প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

ভারতে সুজুকির ৪০ বছর : এক বিশেষ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী

মারুতি-সুজুকির সাফল্য ভারত-জাপান অংশীদারিত্বের সম্পর্ককেই চিহ্নিত করে – বললেন তিনি

Posted On: 28 AUG 2022 6:52PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৮ আগস্ট ২০২২

ভারতীয় পরিবারগুলিতে সুজুকির নাম আজ পরিচিত দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে। মারুতি-সুজুকির এই সাফল্য ভারত-জাপান অংশীদারিত্বের বন্ধনকেই চিহ্নিত করে। গত আট বছরে ভারত ও জাপানের মধ্যে সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে গুজরাট-মহারাষ্ট্রের বুলেট ট্রেন থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের বেনারসে ‘রুদ্রাক্ষ কেন্দ্র’-এর মতো বহু উন্নয়ন প্রকল্পই ভারত-জাপান মৈত্রী সম্পর্কের পরিচয় বহন করে। মৈত্রী সম্পর্কের কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় যে প্রত্যেক ভারতীয়ই জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী স্বর্গীয় শিনজো আবে-কে নিশ্চিতভাবেই স্মরণ করে।

 ‘ভারতে সুজুকির ৪০ বছর’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য উপস্থাপনাকালে আজ একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। গুজরাটের গান্ধীনগরের মহাত্মা মন্দিরে আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারতে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মিঃ সাতোশি সুজুকি, সুজুকি সুজুকি মোটর কর্পোরেশনের ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট মিঃ ও সুজুকি, সুজুকি মোটর কর্পোরেশনের প্রেসিডেন্ট মিঃ টি সুজুকি এবং মারুতি-সুজুকির চেয়ারম্যান শ্রী আর সি ভার্গব। এছাড়াও, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, সাংসদ শ্রী সি আর পাতিল রাজ্যের মন্ত্রী শ্রী জগদীশ পাঞ্চাল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভাষণ দেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মনোহর লাল। জাপানের প্রধানমন্ত্রী মিঃ ফুমিও কিশিদা-র একটি ভিডিও বার্তাও ছিল এদিনের অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ।

শ্রী মোদী তাঁর ভাষণে আরও বলেন, গুজরাটে সুজুকির উপস্থিতি আজ থেকে ১৩ বছর আগে। জাপানের সঙ্গে গুজরাটের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি এক সময় গুজরাটকে একটি মিনি জাপানে রূপান্তরিত করার সঙ্কল্প গ্রহণ করেছিলেন। ২০০৯-এ ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’ শীর্ষ সম্মেলনকালে একটি সহযোগী রাষ্ট্র হিসেবে যোগ দিয়েছিল জাপান। গুজরাটে জাপানি বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করতে তিনি যে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, একথারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন যে তাঁর সঙ্কল্প পূরণে অনেক ব্যবস্থাই তখন গ্রহণ করা হয়েছিল। বিশ্বমানের বেশ কয়েকটি গলফ কোর্স ও জাপানি খাদ্য সম্ভারের রেস্তোরাঁ স্থাপন ছাড়াও গুজরাটে জাপানি ভাষার প্রসার তারই কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত।

শ্রী মোদী বলেন, জাপানের প্রতি আমরা বরাবরই আন্তরিক ও শ্রদ্ধাশীল। এই কারণেই সুজুকি সহ ১২৫টি জাপানি সংস্থা বর্তমানে গুজরাটে কাজ করে চলেছে। গুজরাটের উন্নয়নের যাত্রাপথে ‘কাইজেন’-এর অবদানের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরেও ‘কাইজেন’-এর প্রয়োগ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। বৈদ্যুতিক যানের বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই ধরনের দু’চাকা বা চারচাকার যানে কোনরকম শব্দ বা আওয়াজ থাকে না। এইভাবে নিঃশব্দে কাজ করে যাওয়া প্রযুক্তির একটি দিকমাত্র শুধু নয়, সেইসঙ্গে দেশে নিঃশব্দ বিপ্লবেরও এক বিশেষ সূচনা। বৈদ্যুতিক যানের বিপণনের জন্য অনুকূল পরিস্থিতির স্বার্থে এই ধরনের যানে ক্রেতাদের নানা রকম সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে যেমন, আয়করের ক্ষেত্রে রিবেট এবং ঋণ গ্রহণ প্রক্রিয়ার সরলীকরণ। বৈদ্যুতিক যানগুলির চার্জিং পরিকাঠামো গড়ে তুলতেও বেশ কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিওপি-২৬-এ ভারত ঘোষণা করেছে যে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে অ-জীবাশ্ম উৎস থেকে কারণ, আগামী ২০৭০ সালের মধ্যে বাতাসে কার্বন নির্গমনের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে আমাদের। জৈব-জ্বালানি, ইথানল মিশ্রণ এবং মিশ্র জ্বালানি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মারুতি-সুজুকি সমীক্ষা ও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। কম্প্রেসড বায়ো-মিথেন গ্যাস সম্পর্কিত প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য সুজুকির কর্ণধারদের কাছে প্রস্তাব রাখেন প্রধানমন্ত্রী। ‘অমৃতকাল’-এর পরবর্তী ২৫ বছরে জ্বালানি ক্ষেত্রে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তোলাই যে তাঁর সরকারের লক্ষ্য, একথাও বিশেষ জোর দিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী মিঃ ফুমিও কিশিদা তাঁর ভিডিও বার্তায় বলেন যে ভারতে মারুতি-সুজুকির দীর্ঘ ৪০ বছরের উপস্থিতি দু’দেশের সুদৃঢ় অর্থনৈতিক সম্পর্কের সাক্ষ্যই বহন করে। ভারতের বাজারে বাণিজ্যিক প্রসারের যে বিশেষ সম্ভাবনা রয়েছে একথা তুলে ধরার জন্য সুজুকির পরিচালন কর্তৃপক্ষের ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি। এই সাফল্যের পেছনে ভারতের সরকার ও জনসাধারণের যে অকুন্ঠ সাহায্য ও সমর্থন রয়েছে, একথারও উল্লেখ করেন মিঃ ফুমিও কিশিদা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশ প্রচেষ্টায় বিশেষ গতি সঞ্চার ঘটেছে। সুজুকি ছাড়াও অন্যান্য বহু জাপানি সংস্থা বর্তমানে ভারতে বিনিয়োগের প্রসার ঘটাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ভারত ও জাপানের দীর্ঘ পারস্পরিক সম্পর্কের এটি ৭০তম বছর। সেইদিক দিয়েও এই বছরটি যে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, একথার উল্লেখ করে মিঃ কিশিদা বলেন, শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তিনিও স্থিরসঙ্কল্প ভারত-জাপান কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বকে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করতে।

PG/SKD/DM



(Release ID: 1855248) Visitor Counter : 112