প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী

আজ ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে, পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কার কার্যকর হবে, যা জিএসটি বচত উৎসবের সূচনা করবে: প্রধানমন্ত্রী

জিএসটি সংস্কার ভারতের প্রবৃদ্ধির গল্পকে ত্বরান্বিত করবে: প্রধানমন্ত্রী

আসুন আমরা এমন পণ্য কিনব যা ভারতে তৈরি: প্রধানমন্ত্রী

সকলকে নবরাত্রি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 21 SEP 2025 5:50PM by PIB Agartala

নয়াদিল্লি, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশবাসীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি শক্তি পূজার উৎসব নবরাত্রি উপলক্ষে দেশের সকল নাগরিকদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং বলেছেন, নবরাত্রির প্রথম দিন থেকে দেশ আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে। ২২শে সেপ্টেম্বর সূর্যোদয় থেকে শুরু পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কার দেশে বাস্তবায়িত হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর মতে, এটি ভারত জুড়ে জিএসটি বচত উৎসব (সঞ্চয় মহোৎসব) শুরু হওয়ার দিন। তিনি বলেন, এই উৎসব সঞ্চয় বৃদ্ধি করবে এবং মানুষের পছন্দের পণ্য ক্রয় করা সহজ করে তুলবে। শ্রী মোদী বলেন, এই সঞ্চয় উৎসবের সুবিধা দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, নব্য-মধ্যবিত্ত, যুবক, কৃষক, মহিলা, দোকানদার, ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে অনুভূত হবে। তিনি বলেন, এই উৎসবের মরশুমে প্রতিটি ঘরে সুখ এবং মাধুর্য বৃদ্ধি পাবে। এরজন্য সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের কোটি কোটি পরিবারকে জিএসটি সংস্কার এবং জিএসটি সঞ্চয় উৎসবের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই সংস্কারগুলি ভারতের প্রবৃদ্ধির গল্পকে ত্বরান্বিত করবে, ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে সহজ করবে, বিনিয়োগকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে এবং উন্নয়নের দৌড়ে প্রতিটি রাজ্য সমান অংশীদারত্বকে নিশ্চিত করবে।

২০১৭ সালে ভারত কর্তৃক জিএসটি সংস্কারের প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী বলেন, এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসের একটি পুরনো অধ্যায়ের অবসান ঘটবে এবং একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। তিনি বলেন, কয়েক দশক ধরে, নাগরিক এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি করের জটিল জালে আটকা পড়েছিল৷ প্রবেশ কর, বিক্রয় কর, আবগারি, ভ্যাট এবং পরিষেবা কর – ইত্যাদির মত কয়েক ডজন শুল্ক দেশজুড়ে আরোপ করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক শহর থেকে অন্য শহরে পণ্য পরিবহনের জন্য, একাধিক চেকপয়েন্ট অতিক্রম করতে হত, অসংখ্য ফর্ম পূরণ করতে হত এবং প্রতিটি স্থানে বিভিন্ন কর নিয়ম মেনে চলতে হত। ২০১৪ সালের ব্যক্তিগত স্মৃতির কথা স্মরণ করেন তিনি এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় বিদেশী সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি আকর্ষণীয় উদাহরণ এর কথা উল্লেখ করেন। নিবন্ধে বেঙ্গালুরু থেকে হায়দ্রাবাদে পণ্য পরিবহনে একটি কোম্পানির মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলি বর্ণনা করা হয়েছে – যেখানে ব্যাঙ্গালুরু থেকে হায়দরাবাদ মাত্র ৫৭০ কিলোমিটার দূরত্ব কিন্তু কোম্পানিটি বেঙ্গালুরু থেকে সরাসরি হায়দরাবাদে পণ্য না পাঠিয়ে প্রথমে ইউরোপে এবং তারপর সেখান থেকে একই পণ্য হায়দ্রাবাদে পরিবহন করতে পছন্দ করার কথা উল্লেখ করেছিল৷

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর এবং টোল জটিলতার কারণেই এটি ঘটেছে। তিনি জানান, পূর্ববর্তী উদাহরণটি অসংখ্য উদাহরণের মধ্যে একটি। লক্ষ লক্ষ কোম্পানি এবং কোটি কোটি নাগরিক একাধিক করের জটিল জালের কারণে প্রতিদিন সমস্যার সম্মুখীন হতেন। শ্রী মোদী বলেন, এক শহর থেকে অন্য শহরে পণ্য পরিবহনের বর্ধিত খরচ শেষ পর্যন্ত দরিদ্রদের উপরই বর্তায় এবং সাধারণ গ্রাহকদের উপরই এর চার্জ আরোপ করা হয়।

বিদ্যমান করের জটিলতা থেকে দেশকে মুক্ত করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে শ্রী মোদী স্মরণ করিয়ে দেন যে, ২০১৪ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকার জনগণ ও দেশের স্বার্থে জিএসটি-কে অগ্রাধিকার দিয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেন যে, রাজ্যগুলির উত্থাপিত প্রতিটি উদ্বেগের সমাধান এবং প্রতিটি প্রশ্নের সমাধান খুঁজে বের করার জন্য সকল অংশীদারদের সাথে ব্যাপক আলোচনা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, স্বাধীন ভারতে সমস্ত রাজ্যকে একত্রিত করার মাধ্যমে এই ধরণের বিশাল কর সংস্কার সম্ভব হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির যৌথ প্রচেষ্টার ফলে দেশ একাধিক করের জটিলতা থেকে মুক্ত হয়েছে এবং সারা দেশে একটি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, এক দেশ - এক কর-এর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং সময়ের পরিবর্তন এবং জাতীয় চাহিদার বিকাশের সাথে সাথে পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কারও সমানভাবে অপরিহার্য হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান চাহিদা এবং ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষার কথা মাথায় রেখে এই নতুন জিএসটি সংস্কারগুলি বাস্তবায়িত করা হয়েছে। শ্রী মোদী উল্লেখ করেন যে ,নতুন কাঠামোর অধীনে মূলত মাত্র ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ করের স্তর থাকবে। এর অর্থ হল, বেশিরভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আরও সাশ্রয়ী হবে। তিনি খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ, সাবান, টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, স্বাস্থ্য এবং জীবন বীমাকে এর তালিকাভুক্ত করার কথা জানান, যা হয় করমুক্ত হবে, অথবা মাত্র ৫ শতাংশ কর আরোপ করবে। প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন যে< ৯৯ শতাংশ পণ্যের ক্ষেত্রেই যেখানে আগে ১২ শতাংশ কর ধার্য ছিল, সেগুলিকে এখন ৫ শতাংশ করের স্তরের আওতায় আনা হয়েছে।

গত এগারো বছরে ২৫ কোটি ভারতীয় দারিদ্র্য থেকে নিজেদের মুক্ত করেছেন এবং একটি উল্লেখযোগ্য নব্য-মধ্যবিত্ত শ্রেণী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন৷ একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, এই নব্য-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নিজস্ব আকাঙ্ক্ষা এবং স্বপ্ন রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, এই বছর, সরকার ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর মওকুফ করে কর ছাড় দিয়েছে। ফলস্বরূপ, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জীবন অনেক সহজ এবং সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে। শ্রী মোদী বলেন, এখন দরিদ্র এবং নব্য-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উপকৃত হওয়ার পালা। তিনি বলেন, তারা দ্বিগুণ সুবিধা অর্জন করেছে - প্রথমে আয়কর মওকুফের মাধ্যমে এবং এখন জিএসটি হ্রাসের মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জিএসটি হার কমলে নাগরিকদের তাদের ব্যক্তিগত স্বপ্ন পূরণ করা সহজ হবে - তা সে বাড়ি তৈরি করাই হোক, কিংবা টিভি বা ফ্রিজ কেনা, স্কুটার, বাইক বা গাড়ি কেনা- এই সবেরই এখন খরচ কম হবে। তিনি বলেন, বেশিরভাগ হোটেল কক্ষের জিএসটি হ্রাস করায় ভ্রমণ আরও সাশ্রয়ী হবে। জিএসটি সংস্কারের প্রতি দোকানদারদের উৎসাহী সাড়ায় শ্রী মোদী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, তারা গ্রাহকদের কাছে জিএসটি হ্রাসের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। অনেক জায়গায় সংস্কারের আগে এবং পরে মূল্যের তুলনামূলক বোর্ডগুলি বিশেষভাবে প্রদর্শিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷

পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কারে ‘নাগরিক দেব ভব’ মন্ত্র স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, যখন আয়কর ছাড় এবং জিএসটি হ্রাস একত্রিত হয়, তখন গত এক বছরে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি ভারতের জনগণের জন্য ২.৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সাশ্রয় করবে। ঠিক এই কারণেই তিনি এটিকে ‘বচত উৎসব’ বলে অভিহিত করেছেন৷
শ্রী মোদী বলেন, উন্নত ভারতের লক্ষ্য অর্জনের জন্য আত্মনির্ভরতার পথে অটল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ভারতকে স্বনির্ভর করার একটি বড় দায়িত্ব ভারতের ক্ষুদ্র, হালকা এবং কুটির শিল্প - এমএসএমই-এর উপর বর্তায়। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, জনগণের চাহিদা পূরণ করে এবং দেশের অভ্যন্তরে যা উৎপাদিত হতে পারে তা অবশ্যই দেশেই উৎপাদিত হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিএসটি হার হ্রাস এবং পদ্ধতি সরলীকৃত করার ফলে ভারতের এমএসএমই, ক্ষুদ্র উদ্যোগ এবং কুটির শিল্প উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হবে। তিনি আরও বলেন, এই সংস্কারগুলি তাদের বিক্রয় বৃদ্ধি করবে এবং করের বোঝা কমাবে। এর ফলে দ্বিগুণ লাভ হবে। তিনি এমএসএমই থেকে অনেক প্রত্যাশা প্রকাশ করেন এবং সমৃদ্ধির শীর্ষে ভারতের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভারতে উৎপাদন ও পণ্যের মান একসময় বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এবং উচ্চমানের ছিল। শ্রী মোদী সেই গৌরব পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন এবং ক্ষুদ্র শিল্পে উৎপাদিত পণ্যগুলিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ মান পূরণ করতে হবে বলে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ভারতীয় পণ্যগুলিকে মর্যাদা ও উৎকর্ষতার সাথে সমস্ত মানদণ্ড অতিক্রম করতে হবে এবং ভারতীয় পণ্যগুলিকে দেশের বিশ্বব্যাপী পরিচয় এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সকল অংশীদারদের এই লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বদেশীর মন্ত্র যেমন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকে শক্তিশালী করেছিল, তেমনি এটি দেশের সমৃদ্ধির যাত্রাকে আরও শক্তিশালী করবে। তিনি উল্লেখ করেন যে, অনেক বিদেশী জিনিসপত্র আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে এবং নাগরিকরা প্রায়শই জানেন না যে তাদের পকেটে থাকা পণ্যটি বিদেশী নাকি দেশীয়। শ্রী মোদী এই ধরনের নির্ভরতা থেকে নিজেদের মুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন এবং দেশের যুবসমাজকে কঠোর পরিশ্রম এবং ঘাম দিয়ে ভারতে তৈরি পণ্য কিনতে আহ্বান জানান। তিনি প্রতিটি ঘরকে দেশের প্রতীক এবং প্রতিটি দোকানকে দেশীয় পণ্য দিয়ে সাজানোর আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী নাগরিকদের স্বাধীনতার প্রতি তাদের অঙ্গীকার - "আমি দেশীয় পণ্য ক্রয় করি," "আমি দেশীয় পণ্য বিক্রি করি" - গর্বের সাথে ঘোষণা করতে উৎসাহিত করেছেন এবং এই মানসিকতা প্রতিটি ভারতীয়ের মধ্যে অন্তর্নিহিত হওয়া উচিত বলে জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, এই ধরনের পরিবর্তন ভারতের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। তিনি সমস্ত রাজ্য সরকারকে তাদের অঞ্চলে উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং বিনিয়োগের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে পূর্ণ শক্তি এবং উৎসাহের সাথে আত্মনির্ভর ভারত এবং স্বদেশী অভিযানকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করার আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, যখন কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলি একসাথে এগিয়ে যাবে, তখন একটি আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে, প্রতিটি রাজ্যের উন্নয়ন হবে এবং ভারত একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রী জিএসটি বাচত উৎসব এবং নবরাত্রির শুভ উপলক্ষে উষ্ণ দেশবাসীদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে তার বক্তৃতা শেষ করেন।

*****

PS/DM/KMD


(Release ID: 2169417)
Read this release in: English