প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী 'বিকশিত ভারত ইয়ং লিডার্স ডায়ালগ ২০২৫ "-এ অংশগ্রহণ করেন
প্রধানমন্ত্রী দশটি বিষয় নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের লেখা সেরা প্রবন্ধের সংকলন প্রকাশ করেন
Posted On:
12 JAN 2025 4:53PM by PIB Agartala
নয়াদিল্লি, ১২ জানুয়ারী ২০২৫: আজ স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীতে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন দিল্লির ভারত মণ্ডপমে 'বিকশিত ভারত ইয়ং লিডার্স ডায়ালগ ২০২৫ "-এ অংশগ্রহণ করেন। সারা ভারত থেকে আগত ৩০০০ সক্রিয় তরুণ নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এক মঞ্চে সামিল হন । এই উপলক্ষে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি ভারতের যুবসমাজের প্রাণবন্ত শক্তির কথা তুলে ধরেন, তিনি বলেন, যুবাদের এই উপস্থিতি ভারত মণ্ডপমে অনন্য প্রাণ ও শক্তি নিয়ে এসেছে। দেশের যুবসমাজের প্রতি স্বামীজীর অগাধ বিশ্বাস ছিল, একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমগ্র দেশ আজ স্বামী বিবেকানন্দকে স্মরণ করছে এবং শ্রদ্ধা জানাচ্ছে । তিনি বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্বাস করতেন যে তাঁর শিষ্যরা তরুণ প্রজন্ম থেকে আসবেন, যাঁরা সিংহের মতো শক্তিতে ভরপুর হয়ে প্রতিটি সমস্যার সমাধান করবেন। তিনি আরও বলেন, স্বামীজি ও তাঁর বিশ্বাসের প্রতি তাঁর পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে, যেমন স্বামীজির ছিল তরুণ সমাজের উপর আস্থা।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, স্বামী বিবেকানন্দ যদি আজ আমাদের মধ্যে থাকতেন, তা হলে একবিংশ শতাব্দীর ভারতের যুবসমাজের জাগ্রত শক্তি ও সক্রিয় প্রচেষ্টার সাক্ষী হয়ে তিনি নতুন আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ হতেন। ভারত মণ্ডপমে আয়োজিত জি-২০ অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী বলেন, বিশ্বনেতারা একই স্থানে বিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে এসেছিলেন, যেখানে আজ ভারতের যুবসমাজ ভারতের পরবর্তী ২৫ বছরের জন্য রোডম্যাপ তৈরি করছে।
কয়েক মাস আগে তাঁর বাসভবনে তরুণ ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে সাক্ষাতকরে একটি অংশ উল্লেখ করে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন একজন ক্রীড়াবিদ মন্তব্য করেছিলেন, "বিশ্বের কাছে আপনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, কিন্তু আমাদের কাছে আপনি পরম মিত্র।" প্রধানমন্ত্রী ভারতের যুবসমাজের সঙ্গে তাঁর মিত্রতার বন্ধনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, বন্ধুত্বের সবচেয়ে শক্তিশালী যোগসূত্র হল আস্থা। তিনি যুব সমাজের প্রতি তাঁর অগাধ আস্থা ব্যক্ত করেন, যা ভারত "গঠন এবং' বিকশিত ভারত ইয়ং লিডার ডায়ালগ"-এর ভিত্তিকে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের যুবসমাজের সম্ভাবনা শীঘ্রই ভারতকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করবে। তিনি স্বীকার করেন যে লক্ষ্যটি তাৎপর্যপূর্ণ তো বটেই, লক্ষ্য পূরণ করাটাও অসম্ভব নয় , যা অবশেষে নৈরাশ্যবাদীদের ভুল প্রমাণিত করবে। তিনি বলেন, লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ নিঃসন্দেহে তার লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
শ্রী মোদী বলেন, "ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয় এবং অনুপ্রাণিত করে", এবং অসংখ্য বৈশ্বিক উদাহরণ তুলে ধরে যেখানে বড় স্বপ্ন ও সংকল্প নিয়ে দেশ ও গোষ্ঠী তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৩০-এর দশকের অর্থনৈতিক সঙ্কটের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, আমেরিকানরা নতুন চুক্তি গ্রহণ করেছিল এবং কেবল সংকট কাটিয়ে ওঠাই নয়, তাদের উন্নয়নকেও ত্বরান্বিত করতে সমর্থ হয়েছিল। তিনি সিঙ্গাপুরের কথাও উল্লেখ করেন, যে দেশ কিছু মৌলিক জীবন সঙ্কটের সম্মুখীন হলেও শৃঙ্খলা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি বৈশ্বিক আর্থিক ও বাণিজ্য কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী খাদ্য সংকট কাটিয়ে ওঠার মতো উদাহরণ ভারতেই রয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বড় লক্ষ্য নির্ধারণ এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলি অর্জন করা অসম্ভব নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, একটি স্পষ্ট লক্ষ্য ছাড়া কিছুই অর্জন করা যায় না এবং আজকের ভারত এই মানসিকতা নিয়ে কাজ করছে।
বিগত দশকে সংকল্পের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত হওয়ার সংকল্প নিয়ে ৬০ মাসের মধ্যে ৬০ কোটি নাগরিক এই লক্ষ্য অর্জন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, ভারতের প্রায় প্রতিটি পরিবারে এখন ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সুবিধা রয়েছে এবং মহিলাদের রান্নাঘরকে ধোঁয়া থেকে মুক্ত করার জন্য ১০ কোটিরও বেশি গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের আগেই ভারত তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করছে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় যখন বিশ্ব ভ্যাকসিনের জন্য লড়াই করছিল, তখন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা নির্ধারিত সময়ের আগেই টিকা তৈরি করে ফেলেন । তিনি আরও বলেন, ভারতে প্রত্যেককে টিকা দিতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা সত্ত্বেও, দেশ রেকর্ডকালীন কম সময়ের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম টিকাদান অভিযান পরিচালনা করেছে। প্রধানমন্ত্রী সবুজ শক্তির প্রতি ভারতের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে বলেন, প্যারিস চুক্তির প্রতিশ্রুতি নির্ধারিত সময়ের নয় বছর আগেই পূরণ করা প্রথম দেশ ভারত। তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে পেট্রোলের মধ্যে ২০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণের লক্ষ্যের কথাও উল্লেখ করেন, যা ভারত নির্ধারিত সময়ের আগেই অর্জন করতে চলেছে। তিনি আরও বলেন, এই সাফল্যগুলির প্রত্যেকটিই অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করে এবং ভারতকে একটি উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যের কাছাকাছি নিয়ে আনতে পারে ।
শ্রী মোদী বলেন, "বড় লক্ষ্যসমূহ অর্জন করার জন্য শুধুমাত্র সরকারি ব্যবস্থার ওপর দায়িত্ব রেখে নয়, প্রত্যেক নাগরিকের সম্মিলিত প্রচেষ্টারও প্রয়োজন"। প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন যে, কুইজ, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা এবং উপস্থাপনায় অংশগ্রহণকারী যুবসমাজের নেতৃত্বে এই প্রক্রিয়ার উদাহরণ হল 'বিকাশিত ভারত ইয়ং লিডার্স ডায়ালগ "। তিনি একটি উন্নত ভারতের লক্ষ্যে তাদের মালিকানার জন্য যুবসমাজের প্রশংসা করেন, যা তাঁর প্রকাশিত প্রবন্ধ বই এবং পর্যালোচনার দশটি উপস্থাপনায় প্রতিফলিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, যুবসমাজের সমাধানগুলি বাস্তবতা এবং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যা দেশের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলি সম্পর্কে তাদের বিস্তৃত বোধগম্যতা প্রদর্শন করে। বিশেষজ্ঞ, মন্ত্রী এবং নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য তিনি যুবসমাজের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, 'ইয়ং লিডার্স ডায়ালগ "-এর ভাবনা ও পরামর্শ এখন জাতীয় নীতির অংশ হয়ে উঠবে, যা দেশের উন্নয়নের পথ দেখাবে। তিনি যুবকদের অভিনন্দন জানান এবং এক লক্ষ নতুন যুবককে রাজনীতিতে আনার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন, তাঁদের পরামর্শ বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করেন। উন্নত ভারতের বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করে এবং এর অর্থনৈতিক, কৌশলগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তির ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত ভারতে অর্থনীতি ও বাস্তুতন্ত্র উভয়ই সমৃদ্ধ হবে, যা উন্নত শিক্ষা ও আয়ের জন্য অসংখ্য সুযোগ প্রদান করবে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, ভারতে বিশ্বের বৃহত্তম দক্ষ যুব শ্রমশক্তি থাকবে, যা তাঁদের স্বপ্নের জন্য একটি উন্মুক্ত আকাশ প্রদান করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিটি সিদ্ধান্ত, পদক্ষেপ এবং নীতিকে উন্নত ভারতের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, আগামী কয়েক দশক ধরে দেশ সর্বকনিষ্ঠদের দেশ হিসাবে রয়ে যাওয়ায় তা ভারতের এক বিরাট অগ্রগতির মুহূর্ত। শ্রী মোদী বলেন, "বৈশ্বিক সংস্থাগুলি ভারতের জিডিপি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর ক্ষেত্রে যুবসমাজের সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দেয়।" যুব সম্প্রদায়ের শক্তিতে বিশ্বাসী মহর্ষি অরবিন্দ, গুরুদেব ঠাকুর এবং হোমি জে ভাবা'র মতো মহান চিন্তাবিদদের উদ্ধৃতি দিয়ে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন যে, ভারতীয় যুবসমাজ প্রধান বৈশ্বিক সংস্থাগুলির নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং বিশ্বব্যাপী তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করছে।
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, আগামী ২৫ বছর 'অমৃত কাল "অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তিনি আস্থা প্রকাশ করেন যে, যুবসমাজ উন্নত ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করবে। তিনি স্টার্ট-আপ জগতে ভারতকে শীর্ষ তিনে নিয়ে আসা, উৎপাদনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়াকে বিশ্বব্যাপী উন্নীত করা এবং খেলাধুলায় উৎকর্ষ অর্জনে যুবসমাজের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি উপসংহারে বলেন, যখন ভারতীয় যুবসমাজ অসম্ভবকেই সম্ভব করে তোলে, তখন একটি উন্নত ভারত নিঃসন্দেহে অর্জনযোগ্য।
বর্তমান যুবসমাজের ক্ষমতায়নে সরকারের অঙ্গীকারের ওপর জোর দিয়ে শ্রী মোদী বলেন, ভারতে প্রতি সপ্তাহে একটি করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হচ্ছে এবং প্রতিদিন একটি করে নতুন আইটিআই গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রতি তৃতীয় দিনে একটি অটল টিঙ্কারিং ল্যাব খোলা হয় এবং প্রতিদিন দুটি নতুন কলেজ স্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, ভারতে এখন ২৩ টি আইআইটি রয়েছে এবং বিগত দশকের ৯ আইআইটি-র এখন বেড়ে ২৫ হয়েছে এবং আইআইএম-এর সংখ্যা ১৩ থেকে বেড়ে ২১ হয়েছে। তিনি বিগত দশ বছরে এইমস-এর সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি এবং মেডিকেল কলেজগুলির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি পরিমাণ এবং গুণমান উভয় ক্ষেত্রেই দুর্দান্ত ফলাফল দেখাচ্ছে, কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০১৪ সালের নয়টি থেকে বেড়ে আজ ৪৬-এ দাঁড়িয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, ভারতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্রমবর্ধমান শক্তি উন্নত ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত গঠনের লক্ষ্যে দৈনন্দিন লক্ষ্য এবং ধারাবাহিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ভারত শীঘ্রই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে তিনি আস্থা প্রকাশ করেন। শ্রী মোদী বলেন, বিগত এক দশকে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে শীঘ্রই সমগ্র দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবে। তিনি এই দশকের শেষ নাগাদ ৫০০ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে রেলের জন্য নেট-শূন্য কার্বন নিঃসরণ অর্জনের ভারতের লক্ষ্যের কথা তুলে ধরেন।
আগামী দশকে অলিম্পিক আয়োজনের উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করে এবং এই লক্ষ্য অর্জনে দেশের একাগ্রতার ভাবের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৩৫ সালের মধ্যে একটি মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে ভারত বৃহৎ মহাকাশ শক্তি হিসেবে দ্রুত অগ্রগতি করছে। তিনি চন্দ্রযানের সাফল্য এবং গগনযানের জন্য অব্যাহত প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে এর চূড়ান্ত লক্ষ্য একজন ভারতীয়কে চাঁদে অবতরণ করানো। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, এই লক্ষ্যগুলি অর্জন করলে ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের পথ সুগম হবে।
প্রধানমন্ত্রী দৈনন্দিন জীবনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রভাবের কথা উল্লেখ করে বলেন, অর্থনীতির বিকাশ হলে, সাথে সাথে এটি জীবনের সমস্ত দিককে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, এই শতাব্দীর প্রথম দশকে ভারত ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছিল, কিন্তু অর্থনৈতিক আকার কম হওয়ায় কৃষি বাজেট ছিল মাত্র কয়েক হাজার কোটি টাকা এবং পরিকাঠামোর বাজেট ছিল এক লক্ষ কোটি টাকারও কম। সেই সময় তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ গ্রামে যথাযথ সড়কের অভাব ছিল এবং জাতীয় মহাসড়ক ও রেলপথের অবস্থা খারাপ ছিল এবং দেশের একটি বড় অংশে বিদ্যুৎ ও জলের মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধা ছিল না। শ্রী মোদী বলেন, দুই ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার পরও ভারতের পরিকাঠামো বাজেট তখন ছিল দুই লক্ষ কোটি টাকারও কম। তবে, দেশে সড়ক, রেলপথ, বিমানবন্দর, খাল, দরিদ্রদের জন্য আবাসন, স্কুল এবং হাসপাতালের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, ভারত দ্রুত তিন ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, বন্দে ভারতের মতো আধুনিক ট্রেন চালু হয়েছে এবং বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, ভারত বিশ্বব্যাপী দ্রুততম ৫জি পরিষেবা চালু করতে পেরেছে, হাজার হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সম্প্রসারিত করেছে এবং ৩ লক্ষেরও বেশি গ্রামে সড়ক নির্মাণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, তরুণদের বন্ধকবিহীন মুদ্রা ঋণের মাধ্যমে ২৩ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে এবং বিশ্বের বৃহত্তম বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারতের সূচনা করা হয়েছে। উপরন্তু, তিনি উল্লেখ করেন যে, কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বার্ষিক হাজার হাজার কোটি টাকা সরাসরি জমা করার জন্য একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছে এবং দরিদ্রদের জন্য চার কোটি পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, অর্থনীতির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়নের কাজকর্ম ত্বরান্বিত হয়েছে, আরও বেশি সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্র ও সামাজিক শ্রেণিতে ব্যয় করার জন্য দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, ভারত এখন প্রায় চার ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি, যার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান পরিকাঠামো বাজেট ১১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি, যা এক দশক আগের তুলনায় প্রায় ছয় গুণ বেশি এবং শুধুমাত্র রেলের ক্ষেত্রেই ২০১৪ সালের সমগ্র পরিকাঠামো বাজেটের তুলনায় বেশি ব্যয় করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, এই বর্ধিত বাজেট ভারতের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে স্পষ্ট, যেখানে ভারত মণ্ডপম একটি সুন্দর উদাহরণ। শ্রী মোদী বলেন, "ভারত দ্রুত পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে চলেছে, যা উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধার ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটাবে। তিনি আস্থা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, আগামী দশকের শেষের দিকে ভারত ১০ লক্ষ কোটি অর্থাৎ ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করবে। তিনি যুবসমাজকে অর্থনীতির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে উদ্ভূত অসংখ্য সুযোগ সম্পর্কে উৎসাহিত করেন এবং জোর দিয়ে বলেন যে, তাঁদের প্রজন্ম কেবল দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রূপান্তরই ঘটাবে না, বরং এর সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগীও হবে। প্রধানমন্ত্রী যুব নেতাদের কম্ফর্ট জোন এড়িয়ে চলতে, ঝুঁকি নিতে এবং তাদের কম্ফর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন, যা ইয়ং লিডার্স ডায়ালগের অংশগ্রহণকারীরা দেখিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, জীবনের এই মন্ত্র তাঁদের সাফল্যের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
ভারতের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নে 'বিকাশিত ভারত ইয়ং লিডার্স ডায়ালগ "-এর তাৎপর্য্যপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী যুবসমাজের শক্তি, উৎসাহ ও কর্তব্য নিষ্ঠার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, উন্নত ভারতের ভাবনাগুলি অমূল্য, উৎকৃষ্ট এবং সর্বোত্তম। প্রতিটি জেলা, গ্রাম এবং পাড়ার অন্যান্য যুবকদের উন্নত ভারতের চেতনার সঙ্গে যুক্ত করে দেশের প্রতিটি প্রান্তে এই ধারণাগুলি পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি যুবসমাজের প্রতি আহ্বান জানান। ভাষণ শেষ করার আগে, প্রধানমন্ত্রী ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং প্রত্যেককে এই সংকল্প নিয়ে চলতে ও উৎসর্গ করতে উৎসাহিত করেন। তিনি আরও একবার জাতীয় যুব দিবসে ভারতের সমস্ত যুব সম্প্রদায়কে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী ডঃ মানসুখ ম্যান্ডভ্য, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী জয়ন্ত চৌধুরী এবং শ্রীমতী রক্ষা খাদসে সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
***
SKC/KG/SB/PS/KMD
(Release ID: 2092346)
Visitor Counter : 19