জলশক্তি মন্ত্রক

উন্নয়নে আগ্রহী ১১৭টি জেলায় কেবল ২২ মাসে ৮৪ লক্ষ পরিবারে পাইপ বাহিত জল সরবরাহ ৭% থেকে চার গুণ বেড়ে ৩১% হয়েছে

ইউএনডিপি-র পক্ষ থেকে ভারতের উন্নয়নে আগ্রহী জেলাগুলির জন্য গৃহীত কর্মসূচির প্রশংসা

Posted On: 25 JUN 2021 6:15PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি,  ২৫ জুন, ২০২১

 

রাষ্ট্রসংঘের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির (ইউএনডিপি) পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক স্বতন্ত্র প্রতিবেদনে ভারতে উন্নয়নে আগ্রহী জেলাগুলির জন্য যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, তাকে 'স্থানীয় এলাকা উন্নয়নে এক অত্যন্ত সফল মডেল' হিসেবে বর্ণনা করে তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অন্যান্য দেশ যেখানে আঞ্চলিক বৈষম্য রয়েছে, সেখানে ভারতের এই কর্মসূচি মডেল হিসেবে কার্যকর করা যেতে পারে। 

উন্নয়নে আগ্রহী জেলাগুলির জন্য গৃহীত কর্মসূচির আওতায় নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াসের ফলে ১১৭টি জেলায় মানব উন্নয়নের সূচক এবং মৌলিক সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে। এই অগ্রগতিতে জল জীবন মিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৯-এর ১৫ই আগস্ট জল জীবন মিশন চালু করার কথা ঘোষণা করা হয়। সে সময় উন্নয়নে আগ্রহী জেলাগুলিতে কেবল ২৪ লক্ষ ৫৮ হাজার (৭ শতাংশ) পরিবারের কাছে পাইপ বাহিত জল সংযোগের সুবিধা ছিল। কিন্তু গত ২২ মাসের মধ্যে এই জেলাগুলিতে আরও ৮৪ লক্ষ পরিবারের কাছে পাইপ বাহিত জল সংযোগের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, পাইপ বাহিত জল সংযোগের সুবিধা পাওয়া পরিবারের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.৩৭ শতাংশ। এই হার গত ২২ মাসে প্রায় ২৪ শতাংশ বা চার গুণ বেড়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮-র জানুয়ারিতে মানব উন্নয়নের সূচকে পিছিয়েপড়া ১১৭টি জেলায় সাধারণ মানুষের জীবন-যাপনের মানোন্নয়নে উন্নয়নে আগ্রহী জেলা সংক্রান্ত একগুচ্ছ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। এই জেলাগুলিতে জল জীবন মিশন অসাম্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস -এই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জল জীবন মিশনের আওতায় যাতে গ্রামের একটি পরিবারও বাদ না পড়ে সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 

২০১৯-এ জল জীবন মিশন শুরুর সময় দেশে মোট ১৯ কোটি ২০ লক্ষ গ্রামীণ পরিবারের মধ্যে কেবল ৩ কোটি ২৩ লক্ষ (১৭ শতাংশ) পরিবারে পাইপ বাহিত জল সংযোগের সুবিধা ছিল। কিন্তু মিশনের আওতায় গত ২২ মাসে কোভিড-১৯ মহামারী ও লকডাউনজনিত বিধি-নিষেধ সত্বেও দ্রুততার সঙ্গে কাজকর্ম অব্যাহত রেখে ৪ কোটি ৩৬ লক্ষ পরিবারে জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, সারা দেশে ৭ কোটি ৫৯ লক্ষ (৩৯.৫৮ শতাংশ) গ্রামীণ পরিবারে পাইপ বাহিত জল সংযোগের সুবিধা পৌঁছে গেছে। ইতিমধ্যেই গোয়া, তেলেঙ্গানা, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং পন্ডিচেরিতে ১০০ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারে পাইপ বাহিত জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। 'প্রধানমন্ত্রী হার ঘর জল' - নামে যে সুপরিকল্পিত দৃ্ষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছেন, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ৬৩টি জেলার প্রতিটি পরিবারে এবং প্রায় ৯৪ হাজার গ্রামে জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। 

কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের লেখা চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়ার যে পরিকল্পনা নিয়েছেন, তা বাস্তবায়িত করতে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য রাজ্যগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী উন্নয়নে আগ্রহী জেলাগুলির পাশাপাশি সমস্ত তপশিলি জাতি ও উপজাতি অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাইপ বাহিত জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। 

তেলেঙ্গানার উন্নয়নে আগ্রহী তিনটি জেলায় পাইপ বাহিত জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই বিহারে উন্নয়নে আগ্রহী জেলাগুলির সমস্ত গ্রামীণ পরিবারে পাইপ বাহিত জল সংযোগ পৌঁছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, গুজরাট, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, মণিপুর, মেঘালয়, পাঞ্জাব ও সিকিমে আগামী ২০২২-এর মধ্যে সমস্ত গ্রামীণ পরিবারে পাইপ বাহিত জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য স্থির হয়েছে। 

রাজ্যগুলির মধ্যে বিহার উন্নয়নে আগ্রহী জেলায় লক্ষ্যণীয় কাজ করেছে। রাজ্যের ১৩টি উন্নয়নে আগ্রহী জেলায় ৭২ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারে পাইপ বাহিত জল সংযোগ পৌঁছে গেছে। অন্ধ্রপ্রদেশের উন্নয়নে আগ্রহী জেলা কাডাপায় ৮২ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারে জল জীবন মিশনের আওতায় পাইপ বাহিত জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গুজরাটে উন্নয়নে আগ্রহী জেলা নর্মদায় ৭৭ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারে জল সংযোগ পৌঁছে গেছে। 

বিদ্যালয়, আশ্রম ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে শিশুদের জন্য নিরাপদ জলের বন্দোবস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী ১০০ দিনের অভিযানের কথা ঘোষণা করেন। এই প্রেক্ষিতে জল শক্তি মন্ত্রী শ্রী শেখাওয়াত গত বছরের ২ অক্টোবর এই অভিযানের সূচনা করেন। অভিযানের আওতায় হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব, গুজরাট, অন্ধ্রপ্রদেশ, গোয়া, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে একাধিক বিদ্যালয়, আশ্রম ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পাইপ বাহিত জল সংযোগের ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। শ্রী শেখাওয়াত মুখ্যমন্ত্রীদের লেখা চিঠিতে বাকি রাজ্যগুলিকেও এধরণের উদ্যোগ দ্রুত কার্যকর করার অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে শিশুদের জন্য আরও ভাল স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তোলা যায়। 

উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৯-এর ১৫ আগস্ট লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রী জল জীবন মিশন কর্মসূচি শুরু করার কথা ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচিতে ২০২৪ সালের মধ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সহযোগিতায় প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারে পাইপ বাহিত জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়। ২০২১-১১-এ জল জীবন মিশন কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য ৫০ হাজার ১১ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যগুলির নিজস্ব সম্পদ এবং পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অনুদান বাবদ ২৬ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা মিলিয়ে এই কর্মসূচির জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি তহবিল সংস্থান করা হয়েছে। বিপুল এই অর্থের বিনিময়ে কর্মসূচি রূপায়ণের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ ঘটবে। 

 

CG/BD/AS/



(Release ID: 1730410) Visitor Counter : 251