রাষ্ট্রপতিরসচিবালয়
বিহার বিধানসভার শতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে বিধানসভার সদস্যদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতির ভাষণ
Posted On:
21 OCT 2021 1:40PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী, ২১ অক্টোবর, ২০২১
রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোবিন্দ আজ পাটনায় বিহার বিধানসভার শতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে বিধানসভার সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। এই উপলক্ষ্যে তিনি বিহার বিধানসভা প্রাঙ্গণে শতাব্দী স্মৃতি স্তম্ভের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন এবং একটি মহাবোধী গাছের চারা রোপণ করেন।
অনুষ্ঠানের ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিহার বিধানসভার শতবর্ষ উদযাপন গণতন্ত্রের উৎসব। বিহার বিধানসভার বর্তমান এবং প্রাক্তন সদস্যদের উৎসাহী উপস্থিতি দেশে স্বাস্থ্যকর সংসদীয় ঐতিহ্যের এক উদাহরণ বলেও জানান তিনি।
গণতন্ত্রে বিহারের অবদানের কথা বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি গর্বিত যে বিহার বিশ্বের প্রথম গণতন্ত্রের ভূমি। ভগবান বুদ্ধ বিশ্বের প্রথম সাধারণতন্ত্রের জ্ঞান ও সহানুভূতির শিক্ষা দিয়েছিলেন। এছাড়াও সেই সাধারণতন্ত্রে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে ভগবান বুদ্ধ ‘সংঘ’-এর নিয়ম নির্ধারণ করেছিলেন। গণ পরিষদের শেষ বক্তৃতায় বাবা সাহেব ডঃ ভীমরাও আম্বেদকর স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, বৌদ্ধ সংঘের অনেক নিয়ম-কানুন বর্তমান সংসদীয় ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি জানান, বিহার প্রতিভাবানদের এক রাজ্য। এখানকার মহান ঐতিহ্য, যা সমগ্র দেশকে গর্বিত করেছে। এখানে নালন্দা, বিক্রমশীলা ও ওদন্তপুরী’র মতো বিশ্বমানের শিক্ষাকেন্দ্র, আর্যভট্টের মতো বিজ্ঞানী, চানক্যের মতো নীতি নির্ধারক এবং অন্যান্য মহান ব্যক্তিত্বরা রয়েছেন। শ্রী কোবিন্দ জানান, বিহারের মানুষের এক সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার রয়েছে এবং এখন এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তাদের দায়িত্ব।
ভারতের সংবিধান প্রণয়নে বিহারের মানুষের অবদানের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, যখন আধুনিক গণতন্ত্রের নতুন অধ্যায় গণ-পরিষদ তৈরি হয়েছে তখন বিহারের ব্যক্তিত্বরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। গণ-পরিষদের বরিষ্ঠ সদস্য ডঃ সচ্চিদানন্দ সিনহা অন্তর্বতীকালীন সভাপতি হিসেবে মনোনিত হয়েছিলেন এবং ১৯৪৬ সালের ১১ ডিসেম্বর ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ গণ-পরিষদের স্থায়ী সভাপতি নির্বাচিত হন। বিহারের অন্যান্য ব্যক্তিত্ব, যাঁরা গণ-পরিষদে তাঁদের মূল্যবান অবদান রেখেছিলেন তাঁরা হলেন শ্রী অনুগ্রহ নারায়ণ সিনহা, শ্রী কৃষ্ণ সিনহা, দ্বারভাঙার মহারাজ কামেশ্বর সিং, শ্রী জগৎ নারায়ণ লাল, শ্রী শ্যাম নন্দন সহায়, শ্রী সত্য নারায়ণ সিনহা, শ্রী জয়পাল সিং, বাবু জগজীবন রাম, শ্রী রাম নারায়ণ সিং এবং শ্রী ব্রজেশ্বর প্রসাদ। রাষ্ট্রপতি জানান, সামাজিক ও আর্থিক ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সাম্য ও সম্পৃতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠা গণতন্ত্রের আধুনিক পরিকাঠামোকে প্রাচীন বিহারের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ করেছে। এর কৃতিত্ব বিহারের জনগণ এবং তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের।
বিহার মদ বিক্রি এবং তা পানের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি জানান রাজ্যপাল সিনহা ১৯২১ সালে বিধানসভায় তাঁর ভাষণে বলেছিলেন যে, নেশা জাতীয় পদার্থ বা মদের উৎপাদন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতি থাকা উচিত। দেশের সংবিধানে জনস্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ‘রাষ্ট্র পরিচালনায় নির্দেশমূলক নীতি’-এর আওতায় রাষ্ট্রের কর্তব্যের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। গান্ধীজির নীতির ওপর ভিত্তি করে এই সাংবিধানিক অনুচ্ছেদকে আইনের মর্যাদা দিয়ে বিহার বিধানসভা জনস্বাস্থ্য ও সমাজের স্বার্থে বিশেষ করে দুর্বল শ্রেণীর মহিলাদের স্বপক্ষে একটি অত্যন্ত ভাল পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিহার বিধানসভা সদস্যের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি জানান, বিহারের মানুষ নিজেদেরকে নিজের ভাগ্যের কারিগড় বলে মনে করেন। রাষ্ট্রপতি আশাপ্রকাশ করেন যে সমস্ত বিধায়ক তাঁদের আচার-আচরণ এবং কাজের মাধ্যমে জনগণের আশা-আকাঙ্খাকে বাস্তবায়িত করার প্রয়াস চালাবেন। বিহার বিধানসভার সদস্যরা বিহার রাজ্যকে সামাজিক সমস্যা থেকে মুক্ত করতে যে সংকল্প অভিযান শুরু করেছেন তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি। বিহারকে এক সুশিক্ষিত এবং উন্নত রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিধানসভার সদস্যদের নিরন্তর প্রয়াস চালানোর ডাক দেন তিনি।
আসন্ন দীপাবলি ও ছট পুজোর অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ছট পুজো এখন এক বিশ্বমানের উৎসবে পরিণত হয়েছে। নওয়াদা থেকে নিউজার্সি, বেগুসরাই থেকে বোস্টন পর্যন্ত ছট মাইয়া'র পুজো সর্বত্র প্রচলিত। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে বিহারের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত পরিশ্রমী মানুষরা বিশ্বমঞ্চে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। রাষ্ট্রপতি দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে জানান যে একইভাবে বিহারের মেধাবী ও পরিশ্রমী মানুষরা স্থানীয় উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে সাফল্যের নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবেন।
CG/SS /NS
(Release ID: 1765560)
Visitor Counter : 247