প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানের সিকারে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন

১.২৫ লক্ষ প্রধানমন্ত্রী কিষান সমৃদ্ধি কেন্দ্র জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন

পিএম কিষান-এর আওতায় প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার ১৪তম কিস্তি প্রদান করেছেন

ডিজিটাল বাণিজ্যের জন্য ওপেন নেটওয়ার্ক (ওএনডিসি)-এ ১,৬০০টি কৃষি পণ্য উৎপাদনকারী সংস্থার সূচনা করেছেন

ইউরিয়া গোল্ড-সালফার কোটেড সারের সূচনা

৫টি নতুন মেডিকেল কলেজের উদ্বোধন এবং ৭টি মেডিকেল কলেজের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

“কেন্দ্রের সরকার কৃষকদের কষ্ট ও চাহিদা বোঝে”

“সরকার সারের দাম নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তায় ফেলবে না। যখন একজন কৃষক সার কিনতে যান তখন তাঁর বিশ্বাস থাকে যে সেখানে মোদীর ভরসা আছে”

“ভারত শুধুমাত্র বিকশিত গ্রামের মাধ্যমেই বিকশিত হতে পারে”

“রাজস্থানে আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি করা আমাদের অগ্রাধিকার”

“আমরা সবাই রাজস্থানের ঐতিহ্য ও গরিমাকে বিশ্ব দরবারে এক নতুন পরিচিতি এনে দেব”

Posted On: 27 JUL 2023 1:03PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৭ জুলাই, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাজস্থানের সিকারে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। যে প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন তার মধ্যে রয়েছে ১.২৫ লক্ষেরও বেশি প্রধানমন্ত্রী কিষান সমৃদ্ধি কেন্দ্র। সালফার যুক্ত ইউরিয়া কোটেডের এক নতুন ধরনের ইউরিয়া গোল্ড সারের সূচনা করেছেন তিনি। ডিজিটাল বাণিজ্যের জন্য ওপেন নেটওয়ার্ক (ওএনডিসি)-এ ১,৬০০টি কৃষক উৎপাদনকারী সংস্থার সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে ৮.৫ কোটি সুবিধাভোগীদের প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মাননিধির আওতায় প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার ১৪তম কিস্তি প্রদান করেছেন। চিতোরগড়, ঢোলপুর, সিরোহি, সিকার এবং শ্রীগঙ্গানগরে ৫টি নতুন মেডিকেল কলেজের উদ্বোধন এবং বারান, বুন্দি, কারাউলি, ঝুনঝুন, সাওয়াই মাধপুর, জয়সলমীর ও টঙ্কে ৭টি মেডিকেল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। উদয়পুর, বাঁশওয়াড়া, প্রতাপগড় এবং ডুঙ্গারপুর জেলায় অবস্থিত ৬টি আবাসিক একলব্য মডেল বিদ্যালয় ও যোধপুরের ত্রিভরিতে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী পিএম কিষান সমৃদ্ধি কেন্দ্রের মডেল ঘুরে দেখেন। জনসমাবেশের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আজকের কর্মসূচিতে যোগদানকারী কোটি কোটি কৃষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শেখওয়াতির বীরভূমি থেকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি চালু করার সুযোগ পাওয়ার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মাননিধির আওতায় কিস্তির টাকা সরাসরি কোটি কোটি কৃষক উপভোক্তাদের কাছে হস্তান্তরের কথা উল্লেখ করেন। দেশে ১.২৫ লক্ষেরও বেশি প্রধানমন্ত্রী কিষান সমৃদ্ধি কেন্দ্র জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করার প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, এতে গ্রাম এবং ব্লকস্তরে কোটি কোটি কৃষক সরাসরি উপকৃত হবেন। তিনি ডিজিটাল বাণিজ্যের জন্য ওপেন নেটওয়ার্কে কৃষি পণ্য উৎপাদনকারী সংস্থা চালু করার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করা সহজ হবে। ইউরিয়া গোল্ড, নতুন মেডিকেল কলেজ এবং একলব্য মডেল বিদ্যালয় চালু করার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। আজকের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণের পাশাপাশি কোটি কোটি কৃষককে অভিনন্দন জানান।

সিকার এবং শেখওয়াতি অঞ্চলের কৃষকদের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কঠোর পরিশ্রমের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শ্রী মোদী বলেন, কেন্দ্রের বর্তমান সরকার কৃষকদের কষ্ট ও চাহিদা বোঝে। কিভাবে বীজ থেকে ফসল বাজারজাত করা যায়, তার নতুন ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে গত ৯ বছরে। তিনি স্মৃচিতারণ করেন যে মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কার্ড প্রকল্পটি ২০১৫ সালে সুরতগড়ে চালু হয়েছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি কৃষক মাটির স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং সেই জ্ঞানের ভিত্তিতে সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ১ লক্ষ ২৫ হাজার প্রধানমন্ত্রী কিষান সমৃদ্ধি কেন্দ্র কৃষকদের সমৃদ্ধির পথ তৈরি করবে। প্রয়োজনে এই কেন্দ্রগুলিকে ওয়ান স্টপ শপ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এই কেন্দ্রগুলি কৃষকদের কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ে উন্নত আধুনিক তথ্য সরবরাহ করবে। সরকারের কৃষি প্রকল্পগুলি বিষয়েও এই কেন্দ্রগুলি সময় মতো তথ্য দেবে। প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের এই কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন এবং সেখান থেকে জ্ঞান লাভের পরামর্শ দেন। শ্রী মোদী জানান, এই বছর শেষ হওয়ার আগে অতিরিক্ত ১.৭৫ লক্ষ প্রধানমন্ত্রী কিষান সমৃদ্ধি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার কৃষকদের খরচ কমাতে এবং তাঁদের প্রয়োজনে সময় মতো সহায়তাদানে আন্তরিকভাবে কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মাননিধির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এটি বিশ্বের বৃহত্তম প্রকল্প, যেখানে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা হস্তান্তর করা হয়। তিনি বলেন, আজকের এই ১৪তম কিস্তি যোগ করলে এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠানো হয়েছে। এতে কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন। তিনি বলেন, দেশে সারের দামের ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ কৃষকদের খরচ বাঁচানোর বিষয়ে এক উদাহরণ। করোনা অতিমারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সার ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। তবে, বর্তমান সরকার দেশের কৃষকদের উপর প্রভাব পড়তে দেয়নি। সারের দাম সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারতে যেখানে এক ব্যাগ সারের দাম ২৬৬ টাকা সেখানে পাকিস্তানে ৮০০, বাংলাদেশে ৭২০, চীনে ২,১০০ এবং আমেরিকায় ৩,০০০ টাকা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সরকার সারের দাম নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তায় ফেলবে না। যখন একজন কৃষক সার কিনতে যান তখন তাঁর বিশ্বাস থাকে যে সেখানে মোদীর ভরসা আছে।” 

প্রধানমন্ত্রী বাজরার বিষয়ে প্রচার এবং শ্রীঅন্ন হিসেবে বাজরার ব্র্যান্ডিং করার মতো পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, শ্রীঅন্ন প্রচারের মাধ্যমে এর উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং রপ্তানি বাড়ছে। সম্প্রতি আমেরিকা সফরে হোয়াইট হাউজের নৈশভোজে বাজরাজাত খাবারের উপস্থিতির কথা স্মরণ করেন তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গ্রামের উন্নয়ন হলেই ভারতের উন্নয়ন সম্ভব। বিকশিত গ্রামের মাধ্যমেই ভারত বিকশিত হতে পারে। সেজন্য সরকার গ্রামে এমন সুযোগ সুবিধা চালু করার বিষয়ে কাজ করছে যা এতদিন শুধু শহরেই পাওয়া যেত।” স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সম্প্রসারণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজস্থানে ৯ বছর আগে মাত্র ১০টি মেডিকেল কলেজ ছিল। আজ এই সংখ্যা বেড়ে ৩৫-এ পৌঁছেছে। এতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নতিলাভ করেছে। মেডিকেল পড়ুয়াদের জন্য মান সম্মত শিক্ষার সুযোগ মিলেছে। তিনি বলেন, আজ যে মেডিকেল কলেজগুলির উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হচ্ছে তাতে এরাজ্যের চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নতিলাভ করবে। চিকিৎসা শিক্ষাকে সহজ করা হচ্ছে। মাতৃ ভাষায় চিকিৎসা শিক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পিছিয়ে পরা বঞ্চিত শ্রেণী মানুষের জন্য এটি বিশেষ পদক্ষেপ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এখন কোনো দরিদ্র্য ব্যক্তির মেয়ে বা ছেলে ইংরেজি না জানার কারণে ডাক্তারি হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে না, এটিও মোদীর নিশ্চয়তা।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক দশক ধরে গ্রামে ভালো বিদ্যালয় এবং শিক্ষার অভাবের কারণে দরিদ্র্যরা পিছিয়ে ছিল। এবিষয়ে দুঃখ্য প্রকাশ করে জানান যে, আগে পিছিয়ে পরা উপজাতি সমাজের শিশুদের স্বপ্ন পূরণের কোনো উপায় ছিল না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়িয়েছে এবং আবাসিক একলব্য বিদ্যালয় খুলেছে। এর মাধ্যমে উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত যুবরা উপকৃত হবেন। 

শ্রী মোদী বলেন, “স্বপ্ন বড় হলেই সফলতা আসে।” রাজস্থান এমন এক রাজ্য যার জাঁকজমক শতকের পর শতক ধরে বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই রাজ্যকে আধুনিক উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ঐতিহ্য সংরক্ষণের উপর জোর দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজস্থানে আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি করা আমাদের অগ্রাধিকার। তিনি গত কয়েক মাসে দুটি হাইটেক এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করেছেন। শ্রী মোদী বলেন, দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়ে এবং অমৃতসর-জামনগর এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে রাজস্থানে উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। রাজ্য থেকে চালু হওয়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, সরকার পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে, পর্যটনের বিকাশ ঘটাচ্ছে। তিনি জানান, এই এক্সপ্রেসওয়ে এবং উন্নত রেল যোগাযোগের সুবিধাকে পর্যটকরা স্বাগত জানাবে। স্বদেশ দর্শন প্রকল্পের আওতায় খাটু শ্যাম জী মন্দিরে সুবিধা সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শ্রী মোদী আশাপ্রকাশ করেন যে, শ্রী খাটু শ্যামের আশীর্বাদে রাজস্থানের উন্নয়ন আরও গতি পাবে। তিনি বলেন, “আমরা সবাই রাজস্থানের ঐতিহ্য ও গরিমাকে বিশ্ব দরবারে এক নতুন পরিচিতি এনে দেব।” 

প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী অশোক গেহলতের সুস্থতা কামনা করেন। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ থাকায় এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।

রাজস্থানের রাজ্যপাল শ্রী কলরাজ মিশ্র, কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, জলশক্তি মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখওয়াত, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী শ্রী মনসুখ মান্ডোভিয়া, আইন ও ন্যায় বিচার মন্ত্রী শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শ্রী কৈলাশ চৌধুরী সহ অন্য ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

AC/SS/SKD



(Release ID: 1947843) Visitor Counter : 157