প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ওড়িশায় অষ্টাদশ প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলনের উদ্বোধন করেন

প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য বিশেষ পর্যটন ট্রেন 'প্রবাসী ভারতীয় এক্সপ্রেস "এর প্রারম্ভিক যাত্রার সূচনা করেন

Posted On: 09 JAN 2025 12:36PM by PIB Agartala

নতুন দিল্লি, ৯ জানুয়ারী ২০২৫: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ওড়িশার ভুবনেশ্বরে অষ্টাদশ প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রতিনিধি এবং প্রবাসী ভারতীয়দের স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী আস্থা প্রকাশ করেন যে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সঙ্গীত ভবিষ্যতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভারতীয় প্রবাসীদের নানা অনুষ্ঠানে বাজানো হবে।  তিনি এই সঙ্গীতের জন্য গ্র্যামি পুরস্কার বিজয়ী শিল্পী রিকি কেজ এবং তাঁর দলের অসাধারণ ভূমিকার জন্য প্রশংসা করে বলেন, এই সংগীত প্রবাসী ভারতীয়দের আবেগ ও অনুভূতিকে ধরতে সক্ষম হবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টাইন কার্লা কাঙ্গালুকে তাঁর ভিডিও বার্তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের অগ্রগতি ও বিকাশের ছবি তিনি যে ভাষায় তুলে ধরেছেন, তা সকলের উপর প্রভাব ফেলেছে। শ্রী মোদী আরও বলেন, কয়েকদিনের মধ্যেই প্রয়াগরাজ-এ মহাকুম্ভ শুরু হবে। মকর সংক্রান্তি, লোহরি, পোঙ্গল এবং মাঘ বিহু উৎসবও আসছে। ১৯১৫-র এই দিনেই মহাত্মা গান্ধী বিদেশে দীর্ঘ সময় থাকার পর ভারতে ফিরেছিলেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রবাসী ভারতীয় দিবস আরও একটি কারণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। "প্রবাসী ভারতীয় দিবস ভারত এবং প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে বন্ধনকে শক্তিশালী করার একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি কয়েকদিন পরেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মশতবর্ষের কথা বলেন–যাঁর দৃষ্টিভঙ্গী প্রবাসী ভারতীয় দিবসের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ভারত, ভারতীয়ত্ব, সংস্কৃতি এবং বিকাশের উদযাপনের পাশাপাশি নিজের মূলের সঙ্গে সংযোগ রক্ষায় এই উদযাপন এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন।

শ্রী মোদী বলেন, "ওড়িশার মহান ভূমি, যেখানে আমরা একত্রিত হয়েছি, তা ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের প্রতিফলন। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা ওড়িশায় আমাদের ঐতিহ্য প্রত্যক্ষ করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উদয়গিরি ও খণ্ডগিরির ঐতিহাসিক গুহা অথবা কোণার্কের চমৎকার সূর্য মন্দির অথবা তাম্রলিপ্তি, মানিকপাটনা ও পালুরের প্রাচীন বন্দর পরিদর্শনে গেলে প্রত্যেকেই গর্বে পূর্ণ হবেন। শত শত বছর আগে ওড়িশা থেকে ব্যবসায়ী ও বণিকরা বালি, সুমাত্রা এবং জাভার মতো জায়গায় দীর্ঘ সামুদ্রিক সমুদ্রযাত্রার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশার স্মৃতিতে আজও বালি যাত্রা উদযাপিত হয়। তিনি আরও বলেন, ওড়িশার একটি উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থান ধৌলি শান্তির প্রতীক। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সম্রাট অশোক এখানে শান্তির পথ বেছে নিয়েছিলেন যখন বিশ্ব তলোয়ারের শক্তির মাধ্যমে সাম্রাজ্য সম্প্রসারণ করছিল। শ্রী মোদী বলেন, এই ঐতিহ্য ভারতকে জানতে বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করে যে, ভবিষ্যতের প্রাণভোমরা যুদ্ধের মধ্যে নয়, বুদ্ধের মধ্যে নিহিত।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, তিনি সর্বদাই প্রবাসী ভারতীয়দের ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে বিবেচনা করে এসেছেন। বিশ্বজুড়ে সহ ভারতীয়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কথোপকথনে আনন্দ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিগত এক দশকে তাঁর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে অনেক বিশ্বনেতার এবং তাঁরা প্রবাসী ভারতীয়দের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।

প্রবাসী ভারতীয়দের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং বিশ্ব মঞ্চে গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন যে, গত এক দশকে তিনি অসংখ্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যাঁরা প্রবাসী ভারতীয়দের সামাজিক মূল্যবোধ এবং নিজ নিজ সমাজে অবদান রাখার জন্য প্রশংসা করেছেন।

ভারত শুধুমাত্র গণতন্ত্রের ধাত্রীভূমি নয়, ভারতীয় জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত গণতন্ত্রের চেতনা – এই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী ভারতীয়রা নিজ নিজ কর্মস্থলে সেখানকার বিকাশে অবদান রাখার পাশাপাশি, নিজের দেশের প্রতিও দায়িত্ব পালন করছেন একনিষ্ঠভাবে। তিনি আরও বলেন, তাঁরা অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে ভারতের প্রতিটি গর্ব ও সাফল্যের উদযাপন করেন।

একবিংশ শতাব্দীর ভারতের অবিশ্বাস্য গতি ও উন্নয়নের মাত্রা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র ১০ বছরে ভারত ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিয়েছে এবং বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে উন্নীত হয়েছে। ভারত শীঘ্রই তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে বলে তিনি আস্থা ব্যক্ত করেন।

ভারতের সাফল্যের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রযান অভিযান কিংবা ডিজিটাল ইন্ডিয়ার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কথা তুলে ধরেন। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, উড়ান, বৈদ্যুতিন যানের প্রসার, মেট্রো রেলপথ কিংবা বুলেট ট্রেন প্রকল্প নতুন ভারতের ছবি তুলে ধরে বলে তিনি মনে করেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, ভারত এখন “মেড ইন ইন্ডিয়া” যুদ্ধবিমান ও পরিবহণ বিমান তৈরি করছে। আগামীদিনে প্রবাসী ভারতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতরা আসবেন এই “মেড ইন ইন্ডিয়া” বিমানে চেপে।

একের পর এক সাফল্যের শিখর স্পর্শ করা ভারত শুধু নিজের নয়, বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলির অর্থাৎ, গ্লোবাল সাউথ-এর স্বরকেও বিশ্বের আঙিনায় তুলে ধরতে উদ্যোগী বলে আবারও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জি-২০-তে আফ্রিকান ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করায় ভারতের উদ্যোগ মানবতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতিকে তুলে ধরে।

সাফল্য এবং সম্ভাবনার কারণে ভারতের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আজকের ভারত তার নিজস্ব বক্তব্য যেমন দৃঢ়ভাবে তুলে ধরে, তেমনি দেখিনি বিশ্বের কণ্ঠস্বরকেও দৃঢ়ভাবে তুলে ধরে। তিনি আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি-২০ এর স্থায়ী সদস্য করার জন্য ভারতের প্রস্তাবের সর্বসম্মত সমর্থনের কথা তুলে ধরে "মানবতা প্রথম"-এর প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেন।

শ্রী মোদী ভারতীয় প্রতিভার বৈশ্বিক স্বীকৃতির ওপর জোর দেন, যেখানে পেশাদাররা বড় বড় সংস্থার মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছ থেকে যাঁরা প্রবাসী ভারতীয় সম্মান পাচ্ছেন, তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব দক্ষতার চাহিদা মেটাতে ভারত কয়েক দশক ধরে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ ও দক্ষ জনগোষ্ঠী হয়ে থাকবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, অনেক দেশ এখন দক্ষ ভারতীয় যুবকদের স্বাগত জানায় এবং ভারত সরকার বিদেশে যাওয়া ভারতীয়দের ক্রমাগত দক্ষতা, পুনরায় দক্ষতা এবং আপ-স্কিলিং প্রচেষ্টার মাধ্যমে উচ্চ দক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য সুবিধা ও স্বাচ্ছন্দ্যের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে এবং তাঁদের নিরাপত্তা ও কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "সঙ্কটের সময়ে প্রবাসী ভারতীয়দের সহায়তা করা ভারতের দায়িত্ব, যা ভারতের বৈদেশিক নীতির মূল নীতির প্রতিফলন। তিনি আরও বলেন, গত এক দশকে বিশ্বজুড়ে ভারতীয় দূতাবাস এবং অফিসগুলি সংবেদনশীল এবং সক্রিয় হয়েছে।

একসময়, ভারতীয় দূতাবাসের সুবিধা পেতে দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করার এবং অনেক দিন অপেক্ষা করতে হতো- অনেক ভারতীয়ের এমন অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী বলেন, গত দুই বছরে ১৪টি নতুন দূতাবাস ও বাণিজ্য দূতাবাস খোলার মাধ্যমে এই বিষয়গুলি এখন সমাধান করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মরিশাসের সপ্তম প্রজন্ম এবং সুরিনাম, মার্টিনিক ও গুয়াদেলুপের ষষ্ঠ প্রজন্মের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তিরা ওসিআই কার্ডের সুবিধা পাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী প্রবাসী ভারতীয়দের উল্লেখযোগ্য ইতিহাসের কথা তুলে ধরে বিভিন্ন দেশে তাঁদের সাফল্যকে ভারতের ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি এই আকর্ষণীয় এবং অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলিকে আমাদের অভিন্ন ঐতিহ্য এবং ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে ভাগ করে নেওয়ার, প্রদর্শন করার এবং সংরক্ষণ করার আহ্বান জানান। বহু বছর আগে ভিনদেশে চলে যাওয়া ভারতীয়দের প্রসঙ্গ তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত দলিল রক্ষা করার আহ্বান জানান। বহু শতাব্দী আগে গুজরাটের বেশ কয়েকটি পরিবার ওমানে বসতি স্থাপন করেছিল, তাঁদের ২৫০ বছরের যাত্রাকে অনুপ্রেরণামূলক বলে প্রশংসা করেন এবং বলেন যে এই সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত হাজার হাজার নথিকে ডিজিটালাইজ করার জন্য একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, একটি "মৌখিক ইতিহাস প্রকল্প" নেওয়া হয়েছিল, যেখানে সেখানকার  প্রবীণ সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

বিভিন্ন দেশে প্রবাসীদের সঙ্গে একই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে শ্রী মোদী 'গিরমিতিয়া "ভাই-বোনদের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি ভারতের যে গ্রাম ও শহরগুলি থেকে এগুলির উৎপত্তি হয়েছে এবং যে জায়গাগুলিতে তারা বসতি স্থাপন করেছে সেগুলি চিহ্নিত করার জন্য একটি ডাটাবেস তৈরির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তাঁদের জীবনকে নথিভুক্ত করা, কীভাবে তাঁরা চ্যালেঞ্জকে সুযোগে পরিণত করেছেন, তা চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্রের মাধ্যমে দেখানো যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী গিরমিতিয়া ঐতিহ্য অধ্যয়ন ও গবেষণার গুরুত্বের কথা তুলে ধরে এর জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক ভারত বিকাশ ও ঐতিহ্য রক্ষার মন্ত্র নিয়ে চলেছে। জি-২০-র সভাপতিত্বের সময় এ দেশে এ সংক্রান্ত নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কাশী তামিল সঙ্গমম, কাশী তেলুগু সঙ্গমম কিংবা সৌরাষ্ট্র তামিল সঙ্গমম-এর কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী আসন্ন সন্ত থিরুভল্লুভার দিবসের কথা তুলে ধরে তাঁর শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য থিরুভল্লুভার সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপনের কথা ঘোষণা করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, সিঙ্গাপুরে প্রথম কেন্দ্রটি শুরু হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি তিরুভল্লুভার চেয়ার স্থাপন করা হচ্ছে। শ্রী মোদী বলেন, এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে তামিল ভাষা ও ঐতিহ্য এবং ভারতের ঐতিহ্যকে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ভারতের বিভিন্ন ঐতিহ্যপূর্ণ অঞ্চলকে সংযুক্ত করায় বিভিন্ন উদ্যোগের প্রসঙ্গ উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। এ প্রসঙ্গে তিনি রামায়ণ এক্সপ্রেস, ভারত গৌরব ট্রেন ও বন্দে ভারত ট্রেনের কথা বলেন। বিশেষ প্রবাসী ভারতীয় এক্সপ্রেস ট্রেনের প্রায় ১৫০ আরোহীকে ১৭টি জায়গায় যেতে পারবেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি সবাইকে ওড়িশার অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শনের জন্য উৎসাহিত করেন এবং প্রয়াগরাজের আসন্ন মহাকুম্ভকে তুলে ধরে সকলকে এই সুযোগটি কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতায় প্রবাসী ভারতীয়দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করে বলেন যে, প্রবাসী ভারতীয়রা ভারতের বিকাশে অবদান রাখছে, যা ভারতকে বিশ্বের শীর্ষ রেমিটেন্স প্রাপক করে তুলেছে। তিনি ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যের ওপর জোর দেন। শ্রী মোদী প্রবাসী ভারতীয়দের আর্থিক পরিষেবা ও বিনিয়োগের চাহিদা মেটাতে গিফট সিটি ইকোসিস্টেমের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন এবং উন্নয়নের দিকে ভারতের যাত্রাকে শক্তিশালী করতে এর সুবিধাগুলি কাজে লাগাতে উৎসাহিত করেন।

 

শ্রী মোদী বলেন, প্রবাসী ভারতীয়দের প্রতিটি প্রচেষ্টা ভারতের অগ্রগতিতে অবদান রাখে। ঐতিহ্যবাহী পর্যটনের সম্ভাবনার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত শুধুমাত্র তার প্রধান মেট্রো শহরগুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর মধ্যে টায়ার-টু এবং  টায়ার-থ্রি শহর যেমন আছে তেমনি গ্রামও রয়েছে, যারা ভারতের ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। তিনি তাঁদের পরবর্তী ভারত সফরে অ-ভারতীয় বংশোদ্ভূত অন্তত পাঁচজন বন্ধুকে নিয়ে আসতে উৎসাহিত করেন।

শ্রী মোদী ভারতবর্ষকে আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য প্রবাসী তরুণদের 'ভারত কো জানিয়ে "কুইজে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি তাঁদের "স্টাডি ইন ইন্ডিয়া" কর্মসূচি এবং আই. সি. সি. আর বৃত্তি প্রকল্পের সুবিধা নিতে উৎসাহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী যে দেশগুলিতে প্রবাসীরা বসবাস করেন সেখানে ভারতের প্রকৃত ইতিহাস ছড়িয়ে দেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

"ভারত এখন বিশ্ববন্ধু হিসাবে স্বীকৃত" বলে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের প্রচেষ্টা বাড়িয়ে এই বৈশ্বিক সংযোগকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। তিনি নিজ নিজ দেশে বিশেষ করে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করার পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাহিত্য, শিল্প ও কারুশিল্প, চলচ্চিত্র ও থিয়েটারের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এই পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে। তিনি প্রবাসী ভারতীয়দের ভারতীয় দূতাবাস এবং কনস্যুলেটের সহায়তায় কৃতিত্ব অর্জনকারীদের শংসাপত্র প্রদান করতে উৎসাহিত করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, এটি স্থানীয় জনগণের সঙ্গে ব্যক্তিগত সংযোগ এবং ভাবাবেগ প্রসূত বন্ধনকে বাড়িয়ে তুলবে।

স্থানীয় ভারতীয় পণ্যের বিশ্বজনীন ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রবাসী ভারতীয়দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে শ্রী মোদী তাঁদের 'মেড ইন ইন্ডিয়া "খাবারের প্যাকেট, জামাকাপড় এবং অন্যান্য পণ্য স্থানীয়ভাবে বা অনলাইনে কেনার আহ্বান জানান এবং এই পণ্যগুলিকে তাঁদের রান্নাঘর, ড্রয়িং রুম এবং উপহারসামগ্রীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, উন্নত ভারত গঠনে এর উল্লেখযোগ্য অবদান থাকবে।

মা ও পৃথিবী মা সম্পর্কিত আরেকটি আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সাম্প্রতিক গায়ানা সফরের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে তিনি গায়ানার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে 'এক পেড়  মা কে নাম " অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভারতে লক্ষ লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই এই অনুষ্ঠান করে চলেছেন। তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশে বলেন যেখানেই থাকুন না কেন, নিজ  মায়ের নামে একটি চারা গাছ রোপণ করুন। তিনি আস্থা প্রকাশ করেন যে, তাঁরা যখন ভারত থেকে ফিরবেন, তখন তাঁরা তাঁদের সঙ্গে উন্নত ভারতের সংকল্প নিয়ে আসবেন। ভাষণ শেষ করে প্রধানমন্ত্রী সকলের সুস্বাস্থ্য ও সম্পদের সঙ্গে সমৃদ্ধ ২০২৫-এর শুভেচ্ছা জানান এবং তাঁদের ভারতে ফিরে আসার জন্য স্বাগত জানান।

ওড়িশার রাজ্যপাল ডঃ হরি বাবু কামভামপতি, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঞ্ঝি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অশ্বিনী বৈষ্ণব, প্রহ্লাদ যোশী, ধর্মেন্দ্র প্রধান, জুয়েল ওরাম এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শোভা করন্দলজে, কীর্তি বর্ধন সিং, পবিত্র মার্গেরিটা সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পটভূমি

প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলন হল ভারত সরকারের প্রধান অনুষ্ঠান যা প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন ও যুক্ত হওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ এবং এর মাধ্যমে প্রবাসীরা একে অপরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুযোগ পান। ওড়িশা সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে ২০২৫ সালের ৮ থেকে ১০ই জানুয়ারি ভুবনেশ্বরে অস্টাদশ প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এবারে সম্মেলনের থিম হল বিকশিত ভারতে প্রবাসীদের অবদান। প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ৫০ টিরও বেশি দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী ভারতীয় সদস্য নিবন্ধন করেছেন।

 

প্রধানমন্ত্রী দূর থেকে ভারতীয় প্রবাসীদের জন্য একটি বিশেষ পর্যটন ট্রেন, প্রবাসী ভারতীয় এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী যাত্রার সূচনা করেন, যা দিল্লির নিজামুদ্দিন রেল স্টেশন থেকে ছাড়বে এবং তিন সপ্তাহের সফরে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন ও ধর্মীয় স্থান দেখাবে। প্রবাসী তীর্থ দর্শন যোজনার আওতায় প্রবাসী ভারতীয় এক্সপ্রেস পরিচালিত হবে।

***

SKC/KG/PS


(Release ID: 2091639) Visitor Counter : 10


Read this release in: English