ভূ-বিজ্ঞানমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

ভারতে আবহাওয়া ও জলবায়ুর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধিতে

মিশন মৌসম

Posted On: 23 DEC 2024 4:05PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

 

ভৌগোলিক ও জলবায়ু বৈচিত্র সম্পন্ন ভারতে আবহাওয়া এবং বর্ষার প্রকৃতি নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে। কৃষি প্রাথমিক জীবন ধারণের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় সঠিক আবহাওয়ার পূর্ভাভাস স্বাভাবিকভাবেই এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর নরেন্দ্র মোদী সরকারের অধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ পৃথ্বী বিজ্ঞান মন্ত্রকের নিশান মৌসম নামে এক যুগান্তকারী উদ্যোগকে অনুমোদন করেছে। দু’ বছরের জন্য এই উদ্যোগের বাজেট বরাদ্দ হয়েছে ২,০০০ কোটি টাকা। আবহাওয়া এবং জলবায়ু বিজ্ঞানে ভারতরকে বিশ্ব নেতৃত্বের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করতে বিশ্বমানের সঙ্গে সঙ্গতি বজায় রেখে দেশকে আবহাওয়ার জন্য প্রস্তুত এবং জলবায়ুর জন্য সক্ষম করে তুলতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 
এর লক্ষ্য হল সময় ধরে আবহাওয়া ও জলবায়ুর সঠিক পর্যবেক্ষণ ও পূর্বাভাসকে আরও উন্নতমানের করে তোলা। কৃষি, বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপণা এবং গ্রামোন্নয়নের মতো নানাবিধ ক্ষেত্রের জন্য আবহাওয়া ও জলবায়ুর সঠিক পূর্বাভাসে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পৃথ্বী বিজ্ঞান মন্ত্রকের নেওয়া এই উদ্যোগে সামিল করা হচ্ছে মন্ত্রকের অধীন প্রথম সারির প্রতিষ্ঠান, ভারতীয় আবহাওয়া দফতর(আইএমডি), ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টিং (এনসিএমআরডব্লিএফ) এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিরিওলজি (আইআইটিএম)। এছাড়াও অন্যান্য সহায়ক সংস্থা যেমন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিসেস (আইএনসিওআইএস) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজি(এনআইওটি)কেও এই উদ্যোগে সামিল করা হয়েছে। 
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা মহল এবং শিল্প সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথ সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা মিশন মৌসম ভারতের আবহাওয়া ও জলবায়ু পূর্বাভাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। সেই সঙ্গে এক্ষেত্রে ভারতকে নেতৃত্বের জায়গা করে দেবে। আধুনিক উন্নতমানের প্রযুক্তি, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিভিন্ন মডেল এবং সুপার কম্পিউটার ব্যবস্থার মাধ্যমে সময় বেঁধে ও ঋতু ভিত্তিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর সঠিক নির্ণয় জোগাবে। 
নানা ক্ষেত্রে মিশন মৌসম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কৃষি ভিত্তিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৃষ্টির খামখেয়ালি চরিত্রের ফলে কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পায়।  বর্ষার সঠিক পূর্বাভাসে বীজ বোনা, সেচ পরিকল্পনা এবং ফসল তোলার সঠিক পরিকল্পনা আগে থেকেই করে তোলা সম্ভব। অনুরূপভাবে বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপণার ক্ষেত্রেও তা অত্যন্ত জরুরি। ভারতকে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরার মতো চরম পরিস্থিতির প্রায়শই মুখোমুখি হতে হয়। সঠিক আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জীবন এবং সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব। গ্রামোন্নয়নের ক্ষেত্রে উন্নত জলবায়ু পরিষেবা গ্রামীন সম্প্রদায়কে জলসম্পদ ব্যবস্থাপণা, পশু খাদ্য রক্ষা এবং পরিকাঠামো পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নানা ভাবে সাহায্য করতে পারে। 
মিশন মৌসমের উদ্দেশ্য হল, স্বল্প মেয়াদী, মধ্য মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবস্থা সহ ঋতুভিত্তিক আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ভারতের দক্ষতা বৃদ্ধি করা। বর্ষার চরিত্র কী রকম হতে পারে, তা যথাযথ নির্ণয়ের জন্য উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মডেল গড়ে তোলা। উন্নতমানের রাডার, উপগ্রহ এবং স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করে তোলা। কৃষি, জলসম্পদ, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য এবং বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপণা ক্ষেত্রে কার্যকরী পরামর্শদানের ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এছাড়াও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে যৌথ গবেষণার দক্ষতা বৃদ্ধি করা। 
মিশন মৌসম তার লক্ষ্য পূরণে রূপায়নগত নানা কৌশল হাতে নিয়েছে। এক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটাতে দেশ জুড়ে ডপলার ওয়েদার রাডার্স (ডিডব্লুআরএস), স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্র(এডব্লিএস) এবং বৃষ্টির পরিমাপগত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। প্রত্যুষ এবং মিহিরের মতো উন্নতমানের জলবায়ু মডেলিং-এর সুপার কমপিউটার শক্তিকে কাজে লাগানো হবে। জলবায়ু পূর্বাভাস কৌশলের আরও প্রসার ঘটাতে বিশ্ব জলবায়ু সংগঠন (ডব্লুএমও)-র মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলা হবে। এছাড়াও, জনবান্ধব মোবাইল অ্যাপ- যেমন মৌসম অ্যাপ, এসএমএস পরিষেবা এবং গণমাধ্যগুলিতে আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত পূর্বাভাস সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 
বর্তমানে সময় বেধে জলবায়ু পূর্বাভাসের জন্য ৩৭টিরও বেশি আবহাওয়া ডপলার স্থাপন করা হয়েছে। মৌসম মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেশের ৪৫০টি শহরে এলাকা ভিত্তিক আবহাওযার পূর্বাভাস পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় মনসুন মিশন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ঋতুভিত্তিক জলবায়ু নির্ণয়ের মডেলগুলি প্রভূত উন্নতিসাধন ঘটিয়েছে। এছাড়াও মন্ত্রক শহরাঞ্চলে বন্যার পূর্বাভাস এবং ঘূর্ণিঝড় নির্ণয়ে অনেক উন্নতমানের কর্মসূচি চালু করেছে। 
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এলাকাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভৌগোলিক এবং জলবায়ুগত কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এলাকাগুলি নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বর্ষাকালে ঘন ঘন বন্যা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। সেইসঙ্গে ভারী বৃষ্টি জনিত ভূমিধ্বস পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ঝুঁকি বহন করে নিয়ে আসে। ফলে, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এলাকাকে মিশন মৌসম অগ্রাধিকার দেওয়ায় পার্বত্য ভূখণ্ডে অতিরিক্ত আবহাওয়ার পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। চরম অবস্থার মোকাবিলার ক্ষেত্রে স্থানীয় ভিত্তিতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে বিপর্যয় মোকাবিলা পরিকল্পনা রচনার ক্ষেত্রে আবহাওয়াগত পরিসংখ্যানগুলিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। 
প্রভূত অগ্রগতি সত্বেও মিশন মৌসম নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তার কারণ ভৌগোলিক বৈচিত্র। ভারতের বৈচিত্রময় ভৌগোলিক প্রকৃতির কারণে জটিল এলাকা ভিত্তিক আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সুনির্দিষ্ট মডেল গড়ে তোলা দরকার। এছাড়াও, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু প্রকৃতির দ্রুত পরিবর্তনের ফলে দীর্ঘস্থায়ী কোনো ব্যবস্থা গড়ে তোলা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। এর পাশাপাশি রয়েছে পরিকাঠামোগত ফাঁক। প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে প্রয়োজন রয়েছে আরও বেশি রাডারের মতন পর্যবেক্ষণ পরিকাঠামোর। সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রটিও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কৃষক এবং গ্রামীন সম্প্রদায়কে আবহাওয়ার পূর্বাভাস সঠিক এবং কার্যকরীভাবে  বোঝানোও একটি বড় সমস্যা। 
পরিশেষে বলতে হয়, আবহাওয়ার খামখেয়ালি প্রকৃতি এবং আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ব্যবস্থা হিসেবে মিশন মৌসম এক রূপান্তরকারী মাইল ফলক রূপে সুদূর প্রসারী প্রভাব বিস্তার করেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি ঘটিয়ে এবং যথাযথ ও কার্যকরী তথ্য অংশীদারদের কাছে পৌঁছে দিয়ে এই উদ্যোগ এক সুস্থায়ী উন্নয়নমূলক ব্যবস্থা হিসেবে জীবন-জীবিকা এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোকে রক্ষা করছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিপদ সঙ্কুল এলাকাগুলিকে এর প্রয়োগ জলবায়ুগত চ্যালেঞ্জ এবং চরম প্রাকৃতিক পরিস্থিতি, সম্পদের প্রাদুর্ভাবের মতো সমস্যার ক্ষেত্রে ভারতের স্থিতিস্থাপকতাকে দক্ষ করে তুলছে। এই মিশনের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে উন্নত আধুনিকমানের প্রযুক্তি, গবেষণা সমন্বয় এবং জনসচেতনতা প্রচারাভিযানকে অনেক বেশি গ্রহনযোগ্য করে গড়ে তোলা হবে। মিশন মৌসম কেবলমাত্র ঝুঁকিত নিরসনেই নয়, বরং জলবায়ুকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের নানা সুযোগ করে দেবে। সেইসঙ্গে ভারতে সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে অনেক বেশি নিরাপদ এবং স্থতিস্থাপক এক নির্ণায়ক মডেল হিসেবে মিশন মৌসম কাজ করবে। 
সূত্রসমূহ :
•    https://pib.gov.in/PressReleseDetailm.aspx?PRID=2085678
•    https://www.moes.gov.in/programmes/monsoon-mission-india?language_content_entity=en
•   http:// https://pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2085676
•    https://pib.gov.in/PressReleseDetailm.aspx?PRID=2054427&reg=3&lang=1
•    https://pib.gov.in/PressReleseDetailm.aspx?PRID=2067907&reg=3&lang=1
•   http:// https://pib.gov.in/PressReleseDetailm.aspx?PRID=2080593&reg=3&lang=1


Click here to download PDF- https://static.pib.gov.in/WriteReadData/specificdocs/documents/2024/dec/doc20241223476001.pdf

 

PG/AB/CS…


(Release ID: 2087588) Visitor Counter : 9


Read this release in: English , Urdu , Hindi