অর্থমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রক এবং কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের বিশেষ সপ্তাহ উদযাপনের উদ্বোধন করেছেন


প্রধানমন্ত্রী ঋণভিত্তিক সরকারি প্রকল্পের জন্য জাতীয় পোর্টাল – জন সমর্থ পোর্টালের সূচনা করেছেন

দেশের উন্নয়নে এবং দরিদ্রতম মানুষের ক্ষমতায়নে বিভিন্ন প্রকল্পে জনঅংশীদারিত্ব নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 06 JUN 2022 3:05PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি,  ৬ জুন,  ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ অর্থমন্ত্রক এবং কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের বিশেষ সপ্তাহ উদযাপনের উদ্বোধন করেছেন । স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব – আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে অর্থমন্ত্রক এবং কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক ৬-১২-ই জুন সপ্তাহ জুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় অর্থ ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী শ্রীমতি নির্মলা সীতারমন, কর্পোরেট বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শ্রী রাও ইন্দরজিৎ সিং, দুই অর্থ প্রতিমন্ত্রী শ্রী পঙ্কজ চৌধুরী ও ডঃ ভাগবত কিষান রাও কারাড় উপস্থিত ছিলেন ।

প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে ঋণভিত্তিক বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য একটি জাতীয় পোর্টাল- জন সমর্থের সূচনা করেছেন । তিনি গত ৮ বছর ধরে অর্থমন্ত্রক ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্বলিত একটি ডিজিটাল প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করেন । এই উপলক্ষ্যে ১ টাকা, ২ টাকা, ৫ টাকা, ১০ টাকা ও ২০ টাকার স্মারক মুদ্রার সিরিজ প্রকাশ করা হয় । এই বিশেষ সিরিজে আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের লোগো রয়েছে । দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা যাতে সহজেই কয়েনগুলির মুদ্রামান সম্পর্কে ধারণা পান, সেবিষয়েও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ।   

এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামে বিভিন্ন মানুষ নানা পথ অনুসরণ করেছেন এবং এই আন্দোলনকে আলাদা আলাদা মাত্রা দিয়েছেন । কেউ সত্যাগ্রহের পথ অনুসরণ করেছেন, কেউ সশস্ত্র বিপ্লবের, কেউ আস্থা ও আধ্যাত্মিকতার শরণ নিয়েছিলেন, কেউ আবার স্বাধীনতা অর্জনের উৎসাহটিকে দমে না যাওয়ার জন্য বুদ্ধিমত্তার আশ্রয়ে নানাজনকে উদ্বুদ্ধ করেছেন । আজ আমরা তাদের সবার অবদানকে স্মরণ করি ।

আজ যখন আমরা স্বাধীনতার ৭৫-তম বর্ষ উদযাপন করছি তখন দেশের উন্নয়নে প্রত্যেকের বিশেষ অবদান রাখা উচিত । আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসতে হবে এবং নতুন শপথ নিয়ে নিষ্ঠা ও অধ্যাবসায়ের সঙ্গে কাজ করতে হবে ।   

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৮ বছর ধরে ভারত নানা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে । এই সময়কালে জনঅংশীদারিত্বের ফলে দেশের উন্নয়ন যাত্রায় গতি এসেছে এবং দরিদ্রতম মানুষটির ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়েছে । শ্রী মোদী বলেন, আজ স্বচ্ছ ভারত অভিযানের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষ মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করছেন । পাকা বাড়ি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জল সংযোগ এবং বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার ফলে দরিদ্র মানুষ উপকৃত হচ্ছেন । করোনার সময়কালে ৮০ কোটি দেশবাসী বিনামূল্যে রেশন পাওয়ায় অভুক্ত থাকার কোনো আশঙ্কা তৈরি হয়নি । ‘নাগরিকদের মধ্যে আমরা নতুন আস্থা সঞ্চারিত হতে দেখেছি । তারা বৈষম্য হওয়ার আশঙ্কা থেকে বেরিয়ে এসেছেন এবং বড় বড় স্বপ্ন দেখছেন ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অতীতে দেশ সরকারমুখী প্রশাসনের অধীনে ছিল । কিন্তু আজ একবিংশ শতাব্দীর ভারত জনমুখী প্রশাসনের আওতায় আছে । আগে মানুষকে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দফতরে যেতে হত । আর এখন বিভিন্ন দফতরে না গিয়ে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রকল্পের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছোয় । ঋণভিত্তিক সরকারি প্রকল্পের জন্য যে জাতীয় পোর্টাল-জন সমর্থের সূচনা করা হয়েছে তার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী, কৃষক, ব্যবসায়ী এবং অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীরা উপকৃত হবেন, তারা তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন ।  

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যে কোন সংস্কারের লক্ষ্য যদি সঠিক হয় এবং সেটি গুরুত্ব সহকারে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে সেই প্রকল্পের সুফল মানুষের কাছে পৌঁছোতে বাধ্য । গত ৮ বছরে যেসব সংস্কার হাতে নেওয়া হয়েছে সেগুলি আমাদের যুব সম্প্রদায়ের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই বাস্তবায়িত হয়েছে । এর মাধ্যমে তারা তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারবেন । ‘আমাদের যুবক-যুবতীরা এখন চাইলেই একটি সংস্থা খুলতে পারেন, তারা সহজেই যে কোন শিল্প শুরু করতে পারেন এবং সহজেই ব্যবসা চালাতে পারেন । এই কারণে ৩০,০০০-এর বেশি নিয়মাবলীকে শিথিল করা হয়েছে, ১৫০০ আইন বাতিল করা হয়েছে, বিভিন্ন কোম্পানি আইনের সংস্কার ঘটিয়ে সেগুলিকে ফৌজদারি ব্যবস্থাপনার বাইরে নিয়ে আসা হয়েছে । এই ভাবে ভারতীয় সংস্থাগুলি শুধু এগিয়েই চলেছে না তারা এক নতুন উচ্চতায় যাতে পৌঁছোতে পারে আমরা সেটি নিশ্চিত করেছি ।’  

শ্রী মোদী বলেছেন, সরকার বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগ গ্রহণের ফলে কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরের অনেক করের পরিবর্তে শুধুমাত্র পণ্য পরিষেবা কর কার্যকর হয়েছে । এই সরলীকরণের ফলাফল এখন সকলে উপলব্ধি করতে পারছেন । প্রতি মাসে এখন  ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি জিএসটি থেকে আদায় হচ্ছে । তিনি আরও বলেন, জিইএম পোর্টালের মাধ্যমে সরকার বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী সহজেই সংগ্রহ করছে । এই পোর্টালে আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে । প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই পোর্টালগুলি সহজে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে । ইনভেস্ট ইন্ডিয়া পোর্টালের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পোর্টালের মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে আগ্রহী ব্যক্তিরা জানতে পারেন । এছাড়াও এক জানালা ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন অনুমোদন সহজেই পাওয়া সম্ভব । এই উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে জন সমর্থ পোর্টালটি যুব সম্প্রদায় এবং নতুন শিল্পোদ্যোগের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে ।

‘আজ যখন আমরা সংস্কার, সরলীকরণ এবং সহজ পন্থা-পদ্ধতির শক্তির উপলব্ধি করতে পারছি, আমরা তখন সুযোগ-সুবিধার বিভিন্ন দিকের সুফল সকলেই মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছি । গত ৮ বছরে আমরা দেখিয়েছি যদি ভারত সামগ্রিকভাবে কোন সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে দেশ সারা বিশ্বের কাছে নতুন আশার সঞ্চার ঘটায় । আজ সারা বিশ্ব আমাদের শুধুমাত্র বড় একটি বাজার বলেই বিবেচনা করে না, আমরা দক্ষ, সৃজনশীল, পরিবর্তনশীল এবং উদ্ভাবনী একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারব বলে তাদের মধ্যে আস্থার সঞ্চার হয় ।’

শ্রী মোদী বলেছেন, আজ সারা বিশ্ব আশা করে ভারত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করবে । গত ৮ বছরে আমরা সাধারণ মানুষের উপর ভরসা রেখেছি বলেই এটি সম্ভব হয়েছে । ‘উন্নয়নের পথে জনসাধারণকে অংশগ্রহণে আমরা উৎসাহিত করি । আমরা দেখেছি সুপ্রশাসনের জন্য যখনই কোন প্রযুক্তি গৃহিত হয়, তখন সেই প্রযুক্তিকে সাধারণ মানুষ শুধু কাজেই লাগায়না, তারা সেটির প্রশংসাও করেন ।’ প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে ইউপিআই-এর সাফল্যের কথা তুলে ধরেন ।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী শ্রীমতি নির্মলা সীতারমন বিশেষ সপ্তাহ উদযাপনের উদ্বোধন করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান । সারা সপ্তাহ ধরে অর্থ মন্ত্রকের বিভিন্ন দফতর এবং কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক কীভাবে জাতির সেবা করে চলেছে, সে সম্পর্কে জানানো হবে । ১৯৪৭ সালের পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিভিন্ন স্তর সম্পর্কে মানুষকে অবগত করা হবে ।

শ্রীমতি সীতারমন বলেছেন, ‘মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব দিয়ে, গত ৭৫ বছর ধরে অর্থ ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক সকলকে সচেতন করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে । আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ৮ বছরে যা করা হয়েছে তা ,  রুপিয়াকা রোচক সফর- ভিডিওটির মাধ্যমে আর্থিক সমন্বয়ের তথ্য সকলের সামনে তুলে ধরা হয়েছে । এই আর্থিক সমন্বয় সাধারণ মানুষের জন্য সহায়ক হবে ।’

শ্রীমতি সীতারমন আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে গত ৮ বছর ধরে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করে থাকেন । সাধারণ মানুষকে সেবা করার যে উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন, তারই অঙ্গ হিসেবে জন সমর্থ পোর্টালটির সূচনা করা হল ।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানান, গত ২ বছর ধরে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার সুফল পাওয়া যাচ্ছে । খাদ্য নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনা করা অথবা বিশেষ পরিস্থিতিতে মানুষের হাতে কিছু অর্থ তুলে দেওয়ার মতো নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ।

স্বাগত ভাষণে কেন্দ্রীয় অর্থসচিব ডঃ টি ভি সোমানাথন গত ৮ বছর ধরে আর্থিক নীতি তৈরির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন সময়ে যেভাবে সাহায্য করেছেন তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান । তিনি বলেন, এই বিশেষ সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রক ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক শুধু তাদের সাফল্য গাঁথা তুলে ধরবে না, এই দুই মন্ত্রক সকলের কাছ থেকে নানাবিধ পরামর্শ চাইবে । সচিব জানান, ২০৪৭ সালের ভারত যাতে সুপ্রশাসনের নতুন স্বপ্ন পূরণ করতে পারে,  মন্ত্রক সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে ।

জন সমর্থ পোর্টাল :

১৩টি সরকারি প্রকল্পের আবেদনপত্র জমা দেওয়া এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি সহ ১২৫টিরও বেশি এমএলআই থেকে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য জন সমর্থ পোর্টাল সাহায্য করবে । কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ, পণ্য ও পরিষেবা কর, উদ্যম, এনইএসএল, ইউআইডিএআই, সিআইবিআইএল-এর থেকে  বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে দ্রুত ঋণের ব্যবস্থা করা হবে । এছাড়াও কৃষি, জীবিকা ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের থেকে ঋণ পেতে জন সমর্থ পোর্টাল সাহায্য করবে । এই পোর্টালের মাধ্যমে যে সমস্ত আবেদনপত্র জমা পড়বে সেগুলির যোগ্যতা যাচাই করে নির্ধারিত ব্যাঙ্কে ঋণের জন্য পাঠানো হবে । পুরো প্রক্রিয়াটির বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য আবেদনকারীকে জানানো হবে । এরফলে ঋণের জন্য ব্যাঙ্কের শাখায় বারবার যেতে হবে না ।

 

CG/CB/RAB


(Release ID: 1831771) Visitor Counter : 274