প্রতিরক্ষামন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কিছু এলাকায় মতপার্থক্য নিরসনে ভারত-চীন ঐকমত্য প্রমাণ করে যে, ধারাবাহিক আলোচনা সমাধানের পথ দেখায়: চাণক্য প্রতিরক্ষা সংলাপ ২০২৪-এ রক্ষামন্ত্রী

Posted On: 24 OCT 2024 5:59PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪


রক্ষামন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কিছু এলাকায় মতপার্থক্য নিরসনে ভারত-চীন ঐকমত্য প্রমাণ করে যে, ধারাবাহিক আলোচনা সমাধানের পথ দেখায়। নতুন দিল্লিতে ২৪ অক্টোবর চাণক্য প্রতিরক্ষা সংলাপ ২০২৪-এ তিনি বক্তব্য রাখছিলেন। রক্ষামন্ত্রী বলেন, দুই দেশ কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে গেছে এবং সাম্য ও পারস্পরিক নিরাপত্তার ভিত্তিতে শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। এটাই ধারাবাহিক আলোচনার সুফল বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

‘উন্নয়ন ও নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক এক আলোচনায় যোগ দিয়ে রক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়ন’ এবং ‘নিরাপত্তা’কে প্রায়শই পৃথক প্রেক্ষাপটে দেখা হয়, কিন্তু আসলে এই দুটি বিষয় গভীরভাবে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। জমি, শ্রম, মূলধন ও উদ্যোক্তার মতো অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল উপাদানগুলিকে অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলির প্রভাব নিয়ে সেভাবে কথা হয়না। অথচ, শুধু যুদ্ধের সময়ে নয়, শান্তির সময়েও অর্থনৈতিক বিকাশ ও সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষার খরচ, সামরিক পরিকাঠামো এবং জাতীয় সুরক্ষার গভীর প্রভাব পড়ে।

শ্রী রাজনাথ সিং বলেন, যেকোনো দেশের বাজেটের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ সুরক্ষার জন্য ব্যয় করা হয়। কর্মসংস্থান, প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং পরিকাঠামো উন্নয়নেও নিরাপত্তা ক্ষেত্রের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারের সংকল্প হলো ‘উন্নয়ন’ ও ‘নিরাপত্তা’র মধ্যে ব্যবধান ঘুচিয়ে দেওয়া। জাতীয় সুরক্ষা সুনিশ্চিত না হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিকাশ হয়না।

সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে রক্ষামন্ত্রী বলেন, সীমান্ত এলাকা উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি, নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং সীমান্ত অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি সুনিশ্চিত করার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। 

শ্রী সিং বলেন, অস্ত্র ও সরঞ্জামের দেশীয় উৎপাদন শুধু যে নিরাপত্তা পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করে তোলা তাই নয়, এর ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও আত্মনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার দক্ষতা বাড়ে। এছাড়া দেশীয় উৎপাদনের ফলে আয় সৃষ্টি হয়, সরবরাহ শৃঙ্খলে অর্থনৈতিক তৎপরতা বাড়ে। এর ফলে সমগ্র অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। নিরাপত্তার জন্য নেওয়া উদ্যোগগুলি প্রায়শই বৃহত্তর জাতীয় উন্নয়নের অনুঘটক হিসেবে কাজ করে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

রক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আত্মনির্ভরতা’ অর্জনের জন্য সরকারের ধারাবাহিক প্রয়াস প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে সরাসরি দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। প্রতিরক্ষাকে যদি উন্নয়নের অবিচ্ছেদ্য উপাদান হিসেবে আগে ভাবা হতো তাহলে ভারত এই ক্ষেত্রে বহু আগেই স্বনির্ভরতা অর্জন করতো। প্রতিরক্ষা ও উন্নয়নের মধ্যে সুসমন্বিত পদ্ধতির অভাবই আমদানির উপর দীর্ঘ নির্ভরতার কারণ। এই জন্যই আমাদের প্রতিরক্ষা শিল্প বিকাশ ও উদ্ভাবনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। প্রতিরক্ষা বাজেটের একটা বড় অংশ অন্যান্য অর্থনীতির উপকারে লেগেছে। 

তবে স্বনির্ভরতার অর্থ বিশ্বের থেকে বিচ্ছিন্নতা নয় বলে শ্রী সিং মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ভারত একটি ন্যয় সঙ্গত ও ন্যায্য আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সব দেশের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

শ্রী সিং বলেন, স্বনির্ভরতার দিকে আমাদের যাত্রা বিচ্ছিন্নতার জন্য নয়, বরং এটি বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। স্বনির্ভরতা আমাদের আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রয়াসে অবদান রাখার ক্ষমতা দেবে। আমরা আমাদের জ্ঞান অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারবো এবং এই অর্থপূর্ণ আদানপ্রদানের ফলে সকলেই উপকৃত হবে। 

শ্রী রাজনাথ সিং আয় সৃষ্টি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য, উৎপাদন বৃদ্ধি, বিনিয়োগ, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং পরিষেবা ক্ষেত্রের বিকাশের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক মাপকাঠির উপর প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের প্রভাব পরীক্ষা করে দেখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক বুঝলে নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টির সৃষ্টি হবে, যা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে বৃহত্তর অর্থনৈতিক অগ্রগতির অনুঘটক করে তুলবে। 

সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী তাঁর বক্তব্যে চাণক্যর ‘সপ্তং তত্ত্ব’-এর উল্লেখ করে জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতি গঠনের মধ্যেকার সম্পর্ক তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তির সঙ্গে নিরাপত্তার সমন্বয় হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ‘স্মার্ট পাওয়ার’-এর উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, এ এমন এক পদ্ধতি যা সামরিক শক্তির সঙ্গে কূটনীতি ও উন্নয়নকে সংযুক্ত করে। বর্তমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে সুস্থিত বিকাশের জন্য এই পদ্ধতি অপরিহার্য। 

এই উপলক্ষে রক্ষামন্ত্রী গ্রীন ইনিশিয়েটিভ ১.০ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডিজিটাইজেশন ১.০-র সূচনা করেন। চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনীল চৌহান, বায়ু সেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ.পি. সিং প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

 

PG/SD/SKD


(Release ID: 2068319) Visitor Counter : 28


Read this release in: Tamil , English , Urdu , Hindi