নয়াদিল্লী, ২৯ জানুয়ারি, ২০২১

    কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অর্ন্তগত ব্যয় বরাদ্দ দপ্তর তেলেঙ্গানার জন্য অতিরিক্ত ১৭৯ কোটি টাকার মূলধনী প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। মূলত এই অর্থ চারটি নির্ধারিত নাগরিক কেন্দ্রিক ক্ষেত্রের মধ্যে তিনটি অর্থাৎ এক দেশ এক রেশন কার্ড, সহজে ব্যবসা এবং স্থানীয় প্রশাসনিক সংস্থার সংস্কারে উৎসাহ যোগাবে। এই প্রকল্পগুলি মূলত সদ্য চালু হওয়া ‘মূলধনী প্রকল্পের জন্য রাজ্যগুলিকে আর্থিক সহায়তা’ প্রকল্পের আওতায় অনুমোদিত হয়েছে । 

    তেলেঙ্গানা হল দ্বিতীয় রাজ্য, যারাএই প্রকল্পের আওতায় অতিরিক্ত তহবিল পেয়েছে। এর আগে মধ্যপ্রদেশের জন্য ৬৬০ কোটি টাকার অতিরিক্ত মূলধনী প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছিল। ১৭৯ কোটি টাকার অতিরিক্ত অনুমোদিত অর্থের মধ্যে তেলেঙ্গানাকে ৮৯.৫০ কোটি টাকা প্রথম দফায় ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আত্মনির্ভর ভারত প্যাকেজের আওতায় গত বছর ১২ই অক্টোবর ‘মূলধনী ব্যয়ের জন্য রাজ্যগুলিকে বিশেষ সহায়তা প্রদান’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন।

    এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্যই ছিল রাজ্য সরকারগুলির মূলধনী ব্যয়ের ক্ষেত্রে গতি আনা। মূলত কোভিড-১৯ মহামারীর জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় নানান আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এক্ষেত্রে এই প্রকল্প রাজ্যগুলিকে মূলধনী ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ সাহায্য প্রদান করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিকূল আর্থিক পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও ২০২০-২১ অর্থবর্ষে মূলধনী ব্যয়ের বিষয়ে রাজ্য সরকারগুলিকে বিশেষ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

    এই প্রকল্পে রাজ্য সরকারগুলির কাছ থেকে খুব ভালো সারা মিলিছে। এখনও পর্যন্ত ২৭টি রাজ্যকে ১০৮৩৫.৫০ কোটি টাকা মূলধনী ব্যয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম কিস্তি হিসেবে ইতিমধ্যেই রাজ্যগুলিতে ৫৪১৭.৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তামিলনাড়ু এই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করতে পারেনি। মূলধনী ব্যয়ের জন্য রাজ্যগুলিকে বিশেষ সহায়তা প্রদান প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গের জন্য ৬৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। তারমধ্যে ৩১৫ কোটি টাকা ছাড়া হয়েছে। 

    মূলত স্বাস্থ্য, গ্রামোন্নয়ন, জল সরবরাহ, সড়ক ও সেতু নির্মাণ, সেচ ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ, পরিবহণ, শিক্ষা এবং নগরোন্নয়নের মতো আর্থিক ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন খাতে মূলধনী ব্যয় প্রকল্পগুলি অনুমোদিত হয়েছে। এই প্রকল্পের তিনটি অংশ রয়েছে। প্রকল্পের প্রথম অংশে আওতায় উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং পার্বত্য রাজ্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মূলত অরুণাচলপ্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম এবং ত্রিপুরা ৭টি রাজ্যকে পৃথক পৃথক ভাবে ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। পার্বত্য রাজ্য হিসেবে হিমাচলপ্রদেশ এবং উত্তরাখন্ড আলাদাভাবে ৪৫০ কোটি টাকা করে পায়। 

    এই প্রকল্পের দ্বিতীয় অংশে প্রথম অংশের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন সমস্ত রাজ্যগুলিকে ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। প্রকল্পের তৃতীয় অংশে মূলত রাজ্যগুলিতে নাগরিক কেন্দ্রিক বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে সংস্কার সাধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এই অংশে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৫ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে যেসমস্ত রাজ্য অর্থ মন্ত্রকের নির্ধারিত ৪টির মধ্যে অন্তত ৩টি নাগরিক কেন্দ্রিক কাজের ক্ষেত্রে সংস্কার সাধন সম্পূর্ণ করেছে তারাই এই অর্থ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

***

CG/SS/NS