গ্রামোন্নয়নমন্ত্রক
বর্ষশেষ পর্যালোচনা- ২০২২: গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক
Posted On:
30 DEC 2022 9:48AM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২
২০২২ সালে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক (গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মূল উদ্যোগ এবং সাফল্যের দিকগুলি)
মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা আইন এমজিএনআরইজিএ-তে ১১ কোটি ৩৭ লক্ষ বাড়ি থেকে কর্মসংস্থান সম্ভব হয়েছে এবং ২০২২এ ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৮৯ কোটি ২৪ লক্ষ কর্ম দিবস সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ- (পিএমএওয়াই-জি) ২ কোটি ৫০ লক্ষ বাড়ি মঞ্জুর করা হয়েছে এবং ১৫ ডিসেম্বর ২০২২এর মধ্যে ২ কোটি ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরি হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের মধ্যে ৫২ লক্ষ ৭৮ হাজার বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে ৩১ লক্ষ ৪৩ হাজার বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। দীনদয়াল অন্তদ্বয় যোজনা- জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন (ডেএওয়াই-এনআরএলএম) সমস্ত রাজ্যে এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি (দিল্লি এবং চন্ডীগড় ছাড়া) ৭২৩টি জেলায় ৬ হাজার ৮৬১টি ব্লকে অবদান রয়েছে। গরিব এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়গুলি থেকে ৮ কোটি ৬১ লক্ষ মোহিলাকে ৮১ লক্ষ এসআইজি-র সঙ্গে যুক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা (পিএমজিএসওয়াই)-য় ৩৯ হাজার ৪১৩ কিলোমিটার রাস্তা এবং ১ হাজার ৩৯৪টি ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। ২০২২এ রাজ্যের ভাগগুলি যুক্ত করে এতে ২৩ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। অরএসটিটিআইগুলি ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার জনকে ৩০ নভেম্বর ২০২২এর মধ্যে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এর মধ্যে ২ লক্ষ ৫১ হাজার প্রার্থী উপার্জনের লক্ষে তাদের কাজ বেছে নিয়েছেন। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে ডিডিইউ-জিকেওয়াই কর্মসূচিতে ২০২২এর ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১ লক্ষ ৯ হাজার ২৯৩ জন প্রার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫২ হাজার ৪৫৬ জন কাজ পেয়েছেন।
মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে দক্ষতা নির্ভর নয় এমন শারীরিক কাজে গ্রামীণ এলাকায় প্রত্যেক বাড়ি থেকে চাহিদার ভিত্তিতে প্রতি আর্থিক বছরে কমপক্ষে ১০০ দিনের কাজ দেওয়া হয়ে থাকে। এরফলে একদিকে উৎপাদক সম্পদ সৃষ্টি হয়, তার পাশাপাশি গরিবদের জীবিকা অর্জন এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তিও হয় এবং পঞ্চায়েতী রাজ প্রতিষ্ঠানগুলি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।
মহাত্মা গান্ধী এনআরইজিএ সাফল্য হল গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক জিআইএস পদ্ধতি ব্যবহার করে জল বিভাজিকা তৈরির ক্ষেত্রে তা এক সর্বোত পরিকল্পনাকে সংগঠিত করেছে। ইসরো, মহাকাশ দপ্তর এবং জাতীয় রিমোট সেন্সিং সেন্টার মারফত দ্বার নির্মিত অনলাইন ভিত্তিক পোর্টাল যুক্তধারার মাধ্যমে জিএআইএস ভিত্তিক এই পরিকল্পনা সংগঠিত হয়। জাতীয় ইলেকট্রনিক ফান্ড ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা- এবং প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে মহাত্মা গান্ধী এনআরইজিএ প্রকল্পে শ্রমিকদের মজুরির টাকা সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পোঁছে যায়। গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক এই প্রকল্পে প্রকৃত নজরদারির স্বার্থে সামাজিক অডিটের ব্যবস্থা ২৭টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। জীবিকার ক্ষেত্রে মহাত্মা গান্ধী এনআরইজিএ প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মীদের “উন্নতি” নামক এক প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের দক্ষতার বিকাশ করা হয়ে থাকে। ১১৭টি উচ্চাকাঙ্খী জেলায় ২৫০টি ব্লকে এবং পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলির ৫০টি ব্লকে মহাত্মা গান্ধী এনআরইজিএ প্রকল্পের মাধ্যমে সংগঠিত বিকাশ সাধন সম্ভব হয়েছে। এই প্রকল্পে নতুন বিবিধ উদ্যোগ হল অমৃত সরোবর, জলদূত অ্যাপ এবং ন্যায় পালিকা নিয়োগ করা।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ-এর মূল উদ্দেশ্যই হল সকলের জন্য গৃহকে সুনিশ্চিত করা। এই লক্ষ্যে গ্রামীণ এলাকায় ২০২৪ সালের মধ্যে গৃহহারা অথবা কাঁচা বাড়িতে বা প্রায় ভেঙে পড়া বাড়িগুলিতে বসবাসকারীদের জন্য প্রাথমিক সুবিধা সম্বলিত ২ কোটি ৯৫ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির লক্ষ্যকে সামনে রাখা হয়েছে। ২০২২এর ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ২ কোটি ৪৯ লক্ষ ৮২ হাজার ৭২৯টি বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং ২ কোটি ১১ লক্ষ ১৭ হাজার ১৬৯টি বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। দেশজুড়ে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে অমৃত মহোৎসব উদযাপন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণের কাজকে আরও সচারুভাবে সংগঠিত করার ব্যাপারে অত্যাধুনিক বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনক্রমে এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে সেই মতো নির্দেশিকা কাঠামো সংশোধন করা হয়ে এবং সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে তা পাঠানো হয়েছে। প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের স্বার্থে তা যাতে সুনির্দিষ্ট সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছাতে পারে সেক্ষেত্রে যথাযথ স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য আধার ভিত্তিক পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই প্রকল্পে বরাদ্দ টাকার ধাপ, কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনোর জন্য পিএমএজিওয়াই ড্যাশবোর্ড চালু করা হয়েছে। এর পাশাপাশি যে কোন রকম অভিযোগ সত্বর নিষ্পত্তির জন্য ন্যায় পালিকা নিযুক্ত করা হয়েছে। মহিলা স্বশক্তিকরণের দিকে তাকিয়ে এই প্রকল্পে বাড়ি বরাদ্দ হওয়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের নাম থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সে একক বা যৌথ অধিকারী হতে পারে। ছেলেদের নামে যেসব বাড়িগুলি প্রাথমিক মঞ্জুরি দেওয়া হয়েছে সেক্ষেত্রেও দ্বিতীয় সত্বাধিকারী হিসেবে মহিলাদের নাম থাকা অত্যাবশ্যক করা হয়েছে।
দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক দীনদয়াল অন্তদ্বয় যোজনা- জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন- ডিএওয়াইএনআরএলএম চালু করে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল গ্রামীণ এলাকায় দরিদ্রদের জন্য স্বনিযুক্তি প্রসার এবং এই লক্ষ্যে সংগঠনকে জোরদার করা যাতে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ উদ্যোগ মধ্যে দিয়ে দরিদ্রদের দক্ষতা বিকাশ সম্ভব হয় এবং তাদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রও প্রসার করা সম্ভব হয়। দরিদ্রদের উন্নত জীবিকার স্বার্থে বিশ্বে এটা এক সর্ববৃহৎ উদ্যোগ হিসেবে পরিগণিত। গ্রামীণ দরিদ্রদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ, তাদের সুস্থায়ী জীবিকা অর্জন এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকরণের সঙ্গে সামাজিক বিকাশকে অঙ্গীভূত করা এর অন্যতম লক্ষ্য। সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির (দিল্লি এবং চন্ডীগড় বাদে) ৭২৩টি জেলা ৬ হাজার ৮৬১টি ব্লক এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১৭টি নতুন জেলা ১০১টি ব্লককেও এর সাথে যুক্ত করা হয়েছে। ৮১ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৮ কোটি ৭১ লক্ষ মহিলাকে যুক্ত করা হয়েছে। গোষ্ঠীগত বিনিয়োগ সমর্থন পুঁজি (সিআইএসএফ) হিসেবে ১৯ হাজার ৭০৭ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা গ্রামীণ মহিলাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ২০২২ সালে মোট ৩ হাজার ৮৮৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ব্যাঙ্ক ঋণকে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং চলতি বছরে ৩৫ লক্ষ ৮৭ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী ব্যাঙ্ক মারফত প্রাপ্ত ঋণের পরিমাণ ৮৮ হাজার ৯৫৫ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা। চলতি বছরে অনুৎপাদক সম্পদ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। প্রায় ২৩ শতাংশ থেকে তা হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২.২২ শতাংশে। এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়মিত শোধ করার এটা এক উল্লেখযোগ্য সাফল্যের দিক। লাখপতি মহিলা কৃষক এক বিশেষ উল্লেখযোগ্য দিক। ছোট এবং প্রান্তিক কৃষকরা যাতে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করে অধিক উপার্জনক্ষম হয়ে উঠতে পারেন সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। ২ কোটি ৫০ লক্ষ লাখপতি উদ্যোগের মাধ্যমে আড়াই কোটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তিন বছরের মধ্যে ১ লক্ষ টাকা বার্ষিক উপার্জনে সক্ষম হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে জীবিকা অর্জনের বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে তা সম্ভব হয়েছে। লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রটিকে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও এই লিঙ্গ সমতা যাতে বজায় রাখা হয় তা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। গোষ্ঠীগত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও তা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। ডিএওয়াই-এনআরএলএম চিহ্নিত করেছে ব্যক্তিগত সাফল্য বা সামাজিক সাফল্যের ক্ষেত্রে লিঙ্গ ভিত্তিক হিংসা এক বড় বাধা। তাই এক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যাকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা গ্রামীণ সংযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য দিক। সমস্ত রকম আবহাওয়ার উপযোগী করে এই সড়ক ব্যবস্থা গ্রামীণ ক্ষেত্রে সামাজিক, অর্থনৈতিক বিকাশে এক পরিপূরক দিক হিসেবে দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার বিভিন্ন সময় পরির্বতন ঘটানো হয়েছে এবং ২০১৬ সালে উগ্র বামপন্থা প্রভাবিত ৯টি রাজ্যে ৪৪টি জেলা এবং তার সংলগ্ন এলাকাগুলিতে সড়ক সংযোগ প্রকল্প গড়ে তোলা হয় এবং এর পর ২০১৯এ বিভিন্ন গ্রামীণ বসতিপূর্ণ এলাকা, গ্রামীণ কৃষি বাজার, উচ্চমাধ্যমিক স্কুল এবং হাসপাতাল রয়েছে এই রকম এলাকার মধ্যে দিয়ে পিএমজিএসওয়াই তৃতীয় পর্বে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কিলোমিটার সড়ক সংযোগ গড়ে তোলা হবে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাজ্যগুলির ভাগ নিয়ে ২ লক্ষ ৯০ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭ লক্ষ ২২ হাজার ৭৮০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও চওড়া করা হয়েছে এবং ৭ হাজার ৭৬৩টি ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে।
নতুন গ্রীন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রাস্তা নির্মাণের ফলে তা শক্তি এবং জ্বালানী সাশ্রয়কারী হিসেবে দেখা গেছে। ২০২১ সালে যেখানে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ১৪ হাজার ৩৮৭ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়েছিল, ২০২২এ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৩৮৫ কিলোমিটারে। গ্রামীণ রাস্তায় নতুন প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন এই বিষয় নিয়ে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নতুন দিল্লিতে ২০২২এর ২৪-২৬ মে আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসেবে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে নতুন উপাদান সামগ্রী এবং নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হয়। সমস্ত আবহাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তোলা গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে এই নতুন গ্রীন প্রযুক্তি বিশেষ কার্যকরী হিসেবে দেখা দিচ্ছে এবং মন্ত্রক এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকাও জারি করেছে। রাস্তাগুলি যাতে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে সেজন্য সিমেন্টজাত বস্তুর মিশ্রণ ব্যবহার করা হচ্ছে। তাতে রাস্তা অনেক মোটা হচ্ছে এবং মসৃণ হচ্ছে ও দীর্ঘদিন টেকসই হচ্ছে। আত্মনির্ভর ভারতের প্রতি জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় ভূস্থানিক প্রযুক্তিতে তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং জিআইএস ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ভূ সড়কের মাধ্যমে স্কুল, হাসপাতাল, বাজার প্রভৃতি বিভিন্ন রকম সুবিধা রাস্তার ধারে পাওয়া যাচ্ছে কি না তা ফুটে উঠছে।
দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনার মাধ্যমে জাতীয় গ্রামীণ উপার্জন মিশনে দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচিকে যুক্ত করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর মেক ইন ইন্ডিয়া অভিযানে এই দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচি যাতে ফলদায়ক হিসেবে দেখা দেয় তার সক্রিয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতকে বিশ্বে নির্মাণ হাব হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মেক ইন ইন্ডিয়া অভিযান এক কার্যকরী ব্যবস্থা হিসেবে দেখা দিয়েছে। দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনায় দুটি বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে যেমন- রোশনী কর্মসূচি। ৯টি রাজ্যে উগ্র বামপন্থা অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে এই কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে। এর মাধ্যমে এইসব এলাকায় বসবাসকারীদের দক্ষতা প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা অনন্ত ৪০ শতাংশ নিশ্চিত করা হচ্ছে। দ্বিতীয় হিমায়ত কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১০০ শতাংশ কেন্দ্রীয় অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে সমস্ত যুব সম্প্রদায়কে দক্ষতা বিকাশের প্রশিক্ষণ যোগানো হচ্ছে। দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনার মূল সাফল্যের দিক হল এর শুরু থেকে মোট ১৩ লক্ষ ৭ হাজার প্রার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ৭ লক্ষ ৯০ হাজার প্রার্থীর কর্মসংস্থান হয়েছে। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে ১ লক্ষ ৯ হাজার ২৯৩ জন প্রার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং ২০২২এর ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৫২ হাজার ৪৫৬ জন প্রার্থীর কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে আরও জোরদার করতে প্রার্থীদের স্বার্থে কৌশল পঞ্জী বলে চালু হওয়া একটি অ্যাপে ৩৬ লক্ষ ৩৭ হাজার প্রার্থী নাম নথিভুক্ত করেছেন। তাদেরকে স্বনিযুক্তি সহ বিভিন্ন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
জাতীয় সামাজিক সহায়তা কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হল (এনএসএপি) বৃদ্ধাবস্থা, বিধবা এবং ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের, দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারগুলি একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে তাদের নিকটজনদের আর্থিক সহায়তা প্রদান। এক্ষেত্রে এনএসএপি-র নির্দেশিকা মতো রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি এই চিহ্নিতকরণের কাজ করে থাকে। ৬০-৬৯ বছর বয়সী দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওল্ডেল পেনশন প্রকল্পে ২০০ টাকা, বয়স ৮০ বছর বা তদুর্ধে ৫০০ টাকা। ৪০-৭৯ বছর বয়স পর্যন্ত দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী বিধবাদের ক্ষেত্রে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় ইউডো পেনশন প্রকল্পে ৩০০ টাকা, বয়স ৮০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে ৫০০ টাকা, ১৮-৭৯ বয়সের মধ্যে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি শারীরিকভাবে ৮০ শতাংশ অক্ষম হলে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় ডিজেবিলিটি পেনশন প্রকল্পে ৩০০ টাকা, বয়স ৮০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে হলে ৫০০ টাকা। দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী কোনো পরিবারগুলির ক্ষেত্রে ১৮-৫৯ বছরের মধ্যে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে ওই পরিবারের জীবিত প্রধান ব্যক্তিকে জাতীয় পরিবার সহায়তা প্রকল্প ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে এবং দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী কোনো প্রবীণ নাগরিক বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন না, অন্নপূর্ণা প্রকল্পে ১০ কিলো খাদ্যশস্য দেওয়া হয়। ২০২২এ ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ০১ লক্ষ সুবিধাভোগী রয়েছেন। এক্ষেত্রে তহবিলে বরাদ্দের পরিমাণ ৬ হাজার ৭২৪ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা একটি অনন্য প্রকল্প। এই প্রথম গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে নেতৃত্বের ক্ষমতা গড়ে তোলা এবং সাংসদদের দায়বদ্ধতার বিষয়গুলিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়ে এই প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে। সংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা চালু হয় ২০১৪ সালের ১১ অক্টোবর। প্রথম দিকে এর লক্ষ্য ছিল ২০১৯এর মার্চ মাসের মধ্যে দেশ জুড়ে মডেল গ্রাম পঞ্চায়েত গড়ে তোলা এবং ২০১৯এর মধ্যে তিনটি আদর্শ গ্রাম গড়ে তোলা। ২০১৬ সালে একটি আদর্শ গ্রাম গড়ে ওঠে। ২০২৪-এর মধ্যে ৫টি আদর্শ গ্রাম গড়ে তোলার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এই গ্রামে সুস্বাস্থ্য, স্বচ্ছতা, সবুজায়ন এবং গ্রামের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে সুসম্পর্ক, বিদ্যালয় এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের সুশাসনকে সুনিশ্চিত করা হবে। এক সাংসদের ভূমিকাকে এখানে অনুঘটক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এলাকার সাংসদ পর্যালোচনা বৈঠকে যোগ দেবেন এবং ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের যিনি প্রধান হবেন তাকেও মাসিক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এসএজিওয়াই-এ নিযুক্ত আধিকারিকদের দক্ষতা বিকাশের বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। এর পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সাফল্যের কোনো ঘটনাকে নজির হিসেবে তুলে ধরা, সুসংহত সরকারি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে এসএজিওয়াই অনলাইনে যুক্ত করা প্রভৃতি নানা উদ্যোগ গ্রামীণ বিকাশের স্বার্থে নেওয়া হয়েছে। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক ২০২২এর চৌঠা এবং ৫ আগস্ট দুদিন ব্যাপী একটি প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। তাতে এই এসএজিওয়াই-এর ক্ষেত্রে সাংসদরা কী করে আরো বেশি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হতে পারেন তা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এসএজিওয়াই-এর মাধ্যমে যে সম্পদ সৃষ্টি হয়েছে তার প্রকৃত নির্ণয় এবং বিকাশের জন্য জিও ট্যাগিং অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হয়েছে।
দিশা কমিটি বৈঠকগুলি সংখ্যা বৃদ্ধি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। দপ্তর রাজ্য সরকারগুলি এবং জেলা প্রশাসনগুলিকে নিয়মিত এই জাতীয় বৈঠক আয়োজন করার জন্য বলছে। এর ফলস্বরূপ ২০২২এর ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই জাতীয় বৈঠকের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। দিশা ড্যাশবোর্ডে চিহ্নিত প্রকল্পগুলির সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে, মিটিং রিপোর্টিং মডিউল বলে একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করা হয়েছে যাতে রাজ্য ভিত্তিক তদুপরি জেলা ভিত্তিক দিশা বৈঠকগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। জনসাধারণের জন্য দিশা ড্যাশবোর্ড চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২৩এ এই দিশা ড্যাশবোর্ড জনসাধারণের জন্য চালু হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গ্রামীণ বিকাশের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলির কৃষি ও গ্রামীণ বিকাশের দিকে তালিয়ে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ রুরাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পঞ্চায়েতী রাজ এবং ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অফ রিডিং-এর মধ্যে ২০২২এর ১৭ মার্চ একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়। এছাড়াও মালদ্বীপের লোকাল গভর্নমেন্ট অথরিটির সঙ্গে ২০২২এর দোসরা আগস্ট ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ রুরাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পঞ্চায়েতী রাজ একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করে। এর মূল লক্ষ্য হল স্থানীয় পরিষদগুলি সহ মহিলা উন্নয়ন কমিটি সদস্যদের ছাড়াও পঞ্চায়েত স্তরে কর্মীদের দক্ষতা বিকাশ ঘটানো। এই মন্ত্রকের পদস্থ অফিসাররা বেশ কয়েকবার সরকারি সফরে বিদেশে গেছেন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক বিভিন্ন রকম সাফল্য এবং শিরোপা অর্জন করেছে। সুসংহত গ্রামীণ বিকাশ এবং জীবিকা অর্জনের সুযোগ সম্প্রসারণ এবং গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র অবসানে দায়বদ্ধতার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০২২এ আজিজুল হক রুরাল ডেভেলপমেন্ট মেডেল পেয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি নিয়ে মন্ত্রক বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করেছে এবং বিপর্যয়, ঝুঁকি কমিয়ে আনতে এমজিএনআরইজিএ-র সঙ্গে বাস্তুতন্ত্র ব্যবস্থা গড়ে তোলা, সুস্থায়ী গ্রামোন্নয়নের দিকে তাকিয়ে পরিবেশ বান্ধব বিভিন্ন ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বীকৃত ব্যবস্থাগুলিকে গ্রহণ করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
মিজোরামের আইজল জেলার আইবক ক্লাস্টার শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী রুরবান মিশন-এর অধীন প্রথম ক্লাস্টার বিকাশের সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে। ১১টি গ্রামের মধ্যে ৫২২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠা এই ক্লাস্টারের জনসংখ্যা ১০ হাজার ৯৬৩। এই মিশনের মূল উপলক্ষ্য হল মূল্য শৃঙ্খল গড়ে তোলা এবং বাজারে সুযোগ বৃদ্ধি। কৃষির সঙ্গে সড়ক যোগ, পথচারিদের জন্য ফুটপাত, আন্তঃগ্রাম সড়ক সংযোগ প্রকল্প এই সমস্ত কিছুকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কৃষি প্রসারের সঙ্গে পরিবেশ পর্যটন এবং অন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে সেই সমস্ত জায়গাগুলি স্থানীয় পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে পর্যটনে উৎসাহকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এলাকার স্থানীয় মানুষের জীবিকার উন্নতি সাধন এবং অর্থনৈতিক সাচ্ছন্দ্য গড়ে তোলায় ছিল এর মূল লক্ষ্য। ড্রাগন ফলের চাষ, পোলট্রির কাজ বাড়ানো, পরিবেশ ভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প, নেচার পার্ক গড়ে তোলার মধ্যে দিয়ে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। এর পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুযোগ বৃদ্ধি, সামাজিক পরিকাঠামো, ক্রীড়া পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে এর আরও একটি দিক। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের যৌথ প্রয়াসের পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের সক্রিয় যোগদানের মধ্যে দিয়ে গ্রামীণ বিকাশে এই ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্টের কাজ দ্বিতীয় পর্যায়ে দারিদ্র দূরীকরণের অতিরিক্ত স্থানীয় মানুষের চাহিদা পূরণকে প্রাধান্য দিচ্ছে।
PG/AB/NS
(Release ID: 1887608)
Visitor Counter : 378