প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী অরুণাচল প্রদেশের ইটানগরে ৫,১০০ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেছেন

অরুণাচল প্রদেশ শান্তি ও সংস্কৃতির সঙ্গম, এটি ভারতের গর্বঃ প্রধানমন্ত্রী

ভারতের অষ্টলক্ষ্মী উত্তরপূর্ব: প্রধানমন্ত্রী

উত্তর-পূর্বাঞ্চল দেশের উন্নয়নের চালিকাশক্তি হয়ে উঠছেঃ প্রধানমন্ত্রী

প্রাণবন্ত গ্রাম কর্মসূচির সাফল্য মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করেছেঃ প্রধানমন্ত্রী

জিএসটি এখন সরলীকরণ করে ৫ % এবং ১৮% করা হয়েছে, বেশিরভাগ পণ্যের উপর কর হ্রাস করা হয়েছেঃ প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 22 SEP 2025 1:14PM by PIB Agartala

নয়াদিল্লি, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ অরুণাচল প্রদেশের ইটানগরে ৫,১০০ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন। এই উপলক্ষে সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি সর্বশক্তিমান দোনাই পোলোর প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং সবার জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হেলিপ্যাড থেকে মাঠ পর্যন্ত যাত্রাপথে অগণিত মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং শিশু ও যুবকদের জাতীয় পতাকা হাতে দেখে অরুণাচল প্রদেশের উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য তিনি গর্বিত হয়েছেন। তিনি বলেন, অরুণাচল শুধু উদীয়মান সূর্যের দেশই নয়, দেশপ্রেমের দেশও বটে। জাতীয় পতাকার প্রথম রঙ যেমন গেরুয়া, তেমনই অরুণাচলের আত্মাও গেরুয়া দিয়ে শুরু হয়। শ্রী মোদী বলেন, অরুণাচলের প্রতিটি মানুষ বীরত্ব ও সরলতার প্রতীক। তিনি রাজ্যের প্রতি তার গভীর স্নেহ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিটি সফর তার জন্য অপরিসীম আনন্দ নিয়ে আসে এবং মানুষের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত স্মরণীয়। তিনি তার প্রতি প্রদর্শিত ভালবাসা ও স্নেহকে একটি বড় সম্মান হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এই পবিত্র ভূমিকে অভিবাদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "তাওয়াং মঠ থেকে নামসাইয়ের সোনার প্যাগোডা পর্যন্ত অরুণাচল প্রদেশ শান্তি ও সংস্কৃতির সঙ্গমের প্রতিনিধিত্ব করে।

অরুণাচল প্রদেশে তার সফরকে তিনটি বিশেষ কারণে বিশেষ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমে নবরাত্রির শুভ প্রথম দিনে তিনি এই সুন্দর পর্বতমালা দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেন। তিনি বলেন, এই দিনে ভক্তরা হিমালয়ের কন্যা মা শৈলপুত্রীর পূজা করেন। দ্বিতীয়ত, তিনি দেশজুড়ে পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কারের বাস্তবায়ন এবং জিএসটি সঞ্চয় উৎসবের সূচনা করার কথা ঘোষণা করেন। শ্রী মোদী উল্লেখ করেন যে, উৎসবের মরশুমে নাগরিকরা দ্বিগুণ উপহার পেয়েছেন। তৃতীয়ত, তিনি বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, পর্যটন এবং স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অরুণাচল প্রদেশে অসংখ্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধনের উপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি কেন্দ্র ও রাজ্যে তাদের সরকারের দ্বিগুণ সুবিধার প্রতিফলন ঘটায় এবং এই প্রকল্পগুলির জন্য অরুণাচলের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, জিএসটি সঞ্চয় উৎসব ভারতের মানুষের জন্য আনন্দ, সমৃদ্ধি এবং সাফল্য নিয়ে আসবে।

অরুণাচল প্রদেশ প্রথম সূর্যের রশ্মি পেয়েছে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে দ্রুত উন্নয়নের রশ্মি এই অঞ্চলে পৌঁছাতে কয়েক দশক লেগেছে। ২০১৫ সালের আগে একাধিকবার অরুণাচল সফরের কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী বলেন, এই রাজ্য প্রাকৃতিকভাবে সমৃদ্ধ তার জমি, পরিশ্রমী নাগরিক এবং অপরিসীম সম্ভাবনার অধিকারী। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, এই শক্তি থাকা সত্ত্বেও, যারা আগে দিল্লি থেকে শাসন করতেন, তারা অরুণাচলকে ধারাবাহিকভাবে অবহেলা করতেন। অল্প জনসংখ্যা এবং মাত্র দুটি লোকসভা আসন সহ অরুণাচলের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মানসিকতার জন্য তিনি সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এই দৃষ্টিভঙ্গি অরুণাচল এবং সমগ্র উত্তর-পূর্বের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করেছে, যা উন্নয়নের যাত্রায় অনেক পিছিয়ে দিয়েছে।

শ্রী মোদী বলেন, ২০১৪ সালে দেশের সেবা করার সুযোগ পাওয়ার পর তিনি পূর্ববর্তী সরকারের মানসিকতা থেকে দেশকে মুক্ত করার সংকল্প নিয়েছিলেন। তিনি জোর দিয়েছিলেন যে তার সরকারের পথপ্রদর্শক অনুপ্রেরণা কোনও রাজ্যে ভোট বা আসনের সংখ্যা নয়, বরং "নেশন ফার্স্ট"-এর নীতি। তিনি সরকারের মূল মন্ত্র 'নাগরিক দেবভব "-এর কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আগে কখনও স্বীকৃতি পাননি, তারা এখন মোদীর কাছে সম্মানিত। বিরোধীদের শাসনামলে অবহেলিত উত্তর-পূর্বাঞ্চল ২০১৪ সালের পর উন্নয়নের অগ্রাধিকারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বাজেট বহুগুণ বাড়ানো হয়েছে এবং প্রান্তিক অঞ্চল পর্যন্ত সংযোগ ও সরবরাহ প্রশাসনের বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠে। তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন যে, শাসন আর শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ও আধিকারিকদের অবশ্যই উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ঘন ঘন যেতে হবে এবং থাকতে হবে।

পূর্ববর্তী সরকারের শাসনামলে, একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দুই থেকে তিন মাসে মাত্র একবার উত্তর-পূর্ব সফর করতেন। অন্যদিকে, শ্রী মোদী বলেন, আমাদের সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৮০০ বারের বেশি সফর করেছেন। তিনি জোর দিয়েছিলেন যে এই সফরগুলি প্রতীকী নয়। বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীগণ উত্তর পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে অর্থবহভাবে যুক্ত থাকার চেষ্টা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৭০ বারের বেশি সফর করেছেন। তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে তিনি মিজোরাম, মণিপুর এবং অসম সফর করেছেন এবং গুয়াহাটিতে রাত কাটিয়েছেন। তিনি উত্তর-পূর্বের প্রতি তার গভীর স্নেহ প্রকাশ করে বলেন, তার সরকার ব্যবধান ঘুচিয়ে দিল্লিকে মানুষের আরও কাছে নিয়ে এসেছে।

উত্তর-পূর্বের আটটি রাজ্য অষ্টলক্ষ্মী হিসাবে সম্মানিত বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলকে উন্নয়নের যাত্রায় কোনভাবেই পিছিয়ে রাখা যায় না। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার এই অঞ্চলের অগ্রগতির জন্য যথেষ্ট তহবিল বরাদ্দ করছে। একটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, কেন্দ্র কর্তৃক সংগৃহীত করের একটি অংশ রাজ্যগুলিতে বিতরণ করা হয়। পূর্ববর্তী শাসনামলে, অরুণাচল প্রদেশ দশ বছরে কেন্দ্রীয় কর থেকে মাত্র ৬,০০০কোটি টাকা পেয়েছিল। শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, আমাদের সরকারের আমলে অরুণাচল প্রদেশ এই সময়ের মধ্যে এক লক্ষ কোটি টাকা পেয়েছে, যা ১৬ গুণ বেশি। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে এই সংখ্যাটি শুধুমাত্র করের অংশের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং রাজ্যে বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্প এবং বড় পরিকাঠামো প্রকল্পের আওতায় অতিরিক্ত ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কারণেই অরুণাচল আজ এত ব্যাপক ও দ্রুত উন্নয়নের সাক্ষী।

উদ্দেশ্য যখন মহৎ হয় এবং প্রচেষ্টা সৎ হয়, তখন ফলাফল দৃশ্যমান হয় বলে জোর দিয়ে শ্রী মোদী বলেন, সুশাসনের উপর জোর দিয়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি দেশের উন্নয়নে একটি চালিকা শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হচ্ছে। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন যে, তার সরকারের কাছে নাগরিকদের কল্যাণের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই নয়। শ্রী মোদী বলেন, জীবনযাত্রাকে সহজ করতে, যাতায়াতের সমস্যা কমিয়ে, স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নে, চিকিৎসা পরিকাঠামোর আরো মানোন্নয়নে, শিক্ষাকে সহজ করে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যকে সহজতর করে সাধারণ মানুষের সহজ জীবনযাত্রার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, কেন্দ্র ও রাজ্যে তাদের সরকার সক্রিয়ভাবে এই লক্ষ্যগুলি অনুসরণ করছে। যে জায়গাগুলিতে রাস্তা একসময় অকল্পনীয় ছিল, সেগুলি এখন মানসম্পন্ন মহাসড়ক নির্মাণের সাক্ষী। সেলা টানেলের মতো পরিকাঠামো, যা একসময় অসম্ভব বলে মনে করা হত, এখন অরুণাচলের অগ্রগতির প্রতীক হয়ে উঠেছে।

কেন্দ্রীয় সরকার অরুণাচল প্রদেশ এবং উত্তর-পূর্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হেলিপোর্ট স্থাপনের জন্য উড়ান প্রকল্পের আওতায় এই অঞ্চলগুলিকে একীভূত করার জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন যে, হলঙ্গি বিমানবন্দরে একটি নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মিত হয়েছে, যা এখন দিল্লিতে সরাসরি বিমান পরিষেবা প্রদান করে। এই উন্নয়ন কেবল নিয়মিত যাত্রী, ছাত্রছাত্রী এবং পর্যটকদেরই উপকৃত করে না, স্থানীয় কৃষক এবং ছোট শিল্পকেও সহায়তা করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রধান বাজারগুলিতে ফলমূল, শাকসবজি এবং অন্যান্য পণ্য পরিবহণ এখন অনেক সহজ হয়ে উঠেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে এবং এই দৃষ্টিভঙ্গি তখনই বাস্তবায়িত হতে পারে যখন প্রতিটি রাজ্য জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে যাবে। এই লক্ষ্যগুলি অর্জনে উত্তর-পূর্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে একটি প্রধান উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ এবং জলবিদ্যুৎ সহ অপ্রচলিত উৎস থেকে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। অরুণাচল প্রদেশ এই মিশনে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখছে বলে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। তিনি দুটি নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা ঘোষণা করেন, যা বিদ্যুৎ উৎপাদক হিসাবে অরুণাচলের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে, হাজার হাজার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। প্রধানমন্ত্রী কঠিন উন্নয়নমূলক কাজগুলি এড়ানোর দীর্ঘদিনের প্রবণতার জন্য বিরোধীদলগুলির সমালোচনা করেন ,যা অরুণাচল এবং সমগ্র উত্তর-পূর্বকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করেছিল। তিনি উল্লেখ করেন যে, চ্যালেঞ্জিং অঞ্চলগুলি যেমন,পার্বত্য অঞ্চল, বনভূমি প্রায়শই পিছিয়ে থাকতো সর্বোপরি অবহেলিত থাকত। শ্রী মোদী আরও বলেন, বিরোধী দলগুলি শাসনামলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উপজাতি অঞ্চল ও জেলাগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সীমান্তের নিকটবর্তী গ্রামগুলিকে "শেষ গ্রাম" বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের প্রশ্ন পূর্ববর্তী সরকারগুলি বরাবরই দায়িত্ব এড়িয়ে গেছে । এই অবহেলার ফলে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল এবং সীমান্ত অঞ্চল থেকে ক্রমাগত অভিবাসন হতে থাকে।

আঞ্চলিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার পূর্বের দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলে দিয়েছে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলি যে জেলাগুলিকে "পিছিয়ে পড়া" হিসাবে চিহ্নিত করেছিল, সেগুলিকে "উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা" হিসাবে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। একসময় "শেষ গ্রাম" হিসাবে প্রত্যাখ্যাত সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি এখন দেশের "প্রথম গ্রাম" হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এই পরিবর্তনের ইতিবাচক ফলাফলের কথা তুলে ধরে সীমান্ত অঞ্চলে উন্নয়নের ত্বরান্বিত গতির কথা উল্লেখ করেন। প্রাণবন্ত গ্রাম কর্মসূচির সাফল্য জীবনযাত্রার মানকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করেছে। শুধুমাত্র অরুণাচল প্রদেশে, এই ধরনের ৪৫০টিরও বেশি সীমান্তবর্তী গ্রামে দ্রুত অগ্রগতি হয়েছে, যেখানে সড়ক, বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেটের মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এখন এই অঞ্চলগুলিতে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত অঞ্চল থেকে শহরে অভিবাসন এক সময় সাধারণ বিষয় ছিল, কিন্তু এখন এই গ্রামগুলি পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হিসাবে আবির্ভূত হচ্ছে।

অরুণাচল প্রদেশে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন নতুন অঞ্চলে যোগাযোগ সম্প্রসারণের ফলে পর্যটন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক দশকে অরুণাচল অঞ্চলে পর্যটকদের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। সম্মেলন এবং কনসার্ট পর্যটনের বিশ্বব্যাপী উত্থানের দিকে ইঙ্গিত করে শ্রী মোদী ঘোষণা করেন যে, তাওয়াং-এ আসন্ন আধুনিক সম্মেলন কেন্দ্র রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। তিনি আরও বলেন, ভারত সরকার যে 'ভাইব্র্যান্ট ভিলেজেস "কর্মসূচি চালু করেছে, তা সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির জন্য একটি মাইলফলক হিসাবে প্রমাণিত হচ্ছে, যা অরুণাচলের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করেছে।

অরুণাচল প্রদেশে আজ যে দ্রুত উন্নয়ন দৃশ্যমান তা দিল্লি ও ইটানগর উভয় ক্ষেত্রেই তাদের সরকারের কাজের ফল বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্মিলিত শক্তি উন্নয়নের কাজে লাগানো হচ্ছে। তিনি এই অঞ্চলে একটি ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এবং মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করার কথা উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় অসংখ্য নাগরিক বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়েছেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে, কেন্দ্র ও রাজ্যে তাদের সরকারের মাধ্যমে এই সাফল্যগুলি সম্ভব হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টার ফলে অরুণাচল প্রদেশ কৃষি ও ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, স্থানীয় পণ্য যেমন কিউই, কমলা, এলাচ এবং আনারস রাজ্যকে একটি নতুন পরিচয় দিচ্ছে। তিনি বলেন, পিএম-কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক বলে প্রমাণিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, মা, বোন ও কন্যাদের ক্ষমতায়ন তার সরকারের জন্য একটি প্রধান অগ্রাধিকার। তিনি দেশজুড়ে তিন কোটি "লাখপতি দিদি" তৈরি করার লক্ষ্যে তার লক্ষ্যের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সন্তোষ প্রকাশ করেন যে মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু ও তার দল এই মিশনকে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি রাজ্যে অসংখ্য কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের সূচনার কথাও উল্লেখ করেন, যা মহিলাদের ব্যাপকভাবে উপকৃত করবে।

অনুষ্ঠানে মহিলাদের বিপুল উপস্থিতির কথা স্বীকার করে এবং জিএসটি সঞ্চয় উৎসবের জন্য আরও একবার অভিনন্দন জানিয়ে শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কারের সুবিধা তাদের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, পরিবারগুলি এখন তাদের মাসিক বাজেটে যথেষ্ট স্বস্তি পাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রান্নাঘরের সরবরাহ, শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ এবং জুতো ও পোশাকের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি আরও সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে।

নাগরিকদের ২০১৪ সালের আগের সময়ের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সময়ে মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়েছে ,বড় বড় কেলেঙ্কারি হয়েছে এবং তৎকালীন সরকার জনগণের ওপর করের বোঝা বাড়িয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, এমনকি বার্ষিক দুই লক্ষ টাকা আয়ও আয়করের আওতায় ছিল এবং ২০১৪ সালের পূর্ববর্তী শাসনামলে অনেক প্রয়োজনীয় পণ্যের উপর ৩০ শতাংশের বেশি হারে কর আরোপ করা হত।
নাগরিকদের আয় ও সঞ্চয় উভয় ক্ষেত্রেই তার অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী বলেন, বিগত বছরগুলিতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও তার সরকার ধারাবাহিকভাবে আয়করের হার হ্রাস করেছে। এ বছর ১২লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত করা হয়েছে।

তিনি ঘোষণা করেন যে, জিএসটি-কে এখন মাত্র দুটি স্তরে সরলীকরণ করা হয়েছে ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ। শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, অনেক পণ্য করমুক্ত হয়েছে এবং অন্যান্য পণ্যের উপর কর উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, বাড়ি তৈরি করা, স্কুটার বা বাইক কেনা, বাইরে খাওয়া-দাওয়া এবং ভ্রমণ সবই আরও সাশ্রয়ী হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, জি.এস.টি সঞ্চয় উৎসব জনগণের জন্য একটি স্মরণীয় মাইলফলক হয়ে উঠবে।

দেশপ্রেমের চেতনার জন্য অরুণাচল প্রদেশের প্রশংসা করে শ্রী মোদী বলেন, এখানকার মানুষ 'নমস্কার এর আগেই' জয় হিন্দ' বলে, যা দেশকে নিজের ঊর্ধ্বে রাখে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশ যখন সম্মিলিতভাবে উন্নত ভারত গড়ার চেষ্টা করছে, তখন জাতীয়ভাবে আত্মনির্ভরতার প্রত্যাশা রয়েছে। তিনি বলেন, ভারত তখনই উন্নত হবে যখন এটি আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে এবং এর জন্য "স্বদেশী" মন্ত্রটি অপরিহার্য। প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র ভারতে তৈরি পণ্য ক্রয় ও বিক্রির গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এবং গর্বের সঙ্গে সেগুলিকে স্বদেশী হিসাবে ঘোষণা করে নাগরিকদের স্বদেশী গ্রহণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই মন্ত্র অনুসরণ করলে দেশ, অরুণাচল প্রদেশ এবং সমগ্র উত্তর-পূর্বের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। তিনি সদ্য চালু হওয়া উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির জন্য শুভেচ্ছা জানান।

অরুণাচল প্রদেশের রাজ্যপাল, লেফটেন্যান্ট জেনারেল কে টি পারনাইক (অবসরপ্রাপ্ত), অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পেমা খান্ডু, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী কিরেন রিজিজু সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পটভূমি

এই অঞ্চলে বিশাল জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এবং টেকসই জ্বালানি উৎপাদনের প্রসারে প্রধানমন্ত্রী ইটানগরে ৩,৭০০ কোটি টাকারও বেশি দুটি বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। অরুণাচল প্রদেশের সিয়োম উপ-অববাহিকায় হিও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প (২৪০ মেগাওয়াট) এবং টাটো-১ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প (১৮৬ মেগাওয়াট) গড়ে তোলা হবে।

প্রধানমন্ত্রী তাওয়াং-এ একটি অত্যাধুনিক সম্মেলন কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সীমান্তবর্তী তাওয়াং জেলায় ৯,৮২০ফুটেরও বেশি উচ্চতায় অবস্থিত এই কেন্দ্রটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সাংস্কৃতিক উৎসব এবং প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য একটি যুগান্তকারী সুবিধা হিসাবে কাজ করবে। ১,৫০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধির আতিথেয়তার ক্ষমতা সহ, কেন্দ্রটি বৈশ্বিক মান পূরণ করবে এবং এই অঞ্চলের পর্যটন ও সাংস্কৃতিক সম্ভাবনাকে সমর্থন করবে।

প্রধানমন্ত্রী ১২৯০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক মূল পরিকাঠামো প্রকল্পেরও সূচনা করেছেন, যা সংযোগ, স্বাস্থ্য, অগ্নি নিরাপত্তা, কর্মরত মহিলা হোস্টেল সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের চাহিদা পূরণ করবে। এই উদ্যোগগুলি অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে, জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে এবং এই অঞ্চলে যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সহজে ব্যবসা করার এবং প্রাণবন্ত শিল্পোদ্যোগের পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় করদাতাদের, ব্যবসায়ীদের এবং শিল্প প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাম্প্রতিক জিএসটি-র হার যুক্তিসঙ্গত করার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন।

The North East is fast emerging as India's powerhouse. Speaking at the launch of projects related to energy, connectivity and healthcare in Itanagar, Arunachal Pradesh. https://t.co/SIrXM5eumI

— Narendra Modi (@narendramodi) September 22, 2025

*****

PS/PKS/KMD

 


(Release ID: 2169925)
Read this release in: English