Rural Prosperity
বিকশিত ভারত - জি রাম জি আইন, ২০২৫
Posted On:
22 DEC 2025 1:56PM
ভূমিকা
২০০৫ সালে এমজিনারেগা চালু হওয়ার পর থেকে এটি গ্রামীণ আয়ের সুরক্ষা ও মৌলিক পরিকাঠামো নির্মাণে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামীণ ভারতের বাস্তবতা বদলেছে। আয় বৃদ্ধি, ডিজিটাল সংযোগ ব্যাবস্থার প্রসার, বহুমুখী জীবিকা ও উন্নত যোগাযোগ ব্যাবস্থা এমজিনারেগার প্রাথমিক পরিকাঠামোকে অনেক ক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছে। এই প্রেক্ষাপটে বিকশিত ভারত গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ) আইন, ২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা এমজিনারেগার পরিবর্তে বিকশিত ভারত ২০৪৭-এর লক্ষ্য পূরণে গ্রামীণ কর্মসংস্থানকে নতুন দিশা দিয়েছে।
মূল বিষয়বস্তু
এমজিনারেগা বা মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি প্রকল্পর পরিবর্তে বিকশিত ভারত ২০৪৭-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নতুন আইন প্রবর্তন করা হয়েছে।
গ্রামীণ পরিবারের জন্য কর্মসংস্থানের গ্যারান্টি ১০০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২৫ দিন করা হয়েছে।
কর্মসংস্থানকে সুস্থায়ী গ্রামীণ পরিকাঠামো নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি,
বিকশিত গ্রাম পঞ্চায়েত পরিকল্পনার মাধ্যমে বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনা এবং জাতীয় স্তরে সমন্বিত পরিকল্পনাতে জোর দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কেন্দ্র–রাজ্য অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করা হবে।
ভারতের গ্রামীণ কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন নীতি
স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের গ্রামীণ উন্নয়ন নীতি মূলত দারিদ্র্যতা হ্রাস করা, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা ও গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর কেন্দ্রীভূত ছিল। ১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু হওয়া বিভিন্ন প্রকল্পগুলিকে একত্রিত করে ২০০৫ সালে এমজিনারেগা প্রণীত হয়।
এমজিনারেগা বা মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কর্মসংস্থান গ্যারান্টি প্রকল্পর বিবর্তন ও সীমাবদ্ধতা
এমজিনারেগা উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করলেও, এতে কিছু পরিকাঠামোগত দুর্বলতা ছিল। অনেক পরিবার ১০০ দিনের কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেনি, কিছু ক্ষেত্রে অর্থব্যয় ও বাস্তবক্ষেত্রে হওয়া কাজের মধ্যে অমিল দেখা গেছে। এই উপলব্ধি থেকেই নতুন আইনের প্রয়োজন দেখা দেয়।
নতুন আইনি পরিকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা
২০০৫ সালের তুলনায় আজকের গ্রামীণ ভারত অনেকটাই বদলে গেছে। দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে এবং জীবিকা হয়েছে বহুমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর। এই বাস্তবতায় এমজিনারেগার মডেল আর পুরোপুরি কার্যকর নয়। নতুন আইনটি এই পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গ্রামীণ কর্মসংস্থানকে আধুনিক রূপ দিয়েছে।
বিকশিত ভারত–জি রাম জি আইন, ২০২৫-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য
এই আইনে প্রত্যেক গ্রামীণ পরিবারকে বছরে ১২৫ দিনের কাজের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। কৃষিকাজের সময় বিবেচনায় করে কাজের সময়সূচি নির্ধারিত হয়েছে। মজুরি প্রদানের সময়সীমা নির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং কাজকে চারটি ক্ষেত্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এগুলি হল- জল সুরক্ষা, গ্রামীণ পরিকাঠামো, জীবিকা-সম্পর্কিত পরিকাঠামো ও জলবায়ু সহনশীলতা সংক্রান্ত।
পরিকল্পনা ও পরিকাঠামোর সমন্বয়
সব সম্পদকে "বিকশিত ভারত জাতীয় গ্রামীণ পরিকাঠামো স্ট্যাক" -এর আওতায় এনে জাতীয় স্তরে সমন্বিত উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। স্থানীয় স্তরে পরিকল্পনা করা হবে, বিকশিত গ্রাম পঞ্চায়েত পরিকল্পনা-র মাধ্যমে।
এমজিনারেগা বনাম বিকশিত ভারত–জি রাম জি আইন
নতুন আইনটি এমজিনারেগার দুর্বলতাগুলি দূর করে অধিক কর্মসংস্থান, উন্নত পরিকল্পনা, শক্তিশালী নজরদারি ব্যাবস্থা ও অধিক স্বচ্ছতা সুনিশ্চিত করেছে।
আর্থিক কাঠামো
এই আইনটি একটি কেন্দ্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাধীন প্রকল্প, যেখানে কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে দায়িত্ব বহন করবে। মোট বার্ষিক ব্যয়ের আনুমানিক পরিমাণ ₹১.৫১ লক্ষ কোটি টাকা। ব্যয় ভাগাভাগির কাঠামো রাজ্যগুলির সক্ষমতা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়েছে, যাতে তাদের উপর আর্থিক চাপ বৃদ্ধি না পায়।
চাহিদা-ভিত্তিক থেকে নর্মেটিভ ফান্ডিং-এ পরিবর্তনের কারণ
চাহিদা-ভিত্তিক তহবিল বরাদ্দ অনিশ্চিত ও বাজেট পরিকল্পনায় অসুবিধা সৃষ্টি করত। নর্মেটিভ ফান্ডিং-এর মাধ্যমে পূর্বানুমেয় বাজেট, যুক্তিসংগত পরিকল্পনা এবং আইনি কর্মসংস্থানের অধিকার বজায় রাখা সম্ভব হবে।
আইনের উপকারিতা
এই আইন গ্রামীণ কর্মসংস্থানকে উৎপাদনক্ষম সম্পদ সৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত করে আয় বৃদ্ধি করবে। জল সংরক্ষণ, সড়ক, সংরক্ষণাগার ও জলবায়ু সহনশীল পরিকাঠামো গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।
কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য খুশির খবর
কৃষকরা উন্নত সেচের সুবিধা পাবেন। শ্রমিকরা পাবেন বেশি আয়, নিয়মিত কাজ, মজুরি সুরক্ষা ও বেকার ভাতা।
বাস্তবায়ন ও নজরদারি ব্যবস্থা
জাতীয় স্তর থেকে গ্রামীণ স্তর পর্যন্ত একটি সুসংহত প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। পঞ্চায়েত ও গ্রামসভা ভিত্তিক পরিকল্পনা এবং এর বাস্তবায়ন, সামাজিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সামাজিক সুরক্ষা
ডিজিটাল নজরদারি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ, বায়োমেট্রিক যাচাই, রিয়েল-টাইম ড্যাশবোর্ড ও নিয়মিত সামাজিক নিরীক্ষার মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও আর্থিক শৃঙ্খলা সুনিশ্চিত করা হয়েছে।
উপসংহার
বিকশিত ভারত–জি রাম জি আইন, ২০২৫ ভারতের গ্রামীণ কর্মসংস্থানে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন। এটি এমজিনারেগার সীমাবদ্ধতা দূর করবে এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানকে সুস্থায়ী উন্নয়নের হাতিয়ারে পরিণত করবে। এই আইন বিকশিত ভারত ২০৪৭-এর লক্ষ্যে গ্রামীণ ভারতের জন্য একটি শক্তিশালী ও ভবিষ্যৎমুখী ভিত্তি তৈরি করবে।
তথ্যসূত্র
Ministry of Rural Development
https://mnregaweb4.nic.in/netnrega/SocialAuditFindings/SAU_FMRecoveryReport.aspx?lflag=eng&fin_year=2024-2025&source=national&labels=labels&rep_type=SoA&Digest=3uRMVt6308BGCW2QZYttXQ
Lok Sabha Bill
https://sansad.in/getFile/BillsTexts/LSBillTexts/Asintroduced/As intro1216202512439PM.pdf?source=legislation
News on Air
https://www.newsonair.gov.in/indias-extreme-poverty-falls-to-5-3-in-2022-2023-says-world-bank/
PIB Press Releases
https://www.pib.gov.in/PressNoteDetails.aspx?id=155090&NoteId=155090&ModuleId=3®=3&lang=2
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2207187®=3&lang=2
Click here to see PDF
***
SSS/PK
(Backgrounder ID: 156655)
आगंतुक पटल : 9
Provide suggestions / comments