প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী দিল্লির কারিয়াপ্পা প্যারেড গ্রাউন্ডে এনসিসি পিএম সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন

Posted On: 27 JAN 2024 6:34PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৪


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দিল্লির কারিয়াপ্পা প্যারেড গ্রাউন্ডে বার্ষিক এনসিসি পিএম সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন। শ্রী মোদী একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখেন এবং সেরা ক্যাডেট পুরস্কার বিতরণ করেন। ঝাঁসি থেকে দিল্লিতে আসা মেগা সাইক্লথনে অংশগ্রহণকারী এনসিসি গার্লস এবং নারীশক্তি বন্দন রানকে স্বাগত জানান।
সমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এনসিসি-র প্রাক্তন ক্যাডেট হিসেবে এনসিসি ক্যাডেটদের মধ্যে উপস্থিত হয়ে তাঁর পুরনো কথা মনে পড়ছে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা এনসিসি ক্যাডেটদের দেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এনসিসি ক্যাডেটদের মধ্যে উপস্থিত থেকে তাঁর এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের ভাবনা মনে জোরালো হচ্ছে।” এনসিসির প্রসার ও বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন আজকের অনুষ্ঠান নতুন দিনের সূচনা করল। সরকারের ভাইব্র্যান্ট ভিলেজেস কর্মসূচিতে উন্নত সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির ৪০০-র বেশি সরপঞ্চ এবং সারা দেশের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ১০০-র বেশি মহিলার উপস্থিতি লক্ষ্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সমাবেশ ‘এক বিশ্ব এক পরিবার এক ভবিষ্যৎ’ এর ভাবনাকে জোরালো করে। তিনি উল্লেখ করেন যে ২০১৪-য় ১০ টি দেশের ক্যাডেটরা সমাবেশে অংশ নিয়েছিল আজ সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৪। 
ঐতিহাসিক ৭৫ তম সাধারণতন্ত্র দিবসকে নারীশক্তির উদ্দেশে উৎসর্গ করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের মেয়েরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে। পুরস্কৃত ক্যাডেটদের প্রশংসা করেন তিনি। ভদোদরা এবং কাশী থেকে আসা সাইকেল আরোহীদের অভিনন্দন জানান এবং বলেন তিনি ২ টি জায়গা থেকেই সাংসদ হয়েছেন।
তিনি সেই সময়ের কথা বলেন, যখন সমাজে মহিলাদের ভূমিকা সীমিত ছিল সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাপনা এবং অনুষ্ঠানে। কিন্তু বর্তমানে বিশ্ব দেখতে পাচ্ছে ভারতের মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই দক্ষতা প্রকাশ করছে স্থলে, জলে, আকাশে, মহাকাশে সর্বত্র। সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে মহিলা অংশগ্রহণকারীদের নিষ্ঠার উল্লেখ করেন তিনি এবং বলেন, এটা রাতারাতি সাফল্যের ফল নয়, ১০ বছরের নিষ্ঠার সঙ্গে প্রয়াসের ফল। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “ভারতীয় ঐতিহ্যে নারীকে শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।” তিনি রাণী লক্ষ্মীবাঈ, রাণী চেন্নাম্মা এবং রাণী ভেলু নাছিয়া যারা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তাদের উদাহরণ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে সরকার দেশে নারী শক্তির প্রাণ শক্তিকে শক্তিশালী করার নিরন্তর প্রয়াস চালাচ্ছে। একসময় যা নিষিদ্ধ ছিল সেইসব ক্ষেত্রেও মহিলাদের অন্তর্ভুক্তিতে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করার কথা বলেন তিনি। যেমন তিন বাহিনীর অগ্রবর্তী ঘাঁটিতে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্থায়ী নিয়োগে এবং কম্যান্ডের ভূমিকায় ও কমব্যাট অবস্থানে, “সে অগ্নিবীরই হোক অথবা যুদ্ধ বিমানের চালক সর্বক্ষেত্রেই মহিলাদের অংশ গ্রহণ বাড়ছে” –জানান প্রধানমন্ত্রী। সৈনিক স্কুলে ছাত্রীদের অন্তর্ভুক্তির পথ খোলারও উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী জানান, গত ১০ বছরে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।
এই সব পদক্ষেপে সমাজে যে প্রভাব পড়েছে তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, সকল ক্ষেত্রে যেমন গ্রামাঞ্চলে ব্যাঙ্কিং, বীমা, স্টার্টআপ, স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে মহিলাদের সংখ্যা বাড়ছে। 
তিনি বলেন, মহিলাদের অংশগ্রহণের কারণে বিকশিত ভারত গঠনের জন্য বর্ধিত মেধা পাওয়া যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সমগ্র বিশ্ব ভারতকে বিশ্বমিত্র হিসেবে দেখছে। অনেক দেশ ভারতের যুবাদের মেধা ও দক্ষতাকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের যুবসমাজের জন্য তাঁর ভাবনার কথা তুলে ধরেন। আগামী ২৫ বছরে দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে তাদের ভূমিকার ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকভাবে ঘোষণা করেন “এই রূপান্তরকারী যুগ, আগামী ২৫ বছর শুধু উন্নত ভারত নির্মাণের সাক্ষী থাকবে তা নয়, প্রধানত কল্যাণ করবে যুবাদের, মোদীকে নয়।” তিনি বলেন, “এই যুগের সবচেয়ে বড় সুবিধাপ্রাপক আপনাদের মতো যুবারা। উৎকর্ষের জন্য আপনাদের লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “গত ১০ বছরে দক্ষতা উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং উদ্যোগপতি তৈরির মতন বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি এবং পিএম শ্রী-র অধীনে স্মার্ট স্কুল অভিযানের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে যুবাদের ক্ষমতায়নে সরকারের দায়বদ্ধতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, গত এক দশকে কলেজ, বিশ্ববিদ্যলয়, পেশাদারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটেছে।
ভারতের শিক্ষা মানচিত্রে উন্নয়নের কথা বলে প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, “গত ১০ বছরে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিশ্ব ক্রমপর্যায়ে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রতিরক্ষা, মহাকাশের মতো ক্ষেত্রকে যুবা প্রতিভার জন্য খুলে দিতে সরকারের দায়বদ্ধতার কথা পুনরায় জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী।
প্রধানমন্ত্রী মোদী “মেক ইন ইন্ডিয়া” এবং “আত্মনির্ভর ভারত” অভিযানের উল্লেখ করে বলেন এগুলি ভারতের যুবাদের প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রূপায়িত হবে। 
ভারতের ডিজিটাল বিপ্লবের প্রমাণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মোদী ডিজিটাল অর্থনীতির বহুগুণ বৃদ্ধি এবং যুবাদের ওপর প্রভূত প্রভাবের কথা বলেন। 
বিশ্বে ভারত তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্টআপের দেশ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী যুবাদের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে ভারতে ১.২৫ লক্ষের বেশি নথিভুক্ত স্টার্টআপ আছে এবং ১০০-র বেশি ইউনিকর্ন আছে।” 
প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে নীতি তৈরি এবং পরিষ্কার অগ্রাধিকারের ওপর জোর দেন। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি এখন আর শেষ গ্রাম নয় এগুলি এখন প্রথম গ্রাম এবং আগামী দিনে এই ধরনের গ্রামগুলি বড় পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে তিনি জানান। 
যুবাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী মোদী সরাসরি বলেন যে ভারতের ভবিষ্যৎকে রূপ দেওয়ার ক্ষমতা আছে যুবাদের বলে তাঁর বিশ্বাস। তিনি দেশ গঠনে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী মোদী সকল অংশগ্রহণকারীরকে অভিনন্দন জানান এবং সাফল্য কামনা করেন। যুবাদের ওপর তাঁর আস্থার কথা পুনরায় জানিয়ে ঘোষণা করেন, “আপনারাই বিকশিত ভারতের স্থপতি।”

PG/AP /SG



(Release ID: 2015450) Visitor Counter : 30