নয়াদিল্লি, ৯ মে, ২০২৫

 

তিনটি জনসুরক্ষা প্রকল্প আজ দেশে সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের ১০ বছর পূর্ণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৯ই মে ২০১৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বীমা যোজনা (পিএমজেজেবিওয়াই), প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বীমা যোজনা (পিএমএসবিওয়াই) এবং অটল পেনশন যোজনা (এপিওয়াই) - এই তিনটি প্রকল্প চালু করেছিলেন। তিনটি প্রকল্পই সকলের জন্য, বিশেষ করে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত এবং দুর্বল অংশের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের আর্থিক সুরক্ষা প্রদানের জন্য কল্পনা করা হয়েছিল। এই প্রধান প্রকল্পগুলির লক্ষ্য নাগরিকদের জীবনের অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা করা এবং দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে বীমা এবং পেনশনের ক্ষেত্রকে প্রসারিত করা।
তিনটি জনসুরক্ষা প্রকল্পের নির্দেশিকা নীতির উপর আলোকপাত করে, কেন্দ্রীয় অর্থ ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী শ্রীমতি নির্মলা সীতারমন বলেন, “অসুরক্ষিতদের সুরক্ষিত করার" দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, ৯ই মে ২০১৫ তারিখে, সকলকে সাশ্রয়ী মূল্যের বীমা এবং পেনশন সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা এবং অটল পেনশন যোজনা সমন্বিত 'জন সুরক্ষা' প্রকল্প চালু করেন।”

জনসুরক্ষা যোজনার দশম বার্ষিকীর তথ্য উদ্ধৃত করে শ্রীমতি সীতারমন বলেন যে, ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত যথাক্রমে ২৩.৬ কোটি, ৫১ কোটি এবং ৭.৬ কোটিরও বেশি পিএমজেজেবিওয়াই, পিএমএসবিওয়াই, এবং এপিওয়াই-এর অধীনে তালিকাভুক্তি করা হয়েছে।

পিএমজেজেবিওয়াই প্রকল্প সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পটি ৯ লক্ষেরও বেশি পরিবারের জন্য ১৮,৩৯৮ কোটি টাকার ক্লেম বা দাবি নিষ্পত্তি করেছে।

শ্রীমতী সীতারমন বলেন, পিএমএসবিওয়াই প্রকল্পের অধীনে, এই প্রকল্পটি ১.৫৭ লক্ষেরও বেশি পরিবারের জন্য ৩,১২১ কোটি টাকার ক্লেম বা দাবি নিষ্পত্তি করেছে। 

অবশেষে তিনি বলেন, “এই প্রকল্পগুলির একটি মূল লক্ষ্য হল ডিজিটাইজেশন আর তালিকাভুক্তি ও ক্লেম(দাবি)এর সরলীকরণ। অনলাইন জন সুরক্ষা পোর্টাল চালু হওয়ার ফলে নাগরিকরা কোনও ব্যাংকের শাখা বা ডাকঘরে না গিয়ে সুবিধাজনকভাবে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। ক্লেম প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করেছে, যার ফলে শোকাহত পরিবারগুলিকে যখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, ঠিক তখনই সময়মত সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। জন সুরক্ষা প্রকল্পের দশম বার্ষিকী উদযাপনের পাশাপাশি, ব্যাংক এবং বিমা কোম্পানির তৃণমূল স্তরের কর্মকর্তাসহ সকল অংশীদারদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা, যাদের নিবেদিতপ্রাণ প্রচেষ্টা এই প্রকল্পগুলিকে বিশাল সাফল্য এনে দিয়েছে”।

এই উপলক্ষে, কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী শ্রী পঙ্কজ চৌধুরী বলেন, “এই প্রকল্পগুলির উদ্দেশ্য হল সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত অংশগুলিকে আর্থিক সুরক্ষা ও সময়োপযোগী সহায়তা প্রদান। এই তিনটি প্রকল্প নাগরিকদের কল্যাণের জন্য নিবেদিত, এগুলিকে বিভিন্ন অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়, নানা দুর্ঘটনা এবং আর্থিক অনিশ্চয়তা থেকে মানব জীবনকে সুরক্ষিত করার প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে তৈরি”। 

আমরা যখন তিনটি সামাজিক সুরক্ষা (জন সুরক্ষা) প্রকল্প - প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা এবং অটল পেনশন যোজনার দশম বার্ষিকী উদযাপন করছি, আসুন আমরা এই প্রকল্পগুলি কীভাবে জনগণের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের বিমা এবং সুরক্ষা (জন সুরক্ষা)দেয়, তাঁদের সাফল্য এবং প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি বর্ণনা করি।

১. প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বীমা যোজনা (পিএমজেজেবিওয়াই) 
প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বীমা যোজনা (পিএমজেজেবিওয়াই) যে কোনও কারণে মৃত্যুর জন্য দৈনিক ২ টাকার কম প্রিমিয়ামে জীবন বিমা কভার প্রদানের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

এই প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য: পিএমজেজেবিওয়াই হল এক বছরের কভার, যা প্রতি বছর নবায়নযোগ্য। এই প্রকল্পটি এলআইসি এবং অন্যান্য জীবন বিমা কোম্পানিগুলির মাধ্যমে অফার/পরিচালনা করা হয় এবং একই শর্তে পণ্যটি অফার করতে ইচ্ছুক, প্রয়োজনীয় অনুমোদন এবং এই উদ্দেশ্যে ব্যাংক/ডাকঘরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। অংশগ্রহণকারী ব্যাংক/ডাকঘর তাঁদের গ্রাহকদের জন্য এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য এই ধরণের যে কোনও জীবন বিমা কোম্পানিকে নিযুক্ত করতে স্বাধীন।

যোগ্যতার শর্তাবলী: অংশগ্রহণকারী ব্যাংক/ডাকঘরের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল গ্রাহক, যারা অটো-ডেবিট সক্ষম করার জন্য সম্মতি দেন, তারা এই প্রকল্পে যোগদানের অধিকারী। যদি একজন ব্যক্তির এক বা একাধিক ব্যাংক/ডাকঘরে একাধিক  অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে ব্যক্তিটি শুধুমাত্র একটি ব্যাংক/ডাকঘর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই এই প্রকল্পে যোগদানের যোগ্য।

তালিকাভুক্তির সময়কাল: ১ জুন থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এক বছরের জন্য এই কভারেজ প্রযোজ্য হবে, যার জন্য নির্ধারিত ফর্মে নির্ধারিত ব্যক্তিগত ব্যাংক/ডাকঘর অ্যাকাউন্ট থেকে অটো-ডেবিটের মাধ্যমে যোগদান/প্রদানের বিকল্প প্রতি বছর ৩১ মে এর মধ্যে দিতে হবে।

প্রিমিয়াম: প্রতি সদস্যের জন্য বার্ষিক ৪৩৬/- টাকা। প্রকল্পের অধীনে তালিকাভুক্তির সময় প্রদত্ত বিকল্প অনুসারে, অ্যাকাউন্টধারীর ব্যাংক/ডাকঘর অ্যাকাউন্ট থেকে ‘অটো ডেবিট’ সুবিধার মাধ্যমে এক কিস্তিতে প্রিমিয়াম কেটে নেওয়া হবে। নীচে বর্ণিত প্রো-রাটা প্রিমিয়াম পরিশোধের মাধ্যমে সম্ভাব্য কভারেজের জন্য বিলম্বিত তালিকাভুক্তি সম্ভব;

ক) জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসে তালিকাভুক্তির জন্য ৪৩৬/- টাকা পূর্ণ বার্ষিক প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
খ) সেপ্টেম্বর, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে তালিকাভুক্তির জন্য ৩৪২/- টাকা প্রো-রাটা প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
গ) ডিসেম্বর, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে তালিকাভুক্তির জন্য ২২৮/- টাকা প্রো-রাটা প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
ঘ) মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে তালিকাভুক্তির জন্য ১১৪/- টাকা আনুপাতিক প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
সুবিধা: যে কোনও কারণে গ্রাহকের মৃত্যু হলে ২ লক্ষ টাকা প্রদেয় হবে। তালিকাভুক্তির তারিখ থেকে ৩০ দিনের লিয়েন সময়কাল প্রযোজ্য হবে।

সাফল্য: ২৩.০৪.২০২৫ তারিখ পর্যন্ত, পিএমজেজেবিওয়াই-এর অধীনে মোট তালিকাভুক্তির পরিমাণ ২৩.৬৩ কোটির টাকারও বেশি এবং ৯,১৯,৮৯৬টি ক্লেমের ১৮,৩৯৭.৯২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
২৩.০৪.২০২৫ তারিখ পর্যন্ত, এই প্রকল্পে ১০.৬৬ কোটি মহিলা তালিকাভুক্তি এবং পিএমজেডিওয়াই অ্যাকাউন্টধারীদের কাছ থেকে ৭.০৮ কোটি তালিকাভুক্তি রেকর্ড করা হয়েছে।

 

SC/SB/DM

(Release ID: 2128097)