Energy & Environment
ভারতের পরিবেশ-বান্ধব সমুদ্র অভিযান
সুস্থায়ী সমুদ্র অর্থনীতির জন্য ভারতের সামুদ্রিক পরিকল্পনা
Posted On:
15 DEC 2025 11:30AM
ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫
মূল বিষয়বস্তু
মেরিটাইম ইন্ডিয়া ভিশন ২০৩০ হল বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান সুযোগের একটি সহায়ক শক্তি, যা ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং বিশ্বব্যাপি প্রতিযোগিতার দিকে পথ তৈরি করছে।
অমৃত কাল ভিশন ২০৪৭ হরিৎ শিপিং এবং সামুদ্রিক বৃদ্ধির জন্য প্রায় ৮০ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
সাগরমালা কর্মসূচি ২০৩৫ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ৫.৮ লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের ৮৪০-টি প্রকল্প রয়েছে।
সূচনা
ভারতে সবুজ সামুদ্রিক কার্যকলাপের মূল লক্ষ্য - বন্দরের কাজকে নিরাপদ, পরিষ্কার এবং সুস্থায়ী করা। ভারতের দীর্ঘ উপকূলরেখা এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করতে বন্দরগুলির জন্য পরিবেশ সুরক্ষা অপরিহার্য। তাই বন্দরের কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবহার, বায়ু ও জলের মান উন্নয়ন, এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। মেরিটাইম ইন্ডিয়া ভিশন ২০৩০ হল ভারতকে একটি হরিৎ ও সুস্থায়ী সামুদ্রিক শক্তিতে পরিণত করার নীলনকশা। ন্যাশনাল গ্রীন হাইড্রোজেন মিশনের মাধ্যমে গ্রীন হাইড্রোজেন এবং অন্যান্য পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার করে বন্দরগুলি বাণিজ্যের পাশাপাশি, সুস্থায়ী ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করছে।
জাতীয় গ্রীন হাইড্রোজেন মিশন
ভারত সরকার কার্বন নিঃসরণ কমাতে ও গ্রীন হাইড্রোজেনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে নেতা হতে জাতীয় গ্রীন হাইড্রোজেন মিশন চালু করেছে। ২০৩০ সালের লক্ষ্য হল, বার্ষিক ৫০ লক্ষ টন উৎপাদন, ৮ লক্ষ কোটি বিনিয়োগ, ৬ লক্ষ চাকরি এবং ১ লক্ষ কোটি আমদানি সাশ্রয় করা। এই মিশনের মূল লক্ষ্য হল, উৎপাদন, গবেষণা এবং ইস্পাত, পরিবহন ও সার শিল্পে জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতিস্থাপন। এই লক্ষ্য পূরণে কান্ডালা, পারাদ্বীপ ও তুতিকোরিন - এই তিনটি বন্দরকে গ্রিন হাইড্রোজেন হাব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মেরিটাইম ইন্ডিয়া ভিশন ২০৩০ ও অমৃত কাল ২০৪৭: ভারতের হরিৎ সমুদ্র দিশা
নতুন আইন, বড় প্রকল্প এবং বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে ভারত মেরিটাইম ইন্ডিয়া ভিশন ২০৩০-এর আওতায় সবুজ প্রযুক্তি ও ডিজিটাল উদ্ভাবনে জোর দিচ্ছে। এই লক্ষ্যে ৩-৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং জাহাজ নির্মাণে ৬৯,৭২৫ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে মেরিটাইম অমৃত কাল ভিশন ২০৪৭, যেখানে সমুদ্র বিষয়ক অর্থনীতির পুনরুত্থানের জন্য প্রায় ৮০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের দীর্ঘমেয়াদী পথনির্দেশিকা রয়েছে। সরকার গ্রিন করিডোর তৈরি এবং গ্রিন হাইড্রোজেন ব্যবহার করে দেশের সমুদ্র ক্ষেত্রকে সুস্থায়ী করছে, যার লক্ষ্য হল, স্বাধীনতার শতবর্ষের মধ্যে ভারতকে বিশ্বের অন্যতম সেরা সামুদ্রিক ও জাহাজ নির্মাণ শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
ভারতের হরিৎ বন্দর উদ্যোগসমূহ
কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় বন্দরগুলিকে সবুজ এবং আরও সুস্থায়ী করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নিচ্ছে:
সৌরশক্তি ব্যবহার: বন্দরগুলিকে সৌর প্যানেল বসানোর জন্য ছাদ, অব্যবহৃত জমি এবং জলের ব্যবহার মূল্যায়ণ করতে হবে। দুটি প্রধান উপায় আছে:
১.কার্যালয়, গুদাম এবং অন্যান্য অব্যবহৃত জমির ছাদে সৌর প্যানেল ব্যবহার করা।
২.কম গভীরতার জলতলে ভাসমান পিভি সম্পদ তৈরি করা।
বায়ুশক্তি:
ভারতীয় বন্দরগুলি উপকূলের কাছে এবং উপকূল থেকে দূরে উভয় ধরনের বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে বায়ুশক্তি গ্রহণ বৃদ্ধি করবে।
বন্দরের জমি, অগভীর জল এবং ব্রেকওয়াটার-এর মতো জায়গায় উপকূলের কাছে বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য উপযুক্ত এলাকা চিহ্নিত করা।
বেসরকারি বায়ু উৎপাদকদের সঙ্গে যৌথভাবে এবং অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে উইন্ডমিল স্থাপন করা।
ভারতীয় উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত, ওখা বন্দরের চারপাশের উপকূলীয় অঞ্চল এবং কচ্ছের বিশাল লবণসমৃদ্ধ ক্ষেত্রগুলির কাছাকাছি উপকূল থেকে দূরে বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা কাজে লাগানো।
গুজরাটে (কাম্বে উপসাগর বা কচ্ছ) জোয়ার-ভাটা শক্তির পরীক্ষামূলক প্রকল্প চালু করা, যার লক্ষ্য ৮,০০০-১২,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা কাজে লাগানো।
ভবিষ্যতে, যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো বেশি, সেখানে গ্রিড বিদ্যুতের নির্ভরতা কমাতে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশন টেকনোলজির ভিঝিনজাম পাইলট প্রকল্পের ভিত্তিতে বিদ্যমান উপকূলীয় কাঠামোগুলিতে তরঙ্গ শক্তি পরীক্ষা করা, যার জন্য 'অসিলেটিং ওয়াটার কলাম কনভার্টার' ব্যবহার করা হবে।
ভারতের সবুজ সামুদ্রিক অর্থনীতিকে চালিত করা প্রধান উদ্যোগ ও কর্মসূচিসমূহ
ভারত 'হরিৎ সাগর গ্রীন পোর্ট গাইডলাইনস, ২০২৩', 'জাতীয় গ্রীন হাইড্রোজেন মিশন, ২০২৩' এবং 'গ্রীন টাগ ট্রানজিশন প্রোগ্রাম, ২০২৪'-এর মাধ্যমে বন্দর ও জাহাজ শিল্পকে সুস্থায়ী করে তুলছে। মেরিটাইম ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে ঘোষণা করা ২৫,০০০ কোটি টাকা এই সবুজ পরিকাঠামো এবং বিকল্প জ্বালানিতে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে।
গ্রীন পোর্ট বিষয়ক বন্দরগুলির কাজকে পরিবেশবান্ধব এবং কার্বন নিরপেক্ষ করতে সহায়তা করবে। অন্যদিকে, গ্রীন টাগ ট্রানজিশন প্রোগ্রাম দেশীয় উদ্ভাবন ও 'মেক ইন ইন্ডিয়া'-কে সমর্থন করে প্রচলিত জ্বালানির টাগ বোটগুলির পরিবর্তে হরিৎ টাগ বোট ব্যবহারে উৎসাহিত করবে।
মে ২০২৪ সালে ঘোষিত 'পঞ্চ কর্ম সংকল্পে' হরিৎ জাহাজ পরিবহণ এবং ডিজিটাইজেশনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে:
গ্রীন টাগ ট্রানজিশন কর্মসূচির অধীনে হরিৎ জাহাজ পরিবহণের জন্য ৩০% আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। চারটি বন্দর (জেএনপিটি, ভিওসি, পারাদ্বীপ, দীনদয়াল) প্রত্যেকে দুটি করে সবুজ টাগ বোট কিনবে। দীনদয়াল বন্দর এবং ভিও চিদম্বরনার বন্দর (গ্রীন হাইড্রোজেন হাব হিসেবে তৈরি হবে)। নদী ও সমুদ্র ক্রুজের জন্য একটি মাত্র পোর্টাল চালু হবে। জেএনপিটি এবং ভিও চিদম্বরনার বন্দরকে স্মার্ট পোর্টে রূপান্তরিত করা হবে।
হরিৎ নৌ উদ্যোগ: অভ্যন্তরীণ জলপথের জাহাজগুলিতে হরিৎ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য এই নির্দেশিকা চালু করা হয়েছে।
উপকূলীয় হরিৎ শিপিং করিডোর: কান্ডলা-তুতিকোরিন করিডরকে প্রথম উপকূলীয় হরিৎ শিপিং করিডর হিসেবে এসসিআই, দীনদয়াল বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ভি. ও. চিদম্বরনার বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অংশীদারিত্বে গড়ে তোলা হবে।
সাগরমালা কর্মসূচি - ভারতকে বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক কেন্দ্রে পরিণত করার একটি প্রধান উদ্যোগ, যা মেরিটাইম ইন্ডিয়া ভিশন ২০৩০ এবং অমৃত কাল ভিশন ২০৪৭-এর মূল ভিত্তি। এর লক্ষ্য স্মার্ট ও হরিৎ পরিবহন ব্যবস্থারর মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা খরচ কমানো, বাণিজ্যের দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫.৮ লক্ষ কোটি টাকার মোট ৮৪০-টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, যার মধ্যে ইতিমধ্যে ২১৭-টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে।
পরিচ্ছন্ন বন্দর: হরিৎ প্রযুক্তি ও পদ্ধতির মাধ্যমে দূষণ কমানো
ভারতীয় বন্দরগুলি দূষণ কমাতে এবং সুস্থায়ী হতে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, শোর পাওয়ার, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, এলএনজি এবং গ্রিন বেল্ট ব্যবহার শুরু করছে।
পরিচ্ছন্ন জ্বালানি: ২০৩০ সালের মধ্যে বন্দরগুলিতে ব্যবহৃত যানবাহনের ৫০% সিএনজি, এলএনজি বা বিদ্যুতে পরিবর্তন করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
জাহাজ দূষণ হ্রাস: বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলির দূষণ কমাতে 'শোর-টু-শিপ পাওয়ার' ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, যা জাহাজগুলিকে স্থল থেকে পরিষ্কার বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
সরঞ্জাম বৈদ্যুতিকীকরণ: পরিবেশগত প্রভাব কমাতে এবং খরচ কমাতে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০% এর বেশি সরঞ্জাম বৈদ্যুতিকরণ করা হবে। এটি দুটি ধাপে করা হবে - প্রথমে ক্রেন এবং পরে পন্য সরানোর অন্যান্য সরঞ্জাম।
এলএনজি বাঙ্কারিং : বন্দর ও জাহাজগুলিকে এলএনজি-তে রূপান্তরের জন্য এলএনজি সরবরাহের সুবিধা তৈরি করা হচ্ছে।
এলএনজি বাঙ্কারিঙ : ছোট জাহাজ ও ট্রাকগুলিকে এলএনজি-তে পরিবর্তন করা হচ্ছে। এর সুবিধাগুলি - ডিজেলের চেয়ে ৮০% কম CO2, PM এবং NO - 80% নিঃসরণ, IMO-এর মান মেনে সালফারের পরিমাণ ০.৫%-এর মধ্যে রাখা এবং ডিজেলের চেয়ে ৪০%-৫০% কম খরচ।
ধুলো নিঃসরণ ব্যবস্থাপনা: ভারতীয় বন্দরগুলিতে ধুলোর দূষণ মূলত কয়লা ও লোহার মতো শুষ্ক পণ্য মজুত এবং ওঠানো-নামানোর সময় হয়। ডিজেলে প্রচুর CO2 এবং CO নির্গত হয়। তাই ভারত সরকার এখন বায়ু ও ধূলিকণা নিঃসরণ কমাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল নিচ্ছে।
গ্রীনবেল্ট : ভারতীয় বন্দরগুলিতে দূষণ কমানো, শব্দ নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশ সুন্দর করতে গ্রিন বেল্ট তৈরি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য রক্ষা, ভূমিক্ষয় রোধ এবং CO2 শোষণের মতো উপকার হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক বন্দরের আশেপাশে মোট ৩৩% সবুজ এলাকা থাকা বাধ্যতামূলক করেছে। বর্তমানে জমি সংক্রান্ত সমস্যার কারণে অনেক বন্দরই এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারছে না। তাই সব বন্দরকে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পণ্য ওঠানো-নামানোর জায়গার কাছে গ্রিন বেল্ট বাড়াতে হবে এবং প্রয়োজনে MoEF&CC-এর সঙ্গে নতুন বিকল্প জমির বিষয়ে আলোচনা করতে হবে।
বন্দর বিল ২০২৫: বিশ্বব্যাপী সবুজ নেতৃত্বের জন্য আধুনিক আইন
ইন্ডিয়ান পোর্টস বিল, ২০২৫ - এর মাধ্যমে ভারত বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক নেতৃত্বে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এগোচ্ছে। নতুন এই আইনটি বন্দরের জন্য হরিণ, আন্তর্জাতিক মান এবং দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি বাধ্যতামূলক করছে। গত ১০ বছরে ভারতের সামুদ্রিক ক্ষেত্র দ্রুত বেড়েছে - কার্গো হ্যান্ডলিং রেকর্ড ৮৫৫ মিলিয়ন টনে পৌঁছেছে এবং বন্দরের ক্ষমতা প্রায় ৮৭ শতাংশ বেড়েছে। জাহাজের টার্ন অ্যারাউন্ড সময় এখন বিশ্বমানের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে (৪৮ ঘণ্টা)। উপকূলীয় ও অভ্যন্তরীণ জলপথের পন্য চলাচল বহুগুণ বেড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, পুরানো ১৯০৮ সালের আইন বদলে আধুনিক আইন তৈরির দাবি ছিল।
ভারতের আন্তর্জাতিক সবুজ সামুদ্রিক অংশীদারিত্ব ও আলোচনাগুলি
ভারত হরিৎ, ডিজিটাল ও সুস্থায়ী সামুদ্রিক উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব তৈরি করছে এবং গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভার আয়োজন করছে।
সাগর মন্থন : এটি বিশ্বনেতা ও নীতি নির্ধারকদের জন্য একটি প্রধান প্ল্যাটফর্ম, যেখানে নীল অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খল এবং সুস্থায়ী বৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়। এর লক্ষ্য হল, সমুদ্র ক্ষেত্রের জন্য একটি সক্রিয় ও ভবিষ্যৎ-প্রস্তুত পথ তৈরি করা, যা চারটি আন্তঃ-সংযুক্ত বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে গঠিত।
চারটি কেন্দ্রীয় বিষয় হল :
আগস্ট, ২০২৫-এ মুম্বইতে JNPA এবং IPA-এর উদ্যোগে "গ্রিন ও ডিজিটাল মেরিটাইম করিডর নিয়ে নেতৃত্বের আলোচনা সভা" আয়োজন করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল হরিৎ, ঝাঁ-চকচকে এবং আরও সংযুক্ত করিডরের পথ তৈরি করা। এই আলোচনায় সামুদ্রিক সংস্কার, পরিকাঠামো এবং সুস্থায়ী অর্থনৈতিক করিডর নিয়ে আলোচনা হয়।
ভারত - সিঙ্গাপুর
কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে ভারত ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিস্তৃত হয়েছে। ভারত-সিঙ্গাপুর সবুজ ও ডিজিটাল শিপিং করিডর কম-নিঃসরণকারী প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল সরঞ্জাম দ্রুত গ্রহণ করতে সাহায্য করবে। সবুজ শিপিং, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও সামুদ্রিক উদ্ভাবনে এই সহযোগিতা সুস্থায়ী ভবিষ্যতের দিকে রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করবে।
মুম্বই-এর গ্রীন শিপিং কনক্লেভে সামুদ্রিক ক্ষেত্রে সুস্থায়ী উন্নয়নের উপর ভারতের অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়। বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রকের মন্ত্রী GTTP এবং হরিৎ নৌকা উদ্যোগগুলির ওপর জোর দেন। ভারত এখন হরিৎ সাগর গ্রীন পোর্ট গাইডলাইনস-এর মাধ্যমে 'গ্রীন গেটওয়ে' তৈরি করছে এবং আলাং জাহাজ পুনর্ব্যবহার কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সুস্থায়ী জাহাজ পুনর্ব্যবহারে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
হরিৎ জাহাজ পরিবহণ এবং সামুদ্রিক দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারতের কৌশলগত কাঠামো
হরিৎ জাহাজ পরিবহণ এবং সামুদ্রিক দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারত একটি শক্তিশালী কৌশলগত কাঠামো তৈরি করছে। এর অংশ হিসেবে:
তেল ছড়িয়ে পড়লে মোকাবিলার পরিকল্পনা:
ভারতীয় বন্দরগুলি নৌবাহিনী সহ অন্যান্যদের সঙ্গে মিলে তেল ছড়িয়ে পড়ার মোকাবিলা পরিকল্পনা তৈরি করছে।
তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা দ্রুত শনাক্ত করতে স্যাটেলাইট-আলোকচিত্র-ভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
দ্রুত ব্যবস্থা নিতে তেল-সংবেদনশীলতার ম্যাপ তৈরি করা হচ্ছে।
পরিকল্পনায় পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকাগুলিকে (যেমন ম্যানগ্রোভ, প্রবাল, সমুদ্র সৈকত) অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
উপসংহার
ভারত এখন এক পরিবর্তনের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, যেখানে এটি তার দীর্ঘ উপকূলরেখা এবং কৌশলগত অবস্থান ব্যবহার করে শুধু বাণিজ্য বাড়াচ্ছে না, বরং সুস্থায়ী এবং স্থিতিস্থাপকতার ভিত্তি তৈরি করছে। দূরদর্শী কর্মসূচি, আইনি সংস্কার এবং হরিৎ উদ্যোগের সাহায্যে ভারত তার সামুদ্রিক ব্যবস্থাকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করছে - যার মধ্যে রয়েছে পরিষ্কার বন্দর, কম-নিঃসরণকারী জাহাজ এবং স্মার্ট পরিকাঠামো। ২০৪৭ সালের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময়, ভারত কেবল এক উদীয়মান সামুদ্রিক শক্তিতে ভরপুর দেশ হিসাবে নয়, বরং সমুদ্রের একজন দায়িত্বশীল তত্ত্বাবধায়ক এবং গ্রহের কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অংশীদার হিসাবে নিজের স্থান প্রতিষ্ঠা করছে।
তথ্যসূত্র
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2182946
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2105136
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2105085
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2182563
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2045946
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2074644
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2155480
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2109521
https://www.pib.gov.in/PressNoteDetails.aspx?id=155063&NoteId=155063&ModuleId=3
https://www.pib.gov.in/PressReleseDetail.aspx?PRID=2155845
https://www.pib.gov.in/PressReleseDetailm.aspx?PRID=2167305
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2157621
Ministry of Ports, Shipping and Waterways
https://shipmin.gov.in/sites/default/files/Harit%20Sagar%20-%20Green%20Port%20Guidelines%20.pdf
Sagarmala
MIV 2030 Report.pdf
Click here to see pdf
SSS/AS
(Backgrounder ID: 156515)
आगंतुक पटल : 4
Provide suggestions / comments