কয়লামন্ত্রক

বর্ষশেষ পর্যালোচনা, ২০২১ – কয়লা মন্ত্রক

Posted On: 27 DEC 2021 12:02PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১
 
*নীতি/সংস্কার ও সিদ্ধান্ত
সংস্কার :
কোলিয়ার নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন, ২০২১
 
বিভিন্ন আইনি বাধ্যবাধকতা তথা দেশে সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের লক্ষ্যে আইনি প্রক্রিয়াকে আরও সহজ-সরল এবং নীতিগত দিক থেকে মসৃণ করে তুলতে ১৯৭৪-এর কয়লাখনি (সংরক্ষণ ও উন্নয়ন) আইন এবং ১৯৭৫-এর সংশ্লিষ্ট আইন বাতিল করে সমগ্র আইনি প্রক্রিয়াকে একটি আইনেই সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও, কোলিয়ারি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০৪ সংশোধন করে ২০২১-এর কোলিয়ার নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন কার্যকর করা হয়েছে। 
 
*মিনারেল কনসেশন (সংশোধন) আইন, ২০২১
 
১৯৫৭-র খনি ও খনিজ (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন করে ২০২১-এ খনি ও খনিজ (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়াও, ১৯৬০-এর মিনারেল কনসেশন বা খনিজ ক্ষেত্রে ছাড় (সংশোধন) আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ১৯৬০-এর খনিজ কনসেশন আইন সংশোধন করে ২০২১-এর খনিজ কনসেশন (সংশোধন) আইন কার্যকর হয়েছে। ১৯৬০-এর খনি ও খনিজ আইনের ২৪(সি) ধারা অন্তর্ভুক্ত করে কয়লা বা লিগনাইট খনিগুলি এখন ৫০ বছর পর্যন্ত লিজ হিসেবে সরকারি সংস্থা বা কোনও নিগমকে দেওয়া হচ্ছে। এই আইনে সংশোধনের পূর্বে কয়লা বা লিগনাইট খনিগুলি লিজে দেওয়ার সময় ছিল ৩০ বছর। কিন্তু, এই আইনে সংশোধনের ফলে লিজের মেয়াদ ৩০ বছর থেকে বেড়ে ৫০ বছর করা হয়েছে। এমনকি যেসব ক্ষেত্রে মেয়াদের সময়সীমা ছিল ২০৩০-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত, সেগুলির সময়সীমাও আরও ২০ বছর বাড়ানো হয়েছে।
 
১৯৬০-এর খনি ও খনিজ আইনে ২৭(এ) ধারা অন্তর্ভুক্ত করে কয়লা বা লিগনাইট ক্যাপ্টিভ খনিগুলির মোট সম্পদের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত লিজে দেওয়ার সংস্থান চালু হয়েছে। এর ফলে, বৃহদায়তন বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি সম্পদগত দিক থেকে লাভবান হচ্ছে। 
 
১৯৬০-এর খনি ও খনিজ আইনের ২৮ নং ধারায় সংশোধন করা হয়েছে যাতে মেয়াদের দিন শুরু হওয়ার সময় থেকে দু’বছরের মধ্যেই যদি উত্তোলন এবং খনিজ সম্পদের সরবরাহ করা শুরু না হয়, তাহলে লিজের মেয়াদ অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। 
 
*অনুমতিদানে ‘এক জানালা’ ব্যবস্থার সূচনা
 
কয়লাখনিগুলিতে উত্তোলন ও অন্যান্য কাজকর্ম দ্রুত শুরু করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার গত ১ জানুয়ারি ‘এক জানালা’ অনুমোদন ব্যবস্থার জন্য একটি পোর্টাল চালু করেছে। এই পোর্টালের সাহায্যে দেশে যে কোনও কয়লাখনিতে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র মিলবে।
 
*আমদানিকৃত কয়লায় নজরদারি ব্যবস্থা চালু
 
ডি.সি.আই.অ্যান্ড.এস-এর কাছ থেকে আমদানি সম্পর্কিত তথ্য পেতে সময় লাগবে। কখনও কখনও এ ধরনের তথ্য পেতে দুই থেকে আড়াই মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত। এর ফলে, নীতি প্রণয়ন এবং আমদানির পরিমাণ হ্রাস করার ক্ষেত্রে সময় লাগত। এই ধরনের সমস্যার বিষয়গুলিকে বিবেচনায় রেখেই বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের সহায়তায় কয়লা আমদানি সম্পর্কিত নজরদারি ব্যবস্থা চালু হয়েছে। 
 
*নীতি
বাণিজ্যিক কয়লা উত্তোলন
 
২০১৪ সালে নিলাম ব্যবস্থার সূচনা হয়েছে। এর ফলে, কয়লাখনিতে বেসরকারি ক্ষেত্রের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত হয়েছে। তবে, বেসরকারি সংস্থাগুলি সম্পূর্ণ নিজস্ব মালিকানাধীন কয়লাখনিতে উত্তোলনের ক্ষেত্রেই বাণিজ্যিকীকরণের সুবিধা পাবে। প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ১৮ জুন দেশে প্রথম বাণিজ্যিক উত্তোলনে বেসরকারি ক্ষেত্রের অংশগ্রহণের সূচনা করেন। সে সময়ে ১৯টি কয়লাখনিকে বাণিজ্যিকীকরণের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। কয়লা ব্লকগুলির বাণিজ্যিক উত্তোলন অনলাইনে দুটি প্রক্রিয়ার মধ্যে সম্পন্ন হয়। প্রথম পর্যায়ে টেকনিক্যাল কারিগরি বিষয় খতিয়ে দেখা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে জমা পড়া দরপত্রগুলি আর্থিক সম্ভাবনার ভিত্তিতে বরাত দেওয়া হয়। আগে কয়লাখনি ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক নিলাম প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। এখন এ ধরনের নিলাম প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে কোনও বাধা নেই। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতা-ভিত্তিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কয়লাখনিগুলি নিলাম করা হচ্ছে। এমনকি, নতুন সংস্থাগুলিও নিলাম প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। সরকার কয়লাখনি ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে অনুমতি দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যে ২৮টি কয়লা ব্লক নিলাম করা হয়েছে। 
 
বাণিজ্যিক নিলামের দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১টি কয়লা ব্লকের বরাত সম্পূর্ণ হয়েছে। প্রথম পর্বেই সফলভাবে ১১টি কয়লা ব্লক নিলাম হওয়ার দরুণ মন্ত্রক দ্বিতীয় পর্বে আরও ১১টি কয়লাখনি বরাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই অনুযায়ী গত ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ স্থির হয়। জমা পড়া দরপত্রগুলি গত ৩০ নভেম্বর খুলে দেখা হয়। সেই অনুযায়ী, চারটি কয়লা ব্লকের জন্য মোট সাতটি দরপত্র পাওয়া গেছে। তৃতীয় পর্যায়ে আরও ৮৮টি কয়লা ব্লক বরাতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় কয়লা ও খনি মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী চতুর্থ পর্যায়ে ৯৯টি কয়লা ব্লকের বরাত প্রক্রিয়ার সূচনা করেন। প্রথম দুটি পর্যায়ে ২৮টি কয়লাখনির বরাত সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় মোট ৯৯টি কয়লাখনি বরাতের প্রক্রিয়া চলছে। এই ৯৯টি কয়লাখনির মধ্যে ৫৯টি খনির সঞ্চিত সম্পদ ইতিমধ্যেই মূল্যায়ন করা হয়েছে। বাকি ৪০টি খনির সঞ্চিত সম্পদের আংশিক মূল্যায়ন হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সহ আটটি রাজ্যে এই ৯৯টি কয়লাখনি ছড়িয়ে রয়েছে।
 
*কোকিং কোল ওয়াশারিজ স্থাপন
 
সরকার ইস্পাতক্ষেত্রে ওয়াশড বা শোধিত কোকিং কোলের সরবরাহ ৩ মেট্রিক টন থেকে বাড়িয়ে ১৫ মেট্রিক টন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই দুটি কোকিং কোল ওয়াশারি চালু হয়েছে। আরও তিনটি এই ধরনের ওয়াশারি চালু হওয়ার পথে। একটি নন-কোকিং কোল ওয়াশারি গড়ে তোলার কাজ চলছে। 
 
*সিদ্ধান্ত
সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট সেল
 
কয়লাখনি ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতার গুরুত্বের বিষয়টিকে স্বীকার করে নিয়ে কয়লা মন্ত্রক সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট সেল বা কয়লাখনি ক্ষেত্রের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নে বিশেষ গোষ্ঠী গঠন করেছে। মন্ত্রকের এই পদক্ষেপের ফলে দেশে কয়লাক্ষেত্রের ভাবমূর্তিতে লক্ষ্যণীয় পরিবর্তন আসবে। 
 
*গ্রিন ইনিশিয়েটিভ বা পরিবেশ-বান্ধব উদ্যোগ
 
কয়লাখনিগুলি সম্পর্কে মানুষের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে কোল মাইন ট্যুরিজম উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কয়লাখনি এলাকাভিত্তিক পর্যটনের এই উদ্যোগে ইতিমধ্যেই চারটি ইকো-পার্ক বা পরিবেশ-বান্ধব উদ্যান গড়ে তোলার কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়াও, গত অক্টোবর মাসে এ ধরনের আরও পাঁচটি উদ্যান গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। 
 
>কয়লাখনি লাগোয়া এলাকায় বৃক্ষরোপণ অভিযান। এই অভিযানে কয়লাখনি এলাকায় প্রায় ৬ লক্ষ ৯০ হাজার স্থানীয় চারাগাছ রোপণ করা হয়েছে। এছাড়াও, কয়লাখনি এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় মানুষের মধ্যে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার চারাগাছ বিতরণ করা হয়েছে। 
 
>দেশে ৩৫টি খনির এনভায়রনমেন্টাল অডিট বা পরিবেশের অগ্রগতির লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপ সংক্রান্ত কাজকর্মের মূল্যায়ন হয়েছে। কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের সাতটি এবং এনএলসিআইএল-এর তিনটি কয়লাখনির এ ধরনের অডিটের কাজ শেষ হয়েছে।
 
*কয়লা উত্তোলন
 
>২০২১-এর জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড ও সহযোগী সংস্থাগুলির মোট কয়লা উত্তোলনের পরিমাণ ৬১৫.৪৯ মিলিয়ন টন। 
 
>আলোচ্য সময়ে কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড ও তার সহযোগী সংস্থাগুলির কয়লা সরবরাহের পরিমাণ ৬৪৫.৩২ মিলিয়ন টন।
 
>একইভাবে, কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড ও তার সহযোগী সংস্থাগুলির ই-অকশন বা বৈদ্যুতিন পদ্ধতিতে কয়লা নিলামের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১৬.৩০ মিলিয়ন টন।
 
*বাণিজ্যিক খননের জন্য তৃতীয় পর্যায়ের নিলাম প্রক্রিয়ায় মোট ৮৮টি কয়লা খনির নিলাম সম্পূর্ণ
 
>এই ৮৮টি কয়লাখনির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে জগন্নাথপুর (এ), কাস্তা (পূর্ব), ধোব্বানপুর, কাপাশডাঙ্গা-বারকাতা, মাকদুম নগর, সালভদ্র-গোমারপাহাড়ি রয়েছে।
 
CG/BD/DM/


(Release ID: 1785515) Visitor Counter : 325