কর্মী, জন-অভিযোগএবংপেনশনমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

কলকাতায় আগামীকাল জি-২০ দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক এবং এবিষয়ক কর্মীগোষ্ঠীর (ACWG) চূড়ান্ত বৈঠকের আগে পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধীদের মোকাবিলায় জি-২০ দেশগুলির মধ্যে ঐকমত্য চাইছে ভারত, বললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডঃ জিতেন্দ্র সিং

Posted On: 11 AUG 2023 3:30PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১১ই আগস্ট ২০২৩    


    কলকাতায় আগামীকাল জি-২০ দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক এবং এবিষয়ক কর্মীগোষ্ঠীর (ACWG) চূড়ান্ত বৈঠকের আগে পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধীদের মোকাবিলায় জি-২০ দেশগুলির মধ্যে ঐকমত্য চাইছে ভারত- যাতে তাদের প্রত্যর্পণ এবং সম্পদ পুনরুদ্ধারের কাজে গতি আসে। 
দূরদর্শন সংবাদকে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছেন ভারতের কর্মী, জনঅভিযোগ এবং পেনশন দফতরের মন্ত্রী ডঃ জিতেন্দ্র সিং।
ডঃ সিং বলেন, আর্জেন্টিনায় জি-২০ শিখর সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভাষণে এবিষয়ে ৯ দফা প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। বিষয়টিতে আইনি সহযোগিতার মাধ্যমে বেআইনি ভাবে পাওয়া সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা এবং অপরাধী প্রত্যর্পণের কাজে গতি আনার কথা বলেছিলেন তিনি। 
    ডঃ সিং বলেন, অর্থনৈতিক অপরাধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন বহু মানুষ। পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে যখন অপরাধীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। কারণ বিভিন্ন দেশের নিয়ম আলাদা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় যৌথ উদ্যোগের প্রশ্নে ঐকমত্য গড়ে তোলার উদ্যোগ  শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়েও চিন্তা ভাবনা চলছে।
একটি প্রশ্নের জবাবে ডঃ জিতেন্দ্র সিং বলেন, উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশে জি-২০ ACWG-র বৈঠকে দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে লিঙ্গ সংবেদনশীলতার বিষয়ে জি-২০-র দৃষ্টিভঙ্গি সংক্রান্ত আলোচনার আয়োজন করেছে ভারত। সেখানে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। 
জম্মু ও কাশ্মীর সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক জি-২০ বৈঠকের প্রসঙ্গে ডঃ সিং বলেন, ওই সব সমারোহে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের সাফল্যই শুধু তুলে ধরা হয়নি, প্রদর্শিত হয়েছে ভারতের বৈচিত্র্যপূর্ণ সাংস্কৃতিক সম্পদ।
তিনি আরো বলেন, ভারতের আয়োজনে হতে চলেছে জি-২০শীর্ষ সম্মেলন – যা দেশবাসীর কাছে গর্বের বিষয়।এর পেছনে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অবদান। ২০১৪-র ২৬ শে মে তিনি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বিশ্বের আঙিনায় ভারতের ভাবমূর্তি ক্রমশ উজ্জ্বলতর হয়ে উঠছে। 
উল্লেখ্য, কলকাতায় ভারতের সভাপতিত্বে তৃতীয় জি-২০ দুর্নীতি প্রতিরোধী কর্মীগোষ্ঠীর(ACWG) বৈঠক চলছে(৯ থেকে ১১ই আগস্ট)। জি-২০ সদস্যভুক্ত দেশ, ১০ টি আমন্ত্রিত দেশ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের ১৫৪ জনেরও বেশী প্রতিনিধি বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। এর পর ১২ ই আগস্ট বসবে মন্ত্রী পর্যায়ের জি-২০ দুর্নীতি প্রতিরোধী বৈঠক। সেখানে সভাপতিত্ব করবেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী, কর্মী, জন অভিযোগ ও পেনশন তথা পারমাণবিক শক্তি ও মহাকাশ দফতরের মন্ত্রী ডঃ জিতেন্দ্র সিং। এটি হবে জি-২০ দুর্নীতি প্রতিরোধী মন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠক এবং প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে এসংক্রান্ত মন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম বৈঠক। মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আলোচনা দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক উদ্যোগকে জোরদার করবে, কারণ ACWG আন্তর্জাতিক স্তরে দুর্নীতি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
    ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বে ACWG, দুর্নীতি প্রতিরোধে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রশ্নে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। এক্ষেত্রে ২০১৮-য় জি-২০ সদস্যভুক্ত দেশগুলির সামনে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পেশ করা ‘পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সম্পদ পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত ৯ দফা প্রস্তাবনা’ অনুসরণ করা হয়েছে।
    গুরুগ্রাম এবং ঋষিকেশে ACWG-র প্রথম এবং দ্বিতীয় বৈঠকে, গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর নানা বিষয়ে তিনটি সিদ্ধান্তপত্র(উচ্চস্তরীয় নীতি) চূড়ান্ত হওয়ায়, ভারত দুর্নীতি প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রশ্নে মতৈক্যে পৌঁছনোর প্রশ্নে সফল হয়েছে। 
    এসব বাস্তবধর্মী এবং পদক্ষেপভিত্তিক উচ্চস্তরীয় বিভিন্ন অঙ্গীকার  দুর্নীতি প্রতিরোধ, তার উৎস খুঁজে বের করা, এই কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি প্রতিরোধী আন্তর্জাতিক কাঠামো জোরদার করা, অর্থনৈতিক অপরাধীদের প্রত্যর্পণ এবং অন্য দেশ থেকে সম্পদ পুনরুদ্ধারের কাজে গতি আনবে। 
    ‘দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ এবং সংস্থায় দায়বদ্ধতা এবং কার্যকারিতা সংক্রান্ত  নীতিগুলি’ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলির স্বাধীনতা, স্বচ্ছ্বতা এবং দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে একটি দিশা নির্দেশক কাঠামো হয়ে উঠবে। এরফলে দুর্নীতির মূল কারণ চিহ্নিত করে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও দায়বদ্ধতার খামতি মিটিয়ে সঠিক দিশায় এগোনো সম্ভব হবে।
     ‘দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে     সম্পদ পুনরুদ্ধার ব্যবস্থাপনা জোরদার করা সংক্রান্ত উচ্চস্তরীয় নীতিসমূহ’ হল বেআইনি পন্থায় অর্জিত সম্পদ পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে একটি সুবিস্তৃত এবং কার্যকর কাঠামো গড়ে তোলার কাজে সহায়ক একগুচ্ছ দিশা নির্দেশ। এরফলে আর্থিক বেনিয়মে সামিল যেসব অপরাধী ভিন দেশে আশ্রয় নিতে আগ্রহী তাঁদের দমন করা সম্ভব হবে।    
    ‘দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও তথ্য আদানপ্রদান বিষয়ক আইন প্রয়োগ ব্যবস্থাকে জোরদার করা সংক্রান্ত উচ্চস্তরীয় নীতিগুলি’ হল একটি ৬ দফা কর্মসূচি- যার উদ্দেশ্য অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিসরে বিভিন্ন আইনী সংস্থার মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান ও সহযোগিতার বাস্তুতন্ত্র জোরদার করা। এরফলে দুর্নীতিগ্রস্থদের বিরুদ্ধে এবং সম্পদ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সঠিক সময়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত হবে।
    ACWG দুর্নীতি দূর করতে হিসাব নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকার ওপরেও জোর দিচ্ছে। এবছরই আগে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে দুর্নীতির মোকাবিলা এবং লিঙ্গভিত্তিক অনৈতিক কাজকর্ম দূর করায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। মহিলাদের হেনস্থা সংক্রান্ত দুর্নীতির প্রভাব নিয়ে ভারতের সভাপতিত্বে যে আলোচনা শুরু হয়েছে, তা দুর্নীতি প্রতিরোধী কৌশলগত ব্যবস্থাপনায় লিঙ্গ বিষয়ক সংবেদনশীলতা নিয়ে আসায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগের পালে হাওয়া লাগাবে। 
    কলকাতায় তৃতীয় ACWG বৈঠক এই কর্মীগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডে দিশা দেখাবে এবং ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা, সম্পদ পুনরুদ্ধার ব্যবস্থাপনা এবং সামগ্রিকভাবে দুর্নীতি প্রতিরোধী সংস্থাগুলির কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। 
    এই বৈঠক বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমনে জি-২০ সদস্যভুক্ত দেশ, আমন্ত্রিত দেশ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক তথ্য ও রীতির বিষয়ে আদানপ্রদানেরও মঞ্চ হয়ে উঠেছে। নাগরিক সমাজ(C-20), মহিলাদের গোষ্ঠী(W-20), চিন্তন গোষ্ঠী(T-20), শীর্ষ হিসাব নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান(SAI-20), এবং বাণিজ্যগোষ্ঠী (B-20), সহ জি-২০-র বিভিন্ন এনগেজমেন্ট গ্রুপ(EG), G-20  ACWG কে নিজের নিজের অঞ্চলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে গৃহীত সাম্প্রতিক ব্যবস্থাবলী সম্পর্কে অবহিত করবে।
    এই সব আলোচনা ভিত্তি গড়ে দেবে দুর্নীতি প্রতিরোধী মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের। ২০১০-এ এই গোষ্ঠীর সূচনার পর দ্বিতীয় জি-২০ মন্ত্রী পর্যায়ের দুর্নীতি প্রতিরোধী বৈঠক এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।


CG/SNC/PK/AC


(Release ID: 1947859)
Read this release in: English , Urdu , Hindi , Tamil