নয়াদিল্লি, ৩১ মার্চ, ২০২২

ভোজ্য তেলের ক্রমবর্ধমান দাম কমাতে সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করেছে।এতে সমস্ত ভোজ্য তেল ও তৈল বীজের মজুত সীমা এবং ২০১৬ সালের নির্দিষ্ট খাদ্য দ্রব্য আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক নির্দেশ সংশোধন করা হয়েছে। চলতি বছরের ৩০শে মার্চ এই নির্দেশিকায় সমস্ত রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে চলতি বছরের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সমস্ত ভোজ্যতেল ও তৈল বীজের মজুত সীমা বাড়ানো হয়েছে। এই নির্দেশ চলতি বছরের পয়লা এপ্রিল থেকে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

এর আগে সরকার চলতি বছরের তেসরা ফেব্রুয়ারি এক নির্দেশিকার মাধ্যমে ভোজ্যতেল ও তৈল বীজের উপর ৩০শে জুন পর্যন্ত মজুত সীমা আরোপ করেছিল। এখন তা বাড়িয়ে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে উত্তর প্রদেশ, কর্ণাটক, হিমাচল প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান ও বিহার – এই ৬টি রাজ্য, কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুসারে নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা জারি করে চলতি বছরের ৮ই অক্টোবর পর্যন্ত ভোজ্যতেল ও তৈল বীজের মজুত সীমা বাড়িয়েছিল। এখন সেগুলিও এই কেন্দ্রীয় নির্দেশিকার আওতায় চলে আসবে। 

বিশ্বব্যাপী বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ভোজ্যতেলের ঊর্ধ্বমুখী দামের প্রবণতা নিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইউক্রেন থেকে সূর্যমুখী তেল সরবরাহের চাপে ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি নীতির উপর প্রভাব ফেলেছে। এতে পাম তেল আমদানি প্রভাবিত হয়েছে। এছাড়াও, দক্ষিণ আমেরিকায় ফসলে ক্ষতির কারণে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এতে সয়াবিন তেল সরবরাহ প্রভাবিত হয়েছে। ফলে, সয়াবিন তেলের আন্তর্জাতিক দাম ক্রমশই বাড়ছে। সয়াবিন তেলের আন্তর্জাতিক মূল্য মাসে ৫.০৫ শতাংশ এবং বছরে ৪২.২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত পাম তেলের আন্তর্জাতিক দাম ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। 

ভোজ্যতেলের মজুতসীমা খুচরো বিক্রেতাদের জন্য ৩০ ক্যুইন্টাল, পাইকারি বিক্রেতাদের জন্য ৫০০ ক্যুইন্টাল, একাধিক গ্রাহকের ক্রয়ের সুবিধা যোগ্য খুচরো বিক্রেতাদের জন্য ৩০ ক্যুইন্টাল এবং ডিপোগুলির জন্য ১ হাজার ক্যুইন্টাল হবে। ভোজ্যতেল প্রক্রিয়াকারকরা তাদের মজুত/উৎপাদন ক্ষমতা অনুযায়ী  ৯০ দিনের মজুত রাখতে পারবে। অন্যদিকে, ভোজ্য তৈল বীজের মজুত সীমা খুচরো বিক্রেতাদের জন্য ১০০ ক্যুইন্টাল এবং পাইকারি বিক্রেতাদের জন্য ২ হাজার ক্যুইন্টাল হবে। ভোজ্য তৈলবীজ প্রক্রিয়াকারকরা দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা অনুযায়ী ৯০ দিনে ভোজ্য তৈলবীজ মজুত করতে পারবে। এই পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাজারে অনৈতিক উপায়ে মজুত ও কালো বাজারি হ্রাস পাবে এবং ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

CG/SS/SB