স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ শ্রীনগরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ২৪০টি উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করলেন

Posted On: 05 OCT 2022 9:10PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৫ অক্টোবর ২০২২

 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ শ্রীনগরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ২৪০টি উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করলেন। একইসঙ্গে তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুলায় বেশ কয়েকশ’ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসও করেন এবং ওই এলাকায় একটি জনসভায় ভাষণ দেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, পীরপাঞ্জাল এবং চিনাব ও কাশ্মীর উপত্যকার এই অঞ্চল পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর এলাকা। জম্মু-কাশ্মীরে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী যে উন্নয়ন নিয়ে এসেছেন তা এই এলাকার মানুষের হাসিমুখের মধ্য দিয়েই স্পষ্ট প্রতিফলিত হচ্ছে। তিনি বলেন, আগে এই অঞ্চলের তিনটি পরিবার সাধারণভাবে শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করেছে, কিন্তু এই এলাকার উন্নয়নের জন্য তারা কিছুই করেনি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জম্মু-কাশ্মীরের প্রতিটি গ্রামে গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে বিপুল পরিশ্রম করেছেন। আগে যেখানে গণতন্ত্র ওই তিনটি পরিবার, ৮৭ জন বিধায়ক এবং ছয়জন সাংসদকে ঘিরেই সীমায়িত ছিল, ২০১৯-এর ৫ আগস্টের পর প্রধানমন্ত্রী সেই গণতন্ত্রকে পঞ্চ, সরপঞ্চ, বিডিসি এবং জেলা পঞ্চায়েত স্তরে নিয়ে গিয়ে ৩০ হাজার মানুষকে যুক্ত করেছেন। এর আগে দুর্নীতির কারণে গরীবের অর্থের অপব্যবহার হত। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গরীবের অর্থ গরীবের কাছে যাওয়া নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ওই তিন পরিবারের শাসনের সময়ে গত ৭০ বছরে জম্মু ও কাশ্মীরে মাত্র ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছিল, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর নেতৃত্বে মাত্র তিন বছরে ৫৬ হাজার কোটি টাকা লগ্নি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগে এই অঞ্চল সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য ছিল, কিন্তু এখন এটি পর্যটকদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। আগে প্রতি বছর কাশ্মীর উপত্যকায় খুব বেশি হলে ৬ লক্ষ পর্যটক আসতেন, সেখানে এ বছর এখনও পর্যন্ত এই অঞ্চলে এসেছেন ২২ লক্ষ পর্যটক। এর ফলে, হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং এই প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করা হবে।

শ্রী শাহ বলেন, আগে উপত্যকার যুবকদের হাতে পাথর এবং বন্দুক তুলে দেওয়া হত কিন্তু এখন শ্রী মোদী তুলে দিচ্ছেন ল্যাপটপ। এলাকায় শিল্প স্থাপন করে যুবাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন যে সন্ত্রাসবাদ কখনও বিশ্বের জন্য ভালো হতে পারে না। ১৯৯০ থেকে এখনও পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরে ৪২ হাজার মানুষ সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন। বর্তমানে সন্ত্রাসবাদ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রতিটি গ্রামে এখন বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিনামূল্যে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন এবং ৭৭ লক্ষ মানুষকে ‘হেলথ কার্ড’ দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পেতে পারেন। আগে এই এলাকার ১ লক্ষ মানুষের কোনো পাকা বাড়ি ছিল না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী ২০১৪-২০২২ সময়কালে এইসব মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছেন। ১২ লক্ষ পরিবারকে গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে। ‘জল জীবন মিশন’-এর অধীনে ৫৮ শতাংশ মানুষের বাড়িতে কলের জল পৌঁছেছে। ১১ লক্ষ ৮৭ হাজার কৃষকের অ্যাকাউন্টে বছরে ৬ হাজার টাকা জমা পড়ছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন যে তিনি গুজ্জর, বকরওয়াল এবং বারামুলার পাহাড়ি এলাকার মানুষ এবং কাশ্মীরের যুবাদের কাছে পৌঁছতে চান। কাশ্মীরের মানুষকে খোলা মনে বুঝতে হবে যে এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ালে মানুষের ভালো হয় না। কাশ্মীরকে দেশের অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্কল্প যে কাশ্মীরের যুব সম্প্রদায় যেন দেশের উন্নয়নে সাহায্য করতে পারে, নিজেদের শিক্ষিত করে তুলে কর্মের উপযুক্ত করে তুলতে পারে এবং শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। শ্রী শাহ বলেন যে দুটি মডেল আছে। একটি হল, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়ন, শান্তি, সম্প্রীতি এবং কর্মসংস্থানের মডেল আর অন্য মডেলের ফলাফল হল পুলওয়ামা হামলা। শ্রী মোদী ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে পুলওয়ামায় হাসপাতাল তৈরি করেছেন। দ্বিতীয় মডেলে যেখানে যুবকদের জন্য রয়েছে পাথর, মেশিনগান, বন্ধ কলেজ, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর মডেলে আছে আইআইএম, আইআইটি।

শ্রী অমিত শাহ বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তিনি জনতাকে আশ্বস্ত করে বলেন যে নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা তৈরি করলেই পুরোপুরি স্বচ্ছতার সঙ্গে কাশ্মীরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই এলাকায় শাসন করবেন। তিনি বলেন যে পূর্বে কেন্দ্র পুনর্বিন্যাসের ফলে তিনটি পরিবারের মানুষই সুবিধা পেত, কিন্তু এখন আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে মানুষের প্রতিনিধিরা জিতবেন এবং শাসন করবেন। তিনি উপস্থিত জনতাকে পরামর্শ দেন যে যদি তাঁদের গ্রামে কেউ জঙ্গিদের সমর্থন করেন, তাহলে তাঁকে বোঝাতে হবে এবং মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে হবে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী বলেন, তিনটি পরিবারের শাসনের সময়ে জম্মু-কাশ্মীরের বাজেট ছিল মাত্র ১৩২ কোটি টাকার, সেখানে ২০২২-২৩-এ প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে বাজেট বেড়ে হয়েছে ১,৫১৫ কোটি টাকা। আলাদাভাবে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ডিডিসি এবং পিডিসি-র জন্য। শ্রী শাহ বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় পাঁচটি নতুন ডিগ্রি কলেজ খোলা হয়েছে। বারামুলায় গুজ্জর ও বকরওয়াল বালিকাদের জন্য ১০০ শয্যের আবাসিক স্কুল খোলার কাজ হাতে নিয়েছে সরকার। বারামুলায় একটি সরকারি মেডিকেল কলেজও স্থাপন করা হচ্ছে যাতে এলাকার শিশুরা চিকিৎসক হয়ে উঠতে পারেন এবং কাশ্মীরের মানুষের সেবা করতে পারেন। তিনি জানান, ১৯৪৭-২০১৪ পর্যন্ত মাত্র চারটি মেডিকেল কলেজ তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু ২০১৪-২০২২ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত সরকার নয়টি মেডিকেল কলেজ এবং ১৫টি নার্সিং কলেজ তৈরি করেছে। পূর্বে জম্মু-কাশ্মীর থেকে মাত্র ৫০০ চিকিৎসক পাশ করে বেরোতেন, সেখানে এখন ১,৩০০ চিকিৎসক পাশ করে দেশ ও জম্মু-কাশ্মীরকে সেবা করবেন। শ্রী শাহ আরও জানান, কাশ্মীরে এইমস, এনআইআইটি, বিএসসি নার্সিং কলেজ এবং দুটি ক্যান্সার ইনস্টিটিউটও স্থাপন করা হয়েছে। অনন্তনাগ এবং বারামুলায় নতুন মেডিকেল কলেজ খোলা হয়েছে ও জম্মু-কাশ্মীরে দুটি ক্লাস্টার ইউনিভার্সিটি স্থাপন করা হয়েছে।

শ্রী অমিত শাহ বলেন, নাঙ্গাল থেকে বারামুলা এবং বারামুলা থেকে উরি এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য গুলমার্গ থেকে বারামুলা ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক তৈরি করা হয়েছে ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে। তিনি জানান, ৮৪৭ কোটি টাকার কর্মসূচির মাধ্যমে ১ লক্ষেরও বেশি পরিবারকে শিক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীরের ৪০২টি পঞ্চায়েতে দুটি স্টেডিয়াম এবং প্রতিটি পঞ্চায়েতে একটি খেলার মাঠ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ইন্ডোর স্টেডিয়ামও তৈরি করা হচ্ছে। এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে ১৩ লক্ষ পর্যটক গুলমার্গ ভ্রমণ করেছেন। বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সেচ প্রকল্প কাশ্মীর উপত্যকার উন্নতি করবে। রেল যোগাযোগের উন্নতি করতে উধমপুর থেকে বারামুলা রেললাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় ৩,১৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১৯টি নতুন রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। মন্ত্রী আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শিল্প প্যাকেজে সারা দেশ থেকে কাশ্মীরের জন্য ৫৬ হাজার কোটি টাকার লগ্নি এসেছে। এতে ৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদের কারণে গুজ্জর-বকরওয়াল এবং পাহাড়ি এলাকার মানুষরা শিক্ষা, নির্বাচন এবং কাজের ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সুবিধা পেতেন না। কিন্তু এই অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়ায় তাঁরা এই সমস্ত সুবিধা পাবেন। এর জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিচারপতি শর্মা কমিশন তৈরি করেছিলেন এবং আরও একবার চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীকে নিয়ে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা চালিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়কে এক করা যায়।

জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর শ্রী মনোজ সিনহা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডঃ জিতেন্দ্র সিং সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 

PG/AP/DM/


(Release ID: 1865617) Visitor Counter : 237


Read this release in: English , Urdu , Marathi , Assamese