প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
গুজরাটে ১১তম খেল মহাকুম্ভ-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
Posted On:
12 MAR 2022 10:11PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১২ মার্চ, ২০২২
নমস্কার!
ভারতমাতার জয়!
গুজরাটের রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রতজি, এই রাজ্যের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলজি, সংসদে আমার সাথী এবং প্রদেশ ভারতীয় জনতা পার্টির অধ্যক্ষ শ্রী সি.আর.পাটিলজি, গুজরাট সরকারের ক্রীড়ামন্ত্রী শ্রী হর্ষ সাঙ্ঘভিজি, সংসদে আমার সহযোগী শ্রী হংসমুখ ভাই প্যাটেল, শ্রী নরহরি আমিনজি এবং আমেদাবাদের মেয়র ভাই শ্রী কিরীট কুমার পারমারজি, অন্যান্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ এবং গুজরাটের নানা প্রান্ত থেকে সমাগত আমার নবীন বন্ধুরা!
আমার সামনে এই নবীন প্রজন্মের উৎসাহের এই সমুদ্র, এই উদ্দীপনা, এই উৎসাহের ঢেউ এটা স্পষ্টভাবে বলছে যে গুজরাটের নবীন প্রজন্ম, আপনারা সবাই এখন আকাশ ছোঁয়ার জন্য প্রস্তুত। সেজন্যে এটা শুধুই খেল মহাকুম্ভ নয়, এটি গুজরাটের যুবশক্তিরও একটি মহাকুম্ভ। আমি আপনাদের মতো সমস্ত যুবক-যুবতীকে এই একাদশ খেল মহাকুম্ভের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। আমি গুজরাট সরকারকে বিশেষ করে, এই রাজ্যের যশস্বী মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র ভাই প্যাটেলজিকেও এই সুন্দর আয়োজনের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। করোনার কারণে দু’বছর ধরে এই খেল মহাকুম্ভে ব্রেক লেগেছিল। কিন্তু ভূপেন্দ্র ভাই যে পারিপাট্যের সঙ্গে আবার এই খেল মহাকুম্ভের আয়োজন শুরু করেছেন তা রাজ্যের নবীন খেলোয়াড়দের নতুন উৎসাহে টইটম্বুর করে তুলেছে।
বন্ধুগণ,
আমার মনে আছে, ১২ বছর আগে, ২০১০ সালে, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী রূপে আমার শাসনকালে এই খেল মহাকুম্ভের সূত্রপাত করেছিলাম, আর আজ আমি বলতে পারি, যে স্বপ্নগুলি নিয়ে আমি এই বীজ বপন করেছিলাম, আজ তাকে বটবৃক্ষে পরিণত হতে দেখছি। এই বীজকে আমি আজ এত বড় বটগাছের আকার নিতে দেখছি। ২০১০-এ প্রথম ‘খেল মহাকুম্ভ’ গুজরাটের ১৬টি খেলায় ১৩ লক্ষ খেলোয়াড়কে নিয়ে সূত্রপাত হয়েছিল। আমাকে ভূপেন্দ্র ভাই বলেছেন যে ২০১৯-এর খেল মহাকুম্ভের অংশীদারিত্ব ১৩ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষে পৌঁছে গিয়েছিল। ৩৬টি খেলা আর ২৬টি প্যারা-স্পোর্টর্স-এ ৪০ লক্ষ খেলোয়াড়! কাবাডি, খোখো এবং টাগ-অফ-ওয়ার থেকে শুরু করে যোগাসন এবং মল্লখম্ভ পর্যন্ত, স্কেটিং এবং টেনিস থেকে শুরু করে ফেন্সিং পর্যন্ত প্রত্যেক খেলায় আমাদের যুবক-যুবতীরা আজ অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিচ্ছেন; আর আজ শুনলাম যে, এবার এই পরিসংখ্যান ৪০ লক্ষ ছাপিয়ে ৫৫ লক্ষে পৌঁছে যাচ্ছে। ‘শক্তিদূত’-এর মতো কর্মসূচির মাধ্যমে খেল মহাকুম্ভে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের দিকে সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্বও সরকার নিচ্ছে। আজ যে এই ক্রমাগত, অবিরাম প্রচেষ্টা চলছে, এই যে খেলোয়াড়েরা সাধনা করছেন তা সুফলদায়ক হবেই। আমরা সবাই জানি, যখন খেলোয়াড়রা উন্নতি করেন তখন তার পেছনে একটি দীর্ঘ তপস্যা থাকে। যে সঙ্কল্প গুজরাটের মানুষ মিলেমিশে নিয়েছিল তা আজ বিশ্বে নিজের জয় পতাকা উড়িয়ে চলেছে।
আমার নবীন বন্ধুরা,
গুজরাটের এই যুবশক্তির জন্য আমি গর্বিত। গুজরাটের খেলোয়াড়রা পরাক্রম দেখাচ্ছেন। সেজন্য আপনাদের গর্ব হচ্ছে না? খেল মহাকুম্ভ থেকে যাঁরা উৎকর্ষের প্রমাণ দিয়ে উত্তীর্ণ হচ্ছেন, তাঁরা অলিম্পিক, কমনওয়েলথ এবং এশিয়ান গেমস সহ অনেক আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে আজ দেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন। গুজরাটের নবীন প্রজন্ম নিজেদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন। এরকম অসংখ্য প্রতিভা এবারের মহাকুম্ভ থেকেও আপনাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসবে। এই মহাকুম্ভ খেলোয়াড় যুবক-যুবতীদের তৈরি করে। খেলার মাঠ থেকে তাঁরা উঠে আসেন, আর বিজয়ী হয়ে ভারতের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা সারা পৃথিবীতে উড়িয়ে আসেন।
বন্ধুগণ,
একটা সময় ছিল যখন ক্রীড়া জগতে ভারতের পরিচয় শুধুই একটা-দুটো খেলার ভরসায় টিকে ছিল। এর ফল হল, যে খেলাগুলি দেশের প্রকৃত গৌরব এবং পরিচয় বহন করত, সেগুলিকেও গুলিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে, ক্রীড়ার সঙ্গে যুক্ত সম্পদ বৃদ্ধি, ক্রীড়া পরিকাঠামোকে আধুনিক করে তোলার দিকে যতটা নজর দেওয়া উচিৎ ছিল, যতটা অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ ছিল, তা এক প্রকার থেমে গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, যেমন রাজনীতিতে স্বজনপোষণ, ভাই-ভাতিজাবাদ ঢুকে গিয়েছিল, ক্রীড়া জগতেও তেমনই খেলোয়াড়দের নির্বাচনের সময় স্বচ্ছতার অভাব অসাফল্যের একটি অনেক বড় কারণ ছিল। মেধাবী খেলোয়াড়দের সমস্ত প্রতিভা বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়তেই লড়তেই শেষ হয়ে যেত। সেই দুর্নীতির পাক থেকে বেরিয়ে এসে আজ ভারতের যুব সম্প্রদায় আকাশ স্পর্শ করছেন। গোল্ড এবং সিলভারের চমক দেশের আত্মবিশ্বাসকেও চমকে দিয়েছে আর এই চমৎকারের অভিজ্ঞতাও সবাই অনুভব করছেন। বিশ্বের সবচাইতে বড় যুব দেশ ক্রীড়া ময়দানে একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষে প্রতিপন্ন হয়ে উঠছে। টোকিও অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক্স–এ সব ক্ষেত্রে আমাদের খেলোয়াড়রা এই পরিবর্তনকে প্রমাণ করে দিয়েছেন। টোকিও অলিম্পিকে ভারত প্রথমবার সাতটি মেডেল জিতেছে। কিছুদিন পর এরকম রেকর্ড ভারতের পুত্র-কন্যারা টোকিও প্যারালিম্পিক্সেও তৈরি করেছে। ভারত এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ১৯টি পদক জিতেছে। কিন্তু বন্ধুগণ, এটা তো কেবল সূত্রপাত। ভারত আর থামবে না। ভারত আর ক্লান্ত হবে না। আমি আমার দেশের যুবশক্তিকে ভরসা করি। আমি আমার দেশের যুব সম্প্রদায়ের তপস্যাকে ভরসা করি। দেশের যুব খেলোয়াড়দের স্বপ্ন, সঙ্কল্প এবং সমর্পণের ওপর আমার ভরসা রয়েছে। সেজন্য আজ আমি লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীকে সামনে রেখে হিম্মত দেখিয়ে বলছি যে ভারতের যুবশক্তি এই সাফল্যের ধারাবাহিকতাকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেদিন দূরে নেই যখন আমরা অনেক খেলায়, অনেক স্বর্ণপদক একসঙ্গে জেতা দেশগুলির তালিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবো; ভারতের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকাও পতপত করে উড়তে থাকবে।
বন্ধুগণ,
এবার ইউক্রেন থেকে যে নবীন প্রজন্মের মানুষেরা ফিরে এসেছেন, তাঁরা যুদ্ধের ময়দান থেকে ফিরে এসেছেন। বোমা ও গোলার মাঝখান দিয়ে এসেছেন। কিন্তু এখানে এসে ওঁরা কী বললেন? তাঁরা একথা বললেন যে আজ ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকার মান-মর্যাদা কেমন, একথা আমরা ইউক্রেনে অনুভব করেছি। কিন্তু বন্ধুগণ, আমি একটি দৃশ্যের দিকে আপনাদেরকে নিয়ে যেতে চাই। যখন আমাদের খেলোয়াড়রা মেডেল পাওয়ার জন্য পডিয়ামে দাঁড়িয়ে থাকেন, আর যখন ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা দেখা গেলেও আপনাদের রাষ্ট্রগান থাকে, আপনারা টিভিতে খেলা দেখেন, আমাদের খেলোয়াড়দেরও চোখে হাসি আছে। গর্বের কান্না তাঁদের দু’গাল বেয়ে বয়ে যায়। এটাই হল প্রকৃত দেশভক্তি।
বন্ধুগণ,
ভারতের মতো যুব দেশকে দিশা দেখানোর জন্য আপনাদের মতো সমস্ত যুবক-যুবতীদের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। আমাদের যুব সম্প্রদায়ই আগামীকালকে গড়তে পারেন আর তাঁরাই গড়তে পারেন। সেজন্য তাঁরা সঙ্কল্প গ্রহণ করেন, আর সঙ্কল্পের পাশাপাশি সমর্পণ ভাব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আজ এই খেল মহাকুম্ভে গুজরাটের ভিন্ন ভিন্ন এলাকা থেকে, অনেক শহর ও আধা-শহর অঞ্চল থেকে আপনারা লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী এখানে একসঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আপনারা নিজেদের স্বপ্নগুলি বাস্তবায়নের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন। আমি আপনাদের স্বপ্নে, আপনাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি, আপনাদের জেলার ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি। আমি আপনাদের স্বপ্ন থেকে সম্পূর্ণ গুজরাট এবং দেশের ভবিষ্যৎ দেখছি,আর দেখতে পাচ্ছি যে, আজ ‘স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া’ থেকে শুরু করে ‘স্ট্যান্ড-আপ ইন্ডিয়া’ পর্যন্ত, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ থেকে শুরু করে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ পর্যন্ত আর ‘লোকাল ফর ভোকাল’ পর্যন্ত নতুন ভারতের প্রত্যেক অভিযানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভারতের যুব সম্প্রদায় নিজেদের অনেকটাই উচ্চতায় তুলেছে। আমাদের যুব সম্প্রদায় ভারতের সামর্থ্যকে প্রমাণ করে দেখিয়েছে।
আমার নবীন বন্ধুরা,
আজ সফটওয়্যার থেকে শুরু করে স্পেস বা মহাকাশ পর্যন্ত, প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পর্যন্ত – প্রত্যেক ক্ষেত্রে ভারতের প্রাধান্য রয়েছে। বিশ্ববাসী ভারতকে একটি বড় শক্তি রূপে দেখছে। ভারতের এই শক্তিকে ‘স্পোর্টর্স স্পিরিট’ অনেকগুণ বাড়াতে পারে। এটাই আপনাদের সাফল্যেরও চাবিকাঠি। আমি সেজন্য সব সময়ই বলি, “যো খেলে, ওহি খিলে” বা যাঁরা খেলেন, তাঁরাই প্রস্ফুটিত হন। আপনাদের মতো সমস্ত যুবক-যুবতীদের প্রতি আমার একটি পরামর্শ। সাফল্যের জন্য কখনও শর্টকাট খুঁজবেন না। আপনারা রেলের প্ল্যাটফর্মে হয়তো লক্ষ্য করেছেন, কিছু মানুষ সেতুর ওপর দিয়ে না গিয়ে রেললাইন ক্রস করে যান। ওটা তো আসলে রেলওয়েওয়ালাদের জন্য হয়। “শর্টকাট উইল কাট ইউ শর্ট”। যাঁরা শর্টকাট নিতে চান, তাঁদেরকে শর্টকাট ছোট করে দেয়। এই শর্টকাটের পথ অনেক ক্ষণজীবী হয়।
বন্ধুগণ,
সাফল্যের একটাই মাত্র মন্ত্র রয়েছে। সেটি হল – ‘লং টার্ম প্ল্যানিং’ বা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আর ‘কন্টিনিউয়াস কমিটমেন্ট’ বা ক্রমাগত দায়বদ্ধতা পালন। কোনও জয় আমাদের শেষ পর্যায় হতে পারে না, কোনও পরাজয়ও আমাদের শেষ পর্যায় হয় না। আমাদের সকলের জন্য আমাদের বেদ-এ লেখা রয়েছে – “চরৈবেতি চরৈবেতি!” আজ দেশও অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে কোনভাবে না থেমে, ক্লান্ত না হয়ে, না ঝুঁকে এগিয়ে চলেছে। আমাদের সবাইকে মিলেমিশে, সততঃ পরিশ্রমের মাধ্যমে ক্রমাগত এগিয়ে যেতে হবে।
বন্ধুগণ,
খেলার মাঠে আমাদের জেতার জন্য ৩০০ ডিগ্রি দক্ষতার সঙ্গে পারফর্ম করার প্রয়োজন হয়, আর গোটা দলকে এই পারফর্ম করতে হয়। এখানে ভালো ভালো স্পোর্টর্সম্যান উপস্থিত রয়েছেন। আপনারা বলুন যে ক্রিকেটে যদি কোনও টিম ভালো ব্যাটিং করে, কিন্তু বোলিং খুব খারাপভাবে করে, তাহলে কী কখনও জিততে পারবে? জয়ী দলকে প্রতিটি খেলা অনেক ভালো খেলে, খেলার সমস্ত বিভাগে ভালো পারফর্ম করে তবেই যতটা সম্ভব জেতার জন্য উন্মুখ থাকতে হয়। গোটা টিমকে ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং-এর সব জায়গায় ভালোভাবে খেলতে হয়।
বন্ধুগণ,
ভারতকে খেলায় সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেওয়ার জন্যও আজ দেশেই ৩৬০ ডিগ্রি টিমওয়ার্কের প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য দেশের একটি হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ রয়েছে যা ভালোভাবে কাজ করছে। ‘খেলো ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি এই প্রচেষ্টার একটি বড় উদাহরণ। আগে আমাদের যুব প্রতিভারা চাপা থেকে যেত। তারা কোনও সুযোগ পেত না। আমরা দেশের এই প্রতিভাগুলিকে অন্বেষণ করা, শনাক্ত করা আর তাদের সমস্ত রকম সহযোগিতা প্রদান করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও আমাদের যুব সম্প্রদায় প্ল্যানিং-এর অভাবে পিছিয়ে পড়ত। আজ খেলোয়াড়দের উন্নত থেকে উন্নততর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা দেওয়া হচ্ছে। দেশ এটা সুনিশ্চিত করছে যে খেলোয়াড়দের জন্য কোনওরকম ‘রিসোর্স’-এর অভাব যেন না থাকে। বিগত ৭-৮ বছরে স্পোর্টর্স বাজেট প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। একটি বড় চিন্তা খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ নিয়েও করা হচ্ছিল। আপনারা কল্পনা করুন, যদি খেলোয়াড়দের তাঁদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশ্বস্ত না করা হয়, তাহলে তাঁরা কী কখনও খেলার প্রতি ১০০ শতাংশ সমর্পণ করতে পারবেন? পারবেন না। সেজন্য আমরা খেলোয়াড়দের প্রাপ্য ‘এনকারেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’-এ বা ‘উৎসাহ এবং পুরস্কার’ বাবদও ৭ শতাংশেরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। ভিন্ন ভিন্ন স্কিমের মাধ্যমে এখন সবাইকে বিশেষ করে, সেইসব কোচদেরও পুরস্কৃত করা হচ্ছে, যাঁরা মেডেল জয়ী খেলোয়াড়দেরও প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। এর পরিণাম হল আজ গ্রামীণ এলাকা থেকে, পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মধ্য থেকে এবং জনজাতি এলাকা থেকেও প্রতিভারা দেশের সামনে উঠে আসছে, আর তাঁদের জন্য দেশের গৌরব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশের খেলোয়াড়দের আরও একটি বিবিধ সঙ্কটের মুখোমুখি হতে হয়। প্রথমে আপনারা যদি কাউকে বলতেন যে, আমি একজন খেলোয়াড়!
তাহলে মানুষ জিজ্ঞাসা করতো যে, ভাই ঠিক আছে, তুমি খেলোয়াড় ঠিকই, প্রত্যেক ছেলে-মেয়েই তো খেলে! কিন্তু আসলে আপনি কী করেন? অর্থাৎ, আমাদের দেশে খেলার প্রতি সহজ স্বীকৃতি কখনও থাকে না।
বন্ধুগণ,
এই সমস্যা শুধু আপনাদের সামনে আসেনি, আমাদের দেশের বড় বড় খেলোয়াড়দেরকেও এই সঙ্কটের সম্মুখীন হতে হয়েছে। আজ আপনারা এধরণের কোনও সমস্যার সম্মুখীন হবেন না।
আমার নবীন বন্ধুগণ,
আমাদের খেলোয়াড়দের সাফল্য এখন সমাজের এই ভাবনাকে বদলাতে শুরু করেছে। এখন মানুষ এটা বুঝতে পারছে যে ক্রীড়ায় কেরিয়ার মানে শুধু বিশ্বে প্রথম স্থান পাওয়া নয়, ক্রীড়ার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত সম্ভাবনার মধ্যে যুব সম্প্রদায় নিজেদের পেশা গড়ে তুলতে পারে। কেউ কোচ হয়ে উঠতে পারেন, কেউ বা স্পোর্টর্স সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে কামাল করতে পারেন। স্পোর্টর্স ম্যানেজমেন্টেও ক্রীড়ার সঙ্গে যুক্ত একটি বড় ক্ষেত্র রয়েছে। এখন অনেক যুবক-যুবতীই স্পোর্টর্স রাইটিং-এ অসাধারণ কেরিয়ার তৈরি করছেন। এভাবেই খেলার পাশাপাশি ট্রেনার বা প্রশিক্ষক, ফিজিওথেরাপিস্ট এবং ডায়েটেশিয়ানের মতো বিভিন্ন রকমের সুযোগ সৃষ্টি করে। এই সকল ক্ষেত্রকে নবীন প্রজন্ম তাঁদের নিজেদের জন্য কেরিয়ার হিসেবে ভাবুক, এগিয়ে যাক। এজন্য দেশ প্রফেশনাল ইনস্টিটিউশন্স বা পেশাগত সংস্থা তৈরি করছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮-য় আমি মণিপুরে দেশের জন্য প্রথম ন্যাশনাল স্পোর্টর্স ইউনিভার্সিটি স্থাপন করেছিলাম। ক্রীড়াক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার জন্য উত্তরপ্রদেশেও মেজর ধ্যানচাঁদ স্পোর্টর্স ইউনিভার্সিটি কাজ শুরু করে দিয়েছে। আইআইএম রোহতক-এ স্পোর্টর্স ম্যানেজমেন্টের পিজি ডিপ্লোমাও শুরু করা হয়েছে। আমাদের গুজরাটে ‘স্বর্ণিম গুজরাট স্পোর্টর্স ইউনিভার্সিটি’ও এক্ষেত্রে একটি বড় উদাহরণ। ‘স্বর্ণিম গুজরাট স্পোর্টর্স ইউনিভার্সিটি’ এই রাজ্যের ক্রীড়া ইকো-সিস্টেম মজবুত করতে বড় ভূমিকা পালন করেছে। আমাকে বলা হয়েছে, গুজরাট সরকারের ক্রীড়া ইকো-সিস্টেম এবং পরিকাঠামোর আরও ব্যাপক প্রসারের জন্য মহকুমা এবং জেলাস্তরে স্পোর্টর্স কমপ্লেক্স তৈরি করছে। এই সকল প্রচেষ্টা ক্রীড়া জগতে গুজরাট তথা ভারতের প্রোফেশনাল প্রেজেন্স বা পেশাগত উপস্থিতিকে আরও শক্তিশালী করবে। আমার একটি পরামর্শ হল যে গুজরাটের বিশাল তটবর্তী সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের কাছে দীর্ঘ সমুদ্রতট রয়েছে। এত বড় সমুদ্রতট থাকার ফলে আমাদের এখন আমাদের ক্রীড়ার জন্য এই তটবর্তী এলাকার উপযোগী ক্রীড়াগুলিতে সাফল্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের রাজ্যে এত সুন্দর বিচগুলি রয়েছে। খেল মহাকুম্ভে বিচ স্পোর্টর্স-এর সম্ভাবনাগুলি সম্পর্কেও ভাবনাচিন্তা করা উচিৎ।
বন্ধুগণ,
আপনারা যখন খেলবেন তখন ফিট থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, তখনই দেশের সামর্থ্যে আপনারাও মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে এক একজন মহারথী হয়ে উঠবেন। তখন আপনারা দেশ নির্মাণে নিজেদের অবদান রাখবেন। আমার পূর্ণ বিশ্বাস, এই খেল মহাকুম্ভে আপনারা সবাই স্টার, আপনারা সবাই তারকা। নিজের নিজের ক্ষেত্রে আপনারা ঝিকমিক করবেন। নতুন ভারতের স্বপ্নগুলিকে সাকার করবেন। আমি যুব সম্প্রদায়ের সবাইকে আর তাঁদের পরিবারবর্গের প্রতিও একটি অনুরোধ রাখতে চাই। এখন সময় অনেকটাই বদলে গেছে। যদি আপনার সন্তানের মধ্যে খেলার প্রতি আগ্রহ থাকে; তা সে পুত্র হোক কিংবা কন্যা, যদি তার মধ্যে খেলার প্রতি আগ্রহ থাকে, আপনারা সেটা তার মধ্যে খুঁজে বের করুন আর তাকে উৎসাহিত করুন। তাকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দিন। আপনারা বই পড়ার সময় নষ্ট ভেবে তাঁদের ফিরিয়ে দেবেন না। তেমনই প্রথম দিন থেকে যখন ‘খেল মহাকুম্ভ’ শুরু হয়েছিল, তখন থেকে আমি বলে এসেছি যে গ্রামে গ্রামে যখন খেল মহাকুম্ভের আয়োজন চলবে, গোটা গ্রাম তখন উপস্থিত থাকবে। হাততালি বাজালেও খেলোয়াড়দের একটি নতুন সাহস গড়ে ওঠে। গুজরাটের প্রত্যেক নাগরিক কোনও না কোনও ‘খেল মহাকুম্ভ’ কর্মসূচিতে ফিজিক্যালি অংশগ্রহণ করুন। আপনি দেখুন, গুজরাটও খেলার বিশ্বে নিজের পতাকা ওড়াচ্ছে, ভারতের খেলোয়াড়দের মধ্যে আরও বেশি করে গুজরাটের খেলোয়াড়রা জুড়ে যাচ্ছে। এই এক বছরেই অপেক্ষার পাশাপাশি আমি আরও একবার ভূপেন্দ্র ভাই এবং তাঁর গোটা টিমকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। সমস্ত অংশগ্রহণকারী নব যুবক-যুবতীদের শুভকামনা জানাতে চাই। আমার সঙ্গে বলুন –
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
অনেক অনেক ধন্যবাদ!
CG/SB/DM/
(Release ID: 1806192)
Visitor Counter : 244
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Hindi
,
Marathi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam