PIB Headquarters
                
                
                
                
                
                    
                    
                        মডেল যুব গ্রাম সভা
                    
                    
                        “লোকতন্ত্রের পাঠশালা”
                    
                
                
                    Posted On:
                30 OCT 2025 3:46PM by PIB Kolkata
                
                
                
                
                
                
                নয়াদিল্লি,৩০ অক্টোবর, ২০২৫
 
মূল বিষয়বস্তু 
মডেল যুব গ্রাম সভা (MYGS) ছাত্রছাত্রীদের হাতে-কলমে তৃণমূল-স্তরে গণতন্ত্রের কাঠামো বিষয়ে সম্যক ধারণা দেয়, যেখানে তারা বাস্তব গ্রাম সভার প্রক্রিয়া অনুকরণ করে নেতৃত্ব ও নাগরিক দায়িত্ববোধ গড়ে তোলার অভ্যাস করে।
এটি যুব সমাজের মধ্যে পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি করে এবং স্থানীয় শাসনে স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তি ও জবাবদিহিতা  নিয়ে প্রচার করে।
এই উদ্যোগটি জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP) 2020-এর মূল ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংবিধানিক মূল্যবোধ, সামাজিক দায়িত্ব ও নাগরিক সচেতনতা গড়ে তোলার বোধ জাগ্রত করে।
প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের মাধ্যমে পরিচালিত গঠনমূলক মডিউল ও কাঠামোবদ্ধ প্রশিক্ষণ পদ্ধতি উচ্চ-মানের বাস্তবায়ন ও পরিমাপযোগ্য শিক্ষণ নিশ্চিত করে।
এই কর্মসূচি তরুণদের শাসন ব্যবস্থায় সক্রিয় অংশগ্রহণ শেখায় এবং তাদের মধ্যে যোগাযোগ, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, দলগত কাজ, ঐক্যমত ও গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা গড়ে তোলে।
ভূমিকা
ভারতের গ্রামসমূহই দেশের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি, যেখানে একত্রিত হয়েছে ঐতিহ্য, অর্থনীতি ও সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ বাস করেন ৬.৬৪ লক্ষ গ্রামে, যা ভারতের গণতন্ত্রের প্রাণশক্তি। গ্রাম সভা, সংবিধানের ধারা ২৪৩-এর অধীনে গঠিত একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যা সরাসরি গণতন্ত্রের প্রতীক। এটি প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক গ্রামবাসীকে স্থানীয় শাসনে অংশগ্রহণ, উন্নয়নমূলক অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানগুলির (PRIs) জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সুযোগ দেয়। গ্রাম সভা প্রকৃত অর্থে “জনতার দ্বারা, জনতার জন্য, জনতার শাসন”-এর প্রতিফলন, যা তৃণমূল স্তরে স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনাকে উৎসাহিত করে।
তবে, দেশের যুবসমাজের মধ্যে গ্রাম সভায় অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম, কারণ তাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, বাস্তব অভিজ্ঞতার ঘাটতি এবং অর্থবহ অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিত। অথচ, ভারতের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যুব জনসংখ্যা রয়েছে এবং তাদের সক্রিয় ও উৎপাদনশীল অংশগ্রহণই “বিকশিত ভারত” গঠনের চাবিকাঠি। 
এই প্রেক্ষাপটে, পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক, স্কুল শিক্ষা ও সাক্ষরতা বিভাগ এবং আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রক যৌথভাবে চালু করেছে একটি উদ্ভাবনী নাগরিক শিক্ষা উদ্যোগ - “মডেল যুব গ্রাম সভা” (Model Youth Gram Sabha - MYGS)। 
এই কর্মসূচি যুব প্রজন্মের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, নেতৃত্ববোধ, সামাজিক দায়িত্ব ও সক্রিয় নাগরিকত্বের চর্চা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
সিমুলেটেড অ্যাসেম্বলির আদলে গঠিত ‘মডেল যুব গ্রাম সভা’ (MYGS) শিক্ষার্থীদের, বিশেষত জহর নবোদয় বিদ্যালয় (JNVs) এবং একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয় (EMRSs)-এর ছাত্রছাত্রীদের, তৃণমূল স্তরের গণতন্ত্রের কার্যপ্রণালী বিষয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা প্রদান করে। রোল-প্লে, বিতর্ক ও সিদ্ধান্তগ্রহণের অনুশীলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিবেচনা, ঐকমত্য গঠন এবং অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থার বাস্তব প্রক্রিয়াগুলির অভিজ্ঞতা লাভ করে। এই অভিজ্ঞতামূলক শিক্ষণপদ্ধতি তাদের স্থানীয় স্বশাসনব্যবস্থার ধারণা গভীর করে তোলে এবং একই সঙ্গে দায়িত্ববোধ, সহযোগিতার মনোভাব ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতি শ্রদ্ধা গড়ে তোলে।
JNV ও EMRS কী?
জহর নবোদয় বিদ্যালয় (JNVs) - ১৯৮৬ সালের জাতীয় শিক্ষা নীতির অধীনে প্রতিষ্ঠিত আবাসিক বিদ্যালয়, যার উদ্দেশ্য গ্রামীণ এলাকার প্রতিভাবান ছাত্রছাত্রীদের আধুনিক, গুণগতমানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করা, তাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট নির্বিশেষে।
একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয় (EMRSs) - দূরবর্তী অঞ্চলের অনুসূচিত জনজাতি (ST) শিক্ষার্থীদের মানসম্মত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রদান করার জন্য গঠিত প্রতিষ্ঠান, যাতে তারা মূলধারার শিক্ষার সুযোগ ও সমান প্রতিযোগিতার পরিবেশ পায়।
ভারতের ৭৩তম সংবিধান সংশোধনী পঞ্চায়েতি রাজের ত্রিস্তরবিশিষ্ট কাঠামো প্রবর্তন করে, যা স্থানীয় স্বশাসনকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেয়। MYGS-এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এই কাঠামো বোঝে ও অংশগ্রহণের গুরুত্ব উপলব্ধি করে, ফলে, এক সচেতন, দায়িত্ববান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক সমাজ গড়ে ওঠে।
মডেল যুব গ্রাম সভা উদ্যোগটি ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP 2020)-র দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত। এই নীতি শিক্ষার পাঠ্যক্রম ও শিক্ষণ-পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মৌলিক কর্তব্য ও সাংবিধানিক মূল্যবোধের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং জাতীয় পরিচয় ও একাত্মবোধ সঞ্চার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়। NEP 2020 শিক্ষার্থীদের এমনভাবে প্রস্তুত করার লক্ষ্য রাখে যাতে তারা দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের প্রেক্ষিতে নিজেদের ভূমিকা ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। নীতিটি এমন এক প্রজন্ম গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখে, যারা ‘ভারতীয় হওয়ার গর্ব’ চিন্তা, আচরণ ও বুদ্ধিবৃত্তির মাধ্যমে প্রতিফলিত করবে। একই সঙ্গে, এই নীতি তরুণদের এমন জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও মনোভাব দিয়ে সজ্জিত করতে চায় যা মানবাধিকারের সুরক্ষা, সুস্থায়ী উন্নয়ন এবং বিশ্বজনীন কল্যাণকে উৎসাহিত করবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রচেষ্টা তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্বশীল, সহানুভূতিশীল ও সচেতন বিশ্বনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।
উদ্দেশ্যসমূহ
মডেল যুব গ্রাম সভা অংশগ্রহণমূলক ও অভিজ্ঞতামূলক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানের কাঠামো ও কার্যপদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত করে। এটি নাগরিক ও নেতৃত্বগুণসম্পন্ন দক্ষতা যেমন, জনসমক্ষে বক্তব্য রাখা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা ও ঐকমত্য গঠনের ক্ষমতা নিশ্চিত করে; পাশাপাশি, অন্তর্ভুক্তি, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা ও মূল্যবোধ বিষঢয়সমূহ প্রচার করে। যুব সমাজকে বাস্তব সামাজিক সমস্যা নিয়ে চিন্তাভাবনা ও আলোচনায় যুক্ত করে এই উদ্যোগটি সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিক তৈরি করে, যারা দেশের গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নমূলক প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
মূল উদ্দেশ্যসমূহ
* শিক্ষার্থীদের পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত করা - ৭৩-তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ত্রিস্তরবিশিষ্ট পঞ্চায়েত রাজ কাঠামো সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ধারণা দেওয়া।
* অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা - শিক্ষার্থীদের গ্রামসভা ও স্থানীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা।
* নেতৃত্বের দক্ষতা বিকাশ করা - তরুণদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও নেতৃত্বগুণ গড়ে তুলে পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করা।
* স্থানীয় সমস্যা উপলব্ধি বৃদ্ধি করা - শিক্ষার্থীদের জন্য এমন একটি মঞ্চ তৈরি করা যেখানে তারা স্থানীয় প্রশাসনিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণ করতে পারে।
দৃষ্টিভঙ্গি
মডেল যুব গ্রাম সভার দৃষ্টিভঙ্গি হল, “সক্ষম, দায়িত্বশীল ও সহানুভূতিশীল তরুণ নাগরিক গড়ে তোলা, যারা সক্রিয়ভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে এবং সুস্থায়ী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখবে।”
মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সাংবিধানিক মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক নীতিতে সায় দেওয়ার স্পৃহা বাড়ানো ছাড়াও, সক্রিয়, সহানুভূতিশীল ও সচেতন নাগরিকত্বের বিকাশ ঘটানো এই উদ্যোগের আর-ও একটি উদ্দেশ্য।
অন্তর্ভুক্তি, ঐকমত্য, ন্যায় ও সাম্যের মূল্যবোধ শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রোথিত করা আর-ও একটি উদ্দেশ্য।
শিক্ষার্থীদের সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি, নেতৃত্ব প্রদান, অংশগ্রহণ, যোগাযোগ, ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা-র মতো জীবনদক্ষতা বিকশিত করা-ও এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য।
অন্যান্য লস্কক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনিক কাঠামো ও স্থানীয়কৃত সুস্থায়ী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (Localized SDGs) সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এছাড়াও, লক্ষ্য হল, শিক্ষার্থীদের এমন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা যারা জাতীয় সংহতি ও উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
একটি মডেল যুব গ্রাম সভার বৈশিষ্ট্য
মডেল গ্রামসভা / গ্রাম পঞ্চায়েত সভা পরিচালনা
মডেল গ্রামসভা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা বাস্তব স্থানীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থার অনুকরণে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করে।
কিছু শিক্ষার্থী সরপঞ্চ, ওয়ার্ড সদস্য বা সভাপতি-র ভূমিকা পালন করে, অন্যরা স্থায়ী কমিটির প্রতিনিধি, পঞ্চায়েত কর্মচারী (যেমন, সচিব, PDO, সহায়ক) কিংবা সামনের সারির কর্মী (যেমন, আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, রোজগার সহায়ক)-এর ভূমিকা নেয়। আরও কিছু শিক্ষার্থী গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন সামাজিক অংশ-এর প্রতিনিধিত্ব করে, তাদের সম্প্রদায়ভিত্তিক উদ্বেগ প্রকাশ করে।
সভা প্রস্তুতির জন্য অগ্রিম কর্মপরিকল্পনা তৈরি, সভার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ (কমপক্ষে ১০ দিন পূর্বে), ও সভার এজেন্ডা প্রচার করা হয়। সভা চলাকালীন সরপঞ্চ উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা শুরু করেন, পূর্ববর্তী সভার সিদ্ধান্ত, চলমান কাজ, নতুন এজেন্ডা এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। সভায় আর্থিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত আলোচনা হয় - যেমন বাজেট চূড়ান্তকরণ, তহবিলের মূল্যায়ন, প্রস্তাবিত কাজের ব্যয় নির্ধারণ, ও অর্থের ঘাটতি চিহ্নিতকরণ। শিক্ষার্থীরা স্থানীয় রাজস্ব সংগ্রহ ও তহবিল বৃদ্ধির নতুন উপায় প্রস্তাব করে। গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি সম্পন্ন হওয়ার পর সরপঞ্চ সিদ্ধান্তগুলি সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করেন, এবং শেষে সভা রেকর্ডার রেজোলিউশন প্রস্তুত করে সভা সমাপ্ত ঘোষণা করে।
বাস্তবায়ন পদ্ধতি
২০২৫ সালের মার্চ–এপ্রিল মাসে নির্বাচিত জহর নবোদয় বিদ্যালয় (JNVs) ও একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয় (EMRSs)-এ পাইলট মডেল গ্রামসভা / গ্রাম পঞ্চায়েত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা পরিচালনার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামোগত ফরম্যাট ও প্রক্রিয়া নির্দেশিকা সরবরাহ করা হয়, যা একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও আকারেও বিদ্যমান ছিল।
এই সময়ে ২০% বিদ্যালয়ে মডেল গ্রাম পঞ্চায়েত সভা এবং ৮০% বিদ্যালয়ে মডেল গ্রামসভা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সফলভাবে সভা সম্পন্নের পর অংশগ্রহণকারী বিদ্যালয়গুলির থেকে গঠিত প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করে, SOP (Standard Operating Protocol) সংশোধন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে পরবর্তী পর্যায়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়।
এই উদ্যোগটি একটি নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবে অগ্রসর হচ্ছে।
২০২৫ সালের জুলাই মাসে বিদ্যালয় নির্বাচন করা হয়, এরপর জুলাই–আগস্ট মাসে ২০০ জন প্রশিক্ষক ও শিক্ষকের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়।
এরপর আগস্ট–সেপ্টেম্বর মাসে উত্তরপ্রদেশের বাঘপত ও রাজস্থানের আলওয়ারে নির্বাচিত বিদ্যালয়গুলিতে 'মক গ্রামসভা' সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা বাস্তব প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার অভিজ্ঞতা লাভ করে।
অক্টোবর–নভেম্বর ২০২৫-এ পাঁচটি অঞ্চলে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যার মাধ্যমে ১০-টি ফাইনাল দল (৫টি JNV ও ৫টি EMRS) নির্বাচিত হবে।
এই উদ্যোগটি ডিসেম্বর ২০২৫-এ জাতীয় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সমাপ্ত হবে, যেখানে শীর্ষ তিনটি দলকে বিশেষ সম্মাননা ও পুরস্কার প্রদান করা হবে।
মডেল যুব গ্রাম সভা মডিউল
মডেল যুব গ্রাম সভা মডিউল হলো একটি সমন্বিত কাঠামো, যা অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের আদর্শকে বিদ্যালয়-স্তরে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য তৈরি।
এই মডিউল শিক্ষকদের ও শিক্ষার্থীদের জন্য সংগঠিত নির্দেশিকা, সহায়ক উপকরণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সরবরাহ করে যাতে কার্যক্রমটি কার্যকর ও আকর্ষণীয়ভাবে বাস্তবায়িত হয়।
মডিউলটির ভিত্তি হল, MLJP কাঠামো - Meaning (অর্থপূর্ণতা), Learning (শিক্ষা), Joy (আনন্দ) এবং Pride (গর্ব) - যা প্রতিটি কার্যক্রমে অর্থবহ সম্পৃক্ততা, অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষা ও নাগরিক সক্ষমতা নিশ্চিত করে।
মডিউলটি তিনটি মূল উপাদানে বিভক্ত:
১. ন্যাশনাল লেভেল মাস্টার ট্রেইনার (NLMT) গাইড
এই গাইডে গ্রামসভা প্রক্রিয়ার পূর্ণাঙ্গ ধারণা ও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব ও ভূমিকা স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। এতে MLJP নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত এবং ধাপে ধাপে পরিচালনা ও অংশগ্রহণমূলক প্রশিক্ষণের উপকরণ প্রদান করা হয়েছে।
২. শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ পরিচালনা মডিউল
এই মডিউলটি সহজ, চিত্রভিত্তিক ও ব্যবহারবান্ধব উপায়ে তৈরি, যাতে শিক্ষার্থীরা গণতন্ত্র, নেতৃত্ব ও জীবনদক্ষতা সম্পর্কে আনন্দময়ভাবে শিখতে পারে।
এটি শিক্ষকদের MYGS কার্যক্রম পরিচালনা ও প্রস্তুতি পরিকল্পনা তৈরিতে সাহায্য করে।
৩. মূল্যায়ন কাঠামো
এটি একটি ব্যবহারবান্ধব মূল্যায়ন পদ্ধতি, যা কার্যক্রমের পূর্বে, চলাকালীন ও পরে কার্যকারিতা পরিমাপ করে। এতে বিশেষ সূচক অন্তর্ভুক্ত, যার মাধ্যমে উৎকৃষ্ট কর্মদক্ষ বিদ্যালয়গুলিকে চিহ্নিত ও স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এই তিনটি মডিউল একসঙ্গে বিদ্যালয়ভিত্তিক নাগরিক শিক্ষার একটি সমন্বিত ও সর্বাঙ্গীণ পরিবেশ গড়ে তোলে, যা শ্রেণিকক্ষগুলিকে পরিণত করে গণতান্ত্রিক অনুশীলনের ক্ষুদ্র প্রতিরূপে। এগুলি শিক্ষার্থীদের শাসনব্যবস্থার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনে সক্ষম করে, তাদের মধ্যে নেতৃত্ব, যোগাযোগ ও অংশগ্রহণের দক্ষতা গড়ে তোলে এবং আজীবন স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তি ও জবাবদিহিতা, ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোর মূল মূল্যবোধগুলির, প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জাগিয়ে তোলে।
আর্থিক সহায়তা ও স্বীকৃতি
প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী বিদ্যালয়কে এককালীন ২০,০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে, যা সভা আয়োজন, লজিস্টিক সহায়তা ও আপ্যায়নের কাজে ব্যবহার করা যাবে।
অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে প্রশংসাপত্র পাবে, যা তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আগ্রহী হতে উৎসাহিত করবে।
সেরা বিদ্যালয়গুলো জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি পাবে, যাতে বৃহত্তর অংশগ্রহণ উৎসাহিত হয়।
আঞ্চলিক পর্যায়ে বিজয়ী দলগুলো টোকেন নগদ পুরস্কার পাবে, যা বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ব্যয় করা যেতে পারে।
জাতীয় পর্যায়ে শীর্ষ তিনটি দলের জন্য বৃহত্তর নগদ পুরস্কার ঘোষণা করা হবে, এবং মন্ত্রণালয় তাদের ভ্রমণ ও লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করবে।
প্রত্যাশিত ফলাফল
এই উদ্যোগের মাধ্যমে নিম্নলিখিত ফলাফল অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে - 
* অংশগ্রহণ বৃদ্ধি - শিক্ষার্থীদের স্থানীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা।
* তরুণ নেতৃত্ব বিকাশ - যুবসমাজকে স্থানীয় সংস্থাগুলির নেতৃত্ব গ্রহণে অনুপ্রাণিত করা।
* তরুণ কণ্ঠের ক্ষমতায়ন - শিক্ষার্থীদের স্থানীয় সমস্যাগুলির উপর মত প্রকাশের ও সমাধানের প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা।
* গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা যাতে তরুণরা তাদের গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হতে পারে।
উপসংহার
মডেল গ্রামসভা উদ্যোগটি তরুণদের মানসিকতা, দায়িত্ববোধ ও নেতৃত্বের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি অংশগ্রহণমূলক প্রশাসন, সচেতনতা ও গণতান্ত্রিক সম্পৃক্ততার সেতুবন্ধন তৈরি করবে, যাতে আগামী প্রজন্ম ভারতের গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নমূলক যাত্রায় সক্রিয় ও সচেতন অবদানকারী হিসেবে গড়ে ওঠে।
তথ্যসূত্র:
Ministry of Panchayati Raj
 
Ministry of Education
https://dsel.education.gov.in/nvs
 
Ministry of Tribal Affairs
https://sansad.in/getFile/annex/259/AU2536.pdf?source=pqars
Click here to see pdf
 
 
****
SSS/SS
                
                
                
                
                
                (Release ID: 2184423)
                Visitor Counter : 5