সামাজিকন্যায়ওক্ষমতায়নমন্ত্রক

সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের মূল উদ্যোগ ও সাফল্য

অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর মানুষের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট

Posted On: 26 DEC 2022 3:31PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২

সরকারের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর মানুষের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ ব্যবস্থা বজায় রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এর বিরোধিতায় বেশ কিছু আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ সালে ৭ নভেম্বর সব আবেদন খারিজ করে দিয়ে ১০৩ নম্বর সংবিধান সংশোধনী অধিনিয়ম ২০১৯ – এর বৈধতা বহাল রাখে।

সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক নেশামুক্ত ভারত অভিযান ২০২০ সালের ১৫ অগাস্ট দেশের ৩৭২টি জেলায় চালু করেছিল। এর লক্ষ্য ছিল, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর, স্কুল এবং বিশেষ শ্রেণীর জনগণকে চিহ্নিত করে তাঁদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। নেশা মুক্ত ভারত অভিযান দেশের বৃহত্তর অংশে সমর্থন পেয়েছে। মহিলা, যুবক-যুবতী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এই অভিযানকে ব্যাপক সমর্থন জানায়।

এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পের আওতায় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ৯ কোটি ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ চিকিৎসা পরিষেবার আওতায় এসেছেন। এর মধ্যে ৩ কোটিরও বেশি যুবক-যুবতী ও ২ কোটিরও বেশি মহিলা রয়েছে। ২ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে। নেশা মুক্ত ভারত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য ৮ হাজারেরও বেশি মূল স্বেচ্ছাসেবী নিযুক্ত হয়েছেন। সংস্থার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালানো হচ্ছে। ৯৯ হাজার ৫৯৫টিরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৬৭ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া জাতীয় মাদক মুক্ত অঙ্গীকার গ্রহণ করেছে।

মাদকের চাহিদা কমানোর জন্য যে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, তার আওতায় রাজ্য সরকার, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলিতে অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়। এই কর্মসূচির আওতায় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের সহায়তায় চিকিৎসা ও কাউন্সিলিং করানো হয়। এমনকি, খোলা হয়েছে ৩৪১টি পুনর্বাসন কেন্দ্র। ১৪টি জেলায় নেশা মুক্ত কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। নেশা মুক্তকরণের জন্য কাউন্সিলিং – এর মাধ্যমে ২ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪০২ জন উপকৃত হয়েছেন।

নবচেতনা কর্মসূচির মাধ্যমে ১০ লক্ষেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকাকে এবং ২ কোটি ৪০ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়াকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের এবং তাদের শিক্ষক-শিক্ষা ও অভিভাবকদের মাদকের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে এই নবচেতনা কর্মসূচি চালানো হয়।

নতুন দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস – এ জাতীয় নেশা মুক্তি চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে মাদক দ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ২০২৩ – এর মে মাস পর্যন্ত ১৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১৭ হাজারেরও বেশি সীমান্তবর্তী গ্রামে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নেশামুক্ত ভারত অভিযান চালু করবে। হরিয়ানার বিভিন্ন জেলায় ১৫টি ও ত্রিপুরার কারাগারে একটি নেশা মুক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবর্ষ থেকে তপশিলি জাতিভুক্ত পড়ুয়াদের প্রাক্‌-মাধ্যমিক বৃত্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। উপভোক্তারা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অর্থ সাহায্য পাবেন। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পড়ুয়াদের আবেদনপত্র পরীক্ষা করে দেখা হবে।

সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক তপশিলি জাতিভুক্তদের জন্য যে বৃত্তি চালু করেছে, তার মূল লক্ষ্য হ’ল মেধাবী পড়ুয়াদের উন্নতমানের শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ও বৃদ্ধি সম্পর্কে বিপুল প্রচার চালাতে মুদ্রণ, বৈদ্যুতিন ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপাক প্রচার চালানো হয়। জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রের পাশাপাশি, আঞ্চলিক সংবাদপত্রগুলিকেও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এই বৃত্তির নানা সুবিধা সম্পর্কে আকাশবাণী ও দূরদর্শনেও প্রচার চালানো হয়। ২০২২ – ২০২৩ অর্থবর্ষে ১২৫ জন পড়ুয়া এই বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। একই রকমভাবে, অনগ্রসর শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য প্রাক্‌-মাধ্যমিক বৃত্তির সুবিধা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আদর্শ গ্রাম যোজনা, বাবু জগজীবন রাম ছাত্রাবাস যোজনা এবং তপশিলি জাতিভুক্তদের জন্য বিশেষ কেন্দ্রীয় সহায়তা যোজনা – এই তিনটি প্রকল্পকে একত্রিত করে গড়ে তোলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী অনুসূচিত জাতি অভ্যুদয় যোজনা। তপশিলি জাতিভুক্তদের আর্থিকভাবে আরও সক্ষম করে তুলতে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে, দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে এই যোজনা কাজ করবে। তপশিলি জাতি অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে পরিকাঠামো উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হবে এই যোজনা।

তপশিলি জাতিভুক্ত পড়ুয়াদের ছাত্রাবাসের সুবিধা দিতে ওয়েব-ভিত্তিক পোর্টাল চালু করা হয়েছে। ছাত্রীদের জন্য গোলাপী রঙের এবং ছাত্রদের জন্য গাঢ় ধূসর রঙ ছাত্রাবাসের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশের তপশিলি জাতিভুক্ত জনগণের উন্নয়নের জন্য অতিরিক্ত ৯৫০ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ২ হাজার ৮০০টি গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে কম্যুনিটি হল। অমৃত জলধারা প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।

অনগ্রসর শ্রেণীর জনগণের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে গৃহীত হয়েছে ঋণ প্রকল্প। রাজ্য সরকার এবং ব্যাঙ্কগুলি যেসব মানুষের বার্ষিক পারিবারিক আয় ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, তাঁদের ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। এর আওতায় ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৪০৯ জন সুবিধাভোগীকে ঋণ বাবদ ৪১৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় সাফাই কর্মচারী আর্থিক ও উন্নয়ন কর্পোরেশন ৫৫ হাজার ৪৪১ জনকে ৫১৬ কোটি ৩২ লক্ষেরও বেশি টাকা অর্থ সাহায্য দিয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছে ১০০৫.৫৬ লক্ষ টাকা।

সাফাই কর্মচারীদের জাতীয় কমিশন বিভিন্ন বিষয়ের উপর জোর দিয়ে দুটি আঞ্চলিক সম্মেলন ও ১৫টি বৈঠকের আয়োজন করেছে। ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য স্তরে সাফাই কর্মচারী কমিশন গড়ে তোলা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে জেলাস্তরে পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সাফাই কর্মচারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ২৫৮টি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। এর মধ্যে ১ হাজার ২৪০টি অভিযোগ ইতিমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছে।

ডঃ আম্বেদকর চিকিৎসা প্রকল্পে ১৭৩ জন সুবিধাভোগীকে ৪.২২.৪৫ লক্ষ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বিশিষ্ট সাধু-সন্ন্যাসীদের জন্ম বা মৃত্যু বার্ষিকী উদযাপনের জন্য রয়েছে ডঃ আম্বেদকর প্রকল্প। দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরের বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৪টি ডঃ আম্বেদকর চেয়ার স্থাপন করা হয়েছে।

৫টি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ প্রদান করা হয় ডঃ আম্বেদকর ন্যাশনাল পোস্ট ডক্টরাল ফেলশিপের আওতায়। ৭টি বিশেষ বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বাক্ষর করা হয়েছে সমঝোতাপত্র।

সামাজিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় প্রতিষ্ঠানের ৩টি ভাগ রয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য ১টি, প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ১টি এবং মাদকাসক্তদের প্রতিরোধের জন্য ১টি কেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত। তৃতীয় লিঙ্গের জন্য নির্দিষ্ট ক্ষেত্রটিকে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৩৮টি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য কাজের জন্য ইতিমধ্যেই তাঁরা শংসাপত্র পেয়েছে।

বিশেষ এলাকায় উচ্চ বিদ্যালয়, পড়ুয়াদের আবাসিক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প (শ্রেষ্ঠা) চালু করেছে সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক। এর আওতায় তপশিলি জাতিভুক্ত পড়ুয়াদের শিক্ষা ক্ষেত্রে সাহায্যের জন্য যেসব স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান কাজ করে তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী দক্ষ প্রকল্পের আওতায় তপশিলি জাতি, অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষ, স্বচ্ছতা কর্মী সহ প্রান্তিক জনগণকে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য সাহায্য করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যেই ৬৫৯ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

জেরিয়াট্রিক কেয়ারগিভার – এর ভূমিকায় চাকরির জন্য প্রশিক্ষণ দিতে ১৫টি প্রশিক্ষণ সহযোগী সংস্থাকে নির্বাচিত করা হয়েছে। দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে শিল্প সহযোগীদের। প্রধানমন্ত্রী দক্ষ প্রকল্পটি উমঙ্গ অ্যাপ – এ পাওয়া যায়।

স্বরোজগার ও পুনর্বাসনের জন্য আনা হয়েছে জাতীয় প্রকল্প ‘নমস্তে’। এর আওতায় ইতিমধ্যেই ৩ হাজার ৯৪৪টি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সহজে পয়ঃপ্রণালী পরিস্কারের ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ২৫৮টি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।

২০২২ সালে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে ৭৫.৬৩ কোটি টাকা অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে ৪টি নতুন বৃদ্ধাবাস। সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক প্রবীণ নাগরিকদের সহায়তার জন্য ২০২২ সালে পয়লা অক্টোবর জাতীয় হেল্পলাইন নম্বর 14567 চালু করেছে। নিঃশুল্ক এই হেল্পলাইন নম্বরটি সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করে। বর্তমানে দেশের ৩১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই নম্বর কার্যকর রয়েছে।

চলতি প্রকল্পগুলির কাজকর্ম পর্যবেক্ষণের জন্য সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের প্রকল্প নজরদারি শাখা চালু হয়েছে ২০২০ সালে। মন্ত্রক উৎকর্ষ মিশন ওয়েবসাইটের উন্নতি, ই-সমীক্ষা, আঞ্চলিক পর্যায়ে বৈঠক সহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কাজকর্মের অগ্রগতি খতিয়ে দেখে।

বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক ৩টি আঞ্চলিক কর্মশালার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের ১৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য কর্মশালার আয়োজন করা হয় ২০২২ সালের ২৫ ও ২৬ নভেম্বর ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায়। দ্বিতীয় আঞ্চলিক কর্মশালাটি হবে ২০২৩ সালের ১৯ ও ২০ জানুয়ারি কর্ণাটকের মাইশোরে।

PG/PM/SB



(Release ID: 1887127) Visitor Counter : 334