত্তিতে হওয়া উচিত। যাতে হাতে কলমে প্রমাণ পাওয়া যায়...... ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চ অনেক দূর পৌঁছে গেছে। এর বাস্তবে প্রতিফলন ঘটাতে হবে। প্রত্যেক কৃষকের কানে যেন সেই রেশ পৌঁছে যায়।”
সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং দেশের বেড়ে চলা প্রত্যাশার বিষয়ে উপরাষ্ট্রপতি বলেন, “আমাদের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ঘটছে দ্রুত হারে। এত দ্রুত বেড়ে চলা অর্থনীতি মধ্যে আমরাই বৃহত্তম। এক মাইল ফলক থেকে আমরা আরেক মাইল ফলকে পৌঁচচ্ছি। আমরা পঞ্চম বিশ্ব অর্থনীতি থেকে ২ বছরের মধ্যে তৃতীয় বিশ্ব অর্থনীতি হওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছি। পরিকাঠামোয় আমাদের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। আমাদের দেশের ভাবমূর্তি, প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি এই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধিশীল অর্থনীতি দেশকে পরিবর্তিত করেছে প্রত্যাশী দেশে। বর্তমানে বিশ্বে আমরা সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশী দেশ। কারণ রাস্তার পরে, রেলের পরে, বিমানের পরে, ডিজিটাল সংযোগের পরে আপনারা আরও চাইছেন। শৌচাগারের পরে, নলবাহিত জলের পরে, গ্যাস সংযোগের পরে আপনারা আরও চাইছেন। সুলভে বাড়ির পরে আপনারা আরও চাইছেন। বিপুল ব্যাঙ্কিং অন্তর্ভুক্তির পরে আপনারা আরো চাইছেন কারণ এগুলি ছিল আমাদের স্বপ্নের অতীত। আমরা কখনও ভাবিনি সাধারণ মানুষ গ্রামে গ্রামে এই সুবিধা পাবে। শৌচাগার, নলবাহিত জল, গ্যাস সংযোগ, সুলভে আবাসন, সড়ক সংযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ। আমরা কখনও এটা ভাবতে পারিনি। সেই জন্য প্রধানমন্ত্রীজি দেশে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছেন, ‘ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর’।”
SC/AP /SG
(Release ID: 2093421)
Visitor Counter : 7