প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

মহারাষ্ট্রের নাসিকে ২৭ তম জাতীয় যুব উৎসবের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

“পরাধীনতা ও দাসত্বের অধ্যায়ে স্বামী বিবেকানন্দ দেশে নতুন শক্তি ও আশার সঞ্চার করেছিলেন”
“রাম মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে দেশের সব মন্দিরে পরিচ্ছন্নতার অভিযান চলুক”
“সারা বিশ্বের আঙিনায় দক্ষতায় ভরপুর নতুন শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে ভারত ”
“আজকের যুবার সামনে এসেছে ইতিহাস তৈরি করার সুযোগ”
“আজ দেশের ভাবধারা এবং কর্মকাণ্ড যৌবনপ্রাচুর্যে ভরপুর”
“অমৃতকাল ভারতের কাছে গর্বের এক অধ্যায়। ভারতকে ‘বিকশিত ভারত’-এ রূপান্তরিত করার দায়িত্ব নিতে হবে যুব সমাজকে”
“গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যুবাদের আরও অংশগ্রহণ দেশের উজ্জ্বলতর ভবিষ্যতের চাবিকাঠি”
“প্রথমবারের ভোটাররা ভারতীয় গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে পারেন”
“অমৃতকালের ২৫ বছর হল যুবাদের দায়িত্ব পালনের সময়। তরুণ সমাজ কর্মদ্যোগী হলে এগিয়ে চলবে সমাজ ও দেশ”

Posted On: 12 JAN 2024 2:44PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১২ জানুয়ারি , ২০২৪

 

মহারাষ্ট্রের নাসিকে আজ ২৭ তম জাতীয় যুব উৎসবের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বামী বিবেকানন্দ এবং রাজমাতা জিজাউ-এর ছবিতে পুস্পার্ঘ অর্পণ করেন তিনি। ওই রাজ্যের পক্ষ থেকে আয়োজিত কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন তিনি। পরিবেশিত হয় ‘বিকশিত ভারত @২০৪৭- যুবাদের জন্য, যুবাদের দ্বারা’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে প্রদর্শিত হয় রিদমিক জিমন্যাস্টিক্স, মাল্লাখাম, যোগাসন এবং জাতীয় যুব উৎসব সঙ্গীত। 

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি ভারতের যুব শক্তি এবং স্বামী বিবেকানন্দেরর বিশাল ব্যক্তিত্বের প্রতি উৎসর্গীকৃত- যিনি পরাধীনতা ও দাসত্বের সময়ে দেশে নতুন শক্তি ও আশার সঞ্চার করেছিলেন। স্বামীজির জন্মবার্ষিকীতে আয়োজিত জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে তিনি দেশের তরুণ প্রজন্মকে শুভেচ্ছা জানান। ভারতীয় নারীশক্তির অন্যতম মূর্ত রূপ রাজমাতা জিজাবাঈ-এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর প্রতিও শ্রদ্ধা জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহারাষ্ট্রের মাটির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে সাহসিকতার বীজ- যার সুবাদে এসেছেন রাজমাতা জিজাবাঈ, ছত্রপতি শিবাজী, দেবী অহল্যাবাঈ হোলকার, রমাবাঈ আম্বেদকর, লোকমান্য তিলক, বীর সাভারকর, অনন্ত কানহেরে, দাদাসাহেব পোটনিস, চাপেকর বনধু প্রমুখ। নাসিকে পঞ্চবটিতে ভগবান শ্রীরাম দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। ২২ শে জানুয়ারী অযোধ্যায় শ্রীরাম মন্দিরের আসন্ন উদ্বোধন উপলক্ষে দেশের প্রতিটি মন্দিরে পরিচ্ছন্নতার অভিযানের ডাক দেন তিনি।   

যুব শক্তির প্রসঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী অরবিন্দ এবং স্বামী বিবেকানন্দের বাণী থেকে উদ্ধৃতি দেন। ভারত বিশ্বের প্রথম ৫ টি অর্থনীতির মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মের অবদানের উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যতম প্রাণবন্ত স্টার্টআপ বাস্তুতন্ত্র রয়েছে এদেশে। নজিরবিহীন সংখ্যক মেধাস্বত্ত্বের অধিকারী এই দেশ হয়ে উঠেছে বিশ্বের  অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্র। 


‘অমৃতকাল’- এর এই অধ্যায় দেশে যুবাদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এক অধ্যায় বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এম বিশ্বেশ্বরাইয়া, মেজর ধ্যানচাঁদ, ভগৎ সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ, বটুকেশ্বর দত্ত, মহাত্মা ফুলে, সাবিত্রী বাঈ ফুলে-র মতো ব্যক্তিত্বকে সামনে রেখে অমৃতকালে যুবসমাজ এগিয়ে চলুক, এমনটাই চান তিনি। দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ায় যুব সমাজ অবশ্যই সফল হবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয়ী। ‘আমার যুব ভারত পোর্টাল’-এ মাত্র ৭৫ দিনে ১.১০ কোটি যুবক-যুবতীর নাম লেখানো তাঁদের উদ্যমী মনোভাবকেই তুলে ধরে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।  

বিগত ১০ বছরে তাঁর সরকার তরুণ প্রজন্মের সামনে অপার সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ঔদ্যোগিকতা, স্টার্টআপ, দক্ষতা বিকাশ, ক্রীড়াসহ উদীয়মান নানা ক্ষেত্রে তৈরি হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত পরিকাঠামো। এপ্রসঙ্গে তিনি নতুন শিক্ষানীতি এবং পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার আওতায় কোটি কোটি তরুণ-তরুণীর কর্মদক্ষতার প্রসার, নতুন নতুন আইআইটি এবং এনআইটি গড়ে ওঠার প্রসঙ্গও উঠে আসে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বিশ্বের চোখে ভারত হয়ে উঠেছে দক্ষতায় ভরপুর নতুন এক শক্তি। ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, ইটালি, অস্ট্রিয়ার মতো দেশের সঙ্গে ভারতের শ্রমের আদানপ্রদান সংক্রান্ত একাধিক চুক্তি দেশের যুবসমাজের কাছে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে বলে তাঁর মন্তব্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্মের সামনে সম্ভাবনার নতুন নতুন দিগন্ত খুলে দিতে অবিরত কাজ করে চলেছে সরকার। ড্রোন, অ্যানিমেশন, গ্যামিং, ভিস্যুয়াল এফেক্টস থেকে শুরু করে পরমাণু, মহাকাশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবনা এবং কাজের নতুন পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সড়ক নির্মাণ, নতুন ট্রেন, বিশ্বমানের বিমানবন্দর, ডিজিটাল নানা পরিষেবার সুবাদে কর্মক্ষেত্রে যুবক-যুবতীরা নতুন আশার আলো দেখছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দেশের ভাবধারা এবং কর্মকাণ্ড যৌবনপ্রাচুর্যে ভরপুর। তরুণ প্রজন্ম আজ নেতৃস্থানীয় ভূমিকায়। তারই সুবাদে চন্দ্রযান-৩ এবং আদিত্য এল ওয়ান অভিযান সফল হয়েছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি দেশকে উপহার দিয়েছে আইএনএস বিক্রান্ত-এর মতো রণতরী, তেজস যুদ্ধবিমান। ছোটখাটো দোকান থেকে ঝাঁ চকচকে শপিং মল সবখানেই চলছে ইউপিআই-এর মাধ্যমে লেনদেন। গর্বের এই অমৃতকালে দেশকে বিকশিত ভারতের লক্ষ্যপূরণে গিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব বর্তায় যুবসমাজেরই ওপরে। 

সামনে থাকা চ্যালেঞ্জই শুধু পেরিয়ে যাওয়া নয়, নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে এনে তা অতিক্রম করার স্পর্ধার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বহরকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে নিয়ে গিয়ে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ তথা অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্র করে তোলার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা এবং প্রাকৃতিক কৃষির স্বপ্নের বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দেন তিনি।

যুবসমাজের প্রতি তাঁর অগাধ আস্থার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের নবীন প্রজন্ম দাসত্বের মনোভাব থেকে মুক্ত এবং দেশের সেবায় নিবেদিত প্রাণ। উন্নয়নের সঙ্গে জোর দিতে হবে ঐতিহ্য রক্ষায়। ভারতের যোগ এবং আয়ুর্বেদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়ে উঠতে হবে তরুণ-তরুণীদের। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দাসত্বের মনোভাবের কারণেই মিলেটজাত খাদ্যকে একসময়ে খাটো করে দেখা হত। সরকারের সনির্বন্ধ উদ্যোগের সুবাদে আজ হয়ে উঠেছে শ্রী অন্ন-সুপার ফুড। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত হল গণতন্ত্রের মাতা। এই প্রক্রিয়ায় যুবক-যুবতীরা যত বেশি সামিল হবেন ততই দেশের মঙ্গল। পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিকে উপড়ে ফেলতে যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন প্রথমবারের ভোটাররা ভারতীয় গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারেন। 

অমৃতকালের ২৫ বছর যুব সমাজের কাছে দায়িত্ব পালনের সময়- একথা মনে করিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্ম কর্মদ্যোগী হলে এগিয়ে চলবে সমাজ ও দেশ। স্থানীয় ও দেশজ পণ্যের প্রসার, মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, মহিলাদের পক্ষে অবমাননাকর উক্তির প্রতিবাদে যুব সমাজকে সক্রিয় থাকতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।

দেশের যুবারা সর্বশক্তি দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয়ী। ভাষণের শেষে তিনি বলেন, প্রাণচঞ্চল তরুণ প্রজন্ম যে আলোকবর্তিকার সন্ধান দেবেন তা হয়ে উঠবে অনির্বাণ। 
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে, উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ও শ্রী অজিত পাওয়ার, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর, ওই দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী নিশীথ প্রামানিক প্রমুখ। 


PG/ AC /SG




(Release ID: 1995617) Visitor Counter : 120