অর্থমন্ত্রক

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির প্রধানদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকে পৌরোহিত্য করেছেন অর্থমন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন

ব্যাঙ্কগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাদের কাছে পর্যাপ্ত মূলধন রয়েছে এবং ভবিষ্যতে যে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত

Posted On: 07 JAN 2022 4:04PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৭ জানুয়ারি, ২০২২
 
কেন্দ্রীয় অর্থ তথা কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন আজ নতুন দিল্লিতে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডায়রেক্টরদের সঙ্গে ব্যাঙ্কগুলির কাজকর্মের খতিয়ান পর্যালোচনা করেন। আজকের পর্যালোচনা বৈঠকে বিভাগীয় প্রতিমন্ত্রী ডা. ভগবৎ কৃষ্ণরাও করড এবং আর্থিক পরিষেবা দপ্তরের সচিব শ্রী দেবাশিস পাণ্ডা সহ দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।
 
পর্যালোচনা বৈঠকে বর্তমান কোভিড-১৯ মহামারীজনিত পরিস্থিতিতে নতুন প্রজাতির ভাইরাসের সংক্রমণের দরুণ ভারত সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে যে সমস্ত প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে তা কার্যকর করতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়। অদূর ভবিষ্যতে সম্ভাব্য যে কোনও বাধা-বিপত্তির মোকাবিলায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির প্রস্তুত থাকা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
 
আপৎকালীন ঋণ সহায়তা নিশ্চয়তা কর্মসূচি (ইসিএলজিএস)-র প্রশংসা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখনও আমাদের সন্তুষ্টির কোনও সময় আসেনি কারণ, আমাদের যাবতীয় প্রয়াস কোভিড-১৯ মহামারীজনিত বিপত্তিমূলক পরিস্থিতির মোকাবিলায় যে সমস্ত ক্ষেত্রে সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে আরও বেশি প্রয়াস গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর এই কর্মসূচির সাফল্য নির্ভর করছে। তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির উদ্দেশ্যে আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে কৃষি, কৃষক, খুচরো ব্যবসা তথা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রকে সবরকম সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে। 
 
ওমিক্রন প্রজাতির দ্রুত সংক্রমণের প্রেক্ষিতে বিশ্ব আর্থিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও ভারতে ব্যবসায়িক পরিবেশে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী শ্রমনিবিড় ক্ষেত্রগুলিকে মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও বেশি শক্তিশালী করে তুলতে প্রয়োজনীয় সাহায্য দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন। 
 
ঋণ চাহিদার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, খুচরো ব্যবসা, ম্যাক্রো-অর্থনীতি ক্ষেত্রের সার্বিক অগ্রগতি এবং ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক অবস্থায় উন্নতির দরুণ ঋণ চাহিদার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আজকের পর্যালোচনা বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ ব্যবস্থায় অগ্রগতির কথা তুলে ধরা হয়। মহামারীজনিত জটিল পরিস্থিতি সত্ত্বেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি ভালো কাজ করেছে এবং অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় সবরকম অনুকূল নীতি গ্রহণ করেছে বলেও বৈঠকে জানানো হয়। 
 
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির অগ্রগতির খতিয়ান
 
*রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ২০২০-২১ অর্থবর্ষে মোট মুনাফার পরিমাণ ৩১,৮২০ কোটি টাকা, যা গত পাঁচ বছরে সর্বাধিক।
 
*২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মোট মুনাফা ৩১,১৪৫ কোটি টাকা, যা ২০২০-২১ অর্থবর্ষের সমতুল।
 
*রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির গত সাতটি অর্থবর্ষে ঋণ পুনরুদ্ধারের পরিমাণ ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা।
 
*রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি বার্ষিক ভিত্তিতে ব্যক্তিবিশেষকে ঋণদানে ১১.৩ শতাংশ, কৃষিক্ষেত্রে ঋণদানে ৮.৩ শতাংশ অগ্রগতি করেছে। এর ফলে, ২০২১-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সার্বিক ঋণদানের ক্ষেত্রে অগ্রগতির হার ৩.৫ শতাংশ।
 
*ঋণ সহায়তা বাড়াতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি গত বছরের অক্টোবর মাসে যে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে তাতে এখনও পর্যন্ত ৬১,২৬৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাবও মঞ্জুর হয়েছে।
 
*কোভিড-১৯ মহামারীর সময় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি আপৎকালীন ঋণ সহায়তা নিশ্চয়তা কর্মসূচিতে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি করেছে। মহামারীর সময় এই কর্মসূচির মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলিকে বিশেষ আর্থিক ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, পিএম স্বনিধি কর্মসূচিতেও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 
 
*আর্থিক ঋণ সহায়তা নিশ্চয়তা কর্মসূচিতে ২০২১-এর নভেম্বর পর্যন্ত ২ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। এর ফলে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলি যেমন লাভবান হয়েছে, তেমনই প্রায় ৬ কোটি পরিবারের রুজি-রোজগার অব্যাহত থেকেছে। 
 
অর্থমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর সময় থেকে বিভিন্নভাবে সহায়তার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির প্রধানদের ভূমিকার প্রশংসা করেন। শ্রীমতী সীতারমন বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সমবেত প্রয়াসের ফলে ঋণ সহায়তা নিশ্চয়তা কর্মসূচি সফল হয়েছে এবং অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে শ্রীমতী সীতারমন ব্যাঙ্ক কর্মী ও আধিকারিকদের যাবতীয় কোভিড-১৯ আদর্শ আচরণ বিধি মেনে চলার আহ্বান জানান, যাতে কর্মীদের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদেরকেও সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখা যায়। এই প্রেক্ষিতে তিনি প্রত্যেককে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান।
 
পর্যালোচনা বৈঠকে বিভাগীয় প্রতিমন্ত্রী ডা. করড বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি জাতীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তি। মহামারীর সময় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য তিনি সমস্ত ব্যাঙ্কের প্রধানদের প্রশংসা করেন। ডা. করড বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কগুলিকে আরও উদার ও গ্রাহক-কেন্দ্রিক হয়ে উঠতে হবে।
 
CG/BD/DM/


(Release ID: 1788479) Visitor Counter : 137