স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আজ জম্মুতে কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) ৮৩তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে যোগ দেন

Posted On: 19 MAR 2022 5:20PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি,  ১৯ মার্চ, ২০২২
 
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আজ জম্মুতে কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) ৮৩তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে যোগ দেন। এই উপলক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিআরপিএফ-এর কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল শ্রী মনোজ সিনহা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ জিতেন্দ্র সিং, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এই প্রথম সিআরপিএফ-এর প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান দিল্লির বাইরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 
 
প্রতিষ্ঠা দিবসের ভাষণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সমস্ত কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর বার্ষিক কুচকাওয়াজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আর এটা করা হয়েছে যাতে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী যারা দেশের সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বজায় রাখার কাজে যুক্ত তারা যাতে বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ও সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে পারে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের অঙ্গ হিসেবে সিআরপিএফ-এর বার্ষিক কুচকাওয়াজ ঐতিহাসিক জম্মু শহরে আয়োজন করা হয়েছে। 
 
শ্রী শাহ বলেন, এই জম্মু ও কাশ্মীর থেকেই পন্ডিত প্রেমনাথ ডোগরা ও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় একথা বলে প্রতিবাদ করেছিলেন যে, কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই, ভারতের দু-জন প্রধান, দুটি চিহ্ন ও দুটি আইন থাকতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সুদক্ষ নেতৃত্বে সারা দেশে একজন প্রধান, একটি চিহ্ন এবং একটি আইন - যা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও পন্ডিত প্রেমনাথ ডোগরা কল্পনা করেছিলেন, তা এখন বাস্তবায়িত হয়েছে।  
 
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সিআরপিএফ-এর প্রতিষ্ঠার সময় থেকে আজ পর্যন্ত ২,৩৪০ জন জওয়ান দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। আমি শহীদ এই জওয়ানদের দেশবাসীর পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। ভারতের ইতিহাস যখন লেখা হবে, বাহিনীর এই ২,৩৪০ জন জওয়ানের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। শ্রী শাহ বলেন, "আমি সেই সমস্ত পরিবারগুলিকে একথা বলতে চাই, যারা নিজের সন্তান বা স্বামী অথবা ভাইকে হারিয়েছেন, সেই শহীদদের আত্মবলিদান কখনও ব্যর্থ হবে না। এমনকি, দেশ শহীদ এই জওয়ানদের কয়েক যুগ স্মরণে রাখবে।"
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশ ও দেশবাসীর নিরাপত্তার বিষয়টিকে সিআরপিএফ সর্বদাই অগ্রভাগে রেখেছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দেশ ও দেশবাসীর নিরাপত্তার যে ঐতিহ্য সিআরপিএফ গড়ে তুলেছে, তা আগামী দিনেও একই আন্তরিকতা নিয়ে আজকের জওয়ানরাও অব্যাহত রাখবেন। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, বাহিনীর জওয়ানদের যখন যেখানেই পাঠানো হয়েছে, মানুষ তখনই বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে, পরিস্থিতি এবার নিয়ন্ত্রণে আসা সময়ের অপেক্ষা। প্রকৃতপক্ষে বাহিনীর নিরলস প্রয়াস ও গৌরবময় ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করেই মানুষের মনে এই বিশ্বাসের উদয় হয়েছে। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নকশাল অধ্যুষিত এলাকাই হোক বা কাশ্মীরে পাক-মদতপুষ্ট জঙ্গিদের মুখোমুখি হওয়া অথবা উত্তর পূর্বে বিভিন্ন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী দমনে শান্তি প্রতিষ্ঠাই হোক - সিআরপিএফ সর্বত্রই প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৫০-এর আজকের দিনে দেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও লৌহমানব সর্দার প্যাটেল সিআরপিএফ-কে তার পতাকা অর্পণ করেছিলেন। আজ সিআরপিএফ দেশের বৃহত্তম সশস্ত্র বাহিনী, যেখানে ২৪৬টি ব্যাটেলিয়ন এবং ৩ লক্ষ ২৫ হাজার জওয়ান রয়েছেন। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজ বাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবসে কিভাবে আমরা সেই কথা ভুলতে পারি, যখন ১৯৫৯-এর ২১ অক্টোবর চীনা বাহিনী হট স্প্রিং-এ আক্রমণ চালিয়েছিল এবং অল্প সংখ্যক সিআরপিএফ জওয়ান দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় শৌর্যের সঙ্গে চীনা বাহিনীর মোকাবিলা করে দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। এই ঘটনার কথা স্মরণে রেখে ২১ অক্টোবর দিনটি পুলিশ দিবস হিসেবে পালিত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১৯৬৫-র ৯ এপ্রিলের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, কচ্ছে সর্দার পোস্টে পাকিস্তানের পদাতিক ব্রিগেড আক্রমণ চালায় এবং সিআরপিএফ-এর জওয়ানরা শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান। দেশের ভূখন্ডের সুরক্ষায় জওয়ানদের এই আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। শুধু তাই নয়, ভারতের ইতিহাসে এই দুটি আক্রমণের ঘটনা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। 
 
শ্রী শাহ বলেন, ১৯৯০-এ নকশাল অধ্যুষিত এলাকায়, উত্তর পূর্বের বিভিন্ন প্রান্তে এবং কাশ্মীরে পাক-মদতপুষ্ট জঙ্গিদের আক্রমণ ও হিংসার ঘটনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। ঠিক তখন, দেশবাসী যখন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, সেই পরিস্থিতিতে সিআরপিএফ দেশকে দুর্বল করে তোলার বিভিন্ন অশুভ শক্তিকে দমনে অগ্রসর হয়। নির্বাচনে নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলার কথা উল্লেখ করে শ্রী শাহ বলেন, বিধানসভাই হোক বা লোকসভার নির্বাচন উভয় ক্ষেত্রেই যদি কোন সশস্ত্র বাহিনী সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করে থাকে, তাহলে তা সিআরপিএফ-এর জওয়ানরাই করে থাকেন। কেবল দেশের ভূখন্ড ও নির্বাচনে নিরাপত্তাই নয়, দেশে গণতন্ত্রের সুরক্ষার জন্যও সিআরপিএফ-এর বড় ভূমিকা রয়েছে। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আজাদি কি অমৃত মহোৎসবের এই বর্ষে প্রধানমন্ত্রী ১৩০ কোটি দেশবাসীর কাছে একটি লক্ষ্য স্থির করেছেন। আর সেটি হল, দেশ যখন স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করবে, তখন ভারত যেন বিশ্বের অন্যতম রাষ্ট্র হয়ে উঠতে পারে। প্রধানমন্ত্রী দেশকে ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার লক্ষ্য স্থির করেছেন। এপ্রসঙ্গে শ্রী শাহ বলেন, ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতি তখনই হয়ে উঠা সম্ভব, যখন দেশে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও মজবুত হয়ে উঠবে এবং সিআরপিএফ যখন এক্ষেত্রে আরও বড় ভূমিকা নেবে। আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের সময়কালে এই লক্ষ্য পূরণে সিআরপিএফ-এর একটি ভবিষ্যৎ রূপরেখা প্রণয়ন জরুরী হয়ে উঠেছে বলেও শ্রী শাহ অভিমত প্রকাশ করেন। 
 
শ্রী শাহ বলেন, আজ আমি জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলতে চাই। ২০১৪-তে শ্রী নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতিতে বড় পরিবর্তন হয়েছে। এখন জম্মু ও কাশ্মীরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাজকর্ম সম্পাদন শুরু হয়েছে। আজ জম্মু-কাশ্মীর ও সারা দেশের কাছে এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, ৩০ হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অঙ্গ হয়ে উঠেছেন। এরফলে, এখানকার গ্রামগুলি উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। জেলা পর্যায়ে ও মহকুমা পর্যায়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। একেবারে তৃণমূলস্তরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কার্যকর করতে পেরে নরেন্দ্র মোদী সরকার বড় সাফল্য পেয়েছে। সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর দলিত, অনগ্রসর শ্রেণী, মহিলা ও পার্বত্য এলাকার মানুষ যারা দীর্ঘদিন উন্নয়নের ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন, তারা এখন আইন ও শাসন ব্যবস্থার মূলস্রোতে যুক্ত হয়েছেন। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম সক্ষম হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলে শিল্পোন্নয়ন শুরু হয়েছে। এর ফলে, ৩৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসছে। জম্মু ও কাশ্মীরে প্রায় প্রতিটি পরিবারের কাছে আয়ুষ্মান ভারত কার্ড পৌঁছে গেছে। সড়ক নির্মাণে রেকর্ড অগ্রগতি হয়েছে। ৭টি নতুন মেডিকেল কলেজ এবং এইমসের ধাঁচে দুটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। একই ভাবে, ২১টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর সরকার প্রায় প্রতিটি পর্যায়ে স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। স্বাধীনতার পর প্রথম জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন দুর্নীতি দমনে বড় অভিযান গ্রহণ করেছে। এগুলি সবই জম্মু ও কাশ্মীরে উন্নয়নের ধারাকে ত্বরান্বিত করছে। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিআরপিএফ-এর জন্য সারা দেশ গর্বিত। অভ্যন্তরীণ ও দেশের নিরাপত্তায় বাহিনীর ৩ লক্ষ ২৫ হাজার জওয়ানের কাছে আজকের প্রতিষ্ঠা দিবস নিজেদেরকে পুনরায় উৎসর্গ করার সুযোগ এনে দিয়েছে। 
 
 
CG/BD/AS/

(Release ID: 1807351) Visitor Counter : 222