প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

আজ আজমগড়ে ৩৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী

কয়েকটি প্রকল্প তিনি উৎসর্গ করলেন জাতির উদ্দেশেও

আজমগড় সহ উত্তরপ্রদেশের অনগ্রসর অঞ্চলগুলিতে এখন রচিত হচ্ছে উন্নয়নের এক নতুন ইতিহাস – বললেন প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 10 MAR 2024 1:52PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১০ মার্চ,২০২৪

 

গত ১০ বছরে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সূচনা হয়েছে উন্নয়নের রাজনীতি যা কিনা অতীতের যাবতীয় তোষণ ও পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির সম্পূর্ণ বিপরীত। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে উন্নয়নের এই নতুন ধারার সূচনা হয়েছে এই রাজ্যে। আলিগড়, মোরাদাবাদ, আজমগড় এবং শ্রাবস্তীর মতো শহরগুলি এক সময় উত্তরপ্রদেশের অনগ্রসর অঞ্চল রূপে অবহেলিত ছিল। কিন্তু, বর্তমানে দ্রুত উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে তা এখন নানা দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। যেমন, এই অঞ্চলগুলিতে স্থাপিত হয়েছে বিমান সংযোগ ব্যবস্থা। যে কোনো কল্যাণমূলক কর্মসূচির মতোই আধুনিক পরিকাঠামোর প্রসার এখন বড় বড় শহরগুলি ছাড়াও মফঃস্বলের ছোটখাট শহর এমনকি, দূরদুরান্তের গ্রামগুলিতেও সম্প্রসারিত হয়েছে। মনে রাখতে হবে যে ছোট ছোট শহরগুলিরও কিন্তু বিমান পরিবহণের সুযোগ পাওয়ার সমান অধিকার রয়েছে। বড় বড় শহরগুলির মতো সেখানেও প্রয়োজন উন্নত সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা। 

আজ উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে ৩৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। কয়েকটি প্রকল্প তিনি উৎসর্গ করেন জাতির উদ্দেশেও। 

শ্রী মোদী আরও বলেন, আজমগড় এক সময় ছিল একটি অনগ্রসর এলাকা। কিন্তু সেখানেও এখন উন্নয়নের এক নতুন ইতিহাস রচিত হচ্ছে। এই আজমগড় থেকেই আজ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস পর্ব অনুষ্ঠিত হল। 

প্রধানমন্ত্রী আজ ৯,৮০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে দেশের ১৫টি বিমানবন্দর প্রকল্পের উদ্বোধন ও আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস করেন। পুণে, কোলহাপুর, গোয়ালিয়র, জব্বলপুর, দিল্লি, লক্ষ্ণৌ, আলিগড়, আজমগড়, চিত্রকূট, মোরাদাবাদ, শ্রাবস্তী এবং আদমপুর বিমানবন্দরের ১২টি নতুন টার্মিনাল ভবনের আজ উদ্বোধন করেন তিনি। এরই পাশাপাশি, কাড়াপা, হাবালি এবং বেলগড়ি বিমানবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রী জানান যে গোয়ালিয়র বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনটি সম্পূর্ণ হয়েছে মাত্র ১৬ মাসের মধ্যে। সরকারের এই সমস্ত প্রচেষ্টা সাধারণ নাগরিকদের আকাশপথে ভ্রমণের সুযোগকে আরও সহজ করে তুলবে। তিনি বলেন, জনসাধারণ এখন অনুভব ও উপলব্ধি করছেন যে মোদী হলেন সম্পূর্ণ পৃথক এক ব্যক্তি মানুষ যিনি ‘বিকশিত ভারত’ গঠনের লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করে যেতে পারেন। 

শ্রী মোদী বলেন যে বিমানবন্দর, মহাসড়ক এবং রেল পরিকাঠামোর পাশাপাশি শিক্ষা, জল সরবরাহ এবং পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের কাজেও এখন গতি সঞ্চার ঘটেছে। আজমগড়ের অধিবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন যে আজমগড় এখন থেকে বিকাশের এক বিশেষ কেন্দ্র রূপে চিহ্নিত হবে। বিমানবন্দর, হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ আজমগড়কে এখন সম্পূর্ণ নতুন এক অবয়ব এনে দেবে। তিনি বলেন, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তরের শহরগুলিকে আমরা আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে আগ্রহী যাতে বড় বড় শহরগুলির সুযোগ-সুবিধার তুলনায় এই ছোট শহরগুলিও কোনরকমে পিছিয়ে না থাকে। প্রসঙ্গত, এই অঞ্চলের সার্বিক বিকাশে সড়ক সংযোগ ও নগরায়নের গুরুত্বকেও তুলে ধরেন। সীতাপুর, শাহজাহানপুর, গাজিপুর ও প্রয়াগরাজে কয়েকটি রেল প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অনেকগুলি রেল প্রকল্পের সূচনা হয়েছে আজমগড়, মৌ ও বালিয়াতেও। অন্যদিকে, ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’র আওতায় নির্মিত হয়েছে ৫ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি সড়ক সংযোগ। এর ফলে বিশেষভাবে উপকৃত হবেন উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলের কৃষক ও যুব সমাজ। 

কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বিপণনের জন্য ন্যায্যমূল্যের দোকান খোলার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। আখ সহ বিভিন্ন শস্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গটিও এদিন স্পর্শ করে যায় তাঁর বক্তব্যে। শ্রী মোদী বলেন, আখ চাষীদের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে ৮ শতাংশ। ফলে, ক্যুইন্টাল প্রতি অতিরিক্ত দাম পাওয়া যাবে ৩৪০ টাকা করে। এই অঞ্চলের আখ চাষীরা বহুদিন ধরেই নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের বর্তমান সরকার তাঁদের ক্ষোভ নিরসনে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আখ চাষীদের কোটি কোটি টাকা ন্যায্য পাওনা যাতে সঠিক সময়ে মিটিয়ে দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতেও সরকার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বায়োগ্যাস এবং ইথানল প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রেও সরকারি উদ্যোগের কথা এদিন ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রসঙ্গে তিনি জানান যে শুধুমাত্র আজমগড়েই ৮ লক্ষ কৃষক এই কর্মসূচির আওতায় ২ হাজার কোটি টাকার সহায়তা লাভ করেছেন। 

শ্রী মোদী বলেন, নজিরবিহীন উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রশাসন ও পরিচালন কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সততার সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। তাই, আমাদের সরকার সমস্ত রকম দুর্নীতি বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর। এইভাবেই সার্বিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিয়ে আসা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে সরকারি উদ্যোগ ও কর্মপ্রচেষ্টা যে রূপান্তরের সম্ভাবনাকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে, সে সম্পর্কেও তাঁর বিশ্বাসের কথা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মহারাজা সুহেল দেব রাজকীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং অন্যান্য উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের যুবকদের ক্ষমতায়নে সাহায্য করবে। এরই পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের শিক্ষার পরিবেশেও ইতিবাচক পরিবর্তন বাস্তবায়িত হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছরে উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে এবং যুব সমাজের কাছে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার প্রসারে এই বিনিয়োগ সুফল দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। অযোধ্যায় ঐতিহাসিক রাম মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর রাজ্য সরকার যেভাবে আইনশৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতিকে আরও উন্নত করে তুলেছে, তারও ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। 


PG/SKD/DM



(Release ID: 2013313) Visitor Counter : 44