প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
মধ্যপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
Posted On:
07 AUG 2021 1:38PM by PIB Kolkata
৭ই আগস্ট, ২০২১, নয়াদিল্লি
নমস্কার!
মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল এবং আমার বহুদিনের পরিচিত শ্রী মঙ্গুভাঈ প্যাটেল, যিনি নিজের সম্পূর্ণ জীবন জনজাতি গোষ্ঠীর কল্যাণ, জনজাতি গোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্যে উৎসর্গ করেছেন, সেই মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাঈ, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং, রাজ্য সরকারের অন্য সকল মন্ত্রীগণ, সাংসদ, বিধায়ক বন্ধুরা এবং মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যে সকল বোন ও ভাইয়েরা যুক্ত হয়েছেন!
প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার অন্তর্গত এই অন্ন বিতরণ কর্মসূচীর জন্যে আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। মধ্যপ্রদেশে আজ এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৫ কোটি সুবিধাভোগীর কাছে এই প্রকল্প পৌঁছে দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পটি কোনও নতুন যোজনা নয়, দেড় বছর আগে,করোনা যখন শুরু হয়েছিল তখন থেকে এই দেশের ৮০ কোটিরও বেশি দরিদ্রদের ঘরে ঘরে বিনামূল্যে রেশন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমার কখনও এই দরিদ্রদের মধ্যে বসে কথোপকথনের সুযোগ হয়নি। আজ মধ্যপ্রদেশ সরকার আমাকে আপনাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দিয়েছে। আমি আজ দূর থেকে হলেও আমার দরিদ্র ভাই-বোনেদের দর্শন করতে পারছি, তাঁদের আশীর্বাদ পাচ্ছি, আর সেখান থেকেই আমি দরিদ্রদের জন্যে কিছু করার শক্তি পাই। আপনাদের আশীর্বাদ থেকে আমি শক্তি পাই, আর সেজন্যেই এই কর্মসূচী গত দেড় বছর ধরে চললেও আমি আজ আপনাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছি। একটু আগেই আমি আমাদের মধ্যপ্রদেশের কয়েকজন ভাই-বোনেদের সঙ্গে কথা বলছিলাম । এই সঙ্কটের সময়ে সরকারের তরফে যে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে, তাঁর ফলে প্রতিটি পরিবারের খুব সুবিধা হয়েছে। তাঁদের কথা বলার মধ্যে সন্তুষ্টি ছিল, আত্মবিশ্বাস দেখা যাচ্ছিলো। যদিও এটা অত্যন্ত দুঃখের যে এই সময়ে মধ্যপ্রদেশের অনেক জেলায় বৃষ্টির জন্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অনেক বন্ধুর জীবনযাত্রা এবং জীবিকা, দুইই প্রভাবিত হয়েছে। কঠিন এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকার এবং সারা দেশ মধ্যপ্রদেশের পাশে রয়েছে। শিবরাজজি এবং তাঁর পুরো টিম বিধ্বস্ত এলাকায় গিয়ে দ্রুতগতিতে ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ করছে। এই। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে রাজ্য সরকারকে এনডিআরএফ হোক, কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনী হোক, অথবা আমাদের সেনাদের জওয়ান হোক, সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
ভাই ও বোনেরা,
দুর্যোগ যেমনই হোক না কেন, তাঁর প্রভাব অনেক ব্যাপক এবং সুদুর প্রসারী হয়। করোনা পুরো মানবজাতির কাছে এই শতাব্দীর সবথেকে বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। গতবছরের শুরুতে যখন পৃথিবীর কোনো দেশ এধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়নি, গত বছরের শুরুতে যখন সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করলো, তখন গোটা পৃথিবী নিজেদের স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর নজর দেয়। প্রত্যেক দেশ নিজেদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে শুরু করে। কিন্তু বিশাল জনসংখ্যার দেশ ভারতের জন্যে এই সমস্যা সারা দুনিয়ার অন্যান্য দেশের থেকে অনেক বড় ছিল, কারন আমাদের জনসংখ্যাও অনেক বেশি। আমাদের করোনার চিকিৎসা এবং সুরক্ষার জন্যে চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরি করতেই হতো, এই সঙ্কটের থেকে উৎপন্ন অন্যান্য সমস্যারও সমাধান করতে হতো। করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সারা পৃথিবীতে কাজ বন্ধ হয়ে যায়, যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ভারতের সামনে আরও অনেক সমস্যা তৈরি হতে শুরু করে। এই সমস্যার মোকাবিলায় সারা দেশ জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করেছিলো। আমাদের কোটি কোটি মানুষের কাছে বিনামূল্যে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজন ছিলো, যাতে কেউ অভুক্ত না থাকে। আমাদের অনেক বন্ধু গ্রাম থেকে শহরে গিয়েছিলেন কাজের জন্যে, আমাদের তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন ছিলো এবং গ্রামে ফিরে গেলে তাঁদের রোজগারের ব্যবস্থা করারও প্রয়োজন ছিলো। গোটা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এই সমস্ত সমস্যা আমাদের সামনে ছিলো, যা বিশ্বের বাকি দেশগুলির তুলনায় ভারতের লড়াই এবং ভারতের সামনে যে সমস্যা তৈরি হয়েছিলো তা কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছিলো।
কিন্তু বন্ধুরা,
সমস্যা যতই বড় হোক না কেন, যখন দেশ একজোট হয়ে তার মোকাবিলা করে, তখন পথও বেরিয়ে আসে, সমস্যার সমাধানও সম্ভব হয়। করোনা সঙ্কটের মোকাবিলা করতে ভারত তার নিজের রণকৌশলে দরিদ্রদের অগ্রাধিকার দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনা হোক অথবা প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ রোজগার যোজনা, প্রথম দিন থেকেই দরিদ্রদের এবং শ্রমিকদের অন্ন এবং রোজগারের চিন্তা করা হয়েছে। এই পুরো সময়ে ৮০ কোটিরও বেশি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শুধু আটা, চাল আর ডালই নয়, লকডাউনের সময়ে আমাদের ৮ কোটিরও বেশি দরিদ্র পরিবারকে বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে। ৮০ কোটি মানুষকে অন্ন, ৮ কোটিরও বেশি মানুষকে গ্যাস। শুধু তাই নয়, প্রায় ২০ কোটিরও বেশি বোনেদের জনধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা সরাসরি পাঠানো হয়েছে। শ্রমিক এবং কৃষকদের অ্যাকাউন্টেও হাজার কোটি টাকা জমা করা হয়েছে। আর দু-দিন পর ৯ই আগস্ট প্রায় ১০-১১ কোটি কৃষক পরিবারদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আবারও হাজার কোটি টাকা সরাসরি পাঠানো হবে।
বন্ধুরা,
এই সমস্ত ব্যবস্থার পাশাপাশি ভারত ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ টিকার ওপর সম্পূর্ণ জোর দিয়েছে। সেজন্যেই আজ ভারতের কাছে নিজস্ব টিকা রয়েছে। এই টিকা কার্যকরী এবং সুরক্ষিতও। গতকালই ভারত ৫০ কোটি টিকার ডোজের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক পার করেছে। ভারতে এক সপ্তাহের মধ্যে যত মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে, তা পৃথিবীর কোনও কোনও দেশের জনসংখ্যার সমান। নতুন ভারতের এটি নতুন শক্তি। ভারত ক্রমশ আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে। আগে আমরা বিশ্বের বাকি দেশদের থেকে পিছিয়ে থাকতাম, আজ আমরা বিশ্বের থেকে কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছি। আগামী দিনে আমাদের টিকাকরণ অভিযানে আরও গতি আনতে হবে।
বন্ধুরা,
করোনার জন্যে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারত আজ একইসঙ্গে যে বিভিন্ন পর্যায়ে সমস্যার মোকাবিলা করছে তা আমাদের দেশের শক্তির প্রতীক। আজ, অন্যান্য রাজ্যে কর্মরত শ্রমিকদের সুবিধার জন্য, এক দেশ, এক রেশন কার্ডের পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। বড়- বড় শহরগুলিতে যাতে শ্রমিকদের বস্তিতে থাকতে না হয়, সেজন্যে ন্যায্য মূল্যের ভাড়ায় বাসস্থানের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে ।আমাদের ভাই –বোনেরা, যারা রাস্তায় হকারি এবং ঠেলাওয়ালার কাজ করে, আমাদের এই বন্ধুরা যাতে আবার তাদের ব্যবসা শুরু করতে পারেন, সেজন্যে পিএম স্বনিধি যোজনার অধীনে, তাদের ব্যাঙ্ক থেকে সহজে ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের নির্মাণ ক্ষেত্র, আমাদের পরিকাঠামো ক্ষেত্র, কর্মসংস্থানের একটি বিশাল উৎস। সেজন্যে, সারা দেশে বিভিন্ন পরিকাঠামোর প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন করার কাজ চলছে।
বন্ধুরা,
সারা বিশ্ব জুড়ে জীবনযাত্রার ওপর যে অভূতপূর্ব সঙ্কট দেখা দিয়েছে, তার ফলে ক্ষতি যাতে কম হয়, ভারত নিরলসভাবে সেই চেষ্টাই করে চলেছে। সেজন্যে গত বছরে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং এখনও নেওয়া হচ্ছে। অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র শিল্প সংস্থাগুলিকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্যে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে। কৃষি এবং তার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কাজকর্ম যাতে চলতে পারে, তাও নিশ্চিত করেছে সরকার। আমরা কৃষকদের সাহায্য করতে নতুন সমাধান তৈরি করেছি। মধ্যপ্রদেশও এক্ষেত্রে প্রশংসনীয় কাজ করেছে। মধ্যপ্রদেশের কৃষকেরা রেকর্ড পরিমাণে উৎপাদন করেছে, সরকারও রেকর্ড পরিমাণে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে শস্য সংগ্রহ নিশ্চিত করেছে। আমাকে জানানো হয়েছে যে এবারে মধ্যপ্রদেশে গম সংগ্রহের জন্যে দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি সংগ্রহ কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ সরকার ১৭ লক্ষেরও বেশি কৃষকের কাছ থেকে গম কিনেছে। এবং ২৫ হাজার কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা পড়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল যে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলিকে আরও উন্নত করে, তার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। দক্ষতা উন্নয়ন হোক, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো হোক, ডিজিটাল পরিকাঠামো হোক, রেল-সড়ক যোগাযোগ হোক, মধ্যপ্রদেশে প্রত্যেক ক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। শিবরাজ জির নেতৃত্বে মধ্যপ্রদেশ ‘অসুস্থ’ রাজ্যের তকমা অনেক আগেই পিছনে ফেলে এসেছে। অন্যথায় আমার মনে আছে মধ্যপ্রদেশের রাস্তাগুলির কি অবস্থা ছিল। সেখান থেকে অনেক বড়-বড় দূর্নীতির খবর পাওয়া যেত। আজ মধ্যপ্রদেশের শহরগুলি পরিচ্ছন্নতা ও উন্নয়নের নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
ভাই ও বোনেরা,
আজ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প দ্রুতগতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে, কার্যকর করা হচ্ছে, কারণ সরকারের কাজের ধরনে পরিবর্তন এসেছে। আগেকার সরকারি ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিলো। তাঁরা দরিদ্রদের বিষয়ে প্রশ্নও নিজেরা করত, উত্তরও নিজেরাই দিতো। সুবিধাভোগীদের ব্যাপারে ভাবাই হতো না। কিছু মানুষ ভাবতেন, দরিদ্রদের রাস্তার কী প্রয়োজন, তাঁদের তো আগে রুটির প্রয়োজন। কিছু ব্যক্তি তো এরকমও বলতেন যে দরিদ্রদের গ্যাসের কী দরকার, কাঠের উনুনেও তো খাবার বানানো যায়। এক একজন তো এরকমও বলতো যে যার কাছে রাখার টাকাই নেই, তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কী প্রয়োজন? ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পিছনে কেন পড়ে আছ? প্রশ্ন করা হতো দরিদ্রদের ঋণ দিলে তাঁরা তা শোধ করবে কী করে ? কয়েক দশক ধরে এই প্রশ্নগুলিই দরিদ্রদের এই সমস্ত সুবিধার থেকে বঞ্চিত রেখেছিলো। এটা একভাবে কিছু না করার বাহানা ছিলো। দরিদ্রদের জন্যে রাস্তাও হয়নি, দরিদ্রদের জন্যে গ্যাসও ছিলো না, দরিদ্ররা বিদ্যুতও পায়নি, দরিদ্ররা পাকা বাড়িও পায়নি, দরিদ্রদের জন্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খোলা হয়নি, দরিদ্রদের জন্যে পানীয় জলও পৌছয়নি। ফলে, কয়েক দশক ধরে দরিদ্ররা মূল পরিষেবা সুবিধাগুলির থেকে বঞ্চিত ছিলো এবং ছোটো-ছোটো প্রয়োজনের জনেও তাঁদের সারাদিন পরিশ্রম করতে হতো। এবার এটাকে আমরা কী বলবো? সারাদিন মুখে দরিদ্রদের নাম জপতো, দরিদ্রদের গান গাইতো, দরিদ্রদের গীত গাইতো। কিন্তু তাদের ব্যবহার এমন ছিলো। এধরনের ব্যবহারকে আমাদের এখানে পাখন্ড বলা হয়, পাখন্ড। এরা কোনো সুবিধা তো দিতই না, কিন্তু দরিদ্রদের প্রতি মিথ্যা সহানুভূতি দেখাতো। কিন্তু আমরা যারা কাজ করে উঠে এসেছি, আমরা যারা আপনাদের মধ্যে থেকেই এসেছি, আপনাদের সুখ-দুঃখ কাছ থেকে অনুভব করেছি, আমরা আপনাদের মধ্যে থেকেই উঠে এসেছি, সেজন্যে আমরা আপনাদের জন্যে কাজের ধরন পরিবর্তন করেছি। আমরাও এই ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে বেড়ে উঠেছি। সেজন্যেই বিগত কয়েক বছর ধরে দরিদ্রদের সাহায্য করতে, সঠিক অর্থে তাঁদের ক্ষমতায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। আজ দেশের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে যে সড়ক তৈরি হচ্ছে, তার থেকে নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে, কৃষকরা বাজারের সুযোগ পাওয়ার ফলে তাঁদের সুবিধা হচ্ছে। দরিদ্র মানুষরাও এখন সময় মতো হাসপাতালে পৌঁছতে পারছেন। দেশে দরিদ্রদের জনধন অ্যাকাউন্ট খোলার ফলে তাঁরা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আজ তাঁরা মধ্যস্থতাকারীদের ছাড়াই সরাসরি লাভের ভাগ পাচ্ছেন। সহজে ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। পাকা বাড়ি, বিদ্যুৎ, পানীয় জল, গ্যাস এবং শৌচালয়ের সুবিধা দরিদ্রদের সম্মান দিয়েছে, আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে, অপমানের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিয়েছে। একইভাবে মুদ্রা ঋণের ফলে আজ শুধু যে কয়েক কোটি স্বনির্ভর সংস্থা চলছে তাই নয়, তাঁরা অন্যদের জন্যেও কর্মসংস্থান তৈরি করছে।
বন্ধুরা,
যারা বলতেন, দরিদ্ররা ডিজিটাল ইন্ডিয়া, সস্তা ডেটা, ইন্টারনেটকে গুরুত্ব দেয় না, তারা আজ ডিজিটাল ইন্ডিয়ার শক্তি অনুভব করছেন।
ভাই ও বোনেরা,
গ্রামের মানুষ দরিদ্র ও আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের ক্ষমতায়নের জন্য এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর ফলে, আমাদের হস্তশিল্প, হস্তচালিত তাঁত এবং বস্ত্র শিল্পের কারিগরদের বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে উৎসাহ দেখা দিচ্ছে। এই অভিযান ‘লোকাল ফর ভোকাল’ কে আরও শক্তিশালী করে। এই ভাবনা নিয়েই আজ দেশ জাতীয় হস্ত চালিত তাঁত দিবস- অর্থাৎ ন্যাশনাল হ্যান্ডলুম ডে উদযাপন করছে। এবং যখন আমরা স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উদযাপন করছি, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছি, তখন এই ৭ই আগস্টের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত, ১৯০৫ সালের ৭ই আগস্ট স্বদেশী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। এই ঐতিহাসিক দিনের অনুপ্রেরণা থেকেই ৭ই আগস্ট হস্তশিল্পের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। আজকের দিনটি গ্রামে গ্রামে, আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত অঞ্চলগুলিতে আমাদের অসাধারণ শিল্পী, প্রতিভাবান কারিগরদের প্রতি সম্মান জানানোর, তাঁদের আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার দিন।
ভাই ও বোনেরা,
আজ যখন দেশ স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছে, তখন হস্তশিল্প দিবসের গুরুত্ব আরও কয়েকগুন বেড়ে যায়। আমাদের চরকার, আমাদের খাদির আমাদের স্বাধীনতার আন্দোলনে কতবড় অবদান রয়েছে, তা আমরা সকলেই জানি। বিগত কয়েক বছরে, দেশ খাদি বস্ত্রকে তুলে ধরেছে। এক সময় খাদি মানুষ ভুলে যেতে বসেছিলেন। কিন্তু, এখন খাদি একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হিসাবে পরিচিতি লাভ করছে। আমরা স্বাধীনতার ১০০ বছরের দিকে এগোচ্ছি। আমাদের তাই খাদির মাধ্যমে স্বাধীনতার গুরুত্বকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে হবে। আত্মনির্ভর ভারতের জন্যে আমাদের লোকালের জন্যে ভোকাল হতে হবে। মধ্যপ্রদেশে তো খাদি, রেশম সহ অনেক ধরনের হস্তশিল্পের সমৃদ্ধ পরম্পরা রয়েছে। আমার আপনাদের সকলের কাছে আবেদন যে আসন্ন উৎসবে হস্তশিল্পের কোনো একটি সামগ্রী অবশ্যই কিনবেন। আমাদের হস্তশিল্পকে সাহায্য করবেন।
আর বন্ধুরা,
আমি এটাও বলব যে উৎসবের উদ্দীপনার মধ্যে, আমাদের করোনাকে ভুলে গেলে হবে না। আমাদের করোনার তৃতীয় ঢেউকে আটকাতে হবে। এর জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মাস্ক, টিকা এবং দুই গজের দূরত্ব, এগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ ভারতের জন্য আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে, সমৃদ্ধ ভারতের জন্য আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে। আবারও আপনাদের সকলকে আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা। এবং আজ মধ্যপ্রদেশে ২৫ হাজারেরও বেশি বিনামূল্যে রেশন দোকানে কয়েক কোটি নাগরিক জড়ো হয়েছেন, আমি তাঁদেরকেও প্রণাম জানাই। করোনা সবাইকে দুশ্চিন্তায় রেখেছে। আমরা সকলে একসঙ্গে এই রোগ থেকে বেরিয়ে আসব। আমরা সবাইকে বাঁচাবো, একসঙ্গে বাঁচাবো, সব নিয়ম মেনে এবং এই জয় নিশ্চিত করব। আমি আপনাদের অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই। ধন্যবাদ।
CG/JD
(Release ID: 1743957)
Visitor Counter : 341
Read this release in:
Assamese
,
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam