উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক আয়োজিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের বৈঠক- অ্যাম্বাসেডর মিট: উত্তর-পূর্ব ভারতের অসীম সম্ভাবনা লাগাতে বিদেশী কূটনীতিকদের কাছ থেকে বিপুল সমর্থন

Posted On: 16 APR 2025 11:01AM by PIB Agartala

নয়াদিল্লি, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫: উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক (ডোনার) গতকাল ১৫ই এপ্রিল নয়াদিল্লিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করে। আন্তর্জাতিক স্তরে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৈশ্বিক বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহন করার উদ্দেশ্যে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ৮০টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং উচ্চপদস্থ কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে অংশ নেন। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা প্রদর্শন এবং সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার লক্ষ্যেও এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য এম সিন্ধিয়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আয়োজিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্বের উপর জোর দেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁর ভাষণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও উদ্ভাবনের কেন্দ্রে পরিণত করার জন্য ভারত সরকারের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বের আটটি রাজ্যের প্রত্যেকটিতেই অনন্য শক্তি, সম্পদ এবং সুযোগ রয়েছে, যা এই অঞ্চলকে বিকশিত ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক অনন্য মাত্রা যোগ করেছে। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং কৌশলগত অবস্থান, উত্তর-পূর্বাঞ্চল দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে এর ঘনিষ্ঠতা উত্তর-পূর্ব অঞ্চলকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির প্রবেশদ্বার হিসাবে স্থান দিয়েছে, যা ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ সম্পদ ও কারুশিল্পের সদ্ব্যবহার করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুযোগ অন্বেষণের জন্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলিকে আমন্ত্রণ জানান মন্ত্রী।

উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ডঃ সুকান্ত মজুমদার তাঁর ভাষণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিপুল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি একসঙ্গে বিনিয়োগের সুযোগ এবং বিকশিত ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিমান, সড়ক ও রেল যোগাযোগ, জলপথ ইত্যাদি সম্প্রসারণ সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারতের অষ্টলক্ষ্মী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, তা দ্রুত শিল্পায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদ। তিনি বলেন, বহুমুখী খাতে পর্যাপ্ত সুযোগ থাকার কারনে, বিনিয়োগকারীদেরকে এর ব্যাপক সম্ভাবনা কাজে লাগানোর পাশাপাশি এই অঞ্চলের উন্নয়নের যাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারত।
অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পেমা খান্ডু অরুণাচল প্রদেশ সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলির অনন্য শক্তির কথা তুলে ধরেছেন।
বিদেশ মন্ত্রী শ্রী এস জয়শঙ্কর এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের উন্নয়ন নীতির অগ্রভাগে রয়েছে। তিনি কালাদান মাল্টি-মডেল ট্রানজিট প্রকল্পের গুরুত্ব এবং উত্তর পূর্বাঞ্চল দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় বাজারের প্রবেশদ্বার হওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন।

 

উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব শ্রী চঞ্চল কুমার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং এই অঞ্চলের সামগ্রিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি ও আইটিইএস, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, ক্রীড়া ও বিনোদন, পর্যটন ও আতিথেয়তা, পরিকাঠামো ও লজিস্টিক, বস্ত্র, হস্তচালিত তাঁত ও হস্তশিল্প এবং শক্তির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে সহজলভ্য সুযোগের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একাধিক ক্ষেত্রে প্রচুর সুযোগের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক সম্ভাবনা কাজে লাগানোর পাশাপাশি তার বিকাশ যাত্রার অংশ হতে আহ্বান জানাচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারত। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক এই অঞ্চলে কর্মসংস্থান, পরিকাঠামো এবং মানব সম্পদ বৃদ্ধি করবে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পে সম্পদ ও দক্ষতাকে কাজে লাগাতে কূটনৈতিক মিশন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (পূর্ব) শ্রী পেরিয়াসামি কুমারন তাঁর ভাষণে বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সীমানায় রয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভুটান, চীন, নেপাল ও মায়ানমার। এই অঞ্চলটিকে কেবল দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলির সংগঠন (আসিয়ান)-এর সঙ্গেই নয়, বাংলাদেশ, ভুটান এবং নেপাল এর মতো প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গেও ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সংযোগের ভিত্তি হিসাবে গড়ে তোলা যেতে পারে। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং অবারিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি সম্পদ। তিনি বলেন, গঠনমূলক আলোচনা, অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য অ্যাম্বাসেডর মিট একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ যা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধিকে চালিত করবে। এই প্ল্যাটফর্ম উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন সুযোগ অন্বেষণ করার জন্য এগিয়ে আসার একটি দারুন সুযোগ।

২০২৫ সালের ২৩ এবং ২৪ শে মে অনুষ্ঠিতব্য উত্তর-পূর্ব বিনিয়োগকারীদের নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনের আগে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আয়োজিত এই বৈঠকটি ছিল প্রাক-শীর্ষ সম্মেলন কার্যক্রমগুলির মধ্যে একটি। এই বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসু ছিল যেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে (যেমন– অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম এবং ত্রিপুরা) উপস্থাপিত শিল্প সম্ভাবনাগুলি কাজে লাগানোর জন্য ভারতীয় অংশীদারদের সাথে অংশীদারিত্ব করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উত্তর পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য ভবিষ্যতের অংশীদারিত্বের ভিত্তি স্থাপন করতে এই অনুষ্ঠান কার্যত এক দিশা দেখাতে সক্ষম হয়েছে। অনুষ্ঠানে উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।

*****

KMD/PS


(Release ID: 2122333)
Read this release in: English