প্রতিরক্ষামন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত বিশ্ব অর্থনৈতিক মানচিত্রে এক পুনরুত্থিত শক্তি হিসেবে তার নিজের জায়গা ফিরে পাচ্ছে : নতুন দিল্লিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী “প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক বৃদ্ধিকে ফলপ্রদ করছে রেকর্ড উৎপাদন ও রপ্তানি” শ্রী রাজনাথ সিং ভারত@2047 –এর ক্ষেত্রে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী ব্যাখ্যা করেন

Posted On: 02 JUN 2023 1:38PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২ জুন, ২০২৩

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং নতুন দিল্লিতে আজ এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত বিশ্ব অর্থনৈতিক মানচিত্রে এক উদ্ভুত শক্তি হিসেবে নয়, বরং এক পুনরুত্থিত শক্তি হিসেবে নিজের জায়গা ফিরে পাচ্ছে। তিনি তাঁর ভাষণের শুরুতে বলেন, সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত ভারত ছিল এক শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ। বিশ্বের সামগ্রিক উৎপাদনে এক চতুর্থাংশেরই অংশীদার ছিল ভারত। কিন্তু দুর্বল সামরিক ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক দাসত্বের কারণে এই দেশ তার গরিমা হারায়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নিশ্চয়তা ব্যক্ত করে বলেন, সরকার এখন এই সমস্ত ক্ষেত্রে নিরলস কাজ করে চলেছে, যাতে করে ভারত তার হৃত গরিমা ফিরে পায়। তিনি বলেন, শক্তিশালী, তারুন্যমণ্ডিত এবং প্রযুক্তিবান্ধব, সশস্ত্র বাহিনী গড়ার কাজে দেশজ অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং যন্ত্রসামগ্রি তৈরিতে বৃহদাকার প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। সেইসঙ্গেই দাসত্বের মানসিকতা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রেও যাবতীয় প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, “শক্তিশালী সামরিক বাহিনী কেবলমাত্র সীমান্তকেই সুরক্ষিত করে না, তার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি এবং সংস্কৃতিকেও রক্ষা করে। লক্ষ্য হল একটি শক্তিশালী স্বনির্ভর এবং সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তোলা যা নিজের প্রয়োজন মিটিয়েও বন্ধু দেশগুলির প্রয়োজন মেটাতে পারে। এটা এক নবজাগরণের যুগ। ভারতকে বিশ্ব শক্তিধর দেশ হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার সময় এটা।”

মর্গান স্ট্যানলের একটি রিপোর্ট উদ্ধৃত করেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ভারতকে যেখানে ২০১৩ সালে ভঙ্গুর পাঁচটি অর্থনীতির দেশের একটি হিসেবে দেখানো হয়েছিল, সেই বিনিয়োগ সংস্থাই সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ভারত তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধির এটা এক প্রমাণ বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, আশু প্রেক্ষাপটে ভারতকে একটি উদ্ভুত শক্তি হিসেবে দেখা হলেও দীর্ঘমেয়াদী প্রেক্ষাপটে তা এক পুনরুত্থিত শক্তি হিসেবে বিশ্ব অর্থনীতি মানচিত্রে নিজের জায়গা ফিরে পাচ্ছে।

শ্রী রাজনাথ সিং দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির প্রসারে সরকারের গৃহীত সংস্কারমূলক একগুচ্ছ কর্মসূচির উল্লেখ করেন। এর মধ্যে রয়েছে - প্রত্যক্ষ করের সংস্কার, জিএসটি এবং সহজে ব্যবসা বৃদ্ধির পদক্ষেপ সমূহ। সমস্ত ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক রূপান্ত ঘটেছে এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ভারতকে এখন বিনিয়োগের এক উজ্জ্বল গন্তব্য হিসেবে দেখছেন বলে তিনি জানান।

গত কয়েক বছরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের উল্লেখ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, সামরিক অস্ত্রশস্ত্র এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রধান সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে রয়েছে তামিলনাড়ু এবং উত্তরপ্রদেশে প্রতিরক্ষা শিল্প করিডর তৈরির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ৪৪১টি প্রতিরক্ষা সামগ্রির দেশীয়করণ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি এবং ডিপিএসইউ-এর জন্য ৪ হাজার ৬৬৬টি সামগ্রির জন্য আরও চারটি তালিক।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সরকারি প্রয়াসের ফলে যে সদর্থক ফল লাভ করা গেছে তার উপর আলোকপাত করে বলেন, প্রতিরক্ষা উৎপাদন ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাপিয়ে গিয়ে সর্বকালীন রেকর্ড তৈরি করেছে এবং ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে প্রতিরক্ষা রপ্তানি সর্বকালীন বৃহৎ ১৬ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে যাওয়া প্রমাণ করে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এক ব্যাপক বৃদ্ধি। তিনি আরও বলেন, সরকারের তৈরি স্টার্ট আপ বান্ধব পরিমণ্ডল দেশে ১০০টিরও বেশি ইউনিকর্ন গড়ে তুলেছে। সেই সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পদ ও উন্নয়ন এবং নির্মাণ ক্ষেত্র স্টার্ট আপ-এর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধিকে প্রত্যক্ষ করছে।

লালকেল্লার প্রাকার থেকে ২০২২ সালের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার যে লক্ষ্য স্থির করেছেন, তার উল্লেখ করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এই লক্ষ্য পূরণে সরকার স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সড়ক পরিবহন, রেল এবং সীমান্তে উন্নয়ন সমস্ত ক্ষেত্রেই জোর দিচ্ছে।

শ্রী রাজনাথ সিং তাঁর দৃষ্টিভঙ্গীতে ভারত@2047 –এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, এর অন্তর্ভুক্ত এক বৃহৎ সরকারি পরিচালন ব্যবস্থা যা সামাজিক ঐক্যকে সুদৃঢ় করার পাশাপাশি মহিলাদের সম অংশগ্রহণ, কর্মসংস্থানের জন্য সুযোগ সৃষ্টির পরিমণ্ডল গড়ে তোলা এবং যে কোনো মানুষের প্রয়োজনে সাহায্যদানকে তা সুনিশ্চিত করতে পারে। দেশের জনগণের আরও উন্নত জীবনধারণ সুনিশ্চিত করতে বৃহৎ অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর পাশাপাশি তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধির উপরেও জোর দেন। তিনি এমন এক সুচারু বাজার অর্থনীতি গড়ে তোলার কথা বলেন, যেখানে সাধারণ মানুষের ব্যবসা ও কাজের সুযোগ থাকবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, পারিবারিক কারণবশত বা শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধকতার দরুন যাঁরা নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি সেই সমস্ত মানুষদের ক্ষেত্রেও তাঁদের জীবনধারণের মান সুনিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এমন এক কল্যাণকামী রাষ্ট্র, যেখানে সমস্ত মানুষের উন্নত পুষ্টি, আবাসন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করা যাবে। এই সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের জন্য সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রকেই একযোগে কাজ করতে হবে।’ শ্রী সিং বলেন, তিনি এমন এক ভারতের স্বপ্ন দেখেন, যেখানকার মানুষ তাঁদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব করবে, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে সম্মান জানাবে এবং নতুন ধারণাকে জীবনধারণের পাথেয় করে নেবে।

শ্রী রাজনাথ সিং এমন এক উন্নত ভারতের কথা বলেন, যা গণতন্ত্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং বিশ্ব শান্তির ক্ষেত্রে চিরন্তন মূল্যবোধকে সুনিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, “আমরা এমন এক ভারতের স্বপ্ন দেখি যেখানে রাষ্ট্র গঠনের জন্য সমস্ত মানুষ একই মনোভাবাপন্ন হবেন। কোনোরকম ভেদাভেদ ছাড়াই সকল ভারতীয় একযোগে কাজ করবেন। আমরা এমন এক ভারতের স্বপ্ন দেখি, যেখানে জাত ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের বিচার হবে না বরং তাদের জ্ঞান এবং চারিত্রিক পরিকাঠামোয় তাদের নির্ণায়ক হবে। যেখানে মানবাধিকারের সুযোগ থাকবে প্রত্যেক ভারতীয়ের এবং তাঁরা তাঁদের কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠাবান হবেন। এমন এক ভারতের স্বপ্ন দেখি আমরা যে নিজের সক্ষমতা বলে নিজকে রক্ষা করবে এবং বিশ্বের কোথাও কোনোরকম অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।”

CG/AB/SKD


(Release ID: 1929826) Visitor Counter : 373