জলশক্তি মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

জল জীবন মিশন এবং স্বচ্ছ ভারত মিশন (গ্রামীণ) রূপায়ণে অর্জিত সাফল্যের বিভিন্ন দিক

কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রকের পানীয় জল ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দপ্তরের বর্ষশেষ পর্যালোচনা

Posted On: 27 DEC 2022 7:40PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২

 

কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রকের পানীয় জল ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দপ্তরের কর্মপ্রচেষ্টা ও সাফল্যের আরও একটি বছর প্রায় অতিক্রান্ত। রাজ্যগুলির সহায়তায় কেন্দ্রীয় সরকার আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারে পাইপলাইন মারফৎ জল সরবরাহের এক কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৯-এর ১৫ আগস্ট লালকেল্লার প্রাকার থেকে ‘জল জীবন মিশন’-এর কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ঐ সময় দেশের মোট ১৯ কোটি ৩৫ লক্ষ গ্রামীণ পরিবারগুলির মধ্যে মাত্র ৩ কোটি ২৩ লক্ষ পরিবারে পাইপলাইন মারফৎ জল সরবরাহ করা হত। অর্থাৎ, গ্রামীণ পরিবারগুলির মোট সংখ্যার অনুপাতে এই হার ছিল মাত্র ১৭ শতাংশ। তবে, আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে অবশিষ্ট ১৬ কোটি ১২ লক্ষ গ্রামীণ পরিবারে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ কর্মসূচির কাজ সম্পূর্ণ করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ বছরের ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ কোটি ৭৬ লক্ষেরও বেশি গ্রামীণ পরিবারে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের জন্য সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সংখ্যার নিরিখে এর আনুপাতিক হার হল ৫৫.৬২ শতাংশ। গ্রামীণ পরিবারগুলিতে এইভাবে যে জল সরবরাহ করা হচ্ছে তার গুণগত মান যথেষ্ট উন্নত। গোয়া, তেলেঙ্গানা, গুজরাট ও হরিয়ানা – এই তিনটি রাজ্য এবং পুদুচেরি, দমন ও দিউ এবং দাদরা ও নগর হাভেলি এবং সেইসঙ্গে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ‘হর ঘর জল’ অর্থাৎ, প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারে পাইপলাইন মারফৎ জলের যোগান দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, পাঞ্জাবের ৯৯.৯৩ শতাংশ, হিমাচল প্রদেশের ৯৭.১৭ শতাংশ এবং বিহারের ৯৫.৭৬ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারে আর অল্প দিনের মধ্যেই পানীয় জলের যোগান দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেশ বর্তমানে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব উদযাপনে ব্যস্ত রয়েছে। এরই এক বিশেষ অঙ্গ হিসেবে ১০ কোটি গ্রামীণ পরিবারে গত ১৯ আগস্ট, ২০২২ তারিখের মধ্যে জলের যোগান পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘জল জীবন মিশন’ এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে। গোয়া, তেলেঙ্গানা, গুজরাট, হরিয়ানা, পুদুচেরি, দমন ও দিউ এবং দাদরা ও নগর হাভেলিতে এবং সেইসঙ্গে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারেই পৌঁছে গেছে পানীয় জলের যোগান। আবার, এদিন পর্যন্ত দেশের ১২৫টি জেলা এবং ১ কোটি ৬১ লক্ষ ৭০৪টি গ্রামে ঘরে ঘরে জল পৌঁছে যাওয়ার বার্তাও এসে পৌঁছেছে দপ্তরের কাছে। প্রাপ্ত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘হর ঘর জল’ কর্মসূচি রূপায়ণের ক্ষেত্রে ২০২২-এর জুলাই মাসের সাফল্যের নিরিখে মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুর জেলাটি হল প্রথম। আগস্ট, ২০২২-এ আবার ‘হর ঘর জল’ কর্মসূচি রূপায়ণের ক্ষেত্রে গোয়া এবং দাদরা ও নগর হাভেলি তথা দমন ও দিউ হল এই ধরনেরই একটি সাফল্যের দৃষ্টান্ত। ‘স্বচ্ছ সুজল প্রদেশ’ হিসেবে সাফল্যের তকমা পেয়েছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।

এখনও পর্যন্ত দেশের ৮ লক্ষ ৭৩ হাজার বিদ্যালয় এবং ৯ লক্ষ ২ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পানীয় জলের যোগান দেওয়ার কাজ চালু হয়ে গেছে। এর সাহায্যে হাত-মুখ ধোয়া এবং মিড-ডে মিলের রান্নার কাজও করা হয়। ৫ লক্ষ ১৮ হাজার গ্রামীণ জল ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কমিটি এ পর্যন্ত গঠন করা হয়েছে। পানীয় জল সরবরাহ অক্ষুণ্ণ ও অব্যাহত রাখতে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ গ্রামীণ কর্মপরিকল্পনা। ফিল্ড টেস্ট কিট ব্যবহারের মাধ্যমে জলের গুণগত মান পরীক্ষা করে দেখার জন্য ১ লক্ষ ৯৫ হাজার গ্রামে এ পর্যন্ত ১৬ লক্ষ ২২ হাজার মহিলাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বিভিন্ন পরীক্ষাগারে জলের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ লক্ষ ১৬ হাজার। অন্যদিকে, ফিল্ড টেস্ট কিট ব্যবহারের মাধ্যমে জলের গুণমান পরীক্ষিত হয়েছে ৫৭ লক্ষ ৯৯ হাজার নমুনার ক্ষেত্রে। কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত ‘স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ, ২০২২’ এবং জেজেএম-এর কাজকর্ম সম্পর্কিত ২০২২-এর একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ‘স্বচ্ছ ভারত দিবস’ উদযাপনের প্রাক্কালে। আবার, জল জীবন সর্বেক্ষণ টুল কিট ও ড্যাশবোর্ড, ২০২৩-এর সূচনা করেছেন উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী জগদীপ ধনকড়।

এই প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে দূরদুরান্ত থেকে জল বয়ে নিয়ে আসার কষ্ট ও যন্ত্রণা থেকে দেশের গ্রামাঞ্চলের মা-বোনেদের রক্ষা করেছে ‘জল জীবন মিশন’ – এই সরকারি কর্মসূচিটি।

শিশুদের সুস্বাস্থ্য এবং সার্বিক বিকাশের জন্য নিরাপদ পানীয় জলের প্রয়োজন অনস্বীকার্যভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। ‘জল জীবন মিশন’ এক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপের সূচনা বললে অত্যুক্তি হয় না। বিভিন্ন স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার সুবাদে শিশুদের জলবাহিত অসুখ-বিসুখের হাত থেকেও অনেকাংশে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

শিশুদের উন্নততর স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার বিষয়টির দিকে নজর রেখে ২০২০-র গান্ধী জয়ন্তীর দিনটিতে এক বিশেষ অভিযানের সূচনা করেন জল শক্তি মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। এই অভিযানের মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পানীয় জলের সুযোগ পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঐ জলের সাহায্যে হাত-মুখ ধোয়া, রান্নার কাজ এবং শৌচাগারে তা ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সুফল মিলেছে। সরকারের নিরন্তর কর্মপ্রচেষ্টার ফলে দেশের ৮ লক্ষ ৭২ হাজার অর্থাৎ, ৮৪ শতাংশ স্কুল এবং ৯ লক্ষ ২ হাজার অর্থাৎ, ৮০.৭৯ শতাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পানীয় জলের যোগান দেওয়া সম্ভব হয়েছে। দেশের চারটি রাজ্য এবং পাঁচটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে জলের যোগান দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ১০০ শতাংশ। বাকি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এই কাজ যত দ্রুত সম্ভব সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে জোরদার কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে জলের গুণগত মানের পরীক্ষা ও নজরদারির ওপরও।

‘জল জীবন মিশন’-এর আওতায় ‘হর ঘর জল’ কর্মসূচি রূপায়ণে ২০১৯-২৪ – এই পাঁচ বছরের সময়কালের জন্য বাজেট সংস্থান রয়েছে ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা। পঞ্চম অর্থ কমিশন জল সরবরাহ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কর্মসূচিকে একটি জাতীয় অগ্রাধিকার বলে চিহ্নিত করেছে। ২০২১-২২ থেকে ২০২৫-২৬ – এই সময়কালের জন্য পানীয় জলের যোগান ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কর্মসূচি রূপায়ণে গ্রামীণ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এবং পঞ্চায়েতি রাজ সংস্থাগুলিকে দেওয়া হয়েছে ২.৩৬ লক্ষ কোটি টাকা। মোট বাজেট বরাদ্দের ৬০ শতাংশ অর্থ অর্থাৎ, ১.৪২ লক্ষ কোটি টাকা পানীয় জলের যোগান, বৃষ্টির জল ধরে রাখা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতিসাধন এবং উন্মুক্ত স্থানগুলিকে শৌচকর্মের অভ্যাস থেকে মুক্ত রাখার জন্য দেওয়া হয়। এই কর্মসূচি রূপায়ণের সুবাদে গ্রামীণ জনজীবনে কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে নানাভাবে।

২০২২-২৩ অর্থবর্ষে দেশের ২১টি রাজ্যে ‘জল জীবন মিশন’-এর আওতায় কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে ২২,৯৭৫ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা।

‘জল জীবন মিশন’-এর আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন কর্মপ্রচেষ্টার মধ্যে যুক্ত থাকার জন্য উৎসাহদান। যেমন রাজমিস্ত্রি, মেকানিক, প্লাম্বার, পাম্প অপারেটর, টেকনিশিয়ান, ইউটিলিটি ম্যানেজার এবং জল পরীক্ষাগারের ইনচার্জ হিসেবে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এই মিশনের আওতায়। দক্ষ, অদক্ষ এবং অর্ধ-দক্ষ – সবক’টি ক্ষেত্রেই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এর আওতায়। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণদানেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই সমস্ত কাজে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণদান কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ১০০টির মতো নামী সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও এজেন্সিগুলিকে। কী রিসোর্স সেন্টার হিসেবেই সেগুলিকে কাজে লাগানো হয়েছে। ১০৪টির মতো প্রশিক্ষণ কর্মসূচিরও আয়োজন করা হয় যার মাধ্যমে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৪ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।

‘জল জীবন মিশন’-এর আওতায় কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য ন্যাশনাল ওয়াশ এক্সপার্টদের একটি প্যানেল প্রস্তুত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ড্রিঙ্কিং ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড কোয়ালিটি সংস্থাকে। এ পর্যন্ত ৪৬ জন বিশেষজ্ঞের একটি প্যানেলও তৈরি করা হয়েছে। প্যানেলের সদস্যরা ১,০৩৫টি গ্রাম পরিদর্শন করে সেখানে ‘জল জীবন মিশন’-এর কর্মসূচি রূপায়ণের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় পানীয় জল ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দপ্তর এমন একটি ফোরাম গঠন করেছে যেখানে উন্নয়ন প্রচেষ্টার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন অংশীদারদের নিয়ে আসা হয়েছে। কেন্দ্র, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা প্রসারের মাধ্যমে এই অংশীদাররা ‘জল জীবন মিশন’-এর বিভিন্ন কর্মপ্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এই ফোরামটির নাম দেওয়া হয়েছে রুরাল ওয়াশ পার্টনার্স ফোরাম। এর দ্বিতীয় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় এ বছরের ২ নভেম্বর তারিখে কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের নেতৃত্বে।

জল জীবনের সঙ্গে সকল পক্ষকে যুক্ত করার লক্ষ্যে ২১২টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, বেসরকারি সংগঠন, সমাজ সেবা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং জলের যোগানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পেশাদার সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে সেক্টর পার্টনার্স নামে এক বিশেষ গোষ্ঠী। জল সরবরাহের মতো একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক কর্মসূচি রূপায়ণে যাবতীয় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় কাজ করে যাবে এই গোষ্ঠীটি।

আইআইএম বেঙ্গালুরু, আইআইটি যোধপুর, আইআইটি গুয়াহাটি, টিআইএসএস মুম্বাই এবং আইআইটি কানপুরে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁচটি জল জীবন মিশনের অধ্যাপনার পদ। গ্রামীন জল সরবরাহ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জগুলির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে তার মোকাবিলা কিভাবে করা সম্ভব তার ওপর আলোকপাত করবেন নিযুক্ত অধ্যাপকরা। অন্যদিকে, আইআইটি মাদ্রাজ এবং আইআইটি গান্ধীনগরে জল সম্পর্কে সমীক্ষা ও গবেষণার কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্থাপন করা হয়েছে দুটি উৎকর্ষ কেন্দ্র।

এনসিডিসি থেকে প্রাপ্ত এক প্রতিবেদনে প্রকাশ যে প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারে পানীয় জলের সুযোগ পৌঁছে দেওয়ার ফলে দেশের গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে জলবাহিত রোগের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০১৯ সালে জলবাহিত রোগের সংখ্যা ছিল ১৭৭ লক্ষ। ২০২০-তে তা হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৭৯ লক্ষে। আবার, ২০২১ সালে তা আরও হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ লক্ষে।

পানীয় জলের যোগান এবং জলের গুণমান অক্ষুণ্ণ রাখতে ‘জল জীবন মিশন’-এর আওতায় বিভিন্ন প্রযুক্তিকেও কাজে লাগানো হয়েছে। এই প্রচেষ্টার উল্লেখযোগ্য দিকগুলি হল জলের গুণগত মানের ওপর নজরদারি, জলাধারগুলির মজুত শক্তি বৃদ্ধি করা, জলকে লবণমুক্ত করা, সৌরশক্তির সাহায্যে জল সরবরাহকে নিরন্তর রাখা ইত্যাদি।

জলের সরবরাহ ও বন্টন এবং রাজস্ব অনাদায়কারী জল বন্টন খাতে রাজস্বের ক্ষয়ক্ষতি পূরণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে জল সম্পর্কিত অডিট ও সুরক্ষা পরিকল্পনার মাধ্যমে। প্রযুক্তির ব্যবহার, জলের মিটার বসানো, জলের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণকারী ভাল্‌ভ সংস্থাপন, জল বাজেটের ব্যবস্থা, সার্বিক নজরদারি, জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা এবং জল সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মসূচির সঙ্গে জলের যোগান কর্মসূচিটিকে যুক্ত করা এই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, দীর্ঘমেয়াদে জলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত ব্যাপারে শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ কর্মসূচিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। জলের যোগান ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলাই হল এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

জলের যোগান ও বন্টন সম্পর্কিত অভিযোগগুলির নিষ্পত্তিতে একটি বিশেষ সেলও গঠন করা হয়েছে। সেখানে জল সম্পর্কে কোনও অভিযোগ থাকলে তা জনসাধারণ জানাতে পারেন।

উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী জগদীপ ধনকড় গত ২১ অক্টোবর, ২০২২ তারিখে সূচনা করেছেন ‘জল জীবন সর্বেক্ষণ কর্মসূচি’র। এর উদ্দেশ্য হল দেশের গ্রামাঞ্চলগুলিতে জল জীবনের ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তুলতে বিভিন্ন রাজ্য ও জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাদানের মাধ্যমে এই কাজে সামিল করা।

শুরু হয়েছে ‘স্বচ্ছ জল সে সুরক্ষা’ অভিযানেরও। এর লক্ষ্য হল জলের গুণমান নিশ্চিত করতে সর্বসাধারণের মধ্যে বিশুদ্ধ পানীয় জলের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরা। এই অভিযানের সূচনা হয় ২০২২-এর ২ অক্টোবর তারিখে। এটি চলবে আগামী ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত।

পরিশেষে, যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি ‘জল জীবন মিশন’কে এক কথায় অভিনব এবং অভূতপূর্ব একটি কর্মসূচির মর্যাদা দিয়েছে তা হল এই যে এই কর্মসূচিটি চালু হওয়ার আগে গ্রামীণ ভারতে জল সরবরাহের বিষয়টি ছিল একটি নির্দিষ্ট গ্রাম বা বসবাসের অঞ্চল-ভিত্তিক। কিন্তু সেই ধারণার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে ‘জল জীবন মিশন’ প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারকে জল সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য বলে চিহ্নিত করেছে। দেশের গ্রামীণ মহিলাদের কাছে এর একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব বা তাৎপর্যও রয়েছে। দূরদুরান্ত থেকে জল বয়ে নিয়ে আসার কষ্ট ও যন্ত্রণা থেকে প্রকৃত অর্থেই তাঁদের মুক্তি দিয়েছে এই মিশন। ফলে, মহিলাদের আত্মমর্যাদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বিকাশ বা উন্নয়নের গতিও হয়েছে ত্বরান্বিত। গ্রামীণ ভারতের এই বিশেষ দিকটির কথা চিন্তা করে জল জীবন মিশনের কথা ২০১৯-এর ১৫ আগস্ট তারিখে ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।

এবার আসা যাক ২০২২ বছরটিতে ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন (গ্রামীণ)’-এর উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কথায়। এই কর্মসূচিটির সূচনা হয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত দিয়ে ২ অক্টোবর, ২০১৪ তারিখে। এর মূল লক্ষ্য ছিল উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্মের অভ্যাস থেকে গ্রামবাসীকে মুক্ত করা। মহাত্মা গান্ধী সার্ধশত জন্মবার্ষিকীর দিনটিতে অর্থাৎ, ২০১৯-এর ২ অক্টোবর তারিখের মধ্যে দেশকে এই লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা এর সূচনাকালে চিন্তা করা হয়। স্থির হয় যে এজন্য গ্রামের প্রতিটি পরিবারে শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হবে। আনন্দের বিষয়, দেশের সবক’টি গ্রামই ঐ নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে ঘোষণা করেছে এই কর্মসূচির সফল রূপায়ণের কথা। প্রথম পর্যায়ে এই কাজের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে ১ এপ্রিল, ২০২০ থেকে সূচনা হয়েছে এর দ্বিতীয় পর্যায়ের রূপায়ণ প্রচেষ্টা। দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল কোনও গ্রামই যাতে এর বাইরে না থেকে যায় তা নিশ্চিত করা। এজন্য ২০২৪-২৫ অর্থ বছরটিকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণের বছর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মকাণ্ডের সূচনার পর থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৬৭৭টি গ্রাম এখন সম্পূর্ণভাবে যত্রতত্র শৌচকর্মের অভ্যাস থেকে মুক্ত। ১ জানুয়ারি, ২০২২ থেকে ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একথা জানা গেছে। অন্যদিকে, ঐ একই তারিখ পর্যন্ত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৮১০টি গ্রামকে। আবার, ঐ একই তারিখের মধ্যে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৪২৭টি গ্রামকে নিয়ে আসা হয়েছে তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায়। ২০২২-এর ১ জানুয়ারি থেকে একই বছরের ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ২৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৫৬০টি গ্রামীণ পরিবারে একটি করে শৌচাগার নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। অন্যদিকে, সমষ্টিগতভাবে ব্যবহারের জন্য শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে ১৯,১৬৯টি। ১ জানুয়ারি, ২০২২ থেকে ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য ও পরিসংখ্যান থেকে একথা জানা গেছে। তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মসূচিটিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য ‘সুজলম’ অভিযানেরও সূচনা করা হয়। ‘সজলম-১’ এবং ‘সুজলম-২’-এর অভিযানকালে ২৩ লক্ষেরও বেশি সোকপিটস নির্মাণ করা হয়েছে।

স্বচ্ছ ভারত মিশন (গ্রামীণ) কর্মসূচির আওতায় রূপায়িত হচ্ছে ‘গোবর্ধন’ প্রকল্পও। জানুয়ারি, ২০২২ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৯৬টি সমষ্টিগত জৈব গ্যাস প্রকল্প স্থাপন করা হয়েছে। স্বচ্ছ ভারত মিশন (গ্রামীণ)-এর সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জন্য জানুয়ারি, ২০২২ থেকে এ পর্যন্ত ২,১৯১ জন বিশেষ প্রশিক্ষককে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।

এ বছর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সংগঠিত ‘স্বচ্ছতা হি সেবা’ অভিযানে শ্রমদানের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করে ৯ কোটি ৮১ লক্ষ মানুষ। এর আওতায় ১৪ লক্ষ ৮০ হাজার বর্জ্য স্থান পরিষ্কার করার কাজ শেষ হয়েছে।

স্বচ্ছতা অভিযানে বিভিন্ন রাজ্য, জেলা ও পঞ্চায়েতগুলিকে প্রতিযোগিতামুখী করে তুলতে সূচনা হয়েছে ‘স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ গ্রামীণ কর্মসূচি, ২০২৩’-এর।

উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্মের অভ্যাস থেকে গ্রামবাসীদের বিরত রাখার ক্ষেত্রে দেশের ৪২,১১৫টি গ্রামাঞ্চল আদর্শ গ্রাম রূপে চিহ্নিত হয়েছে। এই তালিকায় উঠে আসতে চলেছে আরও ১৯ হাজার ৭১৮টি গ্রাম। ৮৫,৮৩২টি গ্রাম বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছে এই তালিকায় নিজেদের স্থান করে নেওয়ার জন্য।

স্বচ্ছ ভারত মিশন (গ্রামীণ)-এর বাস্তবায়নে ২০১৪-১৫ থেকে ২০২১-২২ সময়কাল পর্যন্ত ৭৮,৩৬১.৯২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। অন্যদিকে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এ পর্যন্ত এই লক্ষ্যে বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১,৭১৬.২২ কোটি টাকা।

বিভিন্ন রাজ্যের জল সরবরাহ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দপ্তরের মন্ত্রীদের নিয়ে আঞ্চলিক সম্মেলনেরও আয়োজন করা হয় কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রীর পৌরোহিত্যে।

রাজ্য, জেলা, ব্লক এবং গ্রাম পঞ্চায়েত পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের কর্মদক্ষতা আরও উন্নত করতে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও কর্মশালারও আয়োজন করা হয়।

স্বচ্ছ ভারত মিশন (গ্রামীণ)-এর আওতায় ‘স্বচ্ছতা সমাচার’ নামে একটি মাসিক সাময়িকপত্র প্রকাশের সূচনা হয় ২০২২-এর আগস্ট মাসে।

সারা দেশেই এ বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ‘স্বচ্ছতা হি সেবা’ অভিযানের কাজ অব্যাহত রাখা হয়। অন্যদিকে, ‘স্বচ্ছ ভারত দিবস’ উদযাপনের ব্যবস্থা করা হয় নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে এ বছর ২ অক্টোবর তারিখে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতি রাজ দপ্তরের মন্ত্রী শ্রী গিরিরাজ সিং, কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, জল শক্তি ও আদিবাসী বিষয়ক দপ্তরের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী বিশ্বেশ্বর টুডু, কেন্দ্রীয় জল শক্তি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেলও এই উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ‘স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ গ্রামীণ’ এবং ‘জল জীবন মিশন’-এর প্রতিবেদন প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি স্বয়ং। স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে দেশের যে সমস্ত রাজ্য, জেলা ও পঞ্চায়েত শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা অর্জন করেছে তাদের তিনি সম্মানিতও করেন এদিনের অনুষ্ঠানে। স্বচ্ছতা অভিযান এবং সেই সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করেন কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রী।

দেশের রাজ্য, জেলা ও গ্রাম পর্যায়ে স্বচ্ছতা রক্ষার ক্ষেত্রে সুস্থ প্রতিযোগিতার মানসিকতা গড়ে তুলতে এ বছর ২ নভেম্বর সূচনা হয় ‘স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ গ্রামীণ, ২০২৩’ কর্মসূচির। এর আওতায় গ্রাম পঞ্চায়েত ও জেলা পর্যায় থেকে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কিত তথ্য ও পরিসংখ্যান চেয়ে পাঠানো হবে। এ বছর ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ লক্ষ ৮০ হাজার ৬১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এ সম্পর্কিত তথ্য ও পরিসংখ্যান সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে এবং ৩ লক্ষ ২৬ হাজারেরও বেশি গ্রাম এই কাজ এ পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে। জেলাগুলির পক্ষ থেকেও এই তথ্য ও পরিসংখ্যান সংগ্রহের কাজ শুরু করা হবে। কাজকর্মের দিক থেকে শ্রেষ্ঠ জেলাগুলিকে মাসিক এবং ত্রৈমাসিক অগ্রগতির নিরিখে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। যে সমস্ত রাজ্য, জেলা ও পঞ্চায়েতে বেশ ভালোরকম সাফল্য নিশ্চিত করা হবে, সেগুলিকে ২ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠেয় এক জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানে সম্মানিত করা হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারে নিজস্ব একটি করে শৌচাগার গড়ে তোলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। রাজ্যগুলি ইচ্ছা করলে এর বেশি পরিমাণ অর্থ তাদের নিজস্ব কোষাগার থেকে ব্যয় করতে পারে। এই কর্মসূচির আওতায় সমষ্টি শৌচাগার গড়ে তুলতে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকেও। আটটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এবং উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ ও জম্মু ও কাশ্মীরের তিনটি পার্বত্য অঞ্চলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এবাবদ দেওয়া হয় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ সহায়তা। বাকি ১০ শতাংশের ব্যবস্থা করতে হয় সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে। দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের পক্ষ থেকে সহায়তাদানের ক্ষেত্রে ৬০:৪০ – এই অনুপাতকে অনুসরণ করা হয়। অন্যান্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ সহায়তাই দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে।

যে সমস্ত গ্রাম উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্মের অভ্যাস থেকে মুক্ত সেগুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যে সমস্ত গ্রামে কঠিন ও তরল উভয় ধরনেরই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ ও সাফল্যের দৃষ্টান্ত রয়েছে সেগুলিকে ‘উদীয়মান’ বলে চিহ্নিত করা হয়। আবার, যে সমস্ত গ্রামে কঠিন ও তরল – দু’ধরনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ রয়েছে এবং তা কাজে লাগিয়ে এই কর্মসূচি রূপায়ণে বিশেষ অগ্রগতির স্বাক্ষর রেখেছে, সেগুলিকে নিয়ে আসা হয়েছে ‘উজ্জ্বল’-এর আওতায়। আবার, যে গ্রামগুলি স্বচ্ছতা ও পরিচ্ছন্নতার সুবাদে সবদিক দিয়েই বিশেষ সাফল্য দেখিয়েছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘উৎকৃষ্ট’ গ্রাম হিসেবে।

উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা হল রাজ্যের তালিকাভুক্ত একটি কর্মসূচি এবং রাজ্য সরকারগুলির মাধ্যমেই তা রূপায়িত হয়। এই কাজে রাজ্যগুলিকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে থাকে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে গ্রামগুলিকে সবদিক দিয়ে পরিচ্ছন্ন রাখতে রাজ্যগুলির পক্ষে সুবিধা হয়। নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির বাজেট সংস্থান ছাড়াও গ্রামীণ স্থানীয় সংস্থা, এমজিএনআরইজিএস ইত্যাদি খাতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন যে অনুদান দিয়ে থাকে তাকেও প্রয়োজনবোধে কাজে লাগানো যায়। মূলত, কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সফল করে তুলতেই এই অর্থ সদ্ব্যবহারের সুযোগ ও সংস্থান রয়েছে।

 

PG/SKD/DM


(Release ID: 1887101) Visitor Counter : 813