পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

ভারতে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন করে গতি এসেছে: হরদীপ এস পুরি

Posted On: 29 JUL 2025 3:49PM by PIB Agartala

নতুন দিল্লি, ২৯ জুলাই, ২০২৫: তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে ভারত নতুন করে উত্থান লক্ষ্য করছে৷ বিশেষ করে সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে, যেখানে দেশের বিশাল অব্যবহৃত হাইড্রোকার্বন এর মজুত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্যসভায় একটি তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের লিখিত উত্তরে, কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী বলেছেন, ২০২২ সালে প্রায় দশ লক্ষ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলকে এরজন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে যেখানে আগে কখনো হয়নি৷ এটি একটি যুগান্তকারী অগ্রগতি। এই পদক্ষেপটি উল্লেখযোগ্য অনুসন্ধানের সীমানাকে উন্মোচন করেছে, বিশেষ করে আন্দামান-নিকোবর (এএন) সমুদ্র উপকূলীয় অববাহিকার মতো গভীর জল এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে৷

২০১৫ সাল থেকে, ভারতে কর্মরত অনুসন্ধান ও উৎপাদন কোম্পানিগুলি ১৭২টি হাইড্রোকার্বন আবিষ্কারের কথা জানিয়েছে, যার মধ্যে ৬২টি সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে রয়েছে। মন্ত্রী আন্দামান নিকোবর অববাহিকার ভূতাত্ত্বিক তাৎপর্য তুলে ধরেছেন, যা বাংলা-আরাকান পাললিক ব্যবস্থার মধ্যে আন্দামান ও নিকোবর অববাহিকার সংযোগস্থলে অবস্থিত। ভারতীয় এবং বার্মিজ প্লেটের সীমানায় অবস্থিত টেকটোনিক স্থাপনা হাইড্রোকার্বন জমার জন্য সহায়ক অসংখ্য স্তরগত ফাঁদ তৈরি করেছে। মায়ানমার এবং উত্তর সুমাত্রার প্রমাণিত পেট্রোলিয়াম ব্যবস্থার সাথে অববাহিকার সান্নিধ্যের কারণে এই ভূতাত্ত্বিক প্রতিশ্রুতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিণ আন্দামান উপকূলীয় ইন্দোনেশিয়ায় উল্লেখযোগ্য গ্যাস আবিষ্কারের পর এই অঞ্চলটি নতুন করে বিশ্বের আগ্রহ আকর্ষণ করেছে, যা এই অঞ্চল জুড়ে ভূতাত্ত্বিক ধারাবাহিকতার উপর জোর দিচ্ছে।

শ্রী পুরী জোর দিয়ে বলেন যে, অনুকূল ভূতত্ত্ব একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করলেও, প্রকৃত অগ্রগতি এসেছে সরকারের কৌশলগত নীতিগত হস্তক্ষেপ এবং একটি নতুন অনুসন্ধান পদ্ধতির মাধ্যমে। সংশোধিত কৌশলটি ভূকম্প সংক্রান্ত তথ্যের আগ্রাসী সংগ্রহ, স্ট্র্যাটিগ্রাফিক এবং এক্সপ্লোরেটরি ড্রিলিং উভয়ের সূচনা এবং আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান অংশীদারদের সাথে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে সক্ষম করেছে, যাদের মধ্যে অনেকেই নতুন উপলদ্ধ সীমান্ত ব্লকগুলিতে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

জাতীয় তেল কোম্পানিগুলি চারটি অফশোর স্ট্র্যাটিগ্রাফিক কূপ খননের পরিকল্পনা করেছে, যার মধ্যে একটি আন্দামান নিকোবর অববাহিকায় রয়েছে। এই বৈজ্ঞানিক কূপগুলি ভূতাত্ত্বিক মডেল পরীক্ষা করার, পেট্রোলিয়াম ব্যবস্থার অস্তিত্ব যাচাই করার এবং ভবিষ্যতের বাণিজ্যিক অনুসন্ধানকে ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। যদিও বাণিজ্যিক সঞ্চয় এখনও নিশ্চিত করা হয়নি, তবে এই প্রচেষ্টাগুলি হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানে একটি বড় পদক্ষেপ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।

একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে, ওএনজিসি এবং ওয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড (ওআইএল) আন্দামানের অতি-গভীর জল অঞ্চলে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী অনুসন্ধান অভিযান শুরু করেছে। প্রথমবারের মতো, ৫০০০ মিটার পর্যন্ত গভীরতাকে লক্ষ্য করে খনন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পূর্ব আন্দামান ব্যাক আর্ক অঞ্চলে কার্বনেট স্তরে খনন করা এরকম একটি বন্য বিড়াল কূপ, এনএনডিডাব্লিউ-৭, উৎসাহব্যঞ্জক ভূতাত্ত্বিক অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কাটা নমুনায় হালকা অপরিশোধিত তেল এবং ঘনীভূত গ্যাসের চিহ্ন, ট্রিপ গ্যাসে সি-৫ নিও-পেন্টেনের মতো ভারী হাইড্রোকার্বন এবং জলাধার-মানের ফেসিসের উপস্থিতি। এই অনুসন্ধানগুলি প্রথমবারের মতো এই অঞ্চলে একটি সক্রিয় থার্মোজেনিক পেট্রোলিয়াম সিস্টেমের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে, যা মায়ানমার এবং উত্তর সুমাত্রার মতো। যদিও বাণিজ্যিক মজুদ এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি, এই অভিযানটি একটি কার্যকর পেট্রোলিয়াম সিস্টেমের উপস্থিতিকে বৈধতা দিয়েছে এবং এলাকায় কেন্দ্রীভূত অনুসন্ধানের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

এখন পর্যন্ত অনুসন্ধানের ফলাফলের একটি সারসংক্ষেপ প্রদান করে মন্ত্রী জানান যে, ওএনজিসি ২০টি ব্লকে হাইড্রোকার্বন আবিষ্কার করেছে, যার আনুমানিক মজুদ ৭৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন তেল সমতুল্য (এমএমডিওই)। ওআইএল এর পক্ষ থেকে, গত চার বছরে সাতটি তেল ও গ্যাস আবিষ্কার করা হয়েছে, যার মজুদ আনুমানিক ৯.৮ মিলিয়ন ব্যারেল তেল এবং ২,৭০৬.৩ মিলিয়ন স্ট্যান্ডার্ড ঘনমিটার গ্যাস রয়েছে।

২০১৭ সালের হাইড্রোকার্বন রিসোর্স অ্যাসেসমেন্ট স্টাডি (এইচআরএএস) উল্লেখ করে, মন্ত্রী বলেন, যেখানে আন্দামান নিকোবর বেসিনের হাইড্রোকার্বন সম্ভাব্যতা ৩৭১ এমএমটিওই অনুমান করা হয়েছিল, সেখানে এএন অফশোর অঞ্চল সহ ভারতের এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রায় ৮০,০০০ লাইন কিলোমিটার (এলকেএম) কভার করে একটি ২ডি ব্রডব্যান্ড সিসমিক জরিপ ২০২৪ সালে সম্পন্ন করা হয়েছে। উপরন্তু,  ওআইএল ২০২১-২২ সালে পরিচালিত ডিপ আন্দামান অফশোর জরিপের সময় ২২,৫৫৫ এলকেএম ২ডি সিসমিক ডেটা অর্জন করা হয়েছে। এই তথ্য থেকে বেশ কিছু আশাব্যঞ্জক ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য উঠে এসেছে, যা এখন ওএনজিসি এবং ওআইএল কর্তৃক চলমান খনন অভিযানের মাধ্যমে যাচাই করা হচ্ছে।

শ্রী পুরী জোর দিয়ে বলেন যে, অফশোর এবং সীমান্ত অনুসন্ধানের বর্তমান গতি ২০১৪ সাল থেকে চালু হওয়া ধারাবাহিক প্রগতিশীল নীতিগত সংস্কারের ফলাফল। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৫ সালে উৎপাদন ভাগাভাগি চুক্তি (পিএসসি) ব্যবস্থা থেকে রাজস্ব ভাগাভাগি চুক্তি মডেলে রূপান্তর, ২০১৬ সালে হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধান ও লাইসেন্সিং নীতি (এইচইএলপি) এবং উন্মুক্ত একরেজ লাইসেন্সিং প্রোগ্রাম (ওএএলপি) চালু করা, ২০১৭-১৮ সালে জাতীয় তথ্য সংগ্রহস্থল প্রতিষ্ঠা এবং ২০২২ সালে অপরিশোধিত তেল বিপণনের নিয়ন্ত্রণমুক্তকরণ। একসাথে, এই পদক্ষেপগুলি সীমান্ত অনুসন্ধান, স্ট্র্যাটিগ্রাফিক ড্রিলিং এবং তথ্য অর্জনের জন্য লক্ষ্যযুক্ত প্রণোদনা দ্বারা সমর্থিত একটি উদার, বিনিয়োগকারী-বান্ধব অনুসন্ধান পরিবেশ গড়ে তুলেছে।

এই সংস্কারগুলি আন্দামান-নিকোবর অববাহিকা এবং অন্যান্য গভীর জল অঞ্চলে বর্তমানে চলমান সাহসী, ঝুঁকি-সচেতন এবং বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানকে সক্ষম করেছে, যা ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং স্বনির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার সম্ভাবনা প্রদান করছে।

*****

KMD/DM


(Release ID: 2150033)
Read this release in: English