প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

গুজরাটের কেভাড়িয়ায় স্ট্যাচু অফ ইউনিটিতে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রীর, রাষ্ট্রীয় একতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তিনি

Posted On: 31 OCT 2024 1:10PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৩১ অক্টোবর, ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটের কেভাড়িয়ায় স্ট্যাচু অফ ইউনিটিতে রাষ্ট্রীয় একতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকীতে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে তিনি শ্রদ্ধা জানান। শ্রী মোদী একতা দিবসের শপথ পাঠ করান। ৩১ অক্টোবর সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর স্মরণে রাষ্ট্রীয় একতা দিবসের প্যারেড প্রত্যক্ষ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী জাতীয় একতা দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ১৫ আগস্ট, ২৬ জানুয়ারির মতো ৩১ অক্টোবরও সমগ্র দেশবাসীর কাছে এক নতুন শক্তি ও প্রেরণার দিন। স্ট্যাচু অফ ইউনিটিকে ঘিরে একতা নগরের নৈসর্গিক শোভা তাকে এক ক্ষুদ্র ভারতের চেহারা দিয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। দীপাবলি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশ ও বিশ্বের নানা প্রান্তে বসবাসকারী ভারতীয়দের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতীয় একতা দিবস দীপাবলির উৎসবের সঙ্গে সমন্বিত হয়ে এক ঐক্যের উৎসব উদযাপন করছে। শ্রী মোদী বলেন, সর্দার প্যাটেলের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী বর্ষ আজ থেকে শুরু হওয়ায় এ বছরের একতা দিবসের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। দেশ আগামী দু’বছর ধরে সর্দার প্যাটেলের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করবে। দেশের জন্য তাঁর অসাধারণ কীর্তির স্মরণে তাঁকে দেশের এটি একটি শ্রদ্ধার্ঘ।

শ্রী মোদী বলেন, ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ আক্রমণকারীদের বিতাড়িত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। মহারাষ্ট্রের রায়গড় দুর্গ আজও সেই গল্প বলে। তিনি বলেন যে রায়গড় দুর্গ মূল্যবোধ, সামাজিক ন্যায়, দেশাত্মবোধ এবং দেশই সর্বাগ্রে – এই ভাবধারার পবিত্র ভূমি। ছত্রপতি শিবাজী বিভিন্ন মতবাদের মানুষকে দেশের কল্যাণে একত্রিত করেছিলেন।

দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতা রক্ষায় বিগত এক দশকে দেশে অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। একতা নগর ও স্ট্যাচু অফ ইউনিটিতে সলকল্প রক্ষায় সরকারি উদ্যোগের এই নানা চিত্র মূর্ত হয়েছে বলে জানান তিনি। স্ট্যাচু অফ ইউনিটি কেবলমাত্র নামেই নয়, দেশের সব গ্রাম থেকে আসা  মৃত্তিকা এবং লোহা দিয়ে তৈরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, প্রকৃত ভারতবাসী হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই কর্তব্য হল দেশের ঐক্য রক্ষায় যাবতীয় প্রয়াসের উদযাপন করা। 

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে ভারতীয় ভাষাগুলির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মারাঠি, বাংলা, অসমিয়া, পালি এবং প্রাকৃত ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেয়েছে। ভাষার পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থাও প্রসারিত হচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রেলপথ সম্প্রসারিত হয়েছে। লাক্ষাদ্বীপ ও আন্দামান-নিকোবরে হাইস্পিড ইন্টারনেটের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে, পার্বত্য এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছে যার মধ্য দিয়ে শহর ও গ্রাম জুড়ে যাচ্ছে। কোনো এলাকাই নিজেদেরকে যাতে পিছিয়ে পড়া মনে না করে, আধুনিক পরিকাঠামো সেই নিশ্চয়তা দিতে চায়। পাশাপাশি, দেশজুড়ে মৈত্রীর এক বলিষ্ঠ ভাবধারা গড়ে তোলাই এর লক্ষ্য।

মহাত্মা গান্ধীর অনুসরণ করে বিগত ১০ বছরে ভারত বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য রক্ষার যাবতীয় প্রয়াসে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী। আধারের মাধ্যমে এক দেশ এক পরিচিতি, জিএসটি-র মতো উদ্যোগ, জাতীয় রেশন কার্ড-এর মতো উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের সমস্ত রাজ্যকে এক সুসংহত ব্যবস্থার মধ্যে আনা হয়েছে যা ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ভাবধারাকে শক্তিশালী করছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।  তিনি বলেন, এখন আমরা ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’, ‘এক দেশ, এক দিওয়ানি বিধি’ তথা ধর্মনিরপেক্ষ দিওয়ানি বিধির লক্ষ্যে কাজ করছি। 

বিগত ১০ বছরে তাঁর সরকারের প্রশাসনিক বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জম্মু-কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জম্মু-কাশ্মীরে এই প্রথম কোনো মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয় সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছেন। 

জাতীয় সুরক্ষা এবং সামাজিক ঐক্য রক্ষায় আরও বিভিন্ন উদ্যোগের কথা প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষের সমাধানে অগ্রগতি হয়েছে। সেইসঙ্গে, ৫০ বছর ধরে আসামে যে সংঘর্ষের বাতাবরণ ছিল তা বড়ো চুক্তির মাধ্যমে কিভাবে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে, তাও শ্রী মোদী তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ব্রু-রিয়াং চুক্তি বিভিন্ন স্থানে চলে যাওয়া হাজার হাজার মানুষকে তাঁদের স্বগৃহে ফিরিয়ে এনেছে। নকশালবাদ নির্মূলে সরকারি সাফল্যের কথাও তিনি তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আজকের ভারতের একটি দিশা, লক্ষ্য ও সঙ্কল্প রয়েছে। আজকের ভারত অনেক শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সংবেদনশীল ও সচেতন যা নম্র হয়েও উন্নয়নের পথের শরিক। আজকের ভারত সক্ষমতা ও শান্তি – দুইয়েরই গুরুত্ব বোঝে। বিশ্বজুড়ে অস্থিরতার মাঝেও ভারতের দ্রুত অগ্রগতির প্রশংসা করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে নিজের অখণ্ড শক্তি রক্ষা করার পাশাপাশি শান্তির দিশারী হিসেবে ভারত তার জায়গা করে নিয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে অস্থিরতার মাঝেও ভারত বিশ্ববন্ধু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, কিছু বিরুদ্ধ শক্তি ভারতের অগ্রগতিকে বিঘ্নিত করতে চাইছে, যাতে  ভারতের আর্থিক স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এবং বিভাজন গড়ে ওঠে। তিনি এই বিচ্ছিন্নতাকামী শক্তিগুলিকে চিনে নিতে দেশবাসীকে আহ্বান জানান, সেইসঙ্গে দেশের ঐক্যকে সুরক্ষিত রাখার কথাও বলেন।

সর্দার প্যাটেলকে স্মরণ করে শ্রী মোদী তাঁর ভাষণ শেষে দেশকে ঐক্যের পথে দায়বদ্ধ থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারত এক বৈচিত্র্যের দেশ এবং বৈচিত্র্যের উদযাপনের মধ্যেই ঐক্য সুসংহত হতে পারে। আগামী ২৫ বছর এই ঐক্য রক্ষার পথে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় বলে মন্তব্য করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যকে আমরা কখনই বিঘ্নিত হতে দেব না। দ্রুত আর্থিক অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়া, সামাজিক ঐক্য এবং প্রকৃত সামাজিক ন্যায়বিচার, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের স্বার্থেও এই একতা খুবই জরুরি। শ্রী মোদী সমগ্র দেশবাসীকে সামাজিক ঐক্য, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং ঐক্য রক্ষার দায়বদ্ধতার পথে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

PG/AB/DM




(Release ID: 2070033) Visitor Counter : 3