রাষ্ট্রপতিরসচিবালয়
বৎসোয়ানার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ভাষণ দিলেন রাষ্ট্রপতি
Posted On:
12 NOV 2025 9:08PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি ১২ নভেম্বর ২০২৫
রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু আজ গ্যাবরনে বৎসোয়ানার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সেদেশের সাংসদদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধ্যক্ষ দিথাপেলো এল কেওরাপিটসে, উপ অধ্যক্ষ এবং বিরোধী দলনেতা তাঁকে স্বাগত জানান।
ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি হল বৎসোয়ানার এক কক্ষবিশিষ্ট সংসদের একমাত্র আইনসভা, যা প্রেসিডেন্ট এবং ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে নিয়ে গঠিত। এই আইনসভার উপদেষ্টা হিসেবে জনজাতি প্রধানদের একটি পরিষদ কাজ করে। ১৯৬৬ সালে বৎসোয়ানার স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সেখানে বহুদলীয় নির্বাচন এবং রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন শান্তিপূর্ণভাবে হয়ে আসছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বৎসোয়ানা গণতন্ত্র, সুশাসন এবং কার্যকর নেতৃত্বের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। গণতন্ত্রকে যখন সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যবহার করা হয়, জাতীয় সম্পদকে যখন দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং অনগ্রসর ও বঞ্চিত মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে কাজে লাগানো হয়, তখন কী হতে পারে, বৎসোয়ানা তা দেখিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ভারত ও বৎসোয়ানা পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ এবং গণতন্ত্র ও মানুষের মর্যাদার প্রতি সাধারণ বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা এক স্বাভাবিক মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ। দশকের পর দশক ধরে আমাদের অংশীদারিত্ব অতীতের সহযোগিতার পাশাপাশি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতিকে জোরালো করেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, কৃষি, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ও বৎসোয়ানার সহযোগিতা প্রসারিত হয়েছে।
সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মানব সম্পদের বিকাশে দু’দেশের মধ্যে যে অংশীদারিত্ব রয়েছে, তা নিয়ে ভারত অত্যন্ত গর্বিত। গত এক দশকে বৎসোয়ানার এক হাজারেরও বেশি তরুণ ছাত্র-ছাত্রী ভারতে পড়াশুনো করেছেন ও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। নতুন দক্ষতা, প্রসারিত জ্ঞান এবং দীর্ঘমেয়াদী বন্ধুত্বের অনুভব নিয়ে তাঁরা স্বদেশে ফিরেছেন। কেবল শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়নই নয়, আজকের যুব সমাজের কাছে তাঁদের পেশাদারি জীবন গঠন এবং জাতি গঠনে তাঁদের সৃজনশীল ক্ষমতাকে কাজে লাগানোর আরও বহু উপায় রয়েছে। এজন্য আমাদের সুস্থায়ী ও শক্তিশালী অর্থনৈতিক বিকাশ সুনিশ্চিত করতে হবে, যা একইসঙ্গে হবে পরিবেশবান্ধব।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের দুই দেশের অর্থনীতি যত বেশি আধুনিক ও বহুমুখী হচ্ছে, ততই নতুন নতুন সুযোগ সুবিধার দিগন্ত খুলে যাচ্ছে। দু’দেশের মানুষের কল্যাণে আমাদের এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হবে। বৎসোয়ানার হীরে, জ্বালানী ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বহু ভারতীয় সংস্থা কাজ করছে। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, ডিজিটাল উদ্ভাবন, ওষুধপত্র ও খনি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের সম্ভাবনার পূর্ণ সদ্ব্যবহারে তিনি ভারত ও বৎসোয়ানার ব্যবসায়িক মহলকে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ভারত ও বৎসোয়ানা একযোগে আরও ন্যায়সঙ্গত ও সুস্থিত বিশ্ব গঠনে অবদান রাখতে পারে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে অর্থপূর্ণ সহযোগিতাকে বিকশিত হতে সাহায্য করবে এবং বহুপাক্ষিকতার প্রসারে সহায়ক হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ভবিষ্যতের মহাদেশ হল আফ্রিকা। তার যুব জনবিন্যাস এবং বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের সাহায্যে এই মহাদেশ বিশ্ব অর্থনীতির চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে। ভারত ও আফ্রিকার দেশগুলির সহযোগিতা ২৮০ কোটি মানুষের সম্ভাবনার বিকাশে সহায়ক হবে, যা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ। ভারতের “বিকশিত ভারত ২০৪৭” এবং আফ্রিকার “এজেন্ডা ২০৬৩” দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার সূবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে।
ভারত ও বৎসোয়ানার মধ্যে মৈত্রী শুধু দুটি দেশের সরকারের মধ্যেই নয়, এরসঙ্গে দু’দেশের নাগরিকরাও ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছেন বলে রাষ্ট্রপতি মন্তব্য করেন।
এরআগে, রাষ্ট্রপতি ডায়মন্ড ট্রেডিং কোম্পানী বৎসোয়ানা পরিদর্শন করেন। গ্যাবরনের জনজাতি নেতাদের স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির সম্পূর্ণ ভাষণটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন:
https://static.pib.gov.in/WriteReadData/specificdocs/documents/2025/nov/doc20251112691401.pdf
SC/SD/CS
(Release ID: 2189662)
Visitor Counter : 6