মানবসম্পদবিকাশমন্ত্রক

শিশুদের নিরাপদে অনলাইন গেম খেলার বিষয়ে অভিভাবক ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য় কিছু পরামর্শ

Posted On: 10 DEC 2021 5:05PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১০ই ডিসেম্বর, ২০২১

 

বর্তমান প্রযুক্তির যুগে অনলাইন গেম বাচ্চাদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। এই গেমগুলি খেলার সময় ছোট বাচ্চারা যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়, সেগুলি সমাধান করতে পারলে তাদের খুবই আনন্দ লাগে। স্বাভাবিক ভাবেই শিশুরা তখন এধরণের আরো চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করবার জন্য আরো উৎসাহী হয়ে পড়ে। এইভাবে তারা ক্রমশ অনলাইন গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে পার্সনাল কম্পিউটার, মোবাইল ফোন – সর্বত্র অনলাইন গেমের সন্ধান মেলে। এর ফলে শিশুরা সহজেই এই খেলাগুলির সন্ধান পায়। তার ফলে তাদের পড়াশোনা এবং সামাজিক জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। মহামারীর ফলে স্কুলগুলি বন্ধ থাকায় শিশুদের মোবাইল ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়ে গেছে।   

অনলাইন গেমের আরো কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। এই ধরণের খেলার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে শিশুমনে যে প্রভাব পড়ে তাকে “গেমিং ডিসঅডার্র” বলা হয়। গেমগুলি এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেখানে একধাপ থেকে পরের ধাপে গেলে আরো জটিল সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। যারা ঐ গেমগুলি খেলছে, তারা সেই সমস্যার সমাধান করতে থাকলে আরো বেশি এগুলির প্রতি উৎসাহী হয়ে ওঠে। তাই অনলাইন গেম খেলতে খেলতে অনেকেই অনলাইন গেমে চূড়ান্ত আসক্ত হয়ে পড়ে। যে সংস্থা অনলাইন গেম তৈরি করে, তারা শিশু মনে এমনই প্রভাব বিস্তার করতে পারে, যার ফলে ছোটরা গেমের পরবর্তী ধাপ কেনার জন্য আগ্রহী হয়। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য অভিভাবক এবং শিক্ষক – শিক্ষিকাদের কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ অনলাইন গেমের ফলে শিশুমনে যেমন চাপ পড়ে, পাশাপাশি তাদের মধ্যে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।  

কি করবেন না :

  • বাবা – মায়ের সম্মতি ছাড়া কেউ যাতে কোনো অনলাইন গেম কিনতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা অনুযায়ী ওটিপি ভিত্তিক আর্থিক লেনদেনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
  • সাবস্ক্রিবশনের জন্য অ্যাপের মাধ্যমে ক্রেডিট বা ডেবিড কার্ড নিবন্ধীকরণ করবেন না। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দিন।   
  • ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোন – যেটি ব্যবহার করে ছোটরা গেম খেলে, তার সাহায্যে যাতে কোনো কিছু কেনা না যায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
  • অজানা ওয়েবসাইট থেকে শিশুরা যাতে কোনো সফটওয়্যার বা গেম ডাউনলোড না করে, সেবিষয়ে তাদের সচেতন করে তুলতে হবে।  
  • কোনো লিঙ্ক, ইমেজ এবং পপআপে ক্লিক করার সময় ছোটদের বলতে হবে তারা যাতে সঠিক ওয়েবসাইটে ক্লিক করে। কারণ বিভিন্ন লিঙ্ক, ইমেজ এবং পপআপে ভাইরাস লুকানো থাকে। ঐ ভাইরাস কম্পিউটারকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এছাড়াও বয়সোপযোগী নয়, এধরণের বিষয়বস্তু স্ক্রীনে ভেসে উঠতে পারে।
  • ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো গেম ডাউনলোড করার সময় কোনো ব্যক্তিগত তথ্য যাতে না দেওয়া হয়, ছোটদের সে বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক করতে হবে।
  • অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে ওয়েবক্যাম বা প্রাইভেট মেসেজ বা অনলাইনে চ্যাট না করতে ছোটদের পরামর্শ দিতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে ওয়েবক্যাম, প্রাইভেট মেসেজ বা অনলাইনে অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে চ্যাট করলে তারা বিপদে পড়তে পারে।
  • দীর্ঘক্ষণ ধরে অনলাইনে গেম না খেলার পরামর্শ দিতে হবে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার কথা ছোটদের বোঝাতে হবে।

কি কি করণীয় :

  • অনলাইন গেম খেলার সময় কোনো বিষয়ে যদি সন্দেহ লাগে, তক্ষনাৎ সেই খেলা বন্ধ করে দিতে হবে এবং তার একটি স্ক্রীনশর্ট নিয়ে রিপোর্ট করতে হবে।
  • ছোটদের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে বোঝাতে হবে। যাতে অনলাইনে তারা তাদের প্রাইভেসি বজায় রাখে। তাদের এমন স্ক্রীন ব্যবহার করার পরামর্শ দিতে হবে, যেখানে তাদের প্রকৃত নাম না থাকে।
  • ফায়ারওয়াল ব্যবহার করে ওয়েব ব্রাউজারকে কনফিগার করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাস ও স্পাইওয়্যার প্রোগ্রাম ব্যবহার করা বাঞ্চনীয়।
  • যন্ত্রে বিভিন্ন সুরক্ষা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা রাখতে হবে, যাতে যে কোনো বিষয়বস্তু একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর আর ব্যবহার করা না যায়। ইনগেম কেনার ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ সীমিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি  ছোটরা যার মাধ্যমে মোবাইল গেম খেলবে, সেগুলিকে অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।   
  • যদি কোনো অচেনা ব্যক্তি কথোপকথন শুরু করে, অথবা যথাযথ নয়, এধরণের আচরণ করে বা ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চায়, সেক্ষেত্রে সতর্কতামূলক বার্তা যাতে পাওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। বাড়ির ছোটরা কোনো গেম খেললে সেই গেম কারা খেলবে, সেসংক্রান্ত বয়সের উল্লেখ থাকতে হবে।
  • যদি কেউ বিরক্ত করে, তাহলে তার মেসেজে কোনো উত্তর যাতে না দেওয়া হয়, সেবিষয়ে বাচ্চাদের সচেতন করতে হবে। এক্ষেত্রে হেনস্থা সংক্রান্ত বার্তা ঐ গেমের অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে পাঠাতে হবে। এছাড়াও প্লেয়ার লিস্ট থেকে হেনস্থাকারীকে ব্লক বা মিউট বা আনফ্রেন্ড করে দিতে হবে।
  • বাড়ির ছোটদের বোঝাতে হবে, তারা যখন ব্যক্তিগত তথ্য কাউকে দেবার সময়ে তাদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।  
  • আপনার বাড়ির বাচ্চাদের অনলাইন গেমের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে হবে। তারা যাতে এবাবদ বেশি অর্থ ব্যয় না করে, তার জন্য তাদের বোঝাতে হবে। এছাড়াও তাদের জুয়া ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানাতে হবে। অনলাইনে বা ব্যক্তিগত আলাপচারিতার সময় এর কি খারাপ প্রভাব পড়তে পারে, সে সম্পর্কে ছোট বাচ্চাদের বোঝাতে হবে।  
  • বাড়ির সবার সামনে যাতে বাচ্চাটি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে, সেবিষয়টি নিশ্চিত করতে  হবে।

সর্বদা সতর্ক থাকা প্রয়োজন, যাতে –

  • অনলাইন ব্যবহার করার সময় ছোট বাচ্চারা  কোনো অদ্ভুত আচরণ না করে –
  • ছোট বাচ্চাদের অনলাইনে বেশিক্ষণ সময় কাটানোর প্রবণতা।
  • যে ডিভাইসের মাধ্যমে অনলাইনে বাচ্চারা থাকে, সেটির স্ক্রীন চেঞ্জ করা।
  • ইন্টারনেট ব্যবহারের পর বা কোনো টেক্স মেসেজ পাঠানোর পর বাড়ির বাচ্চা যদি চুপ হয়ে যায় অথবা রেগে যায়।
  • বাড়িতে ইন্টারনেট গেটওয়ে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে বাচ্চারা কি ধরণের জিনিস দেখছে, সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
  • ছাত্রছাত্রীরা যদি খারাপ ফল করে বা তাদের মেলামেশায় কোনো পরিবর্তন হয়, সেক্ষেত্রে শিক্ষক, শিক্ষিকাদের সতর্ক থাকতে হবে।
  • শিক্ষক – শিক্ষিকারা যদি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সন্দেহজনক বা বিপদজনক কোনো আচরণ দেখেন, তাহলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তক্ষনাৎ জানাতে হবে।
  • ছাত্রছাত্রীরা যাতে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিভিন্ন বিষয়গুলি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানে, সেক্ষেত্রে তাদের সচেতন করতে হবে। ওয়েব ব্রাউজার বা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের নিরাপদ ব্যবহারের জন্য ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

কোন অনভিপ্রেত বিষয় নজরে আসলে নীচের লিঙ্কগুলিতে যোগাযোগ করতে হবেঃ-

https://cybercrime.gov.in/Webform/Helpline.aspx

https://cybercrime.gov.in/Webform/Crime_NodalGrivanceList.aspx

 

CG/CB/SFS



(Release ID: 1780360) Visitor Counter : 1432