স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

ম্যালেরিয়া নির্মূলে ভারতের অগ্রগতির বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য

Posted On: 25 DEC 2024 6:05PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪


ম্যালেরিয়া মুক্ত ভবিষ্যতের দিকে ভারতের এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ও অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময়ে ম্যালেরিয়া ছিল জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা। সেই সময়ে বছরে প্রায় ৭.৫ কোটি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হতেন এবং ৮ লক্ষ মানুষ মারা যেতেন। কয়েক দশক ধরে নিরলস প্রয়াসে এই পরিসংখ্যান প্রায় ৯৭ শতাংশ কমিয়ে আনা গেছে। ২০২৩ সালে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে ২০ লক্ষে এবং মৃতের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়ে হয়েছে মাত্র ৮৩। ম্যালেরিয়া নির্মূল এবং দেশের নাগরিকদের জনস্বাস্থ্যের উন্নতিতে ভারতের অঙ্গীকার এই ঐতিহাসিক সাফল্য নিয়ে এসেছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাবলুএইচও)-র প্রকাশিত সর্বশেষ বিশ্ব ম্যালেরিয়া প্রতিবেদন ২০২৪-এ ভারতের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। ভারতের এই সাফল্যের মধ্যে রয়েছে ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত এবং এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য হ্রাস। এমনকি ২০২৪ সালে হু’র হাই বার্ডেন টু হাই ইমপ্যাক্ট (এইচবিএইচআই) গোষ্ঠী থেকে ভারতের বেরিয়ে আসার দিকটিও রয়েছে। এই সাফল্য ভারতের জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এক দৃঢ় পদক্ষেপ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া মুক্ত দেশের মর্যাদা লাভের দিকটিই তুলে ধরে। 

২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে একাধিক রাজ্যে এই রোগের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এমনকি কোথাও কোথাও শূন্যে নেমে এসেছে। ২০২৩ সালে বিভিন্ন রাজ্যের ১২২টি জেলায় একটিও ম্যালেরিয়া রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত এবং মৃত্যু প্রায় ৮০ শতাংশ কমেছে। ২০১৫ সালে যেখানে ১১ লক্ষ ৬৯ হাজার ২৬১ জন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ছিলেন, তা ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ২ লক্ষ ২৭ হাজার ৫৬৪ জন। এমনকি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২০১৫ সালে ৩৮৪ থেকে কমে ২০২৩ সালে মাত্র ৮৩ হয়েছে। এর সঙ্গে বার্ষিক রক্ত পরীক্ষার হার (এবিইআর) ২০১৫ সালে ৯.৫৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে ১১.৬২ শতাংশ হয়েছে। কড়া নজরদারি ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক রোগ শনাক্তকরণ ও সময় মতো কার্যকরি চিকিৎসা এই রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। 

ভারতের এই সাফল্যের ভিত্তিতে রয়েছে বহুমুখী কৌশল। ২০১৬ সালে চালু করা হয় ন্যাশনাল ফ্রেমওয়ার্ক ফর ম্যালেরিয়া এলিমিনেশন (এনএফএমই)। এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং অনুসরণ পদ্ধতির সাহায্যে দ্রুত রোগ নিরাময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) ভারতে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থেকে। ম্যালেরিয়া মশার বংশবৃদ্ধি রোধে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকারও চিকিৎসা পরিষেবার উপর জোর দিয়েছে। ন্যাশনাল সেন্টার অফ ভেক্টর বোন ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিভিডিসি)-তে ন্যাশনাল রেফারেন্স ল্যাবরেটরিজস (এনআরএল) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। 

আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য প্যাকেজে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা পরিষেবা যুক্ত করা হয়েছে, যাতে দুর্বল জনগোষ্ঠীর মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান। কমিউনিটি হেলথ অফিসার এবং আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির তৃণমূল স্তরে এই পরিষেবা পৌঁছে দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। 

২০২৪ সালে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে ৮৫০-এরও বেশি স্বাস্থ্য পেশাদারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল রিফ্রেশার ট্রেনিং-এর মাধ্যমে। দুর্বল জনগোষ্ঠীর মানুষের দিকে তাকিয়ে ১২টি রাজ্যের ১৫৯টি জেলায় ইনটেন্সিফায়েড ম্যালেরিয়া এলিমিনেশন প্রজেক্ট-৩ (আইএমইপি-৩) চালু করা হয়েছে। ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূল করার লক্ষ্যে অবিচল রয়েছে। কৌশলগত পরিকাঠামো, দৃঢ় পদক্ষেপ ও সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের সমন্বয়ে ভারত ম্যালেরিয়া নির্মূলে একটি বিশ্বমানের মাপকাঠি স্থির করেছে এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনের প্রতিশ্রুতি সুনিশ্চিত করেছে।

 

PG/SS/SKD


(Release ID: 2088519) Visitor Counter : 9