স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আগরতলায় উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন অর্থ নিগম (এনইডিএফআই) আয়োজিত উত্তর-পূর্ব ব্যাঙ্কার্স কনক্লেভ ২০২৪-এ ভাষণ দিয়েছেন

Posted On: 21 DEC 2024 9:08PM by PIB Agartala

নয়াদিল্লি, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন অর্থ নিগম (এনই ডি এফ আই) আয়োজিত উত্তর-পূর্ব ব্যাঙ্কার্স কনক্লেভ ২০২৪ - এ ভাষণ দেন। এই সম্মেলনে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য এম সিন্ধিয়া, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডঃ) মানিক সাহা, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পেমা খান্ডু, কেন্দ্রীয় উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ডঃ সুকান্ত মজূমদার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব শ্রী গোবিন্দ মোহন এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং সমবায় মন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ১৪০ লক্ষ জনসংখ্যার এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থার দেশ ভারতের অর্থনীতিকে উন্নতির করার জন্য ভারতের জন্য প্রতিটি অঞ্চল, রাজ্য, গ্রাম এবং ব্যক্তির অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা অপরিহার্য। তিনি বলেন, দেশের ১৪০ কোটি মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে পারি না। শ্রী শাহ আরও বলেন, উন্নত রাষ্ট্রের ধারণা হল প্রত্যেক ব্যক্তি তার পরিবারের দেখাশোনা করতে সক্ষম, প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এবং প্রত্যেক ব্যক্তি দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে। তিনি বলেন, এই ধরনের দেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে।

শ্রী শাহ বলেন, যে কোনও দেশের এগিয়ে যাওয়ার জন্য সমান উন্নয়ন প্রয়োজন এবং আমাদের ব্যাঙ্ক কর্মীদের এই মৌলিক নীতি গ্রহণ করা উচিত। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন আমাদের সকলের একটি জাতীয় দায়িত্ব। শ্রী শাহ ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের অনুরোধ করেন যে, তাঁদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে কেবল ব্যবসা, সম্ভাবনা এবং লাভের দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং একটি দায়িত্ব হিসাবে দেখা উচিত। তিনি উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজির নেতৃত্বে আগামী ২৫ বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের উন্নয়ন ও আস্থার প্রবেশদ্বারে পরিণত হবে । তিনি এই আস্থাও ব্যক্ত করেন, পরিকাঠামো উন্নয়নেও উত্তর-পূর্বাঞ্চল সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দেবে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং সমবায় মন্ত্রী উত্তর-পূর্ব ব্যাঙ্কার্স সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরিকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, এই ক্ষেত্রগুলির প্রতি তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিকে আরো সংবেদনশীল হওয়া উচিত। তিনি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অর্থ, পরিকাঠামো, কৃষি, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এবং ব্যক্তিগত ঋণের জন্য পৃথক মাপকাঠি তৈরির আহ্বান জানান। শ্রী শাহ বলেন, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার উচিত এই অঞ্চলের বর্তমান সক্ষমতাকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সহ বিবেচনা করে উত্তর-পূর্ব অর্থনীতির জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করা। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, এই অঞ্চলে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের রপ্তানির প্রবেশদ্বারে পরিণত হয়েছে। শ্রী অমিত শাহ বলেন, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় হয়েছিল। স্বাধীনতার পর ভারতের কিছু অংশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং বাংলাদেশের কিছু অংশ ভারতের অভ্যন্তরে ছিল, যা পরিকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে উল্লেখযোগ্য সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদীজি এই উদ্যোগ নেন এবং স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর সাংবিধানিক সংশোধনী আনা হয় এবং দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। ফলস্বরূপ, আজ আমাদের জলপথগুলি চট্টগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এখন বিশ্বের কাছে পণ্য পাঠানোর জন্য পথ খোলা রয়েছে। তিনি বলেন, আগে পরিবহণ খরচ ছিল ১২ থেকে ১৫ শতাংশ, যার ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে দেশের বাইরে পণ্য রপ্তানি করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল, কিন্তু আজ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যা উৎপাদিত হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে বিশ্ব বাজার খোলা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বিগত ১০ বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক উন্নতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। ইসরোর মাধ্যমে স্থানীয় সম্পদের যথাযথ ও দক্ষ ব্যবহারের জন্য চমৎকার কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতাও অর্জন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি আবেগ, অর্থনীতি এবং বাস্তুতন্ত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তর-পূর্বকে ক্ষমতায়িত করেছেন। বিগত ১০ বছরে নরেন্দ্র মোদীজি নিজে ৬৫ বার উত্তর-পূর্বাঞ্চল সফর করেছেন এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৭০০টিরও বেশি রাত কাটিয়েছেন। এর থেকে বোঝা যায় যে, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারত সরকারের একটি প্রধান কেন্দ্রবিন্দু।

শ্রী অমিত শাহ বলেন, বিগত ১০ বছরে ভারতের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে অনেক সফল দেউলিয়া আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। ভারতের ব্যাঙ্কগুলি মুদ্রা ঋণ, স্বনিধি ঋণ এবং অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লক্ষ কোটি টাকার অনাদায়ী ঋণের পুনরুদ্ধার সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে বৃহত্তর ব্যাঙ্কগুলির সাথে একীভূত করা হয়েছে। এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি লোকসানে কাজ করছিল, কিন্তু ২০২৩-২৪ এ এই ব্যাঙ্কগুলি দেড় লক্ষ কোটি টাকার মুনাফা অর্জন করে এবং তাদের এনপিএ ২.৮ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক বিনিয়োগের জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চেয়ে ভালো কোনও গন্তব্য নেই, কারণ আগামী ১০ বছরে এই অঞ্চলের গড় বৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শ্রী শাহ জোর দিয়ে বলেন যে, আর্থিক নীতি আরও নমনীয় করা উচিত এবং উত্তর-পূর্বের প্রতিটি ক্ষেত্র ও শিল্পকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি ভাল প্যাকেজ প্রদান করা উচিত।

শ্রী অমিত শাহ বলেন, ইউ. পি. আই-এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য। ভারতের ৯৫ শতাংশ গ্রাম এখন থ্রি জি এবং ফোর জি সংযোগ পৌঁছেছে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গ্রামগুলোতেও  এই সংযোগ ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। উপরন্তু, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অসংখ্য পরিকাঠামো প্রকল্প করা হয়েছে, ২০টিরও বেশি জল-ভিত্তিক প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, আগামী দিনগুলিতে এই অঞ্চলে অনেক শিল্প আসার সম্ভাবনা রয়েছে। টাটা গ্রুপের ২৭,০০০ কোটি টাকার সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্প ইঙ্গিত দেয় যে বড় শিল্প গোষ্ঠীগুলি উত্তর-পূর্বের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে চাইছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এই অঞ্চলে৫০,০০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা এখনও সম্পূর্ণরূপে আহরণ  করা হয়নি এবং ব্রহ্মপুত্র নদী দেশকে সাশ্রয়ী মূল্যের বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং সমবায় মন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে এবং এই অঞ্চলকে পরিসংখ্যানের মাধ্যমে নয়, সংবেদনশীলতার মাধ্যমে দেখা উচিত। এর উন্নয়নকে ব্যবসায়িক কাজ হিসেবে নয়, জাতীয় দায়িত্ব হিসেবে দেখা উচিত। শ্রী শাহ বলেন, সমস্ত ব্যাঙ্ক কর্মীদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্যে সম্ভাবনার ১০০ শতাংশ আহরণ করা উচিত এবং একটি উন্নত উত্তর-পূর্ব ও উন্নত ভারত গঠনের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত।

***

 

SKC/KG/PS/KMD


(Release ID: 2086939) Visitor Counter : 7


Read this release in: English