প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী ফিনটেক ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানকারী ইনফিনিটি ফোরামের উদ্বোধন করেছেন

Posted On: 03 DEC 2021 10:53AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২১

 

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফিনটেক ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানকারী ইনফিনিটি ফোরামের উদ্বোধন করেছেন। 

সমাবেশের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুদ্রার ইতিহাসে অসাধারণ বিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। মানুষ যেমন বিবর্তিত হয়েছে, আমাদের লেনদেনের রূপও তেমনই হয়েছে। আজ আমরা বিনিময় ব্যবস্থা থেকে ধাতু, কয়েন থেকে নোট, চেক থেকে কার্ডে এসে পৌঁছেছি। ইতিপূর্বে উন্নয়নের বার্তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে কয়েক দশক সময় লাগতো। কিন্তু, বিশ্বায়নের এই যুগে  তা এখন আর হয় না। প্রযুক্তি আর্থিক জগতে এক বড় মাত্রায় পরিবর্তন এনেছে। গত বছর এই প্রথম ভারতে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন এটিএম থেকে নগদ তোলার চেয়ে বেশি। সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল ব্যাঙ্কগুলি, কোনও প্রকৃত শাখা কার্যালয় ছাড়াই এটি সম্ভব হয়েছে এবং এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে এটি খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে।

 

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, ভারত বিশ্বের কাছে প্রমাণ করে দিয়েছে, প্রযুক্তি গ্রহণ অথবা প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে কারও থেকে পিছিয়ে নেই। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার আওতায় পরিবর্তনমূলক উদ্যোগগুলি সুশাসন প্রয়োগের জন্য ফিনটেক উদ্ভাবনের দরজা খুলে দিয়েছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে প্রযুক্তি অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছে। ২০১৪ সালে ৫০ শতাংশেরও কম ভারতীয়র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল। গত ৭ বছরে প্রায় ৪৩ কোটি জন ধন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৬৯ কোটি রুপে কার্ড দেওয়া হয়েছে। গত বছর রুপে কার্ডের মাধ্যমে ১.৩ বিলিয়ন আর্থিক লেনদেন হয়েছে। শুধুমাত্র গত মাসে ইউপিআই পদ্ধতির সাহায্যে ৪.২ মিলিয়ন আর্থিক লেনদেন হয়েছে।

জিএসটি পোর্টালের মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ কোটি ইনভয়েস আপলোড করা হয়। এমনকি, প্রতি মাসে শুধুমাত্র জিএসটি পোর্টালের সাহায্যে ১২ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যে লেনদেন করা হয়। মহামারী সত্ত্বেও প্রতিদিন অনলাইনে প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ রেলের টিকিট বুকিং হয়েছে। গত বছর ফাস্টট্যাগ পদ্ধতির মাধ্যমে ১.৩ বিলিয়ন নগদহীন লেনদেন সম্ভব হয়েছে। পিএম-স্বনিধি সারা দেশে ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের জন্য ঋণ গ্রহণে সুযোগ করে দিয়েছে। কোনোরকম সমস্যা ছাড়াই ই-রুপে’র পরিষেবা দেওয়া গেছে। এ ধরনের একাধিক তথ্য আমি বলে যেতেই পারি। এগুলি ভারতের ফিনটেকের মাত্রা এবং সুযোগের কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। 

 

শ্রী মোদী বলেন, ফিনটেক বিপ্লবের চালিকাশক্তি হ’ল আর্থিক অন্তর্ভুক্তি। ফিনটেক চারটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে; আয়, বিনিয়োগ, বিমা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ। আয় বাড়লে বিনিয়োগ সম্ভব। বিমার বৃহত্তর সুযোগ-সুবিধা ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা এবং বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়। প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সম্প্রসারণের পালে হাওয়া দেয়। সরকার এই প্রতিটি স্তম্ভের উপর কাজ করছে। ফিনটেক উদ্ভাবনের জন্য নিখুঁত স্প্রিং বোর্ড বৃহত্তর ভিত্তি হয়ে উঠেছে। ভারতের ফিনটেক শিল্প দেশের প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে আর্থিক এবং আনুষ্ঠানিক ঋণ গ্রহণের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে। এখন এই ফিনটেক ক্ষেত্রে উদ্যোগগুলিকে ফিনটেক বিপ্লবে রূপান্তর করার সময় এসেছে। এই বিপ্লব দেশের প্রতিটি নাগরিকের আর্থিক ক্ষমতা অর্জনে সাহায্য করবে। 

সরকার যেহেতু ফিনটেক ক্ষেত্রের প্রসারিত রূপের নাগাল পেয়েছি, তাই এখন থেকেই এ বিষয়ে বিচার-বিবেচনা করে মনোযোগ দেওয়া দরকার। ফিনটেক শিল্প বিশাল আকার ধারণ করেছে। জনসাধারণের মধ্যে ফিনটেকের গ্রহণযোগ্যতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যে বৈশিষ্ট্য সাধারণ ভারতীয়র ডিজিটাল পেমেন্ট ও এই ধরনের প্রযুক্তি গ্রহণে ফিনটেক ইকো ব্যবস্থাপনার প্রতি অগাধ আস্থা এবং বিশ্বাস দেখিয়েছে। এই বিশ্বাস এক দায়িত্বের। বিশ্বাসের অর্থ হ’ল –মানুষের স্বার্থ সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, ফিনটেক ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ছাড়া ফিনটেক উদ্ভাবন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। 

 

শ্রী মোদী জানান, ভারত অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা ভাগ করে নেওয়া এবং অন্যদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রেও বিশ্বাসী। দেশের ডিজিটাল গণপরিকাঠামোর সমাধান সারা বিশ্বের মানুষের জীবনকে উন্নত করতে পারে। ইউপিআই এবং রুপের মতো ব্যবস্থাপনা প্রতিটি দেশের জন্য এক অনন্য সুযোগ এনে দিয়েছে। ‘বাস্তব সময়-ভিত্তিক নগদ লেনদেন ব্যবস্থাপনা’ সেই সঙ্গে ‘অভ্যন্তরীণ কার্ড প্রকল্প’ ও ‘ফান্ড রেমিটেন্স সিস্টেম’ কম খরচে এবং নির্ভরযোগ্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছে। 

তিনি বলেন, গুজরাট আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রযুক্তি (জিআইএফটি) – শহর নিছক একটি জায়গা নয়, এটি ভারতের প্রতিশ্রুতির প্রতীক। এটি ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, চাহিদা, জনসংখ্যা এবং বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্ব করে। চিন্তাধারা, উদ্ভাবন এবং বিনিয়োগের প্রতি ভারতে উন্মুক্ততার দৃষ্টান্ত এটি। জিআইএফটি হ’ল গ্লোবাল ফিনটেক বিশ্বের একটি প্রবেশদ্বার। জিআইএফটি শহর এই দৃষ্টিভঙ্গী থেকে জন্ম নিয়েছিল যে, সেখানে প্রযুক্তির সঙ্গে আর্থিক সমন্বয়ে ভারতের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠবে। সরকারের লক্ষ্য শুধুমাত্র ভারতের জন্য নয়, বিশ্বের জন্য সেরা আন্তর্জাতিক পরিষেবা প্রদান করা।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থ হ’ল অর্থনীতির রক্ত এবং প্রযুক্তি হ’ল তার বাহক। উভয়ই ‘অন্ত্যোদয়’ ও ‘সর্বোদয়’ অর্জনের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের জনকল্যাণমুখী ফিনটেক ফোরাম হ’ল শিল্পের সীমাহীন ভবিষ্যৎ অন্বেষণে গ্লোবাল ফিনটেক শিল্পের সমস্ত মূল অংশীদারদের একত্রিত করার এক প্রয়াস মাত্র। মিঃ মাইক ব্লুমবার্গের সঙ্গে সাক্ষাতের কথাও স্মরণ করে শ্রী মোদী। 

তিনি বলেন, ইনফিনিটি ফোরাম বিশ্বের এমন এক ফোরাম, যা উদ্ভাবনের চেতনায় বিশ্বাস ও কল্পনা শক্তি যোগায়। এমনকি, তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাস ও পরিবর্তনের জন্য আবেগ এনে দেয়। ফোরামের বিষয়-ভাবনার ওপরও জোর দেন শ্রী মোদী। ৭০টিরও বেশি দেশ এই ফোরামে অংশ নিয়েছে। 

 

 

CG/SS/SB



(Release ID: 1777712) Visitor Counter : 160