প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

তিরুচিরাপল্লির ভারতীদাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 02 JAN 2024 1:23PM by PIB Kolkata

 নতুনদিল্লি ২ জানুয়ারি, ২০২৪

 

তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল শ্রী আর এম রবিজি, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী শ্রী এম কে স্ট্যালিনজি, ভারতীদাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শ্রী এম সেলভামজি, আমার তরুণ বন্ধুরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মীবৃন্দ,

আপনাদের স্বাগত জানাই!
এন্ডু মানব কুডুম্বামে, ভারতীদাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের 
৩৮তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান আমার কাছে একটি বিশেষ দিন। ২০২৪ সালে জনসমক্ষে এটাই আমার  প্রথম অনুষ্ঠান। তামিলনাড়ু এবং এখানকার তরুণদের মুখোমুখি হতে পেরে আমি খুশি। আমি জেনে আনন্দিত হয়েছি যে, এই প্রথম এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কোনো প্রধানমন্ত্রী যোগ দিয়েছেন। আমি স্নাতক উত্তীর্ণ সমস্ত পড়ুয়া, তাঁদের অভিভাবক এবং শিক্ষকদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। 

এন্ডু মানব কুডুম্বামে, একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আইন পাশ হয় এবং তারপর বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়। এরপর এর অধীনে কলেজ চালু করা হয়। তবে, ভারতীদাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু আলাদা। ১৯৮২ সালে যখন এই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছিল, তখন এখনকার বহু মর্যাদাপূর্ণ কলেজকে এর অধীনে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে অনেকগুলি কলেজের দেশকে বহু সুসন্তান উপহার দেওয়ার নজির রয়েছে। এক শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রা শুরু করেছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়। মানববিদ্যা, ভাষা, বিজ্ঞান কিংবা উপগ্রহের ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অনন্য ভূমিকা রয়েছে। 

এন্ডু মানব কুডুম্বামে, আমাদের দেশ এবং সভ্যতা বরাবরই জ্ঞানের পথ ধরে এগিয়েছে। নালন্দা এবং বিক্রমশীলার মতো বেশ কিছু প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। গঙ্গোই-কোণ্ড-চোলপুরম এবং মাদুরাই হল, জ্ঞানার্জনের বড় কেন্দ্র। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের পড়ুয়ারা এইসব জায়গায় শিক্ষার জন্য আসেন। 

এন্ডু মানব কুডুম্বামে, একইভাবে সমাবর্তনের ধারণা অনেক পুরনো এবং আমাদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত। উদাহরণ হিসেবে, প্রাচীন তামিল সঙ্গমে কবি এবং বুদ্ধিজীবীদের সমাগমের কথা বলা যেতে পারে। অতএব, আমার তরুণ বন্ধুরা আপনারা হলেন, জ্ঞানের এক মহান ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের অংশীদার। 

এন্ডু মানব কুডুম্বামে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যে কোনো দেশকে দিশা দেখানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি প্রাণবন্ত, আমাদের দেশ এবং সভ্যতাও অত্যন্ত প্রাণবন্ত। যখন আমাদের দেশকে আক্রমণ করা হয়েছিল, তখন আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকেও নিশানা করা হয়েছিল। 

আজকের ভারতের উত্থানের পিছনে অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করেছে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উত্থান। আর্থিক বিকাশের ক্ষেত্রে ভারত রেকর্ড সৃষ্টি করে চলেছে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে দ্রুততম বিকাশশীল দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ভারত। সেইসঙ্গে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও রেকর্ড সংখ্যায় আন্তর্জাতিক তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। 

গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, উচ্চশিক্ষা আমাদের শুধুমাত্র তথ্য প্রদান করে না। এটি আমাদের সবার সঙ্গে মিলেমিশে বাঁচতে শেখায়। আপনার জীবনে এই বিশেষ দিনটি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সমাজ, এমনকি দরিদ্রদের মধ্যে দরিদ্রতম মানুষেরও ভূমিকা রয়েছে। অতএব, উন্নত সমাজ এবং দেশ গড়ে তোলাই হল, শিক্ষার মূল লক্ষ্য। আজকে যাঁরা এখানে স্নাতক হলেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত গড়ার ক্ষেত্রে তাঁরা সাহায্য করতে পারেন। 

এন্ডু মানব কুডুম্বামে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ২০৪৭ সাল পর্যন্ত তরুণ প্রজন্মের সক্ষমতাই আমাদের দেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আসুন, আমরা এক সাহসী দুনিয়া গড়ে তুলি। কোভিডের সময় আমাদের তরুণ বিজ্ঞানীরা বিশ্বের কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছিলেন। চন্দ্রযানের মতো মিশনের মাধ্যমে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। আমাদের বিজ্ঞানীরা পেটেন্টের সংখ্যা ২০১৪ সালের ৪০০০ থেকে বাড়িয়ে বর্তমানে ৫০,০০০ হাজারে নিয়ে এসেছেন। আমাদের সঙ্গীত শিল্পীরা দেশের জন্য ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক পুরস্কার নিয়ে আসছেন। এশিয়ান গেমস, এশিয়ান প্যারা গেমস এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতায় আমাদের অ্যাথলিটরা রেকর্ড সংখ্যক পদক জিতেছেন। আপনারা এমন একটা সময়ে নতুন বিশ্বে পা রাখছেন, যখন প্রত্যেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে নতুন আশা নিয়ে আপনাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। 

গত ১০ বছরে বিমানবন্দরের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ৭৪ থেকে ১৫০ হয়েছে। তামিলনাড়ুর একটা প্রাণবন্ত উপকূলরেখা রয়েছে। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, ২০১৪ থেকে এ পর্যন্ত দেশের প্রধান বন্দরগুলিতে মোট পণ্য পরিবহনের ক্ষমতা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গত ১০ বছরে দেশে সড়ক ও মহাসড়ক তৈরির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। দেশে বর্তমানে স্টার্টআপের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষে পৌঁছে গিয়েছে, ২০১৪ সালে যা ছিল ১০০-রও কম। ভারত বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি করেছে। এই চুক্তিগুলি আমাদের পণ্য ও পরিষেবার ক্ষেত্রে নতুন বাজার সৃষ্টি করবে। সেইসঙ্গে তরুণদের সামনেও অসংখ্য সুযোগ সৃষ্টি করবে। বিভিন্ন দিক থেকে বলতে গেলে, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতীয় তরুণদের সামনে এটাই হল সেরা সময়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশকে এক নতুন উচ্চাতায় পৌঁছে দিন। 

এন্ডু মানব কুডুম্বামে, আপনাদের অনেকে মনে করতে পারেন, আজকের দিনটির মধ্যে দিয়ে আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সমাপ্তি ঘটছে। সেটা এক অর্থে সত্যি হলেও, শেখার কিন্তু শেষ নেই। আপনাদের অধ্যাপকরা হয়তো আর শিক্ষা দেবেন না, কিন্তু জীবনই হবে আপনাদের শিক্ষক। বর্তমানের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে হয় আপনি পরিবর্তন আনবেন, অথবা পরিবর্তনই আপনাকে চালিত করবে। আজ যাঁরা এখানে স্নাতক হলেন, তাঁদের সবাইকে আমি আবার অভিনন্দন জানাচ্ছি।

আমি আপনাদের সকলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।                                    

PG/MP/CS


(Release ID: 1992676) Visitor Counter : 127