দক্ষতাউন্নয়নওশিল্পোদ্যোগমন্ত্রক

বর্ষশেষ পর্যালোচনা দক্ষতা উন্নয়ন ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রক

Posted On: 10 JAN 2022 3:21PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১০ জানুয়ারি, ২০২২
 
প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা ৩.০ (২০২০-২১)
 
কেন্দ্রীয় দক্ষতা উন্নয়ন ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রক তৃতীয় পর্যায়ের ‘ফ্ল্যাগশিপ’ কর্মসূচি হিসেবে ২০২১-এর জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা ৩.০ শুরু করে। দেশে শিল্প সংস্থাগুলির চাহিদা পূরণ, বাজার-চাহিদা মেটানো, পরিষেবাক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতা গড়ে তোলা এবং নতুন ধরনের কাজে সুদক্ষ করে তুলতে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার তৃতীয় পর্যায়ের সূচনা হয়। মহামারী-পরবর্তী সময়ে এই কর্মসূচি সুদূরপ্রসারী ভূমিকা নিতে চলেছে। এই কর্মসূচিতে এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৭৪ হাজারের বেশি মানুষ নথিভুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ লক্ষ ৩৬ হাজারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ২ লক্ষ ২৩ হাজার প্রশিক্ষিত ব্যক্তির মূল্যায়ন হয়েছে এবং ১ লক্ষ ৬৫ হাজার শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।
 
প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার তৃতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দক্ষ পেশাদারদের চাহিদা পূরণে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কোভিড মহামারী-পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য এবং লজিস্টিক্স ক্ষেত্রে দক্ষ পেশাদারদের চাহিদা বাড়তে চলেছে। এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে কর্মসূচির তৃতীয় পর্যায়ে দেশের প্রায় প্রতিটি প্রান্তে গুণগতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে প্রশিক্ষণদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। 
 
স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যক্তির চাহিদা পূরণে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ২১ দিনের থিওরি-ভিত্তিক ক্লাসরুম ট্রেনিং এবং ৯০ দিনের হাতে-কলমে শিক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই যাঁরা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁদের আরও সুদক্ষ করে তুলতে এক সপ্তাহব্যাপী আরও একটি ব্রিজ কোর্স গ্রহণ করা হয়েছে। এই পর্যায়ে যাঁরা আগেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, তাঁদের ছয়টি স্বতন্ত্র কর্ম-ভিত্তিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। 
 
উল্লেখ করা যেতে পারে, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২১-এর ১৮ জুন ২৬টি রাজ্যের ১০০টি জেলায় ১১১টি প্রধানমন্ত্রী কৌশল কেন্দ্র ও স্বীকৃত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সূচনা করেন। 
 
প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা ৩.০ কর্মসূচিতে নাগাল্যান্ড, কাশ্মীর প্রভৃতি রাজ্যে চিরাচরিত হস্তশিল্পীদের দক্ষতার মান বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে ঐতিহ্যবাহী ‘নামদা’ শিল্পের পুনরুজ্জীবনে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে ২৪ মাস ধরে ২,২০০-র বেশি শিল্পীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পূর্ব দিল্লি পুর নিগমে রাস্তায় খাদ্য বিক্রেতা হকারদের দক্ষতার মান বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচিতে ২,৫০০ জনের বেশি হকারকে প্রশিক্ষণ পর্ব শেষে ই-কার্ট লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।
 
নাগাল্যান্ডে বাঁশ থেকে নির্মিত বিভিন্ন সামগ্রীর উৎপাদক ও শিল্পীদের প্রশিক্ষণ দিতে বিভাগীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী রাজীব চন্দ্রশেখর গত ২৮ ডিসেম্বর একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পের সূচনা করেন। শিল্পীদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ইতিমধ্যেই ৪ হাজারের বেশি হস্তশিল্পী ও কারুশিল্পীদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। 
 
শিল্প প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (আইটিআই)-গুলিতে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা ৩.০ রূপায়ণ করা হচ্ছে। শিল্প প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলিতে ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ২৮ জন এই প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করেছিলেন। এঁদের মধ্যে ২৮ জনকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। 
 
মন্ত্রক দক্ষতা বিকাশ সম্পর্কিত দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিযোগিতা ‘ইন্ডিয়া স্কিল’ আয়োজন করে। অভিনব এই প্রতিযোগিতায় দক্ষ ব্যক্তিদেরকে তাঁদের শিল্প নৈপূণ্য প্রদর্শনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নিগম এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। চলতি জানুয়ারি মাসেও এই প্রতিযোগিতা বিভিন্ন জায়গায় আয়োজন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। 
 
মন্ত্রক বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় কেন্দ্রীয় সহায়তাপুষ্ট ‘সঙ্কল্প’ কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। ২০১৮-র ১৯ জানুয়ারি এই কর্মসূচির সূচনা হয়। ২০২৩-এর মার্চ পর্যন্ত এই কর্মসূচি রূপায়িত হবে। কর্মসূচি রূপায়ণ খাতে বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ১,৬৫০ কোটি টাকা ঋণ সহায়তার জন্য ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ঋণ সহায়তার এই অর্থে জাতীয়, রাজ্য ও জেলাস্তরীয় দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলির মানোন্নয়ন, দক্ষতা উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সংস্কারসাধন এবং দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিগুলিতে প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষের অন্তর্ভুক্তিকরণে জোর দেওয়া হচ্ছে। 
 
গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে দক্ষতা উন্নয়নমূলক পরিকল্পনার জন্য পঞ্চায়েতিরাজ মন্ত্রকের সঙ্গে দক্ষতা উন্নয়ন ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রকের সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই কর্মসূচিতে ২৫৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬,৫০০ জনের বেশি প্রার্থীকে চিহ্নিত করে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই কর্মসূচিতে তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিক ‘স্কিল ইন্ডিয়া পোর্টাল’ চালু করা হয়েছে। এই পোর্টালে দক্ষতা উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তথ্যের সমাবেশ রয়েছে।
 
মন্ত্রক পাঞ্জাবে পয়ঃপ্রণালী ও নিকাশির সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের দক্ষতার মানোন্নয়নে একটি বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পাঞ্জাব দক্ষতা মানোন্নয়ন মিশনের সঙ্গে অংশীদারিত্বে এই কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে। কর্মসূচিতে পয়ঃপ্রণালী ও নিকাশি ব্যবস্থায় সংস্কারের কাজে প্রশিক্ষিত ব্যক্তিদের কাজে লাগানো হচ্ছে। 
 
‘সঙ্কল্প’ কর্মসূচির জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত ১,১১৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা হিসেবে পাওয়া গেছে। এই অর্থ জাতীয় ও রাজ্যস্তরে দক্ষতা উন্নয়নের বিভিন্ন কাজে খরচ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এই কর্মসূচিতে ৪৭১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। 
 
প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত মহানির্দেশকের পক্ষ থেকে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচিতে ২০২১ প্রশিক্ষণ বর্ষে ৪ হাজার নতুন আসন তৈরি হয়েছে। ১১টি নতুন শিল্প শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে ২ হাজারের বেশি আসন তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার তৃতীয় পর্যায়ে স্বল্পমেয়াদি পাঠ্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৬০টি আইটিআই-কে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
 
মন্ত্রক ২০১৯-এর অক্টোবরে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত বিভিন্ন কোর্স ম্যাটেরিয়াল, দক্ষতার প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত ভিডিও, কোয়েশ্চেন ব্যাঙ্ক ও মক টেস্টের জন্য ‘ভারত স্কিল’ নামের একটি কর্মসূচির সূচনা করে। এই কর্মসূচির সঙ্গে বর্তমান সময়ের বিভিন্ন আধুনিক বিষয়ের দক্ষতার জন্য আইবিএম, সিসকো, মাইক্রোসফট, ন্যাসকম, অ্যাডোব প্রভৃতি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। 
 
মন্ত্রকের পক্ষ থেকে রাজ্য / আইটিআই-গুলির সহযোগিতায় ১০০টির বেশি দক্ষতা বৃদ্ধি সম্পর্কিত কর্মশিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। রাজ্য এবং আইটিআই-গুলির বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ খাতে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। 
 
মন্ত্রক ৮৩টি নতুন জন শিক্ষণ সংস্থান স্থাপনের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে চিহ্নিত করেছে। এই সংস্থাগুলি উন্নয়নে আগ্রহী, চরম বামপন্থা অধ্যুষিত, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এবং পার্বত্য জেলাগুলিতে এ ধরনের সংস্থান গড়ে তুলছে। গত বছরের ১৫ জুলাই ‘বিশ্ব দক্ষতা দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে ৭৫টি নতুন জন শিক্ষণ সংস্থানের সূচনা হয়েছে। জন শিক্ষণ সংস্থাগুলি গত ১৬-৩১ জুলাই বার্ষিক কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে ‘স্বচ্ছতা পাখওয়াড়া’ আয়োজন করে। সারা দেশে এ ধরনের পাখওয়াড়াতে ১ লক্ষ ৩৬ হাজারের বেশি ব্যক্তি অংশ নেয়।
 
‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে জন শিক্ষণ সংস্থানগুলি ‘ফিট ইন্ডিয়া ফ্রিডম রান’, অনলাইন ন্যাশনাল অ্যানথেম, ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান, রোজগার মেলা, আইনি সচেতনতা কর্মসূচি, আর্থিক সচেতনতা কর্মসূচি, রঙ্গোলি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বিভাগীয় মন্ত্রী গত ৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক মহিলা দিবস’ উদযাপনের দিন মহিলা পরিচালিত পাঁচটি ছোট শিল্প সংস্থাকে বিশেষ সাফল্যের জন্য পুরস্কৃত করেন। 
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ‘ফ্ল্যাগশিপ’ কর্মসূচি হিসেবে ‘প্রধানমন্ত্রী বন ধন যোজনা’র সূচনা করেন ২০১৮-র ১৪ এপ্রিল। দেশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবনজীবিকার মানোন্নয়নের এই কর্মসূচির সুচনা হয়। অরণ্যবাসী মানুষকে গৌণ বনজ সামগ্রীর ব্যবহার ও বিপণনে দক্ষ করে তুলতে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এই কর্মসূচিতে সারা দেশে ১২৮টি বন ধন বিকাশ কেন্দ্র ক্লাস্টারে ৩০০ জন সুফলভোগীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। 
 
জাতীয় বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিগম এবং ডিজিলকারের মধ্যে গত ১৬ জুলাই একতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষতা সম্পর্কিত শংসাপত্রগুলির যাবতীয় খতিয়ান ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৩৪টি সংস্থাকে এ ধরনের তথ্য ডিজিলকারে নিবন্ধীকরণের চিহ্নিত করা হয়েছে।
 
সারা দেশে বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রশিক্ষণের জন্য জাতীয় নিগমের ওয়েবসাইটের মানোন্নয়ন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে, এই নিগমের বিভিন্ন শংসাপত্র যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও স্বীকৃতি পায় তার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 
 
CG/BD/DM/


(Release ID: 1789024) Visitor Counter : 173


Read this release in: English , Urdu , Hindi , Tamil