• Skip to Content
  • Sitemap
  • Advance Search
Technology

ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিয়মাবলী, ২০২৫ বিজ্ঞপ্তি

ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা ও দায়িত্বশীল তথ্য ব্যবহারের জন্য নাগরিক-কেন্দ্রিক পরিকাঠামো

Posted On: 17 NOV 2025 10:38AM

১৭ নভেম্বর,২০২৫ 

 

মূল বিষয়:

সমগ্র দেশ জুড়ে বিভিন্ন মতামত গ্রহণের পরে ২০২৫ সালের ১৪ নভেম্বর ডিপিডিপি নিয়মাবলী প্রকাশ করা হল। এই আলোচনা প্রক্রিয়াটিতে ৬,৯১৫-টি মতামত পাওয়া গিয়েছিল, যা চূড়ান্ত নিয়মাবলী গঠনে সাহায্য করেছে। এই নিয়মাবলী ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন, ২০২৩-কে সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করে তুলবে।
সূচনা
ভারত সরকার ২০২৫ সালের ১৪ নভেম্বর ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা (ডিপিডিপি) নিয়মাবলী ২০২৫-এর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন, ২০২৩ (ডিপিডিপি আইন)-এর সম্পূর্ণ কার্যকারিতা শুরু হল। আইন এবং নিয়মাবলী একসঙ্গে ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্যের দায়িত্বশীল ব্যবহারের জন্য একটি সুস্পষ্ট এবং নাগরিক-কেন্দ্রিক কাঠামো তৈরি করেছে। এগুলি ব্যক্তিগত অধিকার এবং আইনসম্মত তথ্য প্রক্রিয়াকরণের উপর সমান গুরুত্ব দেয়।
এটি চূড়ান্ত করার আগে ইলেকট্রনিক্স ও ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রক খসড়া নিয়মাবলী উপর জনসাধারণের মতামত চেয়েছিল। দিল্লি, মুম্বাই, গুয়াহাটি, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ, বেঙ্গালুরু এবং চেন্নাই শহরে পরামর্শ সভা আয়োজিত হয়েছিল। এই আলোচনাগুলিতে বিভিন্ন ধরনের অংশগ্রহণকারী যোগ দিয়েছিলেন। স্টার্টআপ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ, শিল্প সংস্থা, নাগরিক সমাজ গোষ্ঠী এবং সরকারি বিভাগগুলি সকলেই বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছিল। এছাড়াও, সাধারণ নাগরিকরাও তাঁদের মতামত জানিয়েছিলেন। এই পরামর্শ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলাকালীন মোট ৬,৯১৫-টি মতামত পাওয়া গিয়েছিল। এই অবদানগুলি চূড়ান্ত নিয়মাবলী গঠনে একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।
এই নিয়মগুলি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশিত হওয়ার ফলে, ভারতে এখন তথ্য সুরক্ষার জন্য একটি বাস্তবসম্মত এবং উদ্ভাবন-বান্ধব ব্যবস্থা তৈরি হল। এটি সহজে বোঝাবার বিষয়টি সমর্থন করে, নিয়ম মানতে উৎসাহিত করে এবং দেশের ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল পরিকাঠামোর উপর বিশ্বাসকে মজবুত করে।
ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন, ২০২৩ সম্পর্কে ধারণা
সংসদ ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন পাশ করেছে। এই আইন ভারতে ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো তৈরি করেছে। যখন সংস্থাগুলি এই ধরনের তথ্য সংগ্রহ বা ব্যবহার করে, তখন তাদের কী করতে হবে, এই আইনে তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই আইনটি 'সরল' (SARAL) পদ্ধতি অনুসরণ করে তৈরি। এর অর্থ হল এটি সহজ, সহজলভ্য, যুক্তিসঙ্গত এবং কার্যকর করার উপযোগী। আইনের ভাষা সরল এবং সুস্পষ্ট উদাহরণ ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে মানুষ ও ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি সহজে নিয়মগুলি বুঝতে পারে।

ডিপিডিপি আইন, ২০২৩-এর অধীনে প্রধান পরিভাষাগুলি
ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থা: এমন একটি সংস্থা যারা একা বা অন্য কারও সঙ্গে মিলে সিদ্ধান্ত নেয় যে কেন এবং কীভাবে ব্যক্তিগত তথ্য প্রক্রিয়া করা হবে।
ডেটা স্বত্বাধিকারী: সেই ব্যক্তি, যার ব্যক্তিগত তথ্য সংশ্লিষ্ট। শিশুর ক্ষেত্রে, এর মধ্যে পিতামাতা বা বৈধ অভিভাবক অন্তর্ভুক্ত। স্বাধীনভাবে কাজ করতে অক্ষম কোনো দিব্যাঙ্গ ব্যক্তির ক্ষেত্রে, তাঁর পক্ষে কাজ করা বৈধ অভিভাবক অন্তর্ভুক্ত।
ডেটা প্রক্রিয়াকারী: এমন কোনো সংস্থা, যারা ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থার পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য প্রক্রিয়া করে।
সম্মতি পরিচালক সংস্থা: এমন একটি সংস্থা যারা একটি একক, স্বচ্ছ, এবং আন্তঃ-পরিচালনযোগ্য প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে, যার মাধ্যমে ডেটা স্বত্বাধিকারী সম্মতি দিতে, পরিচালনা করতে, পর্যালোচনা করতে বা প্রত্যাহার করতে পারেন।

আপিল ট্রাইব্যুনাল:

 টেলিযোগাযোগ বিরোধ নিষ্পত্তি ও আপিল ট্রাইব্যুনাল (টিডিএসএটি), যারা ডেটা প্রোটেকশন বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আপিলগুলির শুনানি গ্রহণ করে।

এই আইনটি সাতটি মূল নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। এগুলির মধ্যে রয়েছে সম্মতি ও স্বচ্ছতা, উদ্দেশ্যের সীমাবদ্ধতা, তথ্যের ন্যূনতম ব্যবহার, নির্ভুলতা, সংরক্ষণের সীমাবদ্ধতা, সুরক্ষার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং জবাবদিহিতা। এই নীতিগুলি তথ্য প্রক্রিয়াকরণের প্রতিটি ধাপকে নির্দেশিত করে। তারা আরও নিশ্চিত করে যে ব্যক্তিগত তথ্য কেবলমাত্র বৈধ এবং নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে।
এই আইনের একটি মূল বৈশিষ্ট্য হল ভারতের ডেটা সুরক্ষা বোর্ড(Data Protection Board of India) গঠন করা। এই বোর্ড একটি স্বাধীন সংস্থা হিসাবে কাজ করে, যা নিয়ম পালন পর্যবেক্ষণ করে, তথ্য লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্ত করে এবং সংশোধনী ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করে। আইনের অধীনে প্রদত্ত অধিকারগুলি কার্যকর করতে এবং এই ব্যবস্থার উপর বিশ্বাস বজায় রাখতে এটি একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

ডিপিডিপি আইন, ২০২৩-এর অধীনে শাস্তি/জরিমানা
ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থাগুলির (Data Fiduciaries) নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য ডিপিডিপি আইন যথেষ্ট বড় আর্থিক জরিমানা ধার্য করেছে। একটি ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থা যদি যুক্তিসঙ্গত সুরক্ষার নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তবে সর্বোচ্চ ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। ব্যক্তিগত তথ্য লঙ্ঘনের বিষয়ে বোর্ড বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জানাতে ব্যর্থ হলে এবং শিশুদের সম্পর্কিত দায়িত্ব লঙ্ঘনের জন্য, প্রতি ক্ষেত্রে ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। একটি ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থা দ্বারা আইন বা বিধিমালার অন্য কোনো লঙ্ঘনের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখা এবং এর ব্যবহারের জন্য দায়বদ্ধ থাকার স্পষ্ট দায়িত্ব এই আইন ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থাগুলির(Data Fiduciaries) উপর অর্পণ করেছে। এছাড়াও, এটি ডেটা স্বত্বাধিকারীদের (Data Principals) তাদের তথ্য কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তা জানার এবং প্রয়োজনে সংশোধন বা মুছে ফেলার অনুরোধ করার অধিকার প্রদান করে।
আইন এবং নিয়মাবলী একসঙ্গে একটি শক্তিশালী এবং সুষম ব্যবস্থা তৈরি করেছে। এগুলি গোপনীয়তাকে জোরদার করে, সাধারণ মানুষের বিশ্বাস তৈরি করে এবং দায়িত্বশীল উদ্ভাবনকে সমর্থন করে। এছাড়াও, এগুলি ভারতের ডিজিটাল অর্থনীতিকে একটি সুরক্ষিত এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক উপায়ে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে।
ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিয়মাবলী, ২০২৫-এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ
ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিয়মাবলী, ২০২৫, ডিপিডিপি আইন, ২০২৩-কে সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করে। তারা দ্রুতবর্ধনশীল ডিজিটাল পরিবেশে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত করার জন্য একটি সুস্পষ্ট এবং বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা তৈরি করে। এই নিয়মাবলীগুলি নাগরিকদের অধিকার এবং সংস্থাগুলির দ্বারা তথ্যের দায়িত্বশীল ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেয়। এই নিয়মাবলীর লক্ষ্য হল তথ্যের অনুমোদনবিহীন বাণিজ্যিক ব্যবহার দমন করা, ডিজিটাল ক্ষতি কমানোর জন্য একটি নিরাপদ স্থান তৈরি করা। এগুলি ভারতকে একটি শক্তিশালী এবং বিশ্বস্ত ডিজিটাল অর্থনীতি বজায় রাখতেও সহায়তা করবে।

এই ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, বিধিমালাগুলি নিম্নলিখিত কিছু মূল বিধানের রূপরেখা দিয়েছে:
ধাপে ধাপে এবং বাস্তবসম্মত বাস্তবায়ন
এই বিধিমালাগুলি ধাপে ধাপে নিয়ম পালনের জন্য আঠারো মাসের সময়সীমা চালু করেছে। এটি সংস্থাগুলিকে তাদের  পদ্ধতিগুলি সাজিয়ে নিতে এবং দায়িত্বশীল তথ্য অনুশীলন গ্রহণ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেবে। প্রত্যেক ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থাকে অবশ্যই একটি পৃথক সম্মতির বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে, যা স্পষ্ট এবং সহজে বোধগম্য। সেই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে যে ব্যক্তিগত তথ্য নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে সংগ্রহ এবং ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা। সম্মতি পরিচালক সংস্থাগুলি, যারা লোকেদের তাদের অনুমতি পরিচালনা করতে সহায়তা করে, তাদের অবশ্যই ভারতে অবস্থিত কোম্পানি হতে হবে।

ব্যক্তিগত তথ্য লঙ্ঘনের বিজ্ঞপ্তি জানানোর সুস্পষ্ট প্রোটোকল
এই বিধিমালাগুলি ব্যক্তিগত তথ্য লঙ্ঘনের খবর জানানোর জন্য একটি সহজ এবং সময়োচিত প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছে। যখন কোনো তথ্য লঙ্ঘন ঘটে, তখন ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থাকে অবিলম্বে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে জানাতে হবে। এই বার্তাটি সরল ভাষায় হতে হবে এবং কি ঘটেছে, এর সম্ভাব্য প্রভাব কি এবং সমস্যা সমাধানের জন্য কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করতে হবে। সহায়তার জন্য যোগাযোগের বিবরণও তাতে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা
এই বিধিমালাগুলি প্রতিটি ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থাকে ব্যক্তিগত তথ্য সংক্রান্ত জিজ্ঞাসার জন্য সুস্পষ্ট যোগাযোগের তথ্য প্রদর্শন করতে বাধ্যতামূলক করেছে। এটি একজন মনোনীত আধিকারিক বা ডেটা সুরক্ষা আধিকারিকের যোগাযোগের তথ্য হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থাগুলির জন্য আরও কঠোর দায়িত্ব রয়েছে। তাদের অবশ্যই স্বাধীন নিরীক্ষা পরিচালনা করতে হবে এবং প্রভাব মূল্যায়ন করতে হবে। এছাড়াও, নতুন বা সংবেদনশীল প্রযুক্তি ব্যবহার করার সময় তাদের আরও কঠোর
যাচাইকরণ অনুসরণ করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে, প্রয়োজনে স্থানীয় স্টোরেজ-সহ, ডেটার সীমাবদ্ধ বিভাগগুলির উপর সরকারি নির্দেশাবলী তাদের মেনে চলতে হবে।
ডেটা স্বত্বাধিকারীদের অধিকার জোরদার করা
এই বিধিমালাগুলি আইনে ইতিমধ্যেই দেওয়া অধিকারগুলিকে আরও জোরদার করেছে। ব্যক্তিরা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য দেখার বা সংশোধন ও আপডেট করার অনুরোধ করতে পারে। কিছু পরিস্থিতিতে তারা ডেটা মুছে ফেলার অনুরোধ-ও করতে পারে। তারা তাদের পক্ষ থেকে এই অধিকারগুলি প্রয়োগ করার জন্য অন্য কাউকে মনোনীত করতে পারে। ডেটা বিশ্বস্ত সংস্থাগুলিকে এই ধরনের অনুরোধের জবাব নব্বই দিনের মধ্যে দিতে হবে।
সম্পূর্ণ ডিজিটাল ডেটা সুরক্ষা বোর্ড বা পর্ষদ 
এই বিধিমালাগুলি ভারতের একটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল ডেটা সুরক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেছে, যা চারজন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। নাগরিকরা একটি নির্দিষ্ট পোর্টাল এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অনলাইনে অভিযোগ দায়ের করতে এবং তাদের মামলার গতিবিধি অনুসরণ করতে পারবে। এই ডিজিটাল ব্যবস্থাটি দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াকে সরল করে। বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আবেদনগুলি আপিল ট্রাইব্যুনাল, টিডিএসএটি (TDSAT) দ্বারা শোনা হবে।

ডিপিডিপি নিয়ম কীভাবে ব্যক্তিকে ক্ষমতায়ন করে
ডিপিডিপি ফ্রেমওয়ার্ক ভারতের ডেটা সুরক্ষা ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে ব্যক্তিকে স্থাপন করে। এর উদ্দেশ্য হল প্রতিটি নাগরিককে তার ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর স্পষ্ট নিয়ন্ত্রণ দেওয়া এবং সেই তথ্য কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তা নিয়ে আস্থা তৈরি করা। নিয়মগুলি সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে যাতে মানুষ সহজেই নিজেদের অধিকার বুঝতে পারে। একই সঙ্গে, এগুলো নিশ্চিত করে যে সংস্থাগুলো দায়িত্বশীলভাবে কাজ করবে এবং ব্যক্তিগত ডেটা ব্যবহারের জন্য জবাবদিহি থাকবে।

নাগরিকদের জন্য অধিকার ও সুরক্ষাগুলির মধ্যে রয়েছে:
সম্মতি দেওয়ার বা অস্বীকার করার অধিকার
প্রতিটি ব্যক্তির নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে, তার ব্যক্তিগত ডেটা ব্যবহারের অনুমতি দেবেন কিনা। সম্মতি অবশ্যই স্পষ্ট, অবহিত ও সহজবোধ্য হতে হবে। ব্যক্তি যে কোনও সময় এই সম্মতি প্রত্যাহার করতে পারেন।

ডেটা কিভাবে ব্যবহার হচ্ছে তা জানার অধিকার
নাগরিকরা জানতে পারেন তাদের কোন ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, কেন করা হয়েছে এবং কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সংস্থাগুলিকে এই তথ্য সহজভাবে জানাতে হবে।

ব্যক্তিগত ডেটা অ্যাক্সেস করার অধিকার

যে কোন ব্যক্তি ডেটা ফিডিউশিয়ারির কাছে তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের একটি কপি চাইতে পারেন।
ব্যক্তিগত ডেটা সংশোধন করার অধিকার
যে কোনও ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য সংশোধনের জন্য মানুষ অনুরোধ করতে পারেন।

ব্যক্তিগত ডেটা আপডেট করার অধিকার
যেমন নতুন ঠিকানা বা নতুন যোগাযোগ নম্বর, তথ্য পরিবর্তন হলে নাগরিকরা আপডেটের জন্য অনুরোধ করতে পারেন।
ব্যক্তিগত ডেটা মুছে ফেলার অধিকার
নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত তথ্য মুছে ফেলার অনুরোধ জানাতে পারেন। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই অনুরোধ বিবেচনা করে ডেটা ফিডিউশিয়ারিকে ব্যবস্থা নিতে হয়।

অন্য একজনকে মনোনীত করার অধিকার
প্রত্যেক ব্যক্তি তার হয়ে ডেটা সম্পর্কিত অধিকার প্রয়োগ করার জন্য কাউকে মনোনীত করতে পারেন। অসুস্থতা বা অন্যান্য সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে উপকারী।

৯০ দিনের মধ্যে বাধ্যতামূলক প্রতিক্রিয়া

অ্যাক্সেস, সংশোধন, আপডেট বা মুছে ফেলার যে কোনও অনুরোধের ক্ষেত্রে ডেটা ফিডিউশিয়ারিকে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দিতে হবে, যা সময়নিষ্ঠতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে।    

ব্যক্তিগত ডেটা ফাঁসের ক্ষেত্রে সুরক্ষা

ডেটা ফাঁস হলে নাগরিককে দ্রুত জানাতে হবে। প্রেরিত বার্তায় কি ঘটেছে এবং কি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তা উল্লেখ থাকতে হবে। এতে ক্ষতি কমাতে মানুষ দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারেন।

প্রশ্ন ও অভিযোগের জন্য স্পষ্ট যোগাযোগ মাধ্যম

ডেটা সম্পর্কিত প্রশ্নের জন্য ডেটা ফিডিউশিয়ারিকে একটি নির্দিষ্ট যোগাযোগ মাধ্যম রাখতে হবে, এটি একজন নিযুক্ত কর্মকর্তা বা ডেটা প্রোটেকশন অফিসার হতে পারে।

শিশুদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা
শিশুর ব্যক্তিগত ডেটা বা তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবক বা আইনগত তত্ত্বাবধায়কের যাচাইকৃত সম্মতি বাধ্যতামূলক। স্বাস্থ্য, শিক্ষা বা রিয়েল-টাইম নিরাপত্তার মতো অত্যাবশ্যক পরিষেবার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম প্রযোজ্য।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা

কোনও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সহায়তা থাকা সত্ত্বেও আইনগত সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম হলে, তাদের আইনগত অভিভাবকের সম্মতি প্রয়োজন। এই অভিভাবককে প্রযোজ্য আইন অনুযায়ী যাচাই করতে হয়।

ডিপিডিপি কীভাবে আরটিআই আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখে
DPDP আইন ও DPDP নিয়ম নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকারকে প্রসারিত করার পাশাপাশি তা RTI আইনে প্রদত্ত তথ্যের অধিকার সঙ্গে কীভাবে সমন্বয় সাধন করে, তাও পরিষ্কার করে। DPDP আইনে আনা পরিবর্তনগুলি RTI আইনের 8(1)(j) ধারাকে এমনভাবে সংশোধন করেছে যাতে গোপনীয়তা ও তথ্যপ্রাপ্তি, দুই অধিকারই সমানভাবে বজায় থাকে। এই সংশোধন সুপ্রিম কোর্টের ‘পুট্টস্বামী রায়’-এ ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সংশোধনটি ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে না। এটি কেবল বলে যে, ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের আগে গোপনীয়তার স্বার্থ বিবেচনা করতে হবে ও সতর্কভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একই সঙ্গে RTI আইনের 8(2) ধারা সম্পূর্ণভাবে কার্যকর থাকে, যেখানে জনস্বার্থ ব্যক্তিগত ক্ষতির সম্ভাবনাকে ছাড়িয়ে গেলে তথ্য প্রকাশ করা যেতে পারে।
এর ফলে, RTI-এর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির চেতনাও অক্ষুণ্ণ থাকে এবং DPDP কাঠামোর দেওয়া গোপনীয়তার সুরক্ষাও নিশ্চিত হয়।

উপসংহার

ডিজিটাল পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট এবং DPDP নিয়ম দেশকে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও ভবিষ্যৎ-প্রস্তুত ডিজিটাল পরিবেশ গড়ে তোলার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এগুলি ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পরিষ্কার নির্দেশনা দেয়, ব্যক্তির অধিকারকে শক্তিশালী করে এবং সংস্থাগুলির জন্য কঠোর দায়িত্ব নির্ধারণ করে। এটি এমন একটি কার্যকর কাঠামো যা বিস্তৃত জনপরামর্শের ভিত্তিতে তৈরি, ফলে এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বাস্তবসম্মত এবং নাগরিকের প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই কাঠামো ভারতের ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশকে সমর্থন করে এবং একই সঙ্গে গোপনীয়তাকে এর অগ্রগতির কেন্দ্রস্থলে রাখে। এখন এই ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ায়, ভারত আরও নিরাপদ, স্বচ্ছ ও উদ্ভাবনবান্ধব তথ্য ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা নাগরিকদের আস্থা বাড়ায় এবং ডিজিটাল শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করে।

তথ্যসূত্র :

Full DPDP Rules, 2025:

Full DPDP Act, 2023

MEITY:

Click here to see pdf

 

SSS/AS/SS..

(Backgrounder ID: 156065) Visitor Counter : 3
Provide suggestions / comments
Link mygov.in
National Portal Of India
STQC Certificate