প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

গুজরাটের কেভাডিয়ায় জাতীয় একতা দিবসের প্যারেডে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের অনুবাদ

Posted On: 31 OCT 2022 12:19PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি,  ৩১ অক্টোবর, ২০২২

পুলিশ বিভাগের আমার সহকর্মীরা, এনসিসি ক্যাডেট, শিল্পীরা, স্কুল পড়ুয়ারা এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কেভাডিয়ার একতা নগরে আয়োজিত একতার জন্য দৌড়-এ অংশ নেওয়া ভাই ও বোনেরা অন্যান্য অভ্যাগত ও দেশবাসীগণ!

আমি একতা নগরে রয়েছি, কিন্তু আমার মন রয়েছে মোরবীতে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে। আমি আমার জীবনে খুব কমই এই ধরনের কষ্ট পেয়েছি। একদিকে আমার হৃদয় দুঃখে ভারাক্রান্ত, অন্যদিকে রয়েছে কাজ ও দায়িত্বের পথ। আমি আজ আপনাদের মধ্যে এসেছি কারন এটি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু আমার মন রয়েছে সেইসব পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

আমি এই দুর্ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি জানাই আমার গভীর শোক। দুঃখের এই প্রহরে শোকাহত পরিবারগুলির সঙ্গে সরকার রয়েছে সর্বোতভাবে। গুজরাট সরকার গত সন্ধ্যে থেকে সম্পূর্ণভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে ব্যস্ত। কেন্দ্রীয় সরকারও রাজ্য সরকারকে সাহায্য করছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে। সেনা ও বায়ুসেনা কর্মীরা যোগ দিয়েছেন। যোগ দিয়েছেন উদ্ধারকাজে। হাসপাতালে যাঁরা চিকিৎসাধীন তাঁদেরও যথা সম্ভব দেখভাল করা হচ্ছে। জনগণের কষ্ট কম করাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর গত রাতেই মোরবী পৌঁছান। ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখছেন তিনি। দুর্ঘটনার কারন অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে কোনো ঢিলেমি দেওয়া হবে না বলে দেশবাসীকে আমি আশ্বস্ত করছি। ‘জাতীয় একতা দিবস’ আজ দুঃখের এই সময়ে আমাদের কর্তব্যের পথে অবিচল থাকার অনুপ্রেরণা যোগায়। সর্দার প্যাটেলের ধৈর্য্য ও চরম কঠিন পরিস্থিতিতেও কাজে ব্যস্ত থাকার নীতি থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও তা করবো।

বন্ধুগণ,

২০২২-এর জাতীয় একতা দিবস বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই বছর আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করছি। আমরা নতুন অঙ্গীকারের সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছি। একতা নগরের এই কুচকাওয়াজ আমাদের এই অনুভূতি দেয় যে সকলে যখন একসঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে চলেন তখন অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। আজ দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে কয়েকজন শিল্পীর এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করার কথা ছিল। দেশের বিভিন্ন নৃত্যশৈলী উপস্থাপনের কর্মসূচি স্থির ছিল। কিন্তু গতকালের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর আজকের এই অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হল। আমি এখানে অনুষ্ঠান করার জন্য শিল্পীরা যে কঠোর পরিশ্রম করেছেন সেই দুঃখটি অনুভব করতে পারছি। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে তা সম্ভব হচ্ছে না।

বন্ধুগণ,

পরিবার, সমাজ, গ্রাম, রাজ্য দেশের প্রতিটি স্তরেই সমবেদনা ও নিষ্ঠা জরুরি। আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের প্রতিটি অংশে আজ ৭৫ হাজার একতার দৌড় আয়োজন করা হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ এতে অংশ নিচ্ছেন। দেশবাসী লৌহপুরুষ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের সংকল্প থেকে প্রেরণা নিতে পারে। আজ দেশবাসী দেশের জন্য একতা ও অখন্ডতার অঙ্গীকার গ্রহণ করছে। 

বন্ধুগণ,

কেভাডিয়ার একতা নগরে স্ট্যাচু অফ ইউনিটির সামনে জাতীয় একতা দিবসের অনুষ্ঠান আমাদের অবিরাম এটাই মনে করায় যে স্বাধীনতার সময় যদি সর্দার প্যাটেলের মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্ব না থাকতো তাহলি কী হতো? আমরা সেইসময় বর্তমান ভারতের কথা কল্পনাও করতে পারিনি। অসম্ভব কঠিন এই কাজ সম্পন্ন করেছেন সর্দার প্যাটেল।

বন্ধুগণ,

সর্দার সাহেবের জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় একদা দিবস আমাদের জন্য কেবল একটি অনুষ্ঠান নয়, একতা ভারতের জন্য কখনই বাধ্য-বাধকতা নয়, একতা সর্বদাই ভারতের বিশেষত্ব। ভারতবাসীর মনে একতার যে বীজ রয়েছে তা সমগ্র দেশবাসীকে একত্রে দাঁড় করায়। গতকাল যখন মোরবীতে দুর্ঘটনা হয়েছে তখন সারা দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তা কামনা করেছেন। করোনাও আমাদের কাছে এক বিশাল উদাহরণ। যেভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকলে এই অতিমারীর মোকাবিলা করেছে তা উল্লেখযোগ্য। দেশের কোনো ক্রীড়াবীদ যখন অলিম্পিক বা ক্রিকেট ম্যাচে সাফল্য অর্জন করে, সমগ্র দেশ তখন আনন্দিত হয়। উদযাপনের আঙ্গিক ভিন্ন হলেও আমাদের ভাবনা এক।

এবং বন্ধুগণ,

দেশের এই একাত্মতা বোধ শত্রুদের বার বার পরাজিত করে। কেবলমাত্র এখন নয়, শত শত বছর আগেও ভারতের একতা শত্রুপক্ষকে দুর্বল করে দিয়েছে। তাই বিদেশীরা দেশ ভাগের চেষ্টা চালিয়েছে বারে বারে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে কারন, অতীতের মতো এখনও দেশের অখন্ডতা বিনষ্টকারী শক্তি মাঝে মাঝেই মাথাচারা দিয়ে ওঠে।

ভাই ও বোনেরা,

আমাদের আরো একটি কথা মনে রাখতে হবে, দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্ত হতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা ভারত মাতার সন্তান। সর্দার সাহেব যে দায়িত্ব আমাদের ওপর দিয়েছিলেন আজ জাতীয় একতা দিবস উপলক্ষে আমি তাকে ফের মনে করাতে চাই। দেশে বর্তমানে অভিন্ন নীতি কার্যকর হয়েছে। সবকা সাথ সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস এই মন্ত্রের মাধ্যমে চলছে উন্নয়নের কাজ।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছেন। বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সব প্রকল্পের সুবিধা যেন সকলের কাছে পৌঁছায়। এটিই ছিল সর্দার প্যাটেলের স্বপ্নের ভারত যেখানে সকলের কাছে সমান সুযোগ থাকবে এবং সকলে সমান মানসিকতা নিয়ে চলবে।

বন্ধুগণ,

গত ৮ বছরে দেশ সমাজের প্রতিটি অংশের মানুষকে সমান গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই এখন জন জাতীয় গৌরব দিবস উদযাপন করা হয়ে। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ভূমিকা তুলে ধরতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হচ্ছে।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশে একটি প্রবাদ আছে ऐक्यं बलं समाजस्य तद्भावे स दुर्बलः। तस्मात् ऐक्यं प्रशंसन्ति दृढं राष्ट्र हितैषिणः॥ এটি হল আমাদের সমাজের শক্তি। একতা নগর ভারতের মডেল সিটির মতো করে তৈরি হচ্ছে যা শুধুমাত্র দেশের নয়, বিশ্বের জন্য উদাহরণ। বিশ্বের বৃহত্তম মুক্তির স্ট্যাচু অফ ইউনিটি এখানে স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে একতা নগর ভারতের অন্যতম বিশেষ শহর হয়ে উঠতে চলেছে। এখানে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি আলোর ব্যবহার করা হয়েছে। স্বচ্ছ যানবাহন ব্যবস্থাও রয়েছে। বন ও পশুপাখি সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও একতা নগরের স্থান বিশেষ। গুজরাট সরকারের কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে তারা স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করেছেন। আমি নিশ্চিত যে সর্দার সাহেবের অনুপ্রেরণা জাতীয় একতা বজায় রাখতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করবে। একসঙ্গে আমরা মজবুত ভারত গঠনের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো। এই বিশ্বাসের সঙ্গেই আমি আপনাদের কাছে আবেদন জানাই। আমার সঙ্গে বলুন অমর রহে, অমর রহে, আমি যখন বলবো সর্দার প্যাটেল

সর্দার প্যাটেল- অমর রহে, অমর রহে!

সর্দার প্যাটেল- অমর রহে, অমর রহে!

সর্দার প্যাটেল- অমর রহে, অমর রহে!

ভারত মাতা কি জয়!

ভারত মাতা কি জয়!

 

PG/PM/NS


(Release ID: 1873535) Visitor Counter : 108