প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির জ্বালানী মন্ত্রীদের বৈঠকে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

"জ্বালানী ব্যক্তিগত স্তর থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নকে প্রভাবিত করে"

"ভারত জীবাশ্ম বহির্ভূত জ্বালানী ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার নয় বছর আগেই অর্জন করেছে"

"সকলের জন্য সমন্বিত, গতিশীল, সাম্য এবং সুস্থায়ী জ্বালানী নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য"

"পরিবেশবান্ধব গ্রিডগুলির মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবো, ফল স্বরূপ পরিবেশবান্ধব জ্বালানীতে বিনিয়োগ বাড়বে এবং লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে"

"'এক পৃথিবী'-র ভাবনাকে কার্যকর করতে আমাদের উদ্যোগ 'এক পরিবার'-এর স্বার্থকে রক্ষা করবে, এর মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব 'এক ভবিষ্যৎ'-এর দিকে আমরা এগিয়ে যাব"

Posted On: 22 JUL 2023 9:48AM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি,  ২২ জুলাই, ২০২৩

 

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোয়ায় অনুষ্ঠিত জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির জ্বালানী মন্ত্রীদের বৈঠকে ভাষণ দিয়েছেন।

 

সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিদের স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতের সুস্থায়ী উন্নয়নের যে কোন আলোচনা জ্বালানীকে বাদ দিয়ে হয় না। কারণ, জ্বালানী ব্যক্তিগত স্তর থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নকে প্রভাবিত করে।

 

শ্রী মোদী বলেন, জ্বালানী ব্যবহারের পন্থা-পদ্ধতি নিয়ে প্রতিটি দেশ আলাদা আলাদা পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া সত্বেও নির্ধারিত লক্ষ্য যে সকলের এক, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। ভারতের পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন এবং জ্বালানী ব্যবহারের পরিবর্তন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, বিশ্বের সব থেকে জনবহুল এই দেশ দ্রুত বৃহত্তম উন্নয়নশীল অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার জন্য এগিয়ে চলেছে। কিন্তু পরিবেশের প্রতি তার দায়বদ্ধতাকে সে সর্বদাই গুরুত্ব দেয়। ভারত জীবাশ্ম বহির্ভূত জ্বালানী ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৯ বছর আগেই অর্জন করেছে। দেশ নিজেই তার পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে জীবাশ্ম বহির্ভূত জ্বালানীর ব্যবহার ৫০ শতাংশ করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। "সৌরশক্তি এবং বায়ুশক্তি ব্যবহারের নিরিখে বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলির মধ্যে ভারত অন্যতম"। কর্মীগোষ্ঠীর সদস্যরা পাভাগড় সৌরপার্ক এবং মোধেরা সৌরগ্রাম ঘুরে দেখার ফলে ভারতের পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী সংক্রান্ত অঙ্গীকারের বিষয়টি তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

 

গত ৯ বছরে দেশের বিভিন্ন সাফল্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯ কোটিরও বেশি পরিবার আজ রান্নার গ্যাস ব্যবহার করেন। প্রত্যেক গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। তিনি আলোচনায় জানান, পাইপ লাইনের মাধ্যমে রান্নার গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই যাতে ৯০ শতাংশ মানুষ এই পরিষেবা পান, সেই লক্ষ্যে কাজ চলেছে। "সকলের জন্য সমন্বিত, গতিশীল, সাম্য এবং সুস্থায়ী জ্বালানী নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য" ।  

 

শ্রী মোদী জানান, ২০১৫ সালে এলইডি লাইট ব্যবহারের এক প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ভারত এক ছোট্ট আন্দোলনের সূচনা করেছিল। পরবর্তীকালে এই প্রকল্প বিশ্বের বৃহত্তম এলইডি বাল্ব বিতরণ কর্মসূচি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর ফলে, ৪৫০০ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ প্রতি বছর বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে সেচের জন্য ব্যবহৃত পাম্প সৌরচালিত করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটি বিশ্বের আর একটি বৃহত্তম কর্মসূচি। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি প্রতি বছর এক কোটিতে পৌঁছোবে। এবছর পেট্রোলে ২০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। ভারতকে কার্বন নিঃসরণ মুক্ত করতে পরিবেশ বান্ধব হাইড্রোজেন জ্বালানীর ব্যবহার বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক স্তরে হাইড্রোজেন জ্বালানী উৎপাদনে দেশ অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠতে চায়।  

 

সুস্থায়ী এক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ব্যয় সাশ্রয়ী পরিবেশ বান্ধব জ্বালানীর ব্যবহার বাড়ানোর প্রসঙ্গে সারা বিশ্ব বর্তমানে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির দিকে তাকিয়ে রয়েছে। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলির জন্য এক্ষেত্রে এধরনের জ্বালানী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রযুক্তির ব্যবহার সংক্রান্ত ক্ষেত্রের ব্যবধান ঘুঁচিয়ে জ্বালানী নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করতে এসংক্রান্ত সরবরাহ শৃঙ্খলে প্রয়োজনীয় বৈচিত্র নিয়ে আসতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য জ্বালানী সংক্রান্ত যে কোন পদক্ষেপ একসঙ্গে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এক্ষেত্রে হাইড্রোজেনকে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা সঠিক দিশায় এগোচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রীর অভিমত। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন গ্রিডের মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে জ্বালানী সংক্রান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। ভারত মনে করে তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে জ্বালানী ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। "পরিবেশবান্ধব গ্রিডগুলির মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবো, ফল স্বরূপ পরিবেশবান্ধব জ্বালানীতে বিনিয়োগ বাড়বে এবং লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে"। আন্তর্জাতিক সৌরজোটে 'এক সূর্য, এক বিশ্ব, এক গ্রিড' পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগে অংশগ্রহণকারী সকল রাষ্ট্রকে যোগদানের আমন্ত্রণ জানান তিনি।   

 

শ্রী মোদী বলেন, আমাদের চারপাশে যা রয়েছে সেগুলির প্রতি যত্নশীল হওয়া স্বাভাবিক এক বিষয় বা সাংস্কৃতিক চাহিদা অনুযায়ী সেটিই করা হয়। পরিবেশের জন্য জীবনশৈলী - মিশন লাইফকে শক্তিশালী করতে ভারতের চিরায়ত অভ্যাসগুলি সহায়ক। এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা সকলে পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে পারি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের শেষে বলেন, "'এক পৃথিবী'-র ভাবনাকে কার্যকর করতে আমাদের উদ্যোগ 'এক পরিবার'-এর স্বার্থকে রক্ষা করবে, এর মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব 'এক ভবিষ্যৎ'-এর দিকে আমরা এগিয়ে যাব"। কিভাবে সেই পরিবর্তন আমরা নিয়ে আসবো, সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়।  

 

 

CG/CB/AS/



(Release ID: 1941808) Visitor Counter : 98