স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ ব্যতিক্রমী পরিষেবা প্রদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আসাম পুলিশকে প্রেসিডেন্টস কালারস সম্মানে ভূষিত করেছেন
Posted On:
10 MAY 2022 6:40PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১০ই মে, ২০২২
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ ব্যতিক্রমী পরিষেবা প্রদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আসাম পুলিশকে ১০ই মে গুয়াহাটিতে প্রেসিডেন্টস কালারস সম্মানে ভূষিত করেছেন। অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং আসাম পুলিশের মহানির্দেশক সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শ্রী শাহ বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে আসাম পুলিশের সঙ্গে এই ঐতিহাসিক মুহুর্তে থাকার সুযোগ পেয়ে তিনি আনন্দিত। দেশের মধ্যে দশম পুলিশ বাহিনী হিসেবে আসাম পুলিশ এই সম্মান অর্জন করল। যে কোনো পুলিশ বাহিনীর জন্য প্রেসিডেন্টস কালারস সম্মান প্রাপ্তি একটি ব্যতিক্রমী সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়। আসাম পুলিশ সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হল, যা আসামের জন্য অত্যন্ত গর্বের। আসাম পুলিশের মতো দেশে অন্য কোনো পুলিশ বাহিনী এত বেশি প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় নি, আসাম রাইফেলস ভারতের প্রাচীনতম জঙ্গি বিরোধী বাহিনী। আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আসামে সন্ত্রাসবাদের অবসান হতে চলেছে। কেন্দ্র, জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করছে। সে দিন আর বেশি দেরি নেই, যখন আসামে কোনো জঙ্গি সংগঠন আর থাকবে না। বিপথগামী যুবক যুবতীরা তাদের অস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসছেন। প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে আসামের সাত দশকের বেশি সময় ধরে যে সীমান্ত বিবাদ চলছে, তার অবসান ঘটানোর জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ আফস্পা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। আগে সশস্ত্র বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হত। আজ আসাম সরকার রাজ্যের যুবক যুবতীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও উন্নয়নের জন্য বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করছে।
শ্রী শাহ বলেন, “২০২১ –এর চৌঠা সেপ্টেম্বর আমার উপস্থিতিতে কার্বি গোষ্ঠীর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ঐ অঞ্চল সফর করেছেন। সেই সময় ঐ চুক্তির বিভিন্ন শর্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। আফস্পার কারণে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। সম্প্রতি নাগাল্যান্ড, আসাম ও মণিপুরে আফস্পা নিয়ন্ত্রিত উপদ্রুত অঞ্চল কমানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে আফস্পা আসামে বলবৎ হয়েছে। এরপর ৬০ বার এই আইন প্রয়োগের জন্য় সময়সীমা বাড়ানো হয়। আমি গর্বিত যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ৮ বছরের শাসনকালে ২৩টি জেলা থেকে আফস্পা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং আসামের একটি জেলা থেকে তা আংশিক প্রত্যাহৃত হয়েছে। আজ আসামের মোট ভূ-ভাগের ৬০ শতাংশ এলাকাকে আমরা আফস্পা মুক্ত করতে পেরেছি। আমি মনে করি সে দিন আর দেরি নেই, যখন সমস্ত আসাম থেকে আফস্পা প্রত্যাহার করা হবে।“
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাম পুলিশের উল্লেখ্যযোগ্য সাফল্যের কথা তার ভাষণে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিদেশী শক্তির সাহায্যপুষ্ট শক্তির বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আসাম পুলিশ জয়লাভ করেছে। এই বাহিনী দেশ ভাগের ভয়াবহতা, সম্প্রদায়িক দাঙ্গা, উদ্বাস্তু সমস্যা, সাত দশকের অনুপ্রবেশজনিত সমস্যা এবং ১৯৮০ থেকে ৯০ সময়কালে জঙ্গিবাদ সমস্যার মোকাবিলা করেছে। আসাম পুলিশ বিভিন্ন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছে, দেশের সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করার জন্য বাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করেছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বাহিনীর সদস্যরা গৌরবজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছেন। শ্রী শাহ বলেন, “আমি সমস্ত জাতির পক্ষ থেকে অস্ত্র, গোরু ও মাদক চোরাচালান এবং মানব পাচারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাত দশক ধরে আসাম পুলিশ যে নিরন্তর যুদ্ধ চালিয়ে জয়লাভ করেছে, তার জন্য বাহিনীর মহানির্দেশক থেকে কনিষ্ঠতম কনস্টেবল পর্যন্ত, সকলকে অভিনন্দন জানাই।“ আসাম পুলিশের ৮৮৬ জন সদস্য শহীদ হয়েছেন। বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের সাহসিকতার স্বীকৃতি স্বরূপ দুটি কীর্তি চক্র, চারটি রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক এবং ১৯টি পুলিশ পদক পেয়েছে। জঙ্গিবাদের মোকাবিলা করার সময় আসাম পুলিশ সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা পালন করেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য বিপথগামী যুবক যুবতীদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধীর বিরুদ্ধে লড়াই করে সমাজকে নানা কুসংস্কার থেকে মুক্ত করেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নেতৃত্বে মাদক চোরাচালান ও গন্ডারের চোরাশিকার প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনী বিশেষ সাফল্য অর্জন করেছে। গন্ডারের চোরাশিকার আটকাতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা একনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।দীর্ঘ সময় ধরে চলা প্রাণহানী ও জঙ্গিবাদের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে এখন শান্তি ফিরে এসেছে। ভ্রাতৃত্ববোধ ও সংস্কৃতির সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন যাত্রা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, “আসাম পুলিশের প্রেসিডেন্টস কালারস সম্মান প্রাপ্তি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এর মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর মনোবল বাড়বে। দেশের সীমান্ত রক্ষা ও আসামের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বজায় রাখার কাজে বাহিনীর সদস্যদের মনোবল বাড়বে।”
শ্রী শাহ বলেন, আসাম পুলিশ মাদক চোরাচালন ও গন্ডারের চোরাশিকার রুখতে ২৮৩৪টি মামলা রুজু করেছে। প্রায় ৫০০০ জন এই ঘটনাগুলিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে। গত এক বছরে রাজ্য পুলিশ একাজে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে বলেও শ্রী শাহ মন্তব্য করেছেন।
CG/CB/SFS
(Release ID: 1824376)
Visitor Counter : 195