উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসব- ৬ই ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ভারত মন্ডপমে উত্তর-পূর্ব ভারতের সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি ও আর্থিক বিকাশের উদযাপন

Posted On: 05 DEC 2024 1:09PM by PIB Agartala

নয়াদিল্লি, ৫ ই আগস্ট ২০২৪: উত্তর-পূর্ব ভারতের সংস্কৃতি বহু শতাব্দী প্রাচীন, ঐতিহ্যময় ও বহু ভাষা-ভাষির  সমৃদ্ধ লোককাহিনী এবং অপরূপ প্রাকৃতিক শোভায় মোড়া একটি প্রাণবন্ত আবরণ। ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চল  এমন একটি অঞ্চল যা প্রাচীন রীতিনীতি এবং আধুনিক অগ্রগতির এক অসাধারণ মেলবন্ধন, যেখানে প্রত্যেক সম্প্রদায় ও  প্রতিটি রাজ্যের নিজস্বতা রয়েছে, প্রতিটি গোষ্টির স্বতন্ত্র পরিচয় রয়েছে। আসামের ঘন সবুজ চা বাগান থেকে শুরু করে মিজোরামের ঘূর্ণায়মান পাহাড়, মণিপুরের প্রাচীন নদী থেকে শুরু করে  নাগাল্যান্ডের প্রাণবন্ত উৎসব পর্যন্ত সর্বত্র। উত্তর-পূর্বাঞ্চল এমন একটি ভূমি যা জীবন শৈলি, নান্দনিক শিল্পকলা এবং ঐতিহ্য ও পরম্পরার এক অপূর্ব মেলবন্ধন তৈরি করে যা সবাইকে সবসময়ই আলোড়িত করে আসছে।

উত্তর পূর্বাঞ্চলের অসাধারণ এই সংস্কৃতির ঝলক দেখতে পাওয়া যাবে নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে ভারত মন্ডপমে। ভারত মন্ডপমে উদযাপন হতে চলছে প্রথমবারের মতো, অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসব। আগামী ৬  থেকে ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ পর্যন্ত দিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মণ্ডপমে উদযাপিত হবে অষ্টলক্ষ্মী মহোতসব। উত্তর-পূর্ব ভারতের আটটি রাজ্য আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং সিকিমের সৌন্দর্য, বৈচিত্র্য এবং কৃষ্টি সংস্কৃতির ঝলক  প্রদর্শনের লক্ষ্যে এই মহা উৎসবের আয়োজন। অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসবের উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। 'অষ্টলক্ষ্মী' নামে পরিচিত, এই রাজ্যগুলি দেবী লক্ষ্মীর দ্বারা মূর্ত সমৃদ্ধির আটটি রূপের প্রতিনিধিত্ব করে: সমৃদ্ধি, ঐশ্বর্য, পবিত্রতা, সম্পদ, জ্ঞান, কর্তব্য, চাষাবাদ  এবং পশুপালন।

এই রাজ্যসমূহের প্রতিটি তার নিজস্ব সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে মেলে ধরবে এই মহোৎসবে, এবং তা ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বৃহত্তর অঙ্গনে অবশ্যই অবদান রাখবে। অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসব এই অঞ্চলের  বৈচিত্রময় সংস্কৃতি,  শিল্প, কারুশিল্প, সঙ্গীত এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অভিজ্ঞতা অর্জনের একটি সুযোগ এনে দেবে যা গোটা বিশ্বের কাছে উন্মোচিত হবে।  উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য এই উৎসব কেবল সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের উপস্থাপনার সুযোগই এনে দেবে তাই নয়, ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ  ও  অর্থনৈতিক বিকাশের সম্ভাবনাও  তৈরি করবে। 

উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য

প্রথমবারের মতো অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসবের লক্ষ্য উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রাণবন্ত টেক্সটাইল সেক্টর, পর্যটনের সুযোগ, ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্প এবং স্বতন্ত্র ভৌগোলিক নির্দেশক  জি আই ট্যাগযুক্ত পণ্য প্রদর্শনের জন্য একটি গতিশীল মঞ্চের ব্যবস্থা করা। ভবিষ্যতে ভারতের উন্নয়নে কৌশলগত গুরুত্বের দিকে লক্ষ্য রেখে এই মহোৎসব এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক সম্পদের কান্ডারি হিসাবে  কাজ করবে। উত্সবটি একটি বার্ষিক ইভেন্ট হিসাবে ধারণা করা হয়েছে যা এই অঞ্চলের  বৈচিত্র্য এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধিকে তুলে ধরবে। 

মহোৎসবে উত্তর-পূর্ব ভারতের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং তার ক্রম:পরিবর্তনীয় প্রভাবের তাৎপর্য কী হবে সেই  বিবেচনায় জোর দেওয়া হবে। এই অঞ্চলের উন্নত যোগাযোগ, শিল্প বিকাশ এবং পরিবহন, শক্তি এবং ডিজিটাল অবকাঠামোর মতো খাতগুলিতে অব্যাহত উন্নয়ন প্রক্রিয়া ভারতের প্রবৃদ্ধিতে তার কৌশলগত ভূমিকা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে  এবং বাণিজ্য ও ব্যবসায়ের জন্য নতুন সুযোগ এনে দেবে।

মহোৎসবের মাসকট: পূরবী

অনুষ্ঠানে অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসবের মাসকট পূরবীকে পরিচয় করবে। ঐক্য ও বৈচিত্র্যের প্রতীক পূরবী এই অঞ্চলের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করবে।

মহোৎসবের বিশেষ দিক:

অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসবে উত্তর-পূর্ব ভারতের সাংস্কৃতিক তথা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি তুলে ধরা হবে। ২৫০ জনেরও বেশি কারিগর ৩৪টি জিআই-ট্যাগযুক্ত পণ্য সহ অনন্য হস্তশিল্প, হস্তচালিত তাঁত এবং কৃষি-উদ্যানজাত ফসলের পণ্য প্রদর্শন করবেন।

উৎসবের অন্তর্গত কারিগরি অধিবেশনে নারী নেতৃত্ব, তথ্যপ্রযুক্তি, জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য আরও কিছু বিষয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা করা হবে। হস্তশিল্প, কৃষি এবং পর্যটনের মতো খাতে বিনিয়োগের সুযোগ সম্প্রসারনে ক্রেতা- বিক্রেতার গোলটেবিল বৈঠকে অধিকতর সুযোগ-সুবিধার সন্ধান করা হবে। ডিজাইন কনক্লেভ এবং ফ্যাশন শোতে ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক ফ্যাশনের মিশ্রণ ঘটবে। অষ্টলক্ষ্মী গ্রামীণ হাট একটি ঐতিহ্যবাহী বাজারের পরিবেশ পুনরায় তৈরি করবে এবং অষ্টলক্ষ্মী সিম্ফনি, শিলং চেম্বার কোয়ার এবং ঐতিহ্যবাহী নৃত্য সহ প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করবে বলে আশা করা,হচ্ছে। 

উৎসবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে পাংপারি ব্যান্ড, সোফিয়াম, প্রসাদ বিদাপার ফ্যাশন শো এবং প্রাণবন্ত বাসাভ, ফেদারহেডস হাওকুই এবং তাই খমাতি নৃত্য  এর পারফরম্যান্স।

উত্তর-পূর্ব ভারতে বিনিয়োগের সুযোগ

'অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসব' উত্তর-পূর্ব ভারতের পরিবর্তনশীল যাত্রার এক ঝলক তুলে ধরে প্রগতি ও ঐতিহ্য উভয়ের নির্যাসকে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হবে। এই অঞ্চলে পরিকাঠামো উন্নয়নেই কাজ  অব্যাহত রয়েছে, একইসাথে বিভিন্ন ক্ষেত্রের  উন্নয়নে বিনিয়োগের সুযোগের একটি বিশ্বমঞ্চ তৈরি হয়েছে।  বিকাশের বেশ কয়েকটি মূল ক্ষেত্র উন্মোচিত  হচ্ছে, যার প্রত্যেকটিই এই অঞ্চলের ভবিষ্যত নির্মানে বিরাট আশা জাগাচ্ছে।   

এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রয়েছে:

পরিকাঠামো উন্নয়ন: রাস্তা, সেতু এবং রেল নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ,  নির্মাণ ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান  ইত্যাদি।

তাঁত ও হস্তশিল্প:

তাঁত ও হস্তশিল্প খাতে বিনিয়োগ ঐতিহ্যবাহী শিল্পের প্রচার প্রসার  করতে পারে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে এবং রফতানি বাড়াতে পারে।

কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্প:

উর্বর সমভূমি এবং ঐতিহ্য মন্ডিত  একটি শক্তিশালী জৈব চাষের ক্ষেত্র থাকায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, হিমঘর  এবং কৃষিভিত্তিক উদ্যোগে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

পর্যটন ও আতিথেয়তা: উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ইকো-ট্যুরিজম,অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম এবং আতিথেয়তা পরিকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য সুযোগের হাতছানি দেয়।

আইটি এবং আইটিইএস:

এই অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান আইটি শিল্প, তার উচ্চ সাক্ষরতার হার এবং ইংরেজিভাষী জনসংখ্যার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আইটি কোম্পানি এবং স্টার্টআপগুলির জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসাবে পরিণত হয়েছে।

তেল আবিষ্কার ও রেলপথের উত্তরাধিকার: ১৯ শতকের শেষের দিকে আসামে তেলকূপের সন্ধান পাওয়ার ফলে ডিগবোয়ে ভারতের প্রথম তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠা এবং এই অঞ্চলের প্রথম রেলপথ নির্মাণ করা হয়।

এই সমস্ত উন্নয়নের রেখাচিত্র শিল্প বিকাশকে, উন্নত যোগাযোগকে যেমন উত্সাহিত করে তেমনি উত্তর-পূর্ব ভারতকে একটি মূল অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরার দ্যোতক হিসেবে উপস্থিত হচ্ছে।

উত্তর-পূর্ব ভারতের কৌশলগত গুরুত্ব:

উত্তর-পূর্ব ভারতের কৌশলগত অবস্থান, সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং উন্নত পরিকাঠামো এই অঞ্চলকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বড় পরিকাঠামোগত উদ্যোগ অব্যাহত থাকায়, এই অঞ্চলটি ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম খেলোয়াড় হয়ে উঠার সামর্থ্য রাখে। বাণিজ্য, পর্যটন ও শিল্পের কেন্দ্র হিসাবে কাজ করছে। অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসব এই অঞ্চলের অগ্রগতি প্রদর্শন, তার সাংস্কৃতিক সম্পদ উদযাপন এবং ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্য নতুন বিনিয়োগকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য একটি প্রয়োজনীয় ইভেন্ট।

উত্তর-পূর্ব ভারতের সাংস্কৃতিক ঐশ্বর্য উদযাপনের পাশাপাশি  ক্রমাগত বৃদ্ধি ও উন্নয়নে নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে  এই প্রাণবন্ত অগ্রগতি প্রদর্শনের জন্য মহোৎসব একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসাবে কাজ করবে। 

উপসংহার :- সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট, আঞ্চলিক পাওয়ার হাউস হিসাবে গড়ে ওঠার উত্তর-পূর্ব ভারতের ভবিষ্যত প্রতিশ্রুতির  ঝলক দিচ্ছে মাত্র। ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, উৎসবটি ভারতের সামগ্রিক উন্নয়নে স্থায়ী প্রভাব ফেলার প্রতিশ্রুতি দেয়। অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসব এইভাবে একটি বড় লক্ষ্য হিসাবে কাজ করবে।

References:

https://www.ashtalakshmimahotsav.com/

https://pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2079183#:~:text=Ashtalakshmi%20Mahotsav%2C%20celebration%20of%20the,th%20to%208th%20%2C%202024.

Kindly find the pdf file 

***

SKC/TD/KMD

 

 


(Release ID: 2081359) Visitor Counter : 20


Read this release in: English