পরিবেশওঅরণ্যমন্ত্রক

বর্ষ শেষে পর্যালোচনা : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক

Posted On: 29 DEC 2021 3:35PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৯ই ডিসেম্বর, ২০২১

 

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের মূল উদ্দেশ্য হল ভারতের নাগরিকদের স্বচ্ছ, সবুজ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা। একাজে জনসাধারণের অংশীদারিত্বের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রাকৃতিক সম্পদকে স্থিতিশীলভাবে কাজে লাগিয়ে সার্বিক অর্থনৈতিক বিকাশকে নিশ্চিত করতে মন্ত্রক বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। দেশের হ্রদ, নদী, জীববৈচিত্র, বন ও বন্যপ্রাণের সংরক্ষণ নিশ্চিত করে দূষণ প্রতিরোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালে মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যগুলি হল :  

আজাদি কা অমৃত মহোৎসব – স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উপলক্ষ্যে দেশজুড়ে ৭৫ সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। ১২ই মার্চ থেকে “গ্রীণ গুড ডিড অফ দ্য উইক” কর্মসূচির আওতায় স্থিতিশীল জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। একাজে ইকো ক্লাবগুলির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রক, চৌঠা থেকে ১০ই অক্টোবর পর্যন্ত আইকনিক সপ্তাহ উদযাপন করেছে। সপ্তাহ জুড়ে হ্রদ / জলাভূমি সংরক্ষণ, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা, বন্যপ্রাণ, অরণ্য ও সমুদ্র সৈকতের সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

দোসরা অক্টোবর থেকে পয়লা নভেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রক, স্বচ্ছতা অভিযান পালন করে। এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে ইন্দিরা পর্যাবরণ ভবনে ৩০০০ বর্গফুট খোলা জায়গাকে পরিস্কার, পরিচ্ছন্ন করে, তা ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। মন্ত্রক, তার অব্যবহৃত আসবাবপত্র নিলামের মাধ্যমে  বিক্রি করেছে।

স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে :

রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে ১৭টি স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ পূরণে ১৬৯টি লক্ষ্যমাত্রা আগামী ১৫ বছরে অর্জন করা হবে। এর মধ্যে ১৩, ১৫ এবং ১২ নম্বর লক্ষ্যমাত্রাগুলির সঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক যুক্ত। মন্ত্রক, এই লক্ষ্যপূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।  

জলবায়ু পরিবর্তন :

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দায়বদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে সরকার, রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যপূরণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা ভারত মেনে চলে। বর্তমানে ভারত, ইউএনসিসিডি-র সভাপতি। মন্ত্রক, সিওপি ২৬ সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ শূন্য করার উদ্যোগে সামিল হয়েছে। গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত সিওপি ২৬ –এর সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, ভারতের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে জীবাশ্ম বিহীন জ্বালানীর পরিমাণ ৫০০ গিগাওয়াটের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এই সময়ে মোট জ্বালানীর অর্ধেকের উৎস হবে পুনর্নবিকরণযোগ্য জ্বালানী। ভারত এখন থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে একশো কোটি টন কার্বন নিঃসরণের হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বনের নিঃসরণ যাতে ৪৫ শতাংশ হ্রাস পায় (২০০৫ সালের হিসেব অনুযায়ী), সেই মর্মে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ২০৭০ সালের মধ্যে ভারতে কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

পরিবেশ :

ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচির আওতায় ন্যূনতম সরকার, সর্বোচ্চ প্রশাসনের ভাবনা নিয়ে মন্ত্রক, পরিবেশ পোর্টাল তৈরি করেছে। এই পোর্টালের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র এক জানালা ব্যবস্থার মাধ্যমে ৭০ দিনের মধ্যে দেওয়া হবে।

মন্ত্রক, নগর বন যোজনার আওতায় শহরাঞ্চলে চারশোটি  বন তৈরির পরিকল্পনা করেছে। এছাড়াও ২০০টি নগরবাটিকা গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্যাম্পা জাতীয় তহবিল থেকে ২০২০ – ২১ এবং ২০২৪ – ২৫ এর সময়কালে ৮৯৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। বৃক্ষ রোপনের সঙ্গে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পরিচিত করাতে মন্ত্রক, স্কুল  নার্সারি যোজনার সূচনা করেছে। এর আওতায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র বজায় রাখার জন্য কি কি করা উচিত, সেবিষয়ে স্পষ্ট ভাবে পাবে।  কমপেনসেটরি অ্যাফরেস্টেশন ফান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্লানিং অথোরিটি বা ক্যাম্পার মাধ্যমে ২৮টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এর আওতায় ১৩২৯ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে।  

ডলফিন এবং সিংহের সংরক্ষণের  জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাঘ, এশিয় সিংহ, এক সিংওয়ালা গন্ডার, এশিয় হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০২ সালের জৈব ঘনত্ব আইন অনুযায়ী জাতীয়, রাজ্য ও স্থানীয় স্তরে জীববৈচিত্র রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জীববৈচিত্র সংশোধন আইন ২০২১ পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্যোগে সহায়ক হবে। দেশে জলাভূমির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ – ২১ সময়কালে ২১টি নতুন অঞ্চল র‌্যামসার সাইটে যুক্ত হয়েছে। ভিয়েনা কনভেনশন ও মন্ট্রিয়ল প্রটোকল অনুযায়ী ওজন গ্যাসের আস্তরণ রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, কার্বনটেট্রাক্লোরাইড, হালোন, মিথাইলব্রোমাইট ও মিথাইল ক্লোরোফর্মের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে এবং এগুলি এখন আর দেশে ব্যবহার হচ্ছে না। ভারত এখন হাইড্রোক্লোরোফ্লুরো কার্বনের ব্যবহার ক্রমশ বন্ধ করে দিচ্ছে।  

মন্ত্রক জাতীয় স্বচ্ছ বায়ু কর্মসূচি বাস্তবায়িত করছে। এই প্রকল্পের আওতায় বায়ুদূষণের মাত্রা কমানোর জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশের ১৩২টি শহরে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। সংসদের একটি আইন অনুসারে জাতীয় রাজধানী অঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বাতাসের গুণমান উন্নত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে।

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে এবং প্লাস্টিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারত, জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আনার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যেই ২ কোটি ৬০ লক্ষ হেক্টর জমিতে উর্বরতা ২০৩০ সালের মধ্যে ফিরিয়ে আনার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১৪ই জুন এসংক্রান্ত রাষ্ট্রসংঘের একটি আলোচনায় ভারতের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান।  

সুসংহত সমুদ্র সৈকত ব্যবস্থাপনা :

সরকার, উপকূলবর্তী অঞ্চলের সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য সচেষ্ট। এসংক্রান্ত অর্থনীতি – যা নীল অর্থনীতি নামে পরিচিত, তার বিকাশে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং সমুদ্রের সম্পদের সংরক্ষণ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ, উপকূলবর্তী অঞ্চলের বসবাসরত মানুষদের নিরাপত্তা ও জীবিকার জন্য ব্য়বস্থা করা – এই উন্নয়নের মূল লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই ৭টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০টি সমুদ্র সৈকতে আন্তর্জাতিকমানের উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। এই সমুদ্র সৈকতগুলি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ব্লু ফ্ল্যাগ সার্টিফিকেশন পেয়েছে। মূলত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্নানের জলের গুণমান বজায় রাখা, সৌরশক্তির মাধ্যমে পরিকাঠামো গড়ে তোলা, সমুদ্রে আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা এবং স্থানীয় মানুষদের জন্য জীবিকার সংস্থান করার ফলে এই সম্মান অর্জিত হয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে এই অঞ্চলের পর্যটন ভিত্তিক অর্থনীতির প্রসার ঘটেছে।

 

CG/CB/SFS



(Release ID: 1786206) Visitor Counter : 849


Read this release in: English , Urdu , Marathi , Hindi