PIB Headquarters
azadi ka amrit mahotsav

গ্রাম থেকে লক্ষ্যপথে

সুশাসন কিভাবে গ্রামীণ ভারতের কাহিনি বদলে দিচ্ছে

प्रविष्टि तिथि: 24 DEC 2025 3:55PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

 

মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলার শ্রীপুরা গ্রামের এক শান্ত সকালে শ্রীমতী সরিতা সাইনি তাঁর দিন শুরু করেন সবজি বাছাই করে। এই সবজি শুধু স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য নয়। কিছু সবজি তিনি শুকিয়ে সংরক্ষণও করেন। এর ফলে চাষের কাজ কম থাকলেও তাঁর উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় করা সম্ভব হয়। একতা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে শুরুতে তাঁর সামনে সীমিত সম্পদ, পর্যাপ্ত কারিগরি জ্ঞানের অভাব এবং অনিশ্চিত আয়ের মতো সমস্যা ছিল। মধ্যপ্রদেশ রাজ্য গ্রামীণ জীবিকা মিশনের কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর তাঁর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসে। প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পঞ্চায়েতী রাজের প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তিনি এক লক্ষ টাকা মূল্যের একটি সৌরশক্তি চালিত শুকোনোর যন্ত্র পান। বর্তমানে তিনি বাণিজ্যিক সবজি চাষের সঙ্গে শুষ্ক কাজ একত্রে চালান। এর ফলে, সারা বছর বাজারে প্রবেশাধিকার বজায় থাকে এবং মাসে গড়ে প্রায় কুড়ি হাজার টাকা স্থায়ী আয় নিশ্চিত। তাঁর এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে পরিকল্পিত শাসন কাঠামো কীভাবে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তার সঙ্গে যুক্ত হলে স্থানীয় উদ্যোগকে গতি দিতে পারে।

সরিতার মতো কাহিনীগুলি একটি বৃহত্তর গ্রামীণ শাসন পরিকাঠামোর অংশ। এই পরিকাঠামোতে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার কেন্দ্রে মানুষকে রাখা হয়েছে। বিকেন্দ্রীকরণ ভারতের গ্রামীণ রূপান্তরের একটি মূল নীতি। এর ভিত্তি হল এই বোধ যে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলির কাছেই স্থানীয় সমস্যার সমাধানের প্রয়োজনীয় বাস্তব জ্ঞান থাকে। গ্রাম পঞ্চায়েত, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং সমাজভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে শাসনব্যবস্থা মানুষের আরও কাছাকাছি পৌঁছেছে। এর ফলে, অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা সম্ভব হচ্ছে এবং দ্রুত ও বাস্তবসম্মত ফল মিলছে। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে উন্নয়ন আর উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া প্রকল্প নয়। বরং জনগণ নিজেরাই অগ্রাধিকার নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের পর্যবেক্ষণে সক্রিয় অংশীদার হয়ে উঠছেন।

এই গ্রামীণ উন্নয়ন ব্যবস্থার কেন্দ্রে রয়েছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রধান কর্মসূচিগুলি। প্রতিটি কর্মসূচি গ্রামীণ জীবিকার নির্দিষ্ট দিক লক্ষ্য করে গড়ে তোলা হয়েছে। একই সঙ্গে এগুলি একে অপরের সহায়তা করে কাজ করে। দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জীবিকা কর্মসূচি হিসেবে গড়ে উঠেছে। এই মিশনের আওতায় ১০ কোটিরও বেশি গ্রামীণ পরিবারকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ ও নিয়মিত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই মিশনের অধীনে লাখপতি দিদি উদ্যোগের মাধ্যমে সেই সব স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের স্বীকৃতি দেওয়া হয় যাঁদের পরিবারের বার্ষিক আয় অন্তত ১ লক্ষ টাকা। এটি জীবিকাভিত্তিক দিনযাপন থেকে আর্থিক স্থিতির দিকে অগ্রগতির প্রতিফলন। ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত এই মিশনের আওতায় ১০ কোটি ২৯ লক্ষ গ্রামীণ পরিবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

কর্মসংস্থান নিরাপত্তা গ্রামীণ স্থিতিশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইন, ২০০৫ অনুযায়ী গ্রামীণ পরিবারগুলিকে অন্তত একশো দিনের মজুরি ভিত্তিক কাজের আইনগত নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে একদিকে আয় সহায়তা দেওয়া হয়, অন্যদিকে সুস্থায়ী সাধারণ সম্পদ গড়ে ওঠে। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের পর থেকে এই কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। মহিলাদের অংশগ্রহণ আটচল্লিশ শতাংশ থেকে বেড়ে ছাপ্পান্ন শতাংশে পৌঁছেছে। আধার সংযুক্ত সক্রিয় শ্রমিকের সংখ্যা ছিয়াত্তর লক্ষ থেকে বেড়ে ১২ কোটি ১১ লক্ষ হয়েছে। বৈদ্যুতিন মজুরি প্রদান সাঁয়ত্রিশ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে প্রায় একশো শতাংশে পৌঁছেছে। এর ফলে স্বচ্ছতা ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিবর্তিত গ্রামীণ বাস্তবতার প্রেক্ষিতে সরকার বিকশিত ভারত রোজগার ও আজীবিকা নিশ্চয়তা মিশন গ্রামীণ আইন, ২০২৫ প্রণয়ন করেছে। এই আইনে একশো পঁচিশ দিনের মজুরি ভিত্তিক কাজের নিশ্চয়তা প্রস্তাব করা হয়েছে এবং বিকশিত ভারত @২০৪৭-এর লক্ষ্য অনুযায়ী সমন্বিত পরিকল্পনার সঙ্গে গ্রামীণ কাজকে যুক্ত করা হয়েছে।

নিরাপদ বাসস্থান ও নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা গ্রামীণ জীবনের মান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। প্রসঙ্গত, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণের আওতায় অনুমোদিত ৩ কোটি ৮৬ লক্ষ বাড়ির মধ্যে ২ কোটি ৯২ লক্ষ পাকা বাড়ি নির্মিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার আওতায় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এর মোট দৈর্ঘ্য ৭ লক্ষ ৮৭ হাজার কিলোমিটার। পরিকাঠামোয় এই বিনিয়োগ গ্রামীণ বিচ্ছিন্নতা কমিয়েছে এবং চলাচল ও পরিষেবায় প্রবেশাধিকার সহজ করেছে। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় নির্মিত ৫.৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি স্থায়ী সড়ক এর উদাহরণ। ২ কোটি ৮৫ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে 

নির্মিত এই সড়ক দশ হাজারেরও বেশি মানুষের উপকার করেছে। বাজার, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার সঙ্গে সংযোগ বাড়িয়ে এই উদ্যোগ স্থানীয় জীবিকা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকে শক্তিশালী করেছে।

দক্ষতা উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষা গ্রামীণ সমাজে একটি সমন্বিত সুরক্ষা পরিকাঠামো তৈরি করে। দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল্য যোজনার আওতায় ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত সতেরো লক্ষ ৭১ হাজার প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এগারো লক্ষ ৫১ হাজারের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে। জাতীয় সামাজিক সহায়তা কর্মসূচি প্রবীণ, বিধবা ও প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জন্য আয় সহায়তা প্রদান করে। পাশাপাশি সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা ও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি মিশনের মাধ্যমে নির্বাচিত এলাকায় মডেল গ্রাম ও গুচ্ছভিত্তিক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।

ডিজিটাল ব্যবস্থা এই রূপান্তরের একটি শক্তিশালী সহায়ক হিসেবে উঠে এসেছে। উত্তরপ্রদেশের সামাইসা গ্রামের মা সরস্বতী গ্রাম সংগঠন তাদের কলা আঁশজাত পণ্য অনলাইন মাধ্যমে তালিকাভুক্ত করে স্থানীয় বাজারের বাইরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে সুরাট, আহমেদাবাদ ও কানপুরের মতো শিল্পাঞ্চল থেকে বড় অর্ডার পাওয়া গেছে। কেজি প্রতি ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দরে পণ্য বিক্রি সম্ভব হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরেও ই-গ্রাম স্বরাজ ও সভাসার-এর মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার বাড়ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে আড়াই লক্ষের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত অনলাইনে উন্নয়ন পরিকল্পনা আপলোড করেছে। ভারতনেট কর্মসূচির আওতায় ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত দু লক্ষ চৌদ্দ হাজারের বেশি পঞ্চায়েত উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ পেয়েছে।

সমন্বয় এই সমস্ত উদ্যোগের মূল ভিত্তি। মিশন অন্ত্যোদয়ের মাধ্যমে তথ্যভিত্তিক মূল্যায়নের সাহায্যে উন্নয়নের ঘাটতি চিহ্নিত করা হচ্ছে। নারী উদ্যোগ, বর্জ্য থেকে সম্পদ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং দক্ষতাভিত্তিক জীবিকার মতো ক্ষেত্রগুলিকে একত্রিত করে সমন্বিত উন্নয়নের পথ তৈরি করা হচ্ছে। পিপলস প্ল্যান ক্যাম্পেন এবং বিকশিত পঞ্চায়েত উন্নয়ন পরিকল্পনার মাধ্যমে গ্রাম সভাকে পরিকল্পনার কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

সুশাসন দিবসে গ্রামীণ উন্নয়নের এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সংবেদনশীল এবং ভবিষ্যৎমুখী শাসনই সর্বাধিক কার্যকর। কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা, সমন্বিত পরিকল্পনা এবং স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার উপর জোর দিয়ে গ্রামীণ উন্নয়নকে আলাদা আলাদা প্রকল্পের সমষ্টি নয়, বরং সমৃদ্ধির একটি যৌথ লক্ষ্য হিসেবে নতুন করে ভাবা হচ্ছে। শ্রীপুরা গ্রামের সরিতা সাইনির সৌরশক্তি চালিত শুষ্ক করার যন্ত্রের গল্প এই যাত্রার প্রতীক। সঠিক নীতি ও সৎ বাস্তবায়ন কিভাবে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনে এটি তার দৃষ্টান্ত। 

তথ্যসূত্র

গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক

https://pmgsy.dord.gov.in/

https://pmgsy.nic.in/pmgsy-success-stories

https://missionantyodaya.dord.gov.in/aboutUs.html

https://lakhpatididi.gov.in/lakhpati-didis/sarita-saini/

https://dashboard.dord.gov.in/dashboardnew/ddugky.aspx

https://www.pib.gov.in/PressNoteDetails.aspx?NoteId=155343

https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2170980&reg=3&lang=2

https://www.pib.gov.in/FeaturesDeatils.aspx?NoteId=156358

https://dashboard.dord.gov.in/dashboardnew/pmayg.aspx

https://nrlm.gov.in/dashboardForOuter.do?methodName=dashboard

https://www.dord.gov.in/static/uploads/2024/02/43f6d3ecbd0cf21b1a0c23d80d270e0c.pdf

https://www.nitiforstates.gov.in/public-assets/Best_Practices/Compendiums/75%20Inspirational%20Stories%20of%20Aatmanirbhar%20Rural%20Women.pdf

 

Ministry of Communications

https://usof.gov.in/en/usof-dashboard

Click here to see pdf 

 

SSS/RS


(रिलीज़ आईडी: 2208358) आगंतुक पटल : 8
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें: English , Urdu , हिन्दी , Tamil